রোগনির্ণয়
সিস্টোলিক ও ডায়াস্টলিক প্রেসারঃ
রক্ত প্রবাহিত হওয়ার সময়রক্তনালীর দেওয়ালের উপর যে চাপ দেয় তাকে বলে রক্তচাপ। রক্তচাপ দুই প্রকারের। সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টলিক।
আমাদের হৃদপিণ্ড ক্রমাগত সঙ্কুচিতও প্রসারিত হয়ে রক্তনালীর মধ্যে রক্ত ঠেলে পাঠায়। হৃদপিণ্ডের সঙ্কোচনকে বলে সিস্টোল। আর এই সময়ের সর্বাধিক রক্তচাপকে বলে সিস্টোলিক প্রেশার। হৃদপিণ্ডের প্রসারণকে বলে ডায়াস্টোল। এসময়ের সর্বনিম্ন রক্তচাপকে বলা হয় ডায়াস্টলিক প্রেশার।
কোরটকফ সাউন্ড
বর্তমানে যে পদ্ধতিতে রক্তচাপ মাপা হয় তার আবিষ্কর্তা বিজ্ঞানী নিকোলাই কোরটকফ। ১৯০৫ সালে তিনি সিস্টোলিক ও ডায়াস্টলিক প্রেশার আলাদা ভাবে মাপার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। প্রথমে বাহুর উপর রবারের কাফ জড়িয়ে তার মধ্যে বায়ুচাপ বাড়িয়ে রক্তনালীর মধ্যে রক্ত-সঞ্চালন বন্ধ করা হয়। তারপর চাপ আস্তে আস্তে কমানো হয়। রক্তসঞ্চালন পুনরায় শুরু হলে রক্তনালীর মধ্যে রক্ত চলাচলের শব্দ শুরু হয়। সেই শব্দের শুরু দিয়ে সিস্টোলিক প্রেশার ও শেষ দিয়ে ডায়াস্টলিক প্রেশার বোঝা যায়। স্টেথোস্কোপের সাহায্যে এই শব্দ শোনা যায়। বিজ্ঞানীর নাম অবুসারে রক্তচলাচলের এই শব্দকে কোরটকফ সাউন্ড বলা হয়।
একবার রক্তচাপ মেপে কি হাইপারটেনশন বলা উচিৎ?
আমাদের মনে রাখতে হবে একবার মাত্র রক্তচাপ মেপে হাইপারটেনশন নির্ণয় করা উচিৎ নয়। রক্তচাপঅত্যন্ত বেশি না হলে এক থেকে দু-সপ্তাহের মধ্যে রোগীর আরও একবার রক্তচাপ পরীক্ষা করা উচিৎ। রোগীকে তখনই হাইপারটেনসিভ বলা যাবে যদি দুই বারই তার সিস্টোলিক প্রেশার ১৪০ মিলিমিটার পারদ এর সমান বা বেশি এবং/ অথবা ডায়াস্টোলিক প্রেশার ৯০ মিলিমিটার পারদ এর সমান বা বেশি হয়।
হাইপারটেনশনের শ্রেণীবিভাগ
হাইপারটেনশানের শ্রেণীবিভাগ | সিস্টোলিক প্রেশার
(মিলিমিটার পারদ) |
ডায়াস্টোলিক প্রেশার
(মিলিমিটার পারদ) |
সর্বাপেক্ষা কাম্য | <১২০ | <৮০ |
স্বাভাবিক | ১২০- ১২৯ | ৮০- ৮৪ |
স্বাভাবিক কিন্তু বেশির দিকে | ১৩০- ১৩৯ | ৮৫- ৮৯ |
স্টেজ ১ হাইপারটেনশন | ১৪০- ১৫৯ | ৯০- ৯৯ |
স্টেজ ২ হাইপারটেনশন | ১৬০- ১৭৯ | ১০০- ১০৯ |
স্টেজ ৩ হাইপারটেনশন | ১৮০ বা তার বেশি | ১১০ বা তার বেশি |
অনেকসময় হাইপারটেনশন শুধু মাত্র সিস্টোলিক বা ডায়াস্টোলিক হতে পারে। যেমন- সিস্টোলিক হাইপারটেনশনের ক্ষেত্রে সিস্টোলিক প্রেশার ১৪০ বা তার বেশি কিন্তু ডায়াস্টোলিক প্রেশার ৯০ এর কম হয়। বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে অনেক সময় শুধুমাত্র সিস্টোলিক হাইপারটেনশন এবং কম বয়সীদের অনেকসময় শুধুমাত্র ডায়াস্টোলিক হাইপারটেনশন দেখা যায়। এগুলিও যথাযথ চিকিৎসা না করলে প্রাণঘাতী সমস্যার কারণ হতে পারে।