Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

একটি ধূসর ব্যাকগ্রাউণ্ড

Screenshot_2022-05-16-09-41-22-45_680d03679600f7af0b4c700c6b270fe7
Smaran Mazumder

Smaran Mazumder

Radiologist, medical teacher
My Other Posts
  • May 16, 2022
  • 9:41 am
  • One Comment
কোথায় যাবো? আজ এই নিতান্ত সহজ প্রশ্নটি করে বসেছে এক রোগী।
রোগীর এহেন প্রশ্ন করার কারণ বলছি একটু পরে। এবার এরকম একটি সাধারণ বিষয়ে লিখতে বসেছি বটে, কিন্তু কি যে লিখবো আদৌ জানি না। তাই কৈফিয়ত দিয়ে রাখি। মাথায় কখন কি চাপে – মাথা ই জানে না! তার উপর আমি একটু নয়, বেশ খানিকটা ক্ষ্যাপাটে। আর এই কারণেই ভীষণ কাজের চাপের মধ্যেও মাঝে মাঝে মাথায় ক্ষ্যাপামি চাপে। উল্টোপাল্টা ভাবতে ইচ্ছে করে। কাজ বন্ধ করে দিতে ইচ্ছে করে।
একটি ক্ষ্যাপামির কথা বলি‌। বহুবার এমন হয়েছে – হঠাৎ কেউ কোন একটা কথা বললো, হয়তো সেটা একদমই সাধারণ বিষয় নিয়ে, হয়তো সেটা নিয়ে আমার ভাবার কোন কারণ নেই, হয়তো সেটা আমাকে নিয়েও নয়, কিন্তু সেটার সূত্র ধরে আমার মাথায় চলতে থাকে চরকি পাক। আমার কাজকর্মে আর মন বসে না। আমি কখনো কখনো কাজ বন্ধ করে একলা ভাবতে বসি।
কখনো কখনো তো সারাদিন রাত সেই একটা বিবৃতি বা প্রশ্ন আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়।
আমি জানি না ঠিক এতোটা কেন হয়। কিন্তু হয়। এবং মাঝে মাঝে খুব বিরক্তিকরও হয়ে ওঠে এসব।
যেমন এই রোগী – বয়স ষাটের কাছাকাছি। মহিলা এসেছেন কোন এক গ্রাম থেকে। যতদূর আন্দাজে বুঝলাম – প্রায় ষাট কিলোমিটার দূর থেকে হবে।
মহিলা এসেছেন একটি সুন্দর শাড়ি পরে। দেখলেই বোঝা যায় পাট ভেঙে খোলা হয়েছে সদ্য। গ্রামের মহিলারা সাধারণত এরকম সেজেগুজে অনেকেই আসেন‌ । কিন্তু তাঁরা বেশিরভাগই কম বয়সী। ডাক্তারের কাছে যাওয়াটা তাদের কাছে হয়তো একটা উৎসবের মত ব্যাপার হয়ে ওঠে।
কি জানি … হয়তো একখানাই শাড়ি থাকে ঘরে … হয়তো সেটিও অনেক ভাগ্য করে পাওয়া গিয়েছিল কোন একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে কিংবা উপহার হিসেবে।
আমি মাঝে মাঝে চেয়ে চেয়ে দেখি – নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের পুরুষরা প্রায় ব্ল্যাক ক্যাট কমাণ্ডোদের মত গার্ড দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে আসেন ডাক্তারের কাছে।
কেউ কেউ নারীর উপর পুরুষের আধিপত্য বিস্তারের গল্প খোঁজেন এতে। তেমনটা হতে পারে, নাও হতে পারে। পুরুষ প্রজাতি ড্রেসের বিষয়ে চিরকাল বিবাগী। তাই তাদের নিয়ে বেশি না বলাই ভালো।‌ হয়তো এরকম সেজেগুজে কোথাও যাওয়ার মত দিন তাদের খুব কমই আসে। কতজন তো খালি গায়েই চলে আসেন। কি আসে যায়??
