An Initiative of Swasthyer Britto society

  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Close

আয়ুষ্মান ভারতঃ বীমা কোম্পানীর স্বার্থে

Ayushman-Bharat
Dr. Punyabrata Gun

Dr. Punyabrata Gun

General physician
My Other Posts
  • December 7, 2019
  • 11:36 am
  • No Comments
Intro: কেন্দ্র সরকার বলছেন আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে উপকৃত হবেন ৫০ কোটি দেশবাসী। ডা পুণ্যব্রত গুণ যুক্তি দিয়ে বলছেন–না, আসলে লাভবান হবে বেসরকারী স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানীগুলোই।
১লা ফেব্রুয়ারি ২০১৮ রাষ্ট্রীয় বাজেট পেশ করা হয়েছিল। ঘোষিত হয়েছিল এক নতুন স্বাস্থ্য প্রকল্প যার নাম দেওয়া হয় National Health Protection Scheme (NHPS)। বলা হয় দেশের দশ কোটি গরীব পরিবার অর্থাৎ প্রায় পঞ্চাশ কোটি মানুষের জন্য পরিবার পিছু হাসপাতালে ভর্তি থাকলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবীমার সুবিধা দেওয়া হবে এই প্রকল্পে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই বছরের ট্যাগলাইন “Universal Health Coverage” অর্থাৎ সবার জন্যে স্বাস্থ্য-পরিষেবার ব্যবস্থা করা। কেন্দ্রের মোদী সরকার নাকি সেই পথে চলার জন্য এই প্রকল্প এনেছে।
কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের পরই আমরা খতিয়ে দেখেছিলাম সবার জন্যে স্বাস্থ্যের দিকে হাঁটার কোনো লক্ষণ সরকারের এই বাজেটে দেখা যাচ্ছে কিনা। দেখেছিলাম—
• দেখলাম স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বেড়েছে গতবছরের বরাদ্দের ২.৫% মাত্র।
• বলা হয়েছে ১.৫ লক্ষ স্বাস্থ্য ও ভালো থাকার কেন্দ্র (Health and Wellness Centre) থাকবে যার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১২০০ কোটি টাকা অর্থাৎ কেন্দ্রপিছু মাত্র ৮০ হাজার টাকা করে। আমরা দেখলাম দেশে এখন সাবসেন্টার আছে ১৫৬২৩১ টি। তার মাত্র ১১% মান সম্মত। বেশির ভাগ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যথেষ্ট ওষুধ বা কর্মী নেই। ২০% সাবসেন্টারে জলের ব্যবস্থা নেই, ২৩% শতাংশে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ।
• প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্যব্যবস্থার বেহাল অবস্থা নিয়ে কোনো যৌক্তিক সমাধানের উল্লেখ ছিল না প্রকল্পে।
• দীর্ঘস্থায়ী অ-সংক্রামক রোগ (Chronic Non-Communicable Diseases) যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ে কোনো কথা ছিল না।
• স্বাস্থ্য-বাজেটে প্রাধান্য পেয়েছিল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নিতে হয় সেই সমস্ত চিকিৎসা, অপারেশন ও পরীক্ষা নিরীক্ষা—দ্বিতীয় স্তর (secondary) এবং অন্তিম স্তর (tertiary)-এর হাসপাতালে যেগুলি পাওয়া যায়।

