আঠেরোই এপ্রিল, মনে আছে কারো কি,
স্মৃতি থেকে মুছে গেছে স্বাধীনতা-স্মারকই,
আঠেরোই এপ্রিল, ভারতের চাট-গাঁ,
ব্রিটিশকে বলেছিলো পারিস তো আটকা,
শাসকের ভাগ্যতে এনেছিলো দুর্যোগ
বাঘা বাঘা শিষ্যরা মাস্টার সূর্য’র।
স্বদেশের পূজারীকে বদলিয়ে ডাকাতে
ইনাম ঘোষণা ছিলো দশ হাজার টাকাতে,
দশ হাজার দাম যার উনিশশো তিরিশে,
পঞ্চাশ লাখে আজ হয়ে যেতো ফিরি সে,
যেসময় একজন ‘বিপ্লবী’ নাসিকে,
ভাতা নিয়ে ব্রিটিশের পঞ্চাশ মাসিকে,
নাসিকাটি খত দিয়ে বিপ্লব ছেড়েছেন
সেসময় দশহাজার ধরলেই এস. সেন,
হেঁকে যিনি বলছেন বাঙালির দ্যাখ দম.
স্বাধীন ভারত যাকে ভুলে গেছে একদম,
স্বাধীনতা দাবী করা সেই রণ-তূর্য,
পঞ্চাশী ‘বীর’ আজ, ফুটনোটে সূর্য।
এই দেশ শুধু নয় স্বাধীনতা-বীরেদের,
কালি লেপে দিতে গায়ে ঝকমকে হীরেদের,
কয়লারা বরাবরই ছিলো বেশ তৈরি
ব্রিটিশের চর যারা দেশোয়ালি বৈরী,
না থাকতো দেশে যদি সেইসব পয়মাল
স্বাধীনতা পেতে তবে লাগতো না এতকাল
সেরকমই একজন ছিলো সেন নেত্র,
ধরালো যে সূর্যকে , ভাগ্যতে ডেথ রো।
তার আগে দাঁত মুখ হাত পা বিচূর্ণ,
স্বাধীনতা পুণ্যের প্রাপ্তি যে শূন্য,
এই কথা জানতেন বিপ্লবী সব তো,
শরীরকে ছিঁড়ে আর করবে কে জব্দ!
ব্রিটিশ বুঝলো সেই বাঙালির খুব জোর
সাগরে ডুবিয়ে দিলো দেহ তাই সূর্য’র।
শেষ চিঠি লিখছেন জেল থেকে মাস্টার,
স্বাধীনতা স্বপ্নের বুক জুড়ে বাস তাঁর,
বলছেন ভুলবে না এপ্রিল এইটিন
চারদিন স্বাধীনতা এসেছিলো সেইদিন,
আমরা দিয়েছি সেই স্মৃতি সব চটকে,
স্বাধীনতা মানে বুঝি কাকে দেয় ভোট কে।
যে তারকা জ্বলেছিলো কালো-যুগ পার হতে,
আমরা সে আলো ঢেকে বিস্মৃতি গাঢ়তে,
ঘেন্না জমিয়ে নানা ধর্মের আড়তে,
যাচ্ছি সে খাদে ফের ফিরেছি যে ধার হতে।
মাস্টার সেন কেউ পারবে না আর হতে,
যে তারা হলেন খুন জানুয়ারি বারোতে।