সত্যি বলছি – আমার খুব ভালো লাগে। যখন দেখি কোন মানুষ সেজেগুজে ডাক্তারের কাছে আসে। তখন হয়তো তার কাছে অসুখটা আর অসুখ বলে মনে থাকে না। কোনদিকে শাড়ির আঁচলটা ঠিক করে রাখতে হবে, কোন দিকে ওড়নাটা টেনে রাখতে হবে – এসবে ব্যস্ত রোগীকে দেখি আর ভাবি – গোল্লায় যাক আমার ডাক্তারি, গোল্লায় যাক অসুখ… মানুষ একটু বাঁচুক আগে!!
এই যে ছোটখাটো বিষয় , এগুলো না থাকলে হয়তো মহাভারত অশুদ্ধ হয় না, কিন্তু থাকলেও কি খুব ক্ষতি??
কিন্তু সমস্যা যে হয় না, তা নয়। আমাকে সাধারণত পরীক্ষা করার সময় পাট ভাঙা কাপড়টি সরিয়ে দিতে বলতে হয় পেটের উপর দিয়ে, হয়তো নিয়ম মেনে আমাকে বলতে হয়- তোমাকে রোগীর জন্য নির্ধারিত ড্রেস পরে আসতে হবে।
মহিলার কথায় আসি। হাসিখুশি মহিলা। বেশ সুন্দর কথা বলেন। আঞ্চলিক টান আছে। এবার শয়ে শয়ে রোগীদের মধ্যে হঠাৎ কেন এই মহিলার সাধারণ একটি প্রশ্ন নিয়ে ভাবতে বসলাম- সেটা বলি।
আমরা একটু খেয়াল করে দেখলেই বুঝতে পারবো – হাজারো মানুষের মধ্যে খুব অল্প কিছু মানুষের কথা বলা আমরা শুনতে চাই। ভালো মন্দ বিচার না করেই শুনতে চাই। তাদের কথা বলার বিষয়, শব্দচয়ন, বাক্যগঠন , গলার স্বর – এতো কিছু বিচার না করেই আমরা মন থেকে শুনতে চাই। তারা কথা বলা বন্ধ করে দিলে আমাদের খারাপ লাগে। আমরাও ডাক্তারি করতে করতে দেখি – কিছু রোগী হয়তো খুব সুন্দর করে সবকিছু বলেন, সবকিছু বোঝাতে পারেন, কিন্তু গলার স্বর হয়তো ভালো লাগে না! হয়তো শিক্ষিত মার্জিত মানুষটি শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলেন। ভালো লাগে না। আবার হয়তো নিতান্তই গ্রাম্য, তথাকথিত অশিক্ষিত সরল মানুষটি নিজের মত করে এলোমেলো কতগুলো কথা বলেন – তখন আবার ভালো লাগে। এগুলো বোধহয় সবার ক্ষেত্রেই হয়।
আমার কেন জানি না – এই মহিলা যা কিছু বলছিল, সেটাই ভালো লাগছিল!
কথা বলতে বলতে পরীক্ষা করছি। মহিলা নিজের ইচ্ছেমতো এটা সেটা বলে যাচ্ছেন। হয়তো অন্য সময় হলে অসুবিধা হচ্ছে বলে দিতাম এক বকুনি।
কিন্তু এক্ষেত্রে আমি সেটা পারছিলাম না। সারা পেট পরীক্ষা করছি আর শুনছি, মহিলা বলেই চলেছেন- – এতোদিন কিছুই বুঝিনি … কি যে হয়েছে … মাঝে মাঝে খাবার পর বমি হয় … ও তো কতই হয়.. – আর বুঝেই বা কি করবো … এই তো ষাট হয়ে গেল …একটু থেমে আবার … ও ডাক্তার, কি দেখছো এতো? কিছু হয়েছে নাকি?
আমি পরীক্ষা করতে করতে বলি- দেখতে দিন আগে।
মহিলা – হ্যাঁ … দেখো দেখো। আর কতদিন বাঁচবো … অনেক তো হলো …
আমি অবাক হয়ে ভাবি – এই মহিলা এরকম কেন? এতো সহজ, এতো নির্বিকার কেন এই মহিলা?
একটু পরে আবার বলেন – ও ডাক্তার – কি হয়েছে? আমি মুখের দিকে তাকাতেই – ওহ… দেখো দেখো … তারপর একটু থেমে ফের স্বগতোক্তি – কি আর করবে ডাক্তার … মরে টরে যাবার মত কিছু হলে বলে দিও কিন্তু … বলেই হাসি ।