১৫ই আগস্ট লাল কেল্লায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মদিনে সূচনা হবে প্রধান মন্ত্রী জন আরোগ্য অভিযানের। ইতিমধ্যে প্রকল্পের জনপ্রিয় নাম দেওয়া হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত বা জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা মিশন (National Health Protection Mission)—শাসকদলের প্রশংসকেরা ডাকছেন ‘মোদীকেয়ার’ নামে। পূর্ব মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা প্রবর্তিত Patient Protection and Affordable Care Act-কে যেমন Obamacare নামে ডাকা হয় তেমন আরকি! ঘোষণা মতো প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়েছে ২০১৮-র ২৫শে সেপ্টেম্বর।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এটি নাকি বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো চিকিৎসা উদ্যোগ, প্রায় ২৭-২৮টি ইউরোপিয়ান দেশের মিলিত জনসংখ্যার সমান জনসংখ্যাকে এটি নাকি পরিষেবা দেবে।  কানাডা, মেক্সিকো আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিলিত জনসংখ্যার প্রায় সমান নাকি হবে এই প্রকল্পে সুবিধাভোগীর সংখ্যা। দেশের গরীব ও বঞ্চিত মানুষ নাকি এই প্রকল্পে লাভবান হবেন।
কিন্তু প্রকল্পটিকে খুঁটিয়ে দেখলে দেখা যায়, এটি বিশ্বের এই ধরনের সর্ববৃহৎ প্রকল্প নয়। তাছাড়া এই প্রকল্পটি এমন ভাবে পরিকল্পিত হয়েছে যাতে, দুর্নীতির বন্যা বয়ে যাবে। তার চেয়েও বড় ব্যাপার হল দেশের সংবিধান রাজ্যগুলিকে যে অধিকার দিয়েছে, তার ভিত নড়িয়ে দেবে এই প্রকল্প।
• আয়ুষ্মান ভারতে ১০.৭৪ কোটি পরিবারকে পরিবার পিছু ৫ লাখ টাকা অবধি দেশব্যাপী সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে ক্যাশলেস চিকিৎসার সুবিধা দেওয়ার কথা। বিভিন্ন রাজ্যগুলির স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য দেখা যাচ্ছে—রাজ্যগুলি বিনামূল্যে চিকিৎসার যে বিভিন্ন প্রকল্প চালায় সেগুলির মিলিত সুবিধাভোগী পরিবারের সংখ্যা ১২ কোটিরও বেশি।
 মহারাষ্ট্রের মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলে জন আরোগ্য যোজনায় ২.২ কোটি কম আয়ের পরিবারকে বিনামূল্যে উন্নত মানের চিকিৎসা দেয়, আয়ুষ্মান ভারত মহারাষ্ট্রে ৮৩ লাখ পরিবারের দায়িত্ব নেবে।
 গোয়ার চিকিৎসাব্যবস্থা সবার জন্য বিনামূল্যে, প্রায় ২.২৫লক্ষ পরিবারের জন্য। আয়ুষ্মান ভারত কিন্তু গোয়ায় দায়িত্ব নেবে মাত্র ৩৭,০০০ পরিবারের।
 পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবীমা যোজনা ও স্বাস্থ্যসাথী মিলিয়ে ১.৫১ কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়, আয়ুষ্মান ভারত ১.১২ কোটি পরিবারের দায়িত্ব নেবে।
• কারিগরী সহায়তার জন্য সরকার যে জার্মান কোম্পানীকে নিযুক্ত করেছে, সেই GIZ রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বীমা যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে আগে থেকেই অভিযুক্ত।
