বনের থেকে লিখছি তোমায়, সুজনেষু,
আশা করি নাম ভোলোনি, অযোধ্যারাজ,
আমার এখন একার জীবন, সংবাদে সু,
ভ্রষ্টা বলে দেয় না খোঁটা গাছের সমাজ।
সে এক ছিলো সদ্যযুবক , নতুন বরও
জনক আদেশ দিলেন যাকে বনে যেতে
ঘরের থেকে মনের মানুষ ভেবে বড়,
জানকী চায় অরণ্যে তার সঙ্গ পেতে।
কি বোকা না!
আরাম করে ঊর্মিলা বোন রাজপ্রাসাদে,
দেওরটি তো ‘দাদা’কে তাঁর হারান চোখে,
কি হাঁদি গো!
রইলো সবাই সাধ আহ্লাদে আমি বাদে,
বেরিয়ে এলাম বনের পথে প্রেমের ঝোঁকে।
প্রেম কি ছিলো? প্রেম কী ছিলো?
দুটোর জবাব আজও আমার হায় অধরা,
জীবন আমায় ঘাড়টি ধরে শিখিয়ে দিলো,
মাল্যজয়ীর মন বোঝেনি স্বয়ম্বরা।
যুদ্ধ শেষে আগুন দেওয়া.. পড়ে মনে?
সন্দেহতে পুড়ছো তুমি ধিকি ধিকি,
অরক্ষিতা একলা নারী অশোকবনে,
খুব স্বাভাবিক , পুরুষ তাকে ছোঁবে ঠিকই।
কি বোকা না!
আমি আবার ভেবেছিলাম আমার জন্য..
আমার জন্য যুদ্ধ করো, ঘোর বিরহে,
কি হাঁদি গো!
বুঝিই নি যে যাই আসি না, হেতু-ই অন্য,
পুরুষকার যুদ্ধ করে প্রলেপ লাগায় আপন মোহে।
অ-প্রেম যেই গেলাম বুঝে, হলাম পাথর,
অমন জমাট বিষাদ আগুন পোড়ায় নাকি
আর আমি নই কারোর কথায় স্পর্শকাতর,
তখন থেকেই মনের ভেতর বনেই থাকি।
কি বোকা না!
তুমি ভাবো আমায় পাঠাও নির্বাসনে,
মন তো আমার কবে থেকেই তৈরি আছে,
কি হাঁদা গো!
রাজা হয়ে রইলে বসে সিংহাসনে,
অনুগমন করলে না তো আমার ধাঁচে!
মাটির এ মেয়ে তুমি ছাড়াও দিব্যি বাঁচে,
অযোধ্যারাজ,
পদে পদে হারলে তুমি আমার কাছে।
সুজনেষু, মাটির ভেতর লুকাই এবার,
ডেকে পাশে বসতে বলো আবার পাছে।