মহিলার চুপ করা দরকার। কিন্তু আমি থামাতে পারছি না। কারণ – সব মিলিয়ে ওনার কথা বলা আমার ভালো লেগে গেছে। কিন্তু পুরো পেট খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখার পর আমার হাত-পা ক্রমশ ঠাণ্ডা হয়ে আসতে লাগলো।
আমার গলার ভেতর থেকে আওয়াজ বেরোচ্ছে না যেন।
এই অল্প একটু সময়ের মধ্যে এই মহিলা রোগীর প্রতি আমি খানিকটা দুর্বল হয়ে পড়েছি – সত্যি। কিন্তু এই এখুনি – আমাকে লিখতে হবে একটি নির্মম মৃত্যু পরোয়ানার মত রিপোর্ট। সেও এই মহিলারই! যাতে গোটা গোটা করে লিখে দিতে হবে – বীভৎস কর্কট রোগ বাসা বেঁধেছে পাকস্থলীতে … সেখান থেকে সারা পেটে ছড়িয়ে পড়েছে দয়ামায়াহীন মেটাস্টেসিস পঙ্গপাল।
এবং সেটা এতোটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে – বোধকরি কোন চিকিৎসাই আর কাজে আসবে না। আমি আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে থাকি।
বোবা হয়ে যেতে থাকি। অসাড় হয়ে যেতে থাকি।
এই মহিলাকে এই রিপোর্ট আমি কিছুতেই বলতে পারবো না- যখনই ভাবলাম, ঠিক তখনই আমার দিকে তাকিয়ে মহিলা বলে বসলেন – কঠিন রোগ, তাই না? রোগ তো হবেই… মরতে হবে না? বলেই ফের হাসি। অতিমারীর জীবাণুর মত ভয়ঙ্কর ছোঁয়াচে সেই হাসি। সেই হাসির সামনে যে কোন ডাক্তারের ছদ্ম গাম্ভীর্য ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে।
বললাম- হ্যাঁ । খারাপ অসুখ। রিপোর্ট করে দিচ্ছি। আপনার ডাক্তারবাবুকে দেখাবেন তাড়াতাড়ি।
মহিলা কি বুঝলো কে জানে। মৃত্যু নিয়ে যে এতোটা নির্বিকার, এসব অসুখ তাকে আদৌ কতটা ভাবাতে পারবে সন্দেহ আছে। মহিলা উঠে গেলেন।
দরজার কালো পর্দাটা সরিয়ে আলো আঁধারিতে ভরা ইউএসজি রুমের বাইরে চলে যেতে যেতে জিজ্ঞেস করলেন- ও ডাক্তার, কোথায় যাবো?
সহকারী বললো – বাইরে বসুন। বলে দেব।
কিন্তু আমার মাথায় সেই থেকে চরকি পাক খেতে লাগলো একটিই কথা – ও ডাক্তার, কোথায় যাবো? সত্যিই তো কোথায় যাবো আমরা? আমরা কোথায় যাই শেষমেশ? কোথায় যেতে হবে আমাদের?
এই প্রশ্নগুলো নিতান্তই বোকা বোকা শুনতে। উত্তরগুলো হয়তো আরো বোকা বোকা। না, এত কঠিন কঠিন বিষয় আমি সহজ করে বলতে পারি না।
চেষ্টা করি নিজের মত করে একজন মানুষের জীবনচক্র লেখার ।
এই মহিলা … যদি আমার আন্দাজে খুব ভুল না হয়, হয়তো আজ থেকে বছর পঁয়তাল্লিশ আগে কোন এক দিন হামাগুড়ি দিয়ে কনুইয়ের ছাল তুলে ফেলায় ঘরের মেঝে, খেলনা বাটি অন্য সখিদের জিম্মায় রেখে, অবোধ্য লাজে, অজানা ভয়ে, বাবা মা ভাই বোন ছেড়ে, সদ্য ফল দেয়া পেঁপে গাছের পাশ দিয়ে, বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে- এই দৃশ্য ভাবতে ভাবতে,