• যে আর্থ-সামাজিক ও জাতি জনগণনার ওপরে ভিত্তি করে এই ১০ কোটি পরিবারের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়েছে, সেটি ২০১১-র, ৭ বছরের পুরোনো। আয়ুষ্মান ভারত যাঁরা কার্যকর করছেন, তাঁদের অন্দরমহলের খবর, যে পরিবারগুলি এখন আর বঞ্চনার মাপকাঠি পূরণ করে না, তাদের বাদ দেওয়া হবে।
• জানা যাচ্ছে যাদের থার্ড পার্টি এডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে নিযুক্ত করা হচ্ছে, তাদের বেশির ভাগই বিজেপি-আরএসএস-এর ঘনিষ্ঠ।
• বলা হচ্ছে ১৩,০০০ হাসপাতাল আয়ুষ্মান ভারতের জন্য তালিকাভুক্ত। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বীমা যোজনায় যে হাসপাতালগুলি তালিকাভুক্ত ছিল তারা আপনা থেকেই আয়ুষ্মান ভারতে তালিকাভুক্ত হয়ে যাবে। এই হাসপাতালগুলির মধ্যে অনেকগুলির পরিকাঠামোই যথাযথ নয়।
• আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল গুরুতর দুর্নীতিতে লিপ্ত হলেও সহজে কোন তালিকাভুক্ত হাসপাতালকে তালিকা থেকে বার করা যাবে না। জালিয়াতিকে পাঁচটি শ্রেণীতে বিন্যস্ত করা হয়েছে। কোন এক শ্রেণীতে তিনবার অভিযুক্ত না হলে তাকে তালিকা থেকে বার করা হবে না। মানেটা এরকম বিভিন্ন শ্রেণীতে জালিয়াতি করার মোট অন্তত ১০টা সুযোগ পাবে একেকটা হাসপাতাল।
• প্রস্তাব করা হয়েছে সরকারী হাসপাতালে আয়ুষ্মান ভারতের অধীনে অপারেশন হলে ইনসেন্টিভ দেওয়া হবে। এতে অপ্রয়োজনে অপারেশনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, যেখানে অপারেশন না করলেও হয় সেখানে অপারেশন করার প্রবণতা বাড়বে। যেমন রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বীমা যোজনায় দেশের অনেক জায়গায় মহিলাদের মাসিক রজোস্রাব সংক্রান্ত যে কোন সমস্যার জন্যই হিস্টেরেকটমি (জরায়ু কেটে বাদ দেওয়া) করে দেওয়া হয়।
• স্বাস্থ্য সুরক্ষার একটি বহু-পরীক্ষিত মডেল হল বীমা মডেল যেখানে ক্লেম (চিকিৎসা খরচের দাবী) পর্যালোচনা করে মঞ্জুর বা নাকচ করা হয়। কিন্তু আয়ুষ্মান ভারতে নেওয়া মডেলটি হল ট্রাস্ট মডেল, যেখানে ক্লেম পর্যালোচনার কোনও ব্যাপার নেই। আশংকা করা যায় মিথ্যা দাবী পেশ করে বিজেপি-র কোষ ভর্তি করার জন্যই ট্রাস্ট মডেল বেছে নেওয়া।
আরও সমালোচনা এসেছে প্রকল্পটি সম্পর্কে—
সংবিধানের সপ্তম তপশিল অনুযায়ী স্বাস্থ্য রাজ্যের বিষয়। AIIMS-এস এর মতো কিছু প্রতিষ্ঠান বাদে অধিকাংশ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র রাজ্য সরকারগুলি চালায়। দেশ-জোড়া স্বাস্থ্যবীমা ব্যবস্থা রাজ্যের দায়িত্বকে লঘু করে দেবে।
এই প্রকল্পে অংশগ্রহণের মানে হল রাজ্যগুলিকে বীমার প্রিমিয়ামের জন্য টাকা দিতে হবে। ফলে যে টাকা রাজ্যে চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজে লাগতে পারত তা বীমার প্রিমিয়াম দিতে খরচ হবে। বীমাকৃত ব্যক্তিরা দেশের যে কোন রাজ্যে তালিকাভুক্ত হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা পেতে পারবেন। তাই যে সব রাজ্যের চিকিৎসা পরিকাঠামো অপেক্ষাকৃত উন্নত, সেখানে রোগীরা ভীড় জমাবেন।
