আপনারা
যখন সাতহাজার কোটির বিমানের গর্ব করছিলেন,
আমরা মিঁউ মিঁউ করে বলেছিলাম,
গ্রামীণ হাসপাতালে আন্ত্রিকের ওষুধের অপ্রাপ্তির কথা।
আপনারা চোখ রাঙিয়ে বলেছিলেন
‘ দেশ আগে না আন্ত্রিক আগে?’
আমরা ভয়ে উত্তর দিই নি।
যখন শহর ভেসে যাচ্ছে রাতকে দিন করা আলোর বন্যায়,
মেডিক্যাল কলেজে হচ্ছে অত্যাধুনিক ট্রমা সেন্টার,
আমরা বলেছিলাম, লক্ষ্য হোক প্রাইমারি হেল্থ কেয়ার,
পি এইচ সিতে থাক পর্যাপ্ত স্যালাইন, প্লাস্টার ও ক্ষত সারাইয়ের সরঞ্জাম,
যাতে কম লোক শহরে আসে।
আপনারা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে কোটি টাকার মেশিন দেখিয়ে বলেছিলেন
‘ওটাই উন্নয়ন।’
আমরা মেনে নিয়েছি।
ঘরে ঘরে জ্বর,
আমরা আবেদন করেছিলাম তার প্রকৃতি নির্ধারণের জন্য।
ডেঙ্গি ম্যালেরিয়া চিকুনগুনিয়া সোয়াইন ফ্লুয়ের সাথে সাধারণ সর্দিজ্বর যাতে না মেশে।
আপনারা মুখ ভেঙচে বললেন,
‘জ্বর অজানা থাকাই ভালো।
প্লেটলেট ছাড়া আর কিছু গোনার দরকার নেই বাপু
বেশি বললে…!’
আমরা মুখ বন্ধ করলাম।
আমরা বলেছি স্বাস্থ্যবাজেটে এক শতাংশ বিপর্যয়ের ইঙ্গিত।
বলেছি খিদে সূচকে আমরা নামছি,
শিশুর স্বাস্থ্যে আমরা তলানিতে,
দূষণে কালোর শিখরে।
আপনারা যখন সর্বোচ্চ মূর্তি আর তীব্রগতি ট্রেনের ঘোষণা করছিলেন,
এই সব ছেঁদো কথা নিবেদন করেছিলাম।
আপনারা হাঁকলেন, ‘ আমরা পৃথিবীর ষষ্ঠ অর্থনীতি, এইসবে মন দেওযার দরকার নেই’
আমরা ব্যথা চেপে ফিরে গেছি চিকিৎসাতে।
আজ মহামারীর সম্ভবনায় দুয়ারে ভাইরাস।
আপনার যুদ্ধের বিমান অকেজো, কোটি টাকার মেশিনেরা বেকার।
একাজে লাগবে অসংখ্য পদাতিক, যারা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবে লড়াইয়ের বর্ম,
সাধারণ লোককে যোদ্ধা করে তুলবে।
নমকের সাথে অনন্ত ধমক খাওয়া আমাদের কি সে দায়িত্ত্ব দেবেন?
আমরা কিন্তু এইবার নির্দেশের অপেক্ষায়।
আপনাদের সেনাবাহিনী অজেয়, মূর্তি ভূবনবিখ্যাত, জনপ্রিয়তায় আপনারা ঈশ্বরের সমতূল্য।
কিন্তু ভাইরাস সেসব বুঝতে পারবে তো?
আপনারা কি শুনছেন?