তুলসীতলায় ঠাকুরবেদীতে একটা প্রণাম ঠুকে, প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরে এক পশলা বৃষ্টির মত কেঁদে, চোখ মুছে বা না মুছে, গোবর ছড়ানো উঠোনের এক পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া পথে পা রেখেছিলেন কোন এক অচেনা অজানা পৃথিবীতে, পর পুরুষের হাত ধরে। হয়তো সে পুরুষ তার এই দীর্ঘ পথ চলায় যোগ্য সঙ্গী হয়েছে, হয়তো নয়। হয়তো এই নারী আবার খুঁজে পেয়েছে নিজের বাড়ির মত সবকিছু … হয়তো কোন কিছুই নয়! হয়তো এই নারী একদিন আস্তে আস্তে আটকে গেছে শ্বশুর শাশুড়ি জা ননদ দেবর ভাসুর সন্তান পাড়া প্রতিবেশীদের মায়ার জালে … হয়তো এই নারী নিজেই হয়ে উঠেছে এক মায়ারানী। যে মায়ারানী হয়তো একদিন দিনমান পরিশ্রম করা স্বামীর জন্য তিনবেলা রান্নাঘরে কাটিয়েছে, হয়তো অবসর পাওয়া কোন বিকেলে অগোছালো চুল কোনরকমে বেণী করে কপালে পরেছে সিঁদুর, হয়তো পাশের বাড়ির অন্য কোন মায়ারানীদের সঙ্গে পরনিন্দা পরচর্চা করেছে , হয়তো বেরিয়ে পড়েছে শীতলা মায়ের থানে পুজো দিতে,
কখনো হয়তো হালকা করে গালে মেখেছে লালচে আভা, হয়তো স্বামী রাতে ঘরে ফিরে আর দেখেইনি সন্তান লালন পালন করতে গিয়ে সেই লালচে আভার জায়গায় পড়েছে মেচেতার ছাপ, হয়তো কোন চাঁদ আস্তে আস্তে বাঁশঝাড়ের পেছনে ডুবে যেতে যেতে দেখেছে – এই মায়ারানী কাকভোরে বাসি কাপড় ছেড়ে স্নান করে তুলসীতলায় ফুল সাজিয়ে দিয়ে ফের নেমে পড়েছে সংসার সংগ্রামে। একদিন হয়তো নিজের চোখের সামনে বেড়ে ওঠা ছেলে মেয়ে নাতি নাতনি এক এক করে ছেড়ে গেছে বা কাছে থেকেছে … হয়তো একমাত্র সঙ্গী স্বামীকে অনেক অনেক দিন সঙ্গে পেয়েছে … হয়তো খুব তাড়াতাড়ি সেও ছেড়ে গেছে। তারও তো একই পথে, একই রকম রঙহীন অন্য সংগ্রামের কাহিনী!
যতদূর বুঝেছি- ইনি অন্তত কোনদিন কোথায় যাবো বা যেতে হবে- এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন নি।‌ না খোঁজাই ভালো। পৃথিবীতে বোধহয় সব কিছু খুঁজতে নেই। সবকিছু পেতে নেই। সবকিছু দেখতে নেই। সব জায়গায় যেতে নেই।
একটি ছবির কথায় আসি শেষ পর্যন্ত। Gustav Klimt এর ছবি Death and Life, না, আমি কোন ছবি বিশেষজ্ঞ নই। শিল্প সাহিত্য এসবের মাথামুন্ডু আমি জানি না, বুঝি না। শুধু এই এক মায়ারানীর গল্প লেখার জন্য এই ছবিটি নিজের মত করে দেখা।
ছবিটিতে দেখা যায়- একটি মানুষের জীবনচক্র। একদিকে একজন নারী ও তার পুরুষ সঙ্গী, একজন মা ও সন্তান, একজন বয়স্কা মহিলা যার রঙ হয়ে গেছে নীল। সেকি বয়সের বিষ জমে? আর কি আছে? আছে দুটি মুখ। সেও নারীর। যাদের গালে লালচে আভা… অথচ ছবির খুব অল্প জায়গা জুড়ে আছে … মানে খুব সামান্য রঙ লাগানো সময় … বেশিরভাগটা জুড়ে এই নারী হয়ে উঠেছে পুরুষের সঙ্গিনী, মায়া মমতা ভরা সন্তানের মা, সংসারে ঠাকুমার মত আশ্রয়। এবং শেষমেশ যেন কাঁটা বিছানো ফুলের বাগানে একমাত্র মালী। মায়ারানী … এমনই … আমার চেনাজানা বহু মায়ারানী ঠিক এমনই। ছবিটির বাম দিকে দেখা যায় মৃত্যুকে। বিশেষ করে বলতে হয় – মৃত্যু কে এভাবে চিত্রায়িত করার দক্ষতা নিয়ে। যদিও আমি অত বুঝি না।
