—- তুমি বলতে চাও এটা তোমার তোলা ছবি? দেখে কিন্তু পরিষ্কার মনে হচ্ছে আঁকা ছবি!
—- স্যার আমার তোলা ঠিকই। কিন্তু আঁকা ছবি সেটাও ঠিক।
আমি কে? পাতি লোকেদের ভাষায় স্পাই। ছারপোকাকে কাইমেক্স লেক্টুলেরিয়াস বললে যেমন তৃপ্তিবোধ হয়, সেই রকমের সগর্বে বলি, আমি মিলিটারির কাউন্টার-ইনটেলিজেন্সের লোক।
নানা রকম শুনেছেন তো আমাদের সম্বন্ধে? আমাদের প্রাণের ভয় নেই। আমাদের পেছন দিকেও দুটো চোখ থাকে। বেড়ালের মত নটা প্রাণ আমাদের। চব্বিশ তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে সটান দৌড়ে যেতে পারি, একটুও না টসকে। না মশাই, অত কিছু না। যথেষ্ট ভয়টয় ইত্যাদি নিয়েই বাঁচি।
তাও প্রমোশন ইত্যাদি পাই। কী করে? ডিপার্টমেন্ট সব কথা জানে না।
আসলে সীমান্ত পেরিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রের ভেতরে ঢোকার কাজটা করে আমার বদলে আমার ডামি… এক এআই-ওয়ালা অ্যান্ড্রয়েড।
বিদেশের এক উপত্যকা থেকে সে সদ্য ফিরেছে। সেখানে তার তোলা এক ছবি নিয়েই সমস্যা। এই ছবি আমার ডিপার্টমেন্টের কর্নেলকে দিলেই তুলকালাম হবে।
—- বোকার মত একবার বলছ তোমার তোলা। একবার বলছ অন্য কারওর আঁকা। ডিসগাস্টিং… রেগেমেগে বলি তাকে।
অপ্রস্তুত আনস্মার্ট যন্ত্রবাবু বলল, —- আমার তোলা ছবিই। কিন্তু অন্য কারওর আঁকা ছবির ফটো এটি।
—- তাই বলো! কার আঁকা?
—- আজ্ঞে লক্ষ করে দেখুন ছবিতে দশজন নিরাবরণ মানুষ প্রত্যেকেই পুরুষ। কোনও মেয়ে নেই। ওই উপত্যকায় বেঁচে থাকা শেষ মেয়েটির আঁকা ছবি এটা।
এই দশজন পুরুষ ওখানের সব কজন মেয়েকে মেরে ফেলেছে। এমনকি মেরে ফেলেছে ছবি যে এঁকেছিল সেই শেষ মেয়েটিকেও। ছবি আঁকা শেষ হলেই।
—- ছবির চালচিত্রের ওই লাল বেগুনি আকাশটা?
—- আগুন স্যার! মেয়েদের ক্রোধের আগুন। ঘেন্নার আগুন। মেয়েটার তুলিতে উঠে এসেছে।
—- আর ওই গোল চাঁদপানা বস্তুটা।
—- চাঁদপানা নয় স্যার। চাঁদই। চাঁদই যে নির্ধারণ করে ওই দশটা পুরুষ মানুষের ধর্মবিধি।
—- ওরা আকাশের দিকে মুখ তুলে অমন হা পিত্যেশ করছে কেন?
—- বাঃ, করবে না? পৃথিবীতে নতুন প্রাণকে ধারণ করবে কে? মেয়েশূন্য পুরুষ পৃথিবী তাই হাহাকার করছে। করতে হবেই।
—- পুরুষরা এই ছবিটা, এটাও কি দেখতে পায়নি?
—- সেটাও তো ছবিতে বোঝানো। ওরা অন্ধ। একটা পুরুষেরও চোখের মণি নেই। ছবিটা জুম করে দেখুন স্যার!
ধন্য আমার যন্ত্রবাবুর এআই!