ছোটবেলায় আমাদের পাড়াতে হঠাৎই চুরি বেড়ে গেছিল। আমি তখন এই ক্লাস সিক্স বা সেভেনে পড়ি। প্রায় রোজই হয় এ বাড়ি না হয় ও বাড়িতে চুরি। আমাদের বাড়িতেও একরাতে…
এখনকার দিনে, আশির দশকের শেষে বা নব্বইয়ের শুরুতে পাড়া কালচারটা কেউ কল্পনা করতে পারবে না। পাড়ার বড়োরা মিলে একটা মিটিংয়ে ঠিক করলো, পালা করে সবাই পাহারা দেবে। সবার নাম নেওয়া হলো। কিন্তু আসল সময়ে কয়েক জন দাদা ছাড়া আর কারো দেখা নেই! পাড়ার সেই দাদারাই তখন রাত জেগে পাহারা দিত। আমাদের চোখে পাড়ার দাদারা হুট করে ‘হিরো’ হয়ে গেছিলো। আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমাতাম আর দাদারা সারা রাত জেগে পাহারা দিতো। বেশ কিছুদিন এইরকম চলার পর চুরি বন্ধ হয়ে গেছিল। চুরি বন্ধ হলো, কিন্ত সেই পাহারা বন্ধ হয়নি। চলেছিল বহুবছর ধরে।
এখন আর পাড়াতে এইরকম পাহারা দিতে দেখি না। অবশ্য কিই বা আর পাহারা দেবে! এখন চুরি ছোটখাট হয়না। আর যারা করে তারা ধরা পড়ে না। ধরা পড়লে শাস্তি হয় না। যাক… আসলে তা লিখতে বসিনি। এখন চুরি হয় বড়ো বড়ো।
মেডিক্যাল কাউন্সিলের ভোট চলছে। এতো দিন জানতাম ডাক্তার মানে শিক্ষিত। কিন্তু ডাক্তাররাও … আসলে সরকারপন্থী মানেই তারা বিশ্বাস করে লুঠই একমাত্র পন্থা। ধমক, চমক দিয়ে ব্যালট লুঠ চলছিলো। প্রতিরোধ চলছে। তাও হচ্ছে। মেডিক্যাল কাউন্সিলর সামনে পাহারা চলছে। রাত জেগে মেডিক্যাল কাউন্সিল পাহারা দিতে হচ্ছে।
লজ্জা লাগছে। সত্যিই লজ্জা লাগছে। ডাক্তার হয়ে আরেক ডাক্তারের চুরি আটকাতে হচ্ছে। এ লজ্জা কোথায় রাখি।
আসুন। সমস্ত ডাক্তাররা আসুন। আগামী ১৮ তারিখ অবধি ভোট। আসুন সকলে মিলে পাহারা দেই, আমাদের কাউন্সিল। নিজেদের জন্য। ব্যালট চুরি রুখতে। ভুয়ো ভোট আটকাতে। রাতের অন্ধকারে ভুয়ো ব্যালট ফেলা রুখে দেওয়া দরকার। ১৯ থেকে ২১ তারিখ ভোট কাউন্ট হবে। লোক দরকার সেই সময়েও। যেটুকু সম্ভব, সেইটুকু সময়ের জন্য আসুন।