মাথার দিকটা বাদ দিলে তাঁর সারা শরীর প্রায় নীল … ঠিক এই মায়ারানীর শরীরের রঙ। এবং আরো একটু বিশদে দেখলে বোঝা যায় – মৃত্যু রয়েছে এই পুরো জীবনচক্রের সমান জায়গা দখল করে। যেটি আসলে বলে দেয় – জীবনচক্রের প্রতি মুহূর্তে আমরা মরছি বা মৃত্যুকে সঙ্গী করেই বেঁচে থাকছি। শুধু শেষবার যখন মরে যাই , তখন সারা জীবন ধরে যে নীলকন্ঠ হই, সেই রঙ টুকুই নিতে পারি। কি অদ্ভুত এই ট্রানজিশন! আসলে শেষ বেলায় এই নীল বড় চোখে লাগে। কিন্তু এই নীল সারা জীবনের জমানো নীলই!
আরেকটি কথা না বললে বাকি থেকে যায় – ছবির ধূসর ব্যাকগ্রাউণ্ড।
জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানে, আশেপাশে, সামনে পিছে সবচেয়ে বড় ব্যাকগ্রাউন্ড কিন্তু ধূসর। শিল্পী নাকি এটিতে প্রথম গোল্ডেন রঙ ব্যবহার করেছিলেন। হয়তো মত পাল্টে ফেলেছেন, যখন দেখেছেন – জীবনের কোথাও সোনালী রঙ চিরস্থায়ী হয় না। হয়তো …
ফিরে আসি মায়ারানী র কথায় … মায়ারানী র পরনে ছিল একটি শাড়ি … ইতিউতি নীল রঙের ছোঁয়া … মায়ারানী সারা জীবনের বিষ শরীরে জমিয়ে নীল হয়েছেন … হতে বাধ্য হয়েছেন …এবার তিনি কোথায় যাবেন?
আমি এক অসহায় ডাক্তার … আমার চেতনা ক্রমশ ধূসর হয়ে আসে … আমি চোখ বুজে দেখতে পাই – প্রাণঘাতী কর্কট রোগ আস্তে আস্তে এই মায়ারানীকে দখল করে নিচ্ছে … তার শরীর ক্রমশ নীল হয়ে আসছে … তার চারপাশের সবকিছু ধূসর হয়ে যাচ্ছে … রেডিওথেরাপি কেমোথেরাপি সার্জারি – এসবের ধকল নিতে নিতে শুকিয়ে যাওয়া মায়ারানী ভুলে যাচ্ছে – থোকা টগর ফুটেছে তুলসী গাছের পাশেই … পাকা পেঁপে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে খেয়ে যাচ্ছে লম্বা ঠোঁটের পাখি … বাঁশ বাগানের পেছন থেকে নেমে আসছে অমাবস্যা … কয়েকটি বাঁশ কেটেছে তার এতোদিনের প্রিয়জনেরা … সঙ্গে বাড়ির একমাত্র হিমসাগর আম গাছটিও!
মায়ারানী কোথায় যাবে? একসময় কোথায় চলে যায় সব মায়ারানীরা??
পৃথিবী ছেড়ে মায়ারানী যদি চলেই যায়, যাক না! আমি শুধু অভিমান করতে পারি … আমি শুধু চুপিচুপি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে পারি, বলতে চাই – মায়ারানী, তোমাকে কোথাও যেতে হবে না!
আমি জানি – মায়ারানী কথা রাখে না… রাখবে না… রাখতে পারবে না!
সে যাবেই … কোথাও না কোথাও সে যাবেই !!
Art: Death and Life
By Gustav Klimt
PrevPreviousথ্যালাসিমিয়াকে প্রতিরোধ করা যায়।
Nextস্কুলের গল্প ৪ অকৃতজ্ঞ কুকুরNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Dipankar Ghosh
Dipankar Ghosh
10 months ago

