মানসিক রোগগুলি সম্বন্ধে অনেকেরই অনেক ভুল ধারণা আছে। তেমনি একটি ভুল ধারণা হল যে মানসিক রোগ নির্ণয়ের জন্য কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার পড়ে না। আমরা হাসপাতালে বিভিন্ন রোগীর বিভিন্ন সমস্যা দেখি। যে কোনো উপসর্গের পিছনে অনেকগুলি করে কারণ থাকতে পারে এবং যে কোনো উপসর্গের পিছনে একটি অন্যতম কারণ হতে পারে মানসিক সমস্যা।
একটা ছোট্ট উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা বোঝানোর চেষ্টা করি– ধরা যাক এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হঠাৎ করে পরীক্ষার আগের মাসে বলতে শুরু করল যে, তার শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা হচ্ছে। বাবা-মা খুব চিন্তায় পড়লেন এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিলেন। এখন এই শ্বাস কষ্টের পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। সবার আগে আমাদের মাথায় আসবে ফুসফুসের বা হার্টের কোনো সমস্যা আছে কিনা দেখা। তাই ডাক্তারবাবু একটা বুকের এক্স রে, একটা ই সি জি করলেন। শারীরিক পরীক্ষায় কিছু পাওয়া যাচ্ছে না এবং দুটো রিপোর্টই স্বাভাবিক পাওয়া গেল। তাই এমারজেন্সি থেকে ডাক্তারবাবু রোগীকে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ (সাইকিয়াট্রিস্ট)-এর কাছে পাঠালেন। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবু দীর্ঘ সময় ধরে রোগের ইতিহাস শুনলেন। এর মধ্যেই জানা গেছে, ঘটনার আগের দিন একটি মক টেস্টের খারাপ রেজাল্ট নিয়ে পরীক্ষার্থীর প্রচণ্ড চিন্তা হচ্ছিল। এমনিতেই সে বেশি চিন্তা করে এবং এবারে আরো বাড়াবাড়ি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ডাক্তারবাবু জানালেন পরীক্ষার্থীর আসলে এংজাইটি ডিসঅর্ডার আছে। সাথে সাথে তিনি থাইরয়েড হরমোনের টেস্টের পরামর্শ দিলেন কারণ থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে এই রোগ বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করে।
তাহলে এটা বলতে পারি যে
- কোন উপসর্গ সত্যি মানসিক রোগের জন্য হচ্ছে কিনা বোঝার জন্য আমাদের আগে অন্য শারীরিক কারণগুলির সম্ভাবনাও বিচার করতে হয় এবং সেক্ষেত্রে নানা পরীক্ষা করতে হতে পারে।
- অনেক সময় মানসিক রোগের সাথে সাথে শারীরিক রোগ থাকতে পারে যেগুলি মানসিক রোগের তীব্রতাকে বাড়িয়ে দেয়। সেই সব কারণগুলি খুঁজে বের করার জন্যও অনেক সময় নানান পরীক্ষা করতে হয়।
- আবার ওষুধ শুরু করার আগে এবং শুরু করার পরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা বোঝার জন্য অনেক সময় পরীক্ষা করার দরকার পড়ে (যেমন সিজোফ্রেনিয়া নামক একটি রোগে “ক্লোজাপাইন” বলে একটি ওষুধ ব্যবহার করা হয় যা শুরু করার আগে রক্তের শ্বেত কণিকার সংখ্যা স্বাভাবিক থাকা দরকার। তাই এই ওষুধ চালু করার আগে এবং পরে নিয়মিত ভাবে রক্ত পরীক্ষা করতে হয়।
- আবার মানসিক রোগগুলির জন্য কিছু বিশেষ পরীক্ষা হয় যাদের সাইকোমেট্রিক টেস্ট বলে।
সুতরাং মানসিক রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষার দরকার পড়ে না-কথাটি সত্যি নয়।
Sir, kindly explain in details regarding some psychometric tests??
লেখাটা পড়ে উপকৃত হলাম। কোনো রুগী কে দেখাতে হলে, আপনার সাথে কিভাবে যোগাযোগ করবো?