দারুণ

0
Reply

সম্পর্কিত পোস্ট

ডাক্তারির কথকতা: ৮ একুশে আইন

March 23, 2023 No Comments

ডাঃ মহেন্দ্রলাল সরকার ছিলেন উনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভারতীয় চিকিৎসক ও বিজ্ঞান সাধক। তিনি অত্যন্ত সত্যনিষ্ঠ, জ্ঞানী অথচ কাঠখোট্টা মানুষ। শোনা যায়, তিনি এমনকি যুগপুরুষ

দীপ জ্বেলে যাও ২

March 22, 2023 No Comments

আত্মারাম ও তার সঙ্গীরা রওনা দিল দানীটোলার উদ্দেশ্যে। দল্লিরাজহরা থেকে দানীটোলা বাইশ কিলোমিটার হবে। বিশ না বাইশ, ওরা অত গ্রাহ্য করে না। ওরা জানে এই

ভাইরাস সংক্রমণ শুধুই বায়োলজিকাল? – উত্তর ভাসে বাতাসে

March 21, 2023 1 Comment

পশ্চিমবাংলা এই মুহূর্তে অ্যাডেনভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে বিপর্যস্ত। আইসিএমআর-নাইসেড-এর সম্প্রতি প্রকাশিত যৌথ সমীক্ষা  জানাচ্ছে, ভারতের ৩৮% অ্যাডেনোভাইরাস রোগী পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে। এমনকি সুপরিচিত ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান-এ একটি

দল্লী রাজহরার ডায়েরী পর্ব-১৬

March 20, 2023 No Comments

৪/৩/১৯৯০ শৈবাল–আমাকে প্রথমে নির্বাচনের খবর। আমরা একটাও জিততে পারিনি। জনকও হেরেছে। ভেড়িয়া ৭০০০ ভোটে জিতেছে। আমরা গ্রামে ১২ হাজার ভোট পেয়েছি। বি. জে. পি. ২১

গ্রামের বাড়ি

March 19, 2023 No Comments

১৪ দিন দশেক পরে দেবাঙ্কন এসে হাজির। বলল, “তোদের কফি ধ্বংস করতে এলাম। বাপরে বাপ, যা গেল! যাক, চার্জশিট হয়ে গেছে। সাংঘাতিক কনস্পিরেসি। সোমেশ্বর নাথ

সাম্প্রতিক পোস্ট

ডাক্তারির কথকতা: ৮ একুশে আইন

Dr. Chinmay Nath March 23, 2023

দীপ জ্বেলে যাও ২

Rumjhum Bhattacharya March 22, 2023

ভাইরাস সংক্রমণ শুধুই বায়োলজিকাল? – উত্তর ভাসে বাতাসে

Dr. Jayanta Bhattacharya March 21, 2023

দল্লী রাজহরার ডায়েরী পর্ব-১৬

Dr. Asish Kumar Kundu March 20, 2023

গ্রামের বাড়ি

Dr. Aniruddha Deb March 19, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

428603
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]