দেশের সব রাজ্যে মানুষ সমান মাত্রায় চিকিৎসাপরিষেবা পান না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান হল প্রতি ১০০০ মানুষ পিছু একজন করে ডাক্তার থাকা উচিত। ভারতে গড়ে ১০০০ জন মানুষ পিছু ডাক্তারের সংখ্যা ০.৬৫ জন। কিন্তু কর্নাটক, তামিলনাড়ু, কেরালা, পাঞ্জাব, গোয়া আর দিল্লীতে ১০০০ জনে ডাক্তারের সংখ্যা ১-এর বেশি। তামিলনাড়ুতে ২৫৩ জন মানুষ পিছু ১ জন ডাক্তার আর দিল্লীতে ৩৩৪ জন পিছু ১ জন। তার ফলে চিকিৎসার উপলব্ধতার বিচারে এই রাজ্যদুটি নরওয়ে এবং সুইডেনের সঙ্গে তুলনীয়। আবার ঝাড়খন্ড, হরিয়ানা আর ছত্তিশগড়ে ৬০০০জন মানুষ পিছু ১ জন ডাক্তার।
যে রাজ্যগুলির পরিকাঠামো ভাল, সেগুলিতে বছর বছর স্বাস্থ্য খাতে বেশি খরচ করা হয়েছে। ২০১৮-এ নিতি আয়োগের এক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্যসূচকের বিচারে সর্বোচ্চ তিনটি রাজ্য হল কেরালা, পাঞ্জাব এবং তামিলনাড়ু। আবার দেখা যাচ্ছে ২০০৪-’০৫ থেকে ২০১৫-’১৬ অবধি স্বাস্থ্যখাতে সবচেয়ে বেশি খরচও করেছে এই তিনটি রাজ্য। ২০০৪-’০৫-এ দেশের মধ্যে স্বাস্থ্যখাতে সবচেয়ে কম খরচ করা তিনটি রাজ্যে গড় মাথাপিছু স্বাস্থ্য খরচ ছিল ১২২ টাকা, বেশি খরচ করা রাজ্যগুলির তুলনায় ১৩০টাকা কম। তারপরের ১০ বছরে এই ফারাক ১৩০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছ ৫৬১ টাকায়।
ভালো পরিকাঠামোর রাজ্যগুলিতে অন্য রাজ্যগুলির রোগীদের ভীড়ের ফলে দু ধরনের অবস্থা হতে পারে। প্রথমত রোগীর চাপে এই রাজ্যগুলির পরিকাঠামো ভেঙ্গে পড়তে পারে। উল্টোটাও হতে পারে। খারাপ পরিকাঠামোর রাজ্যগুলি তার অধিবাসীদের বীমার প্রিমিয়াম বাবদ যা খরচ করবে তা উন্নত পরিকাঠামোর রাজ্যগুলিতে চলে যাওয়ায় তাদের পরিকাঠামো আরও উন্নত হতে পারে।
দুটো পরিস্থিতিতেই পিছিয়ে থাকা রাজ্যগুলি নিজেদের পরিকাঠামোর জন্য অর্থবিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহ হবে। বরং তারা উন্নত পরিকাঠামোর রাজ্যগুলির ওপর এবং বেসরকারী ক্ষেত্রের ওপর বেশি বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
আমাদের বক্তব্যঃ
• যে সব দেশে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বীমাব্যবস্থার প্রাধান্য বেশি সেই দেশে সার্বিক স্বাস্থ্যের মান আশানুরূপ নয়। আমেরিকার উদাহরণ দেখে তা ভালোভাবে বোঝা যায়। চিকিৎসা অপ্রয়োজনে ব্যবহার হতে বাধ্য বীমাব্যবস্থার দেশগুলিতে। সেখানে চিকিৎসার বেশ কিছু খরচ রোগীর নিজের পকেট থেকে দিতে হয়। এইরকম খরচের পরিমাণও কমানো সম্ভব নয় বীমাব্যবস্থায়।
• National Health Protection Scheme (NHPS) আউটডোরের রোগীদের কোনো সুবিধা দেবে না। অথচ তথ্য বলছে, পকেট থেকে যে চিকিৎসা-খরচ একজন রোগী করেন তার শতকরা ৬৩ ভাগ করতে হয় আউটডোর চিকিৎসার জন্য। মানে রোগীর মোট নিজস্ব চিকিৎসা খরচের  শতকরা মাত্র ৩৭ ভাগ টাকা বীমা ব্যবস্থা দিলেও দিতে পারে।
• সরকার সরাসরি সেবাপ্রদানকারীর (Service Provider) দায়িত্ব না নিয়ে বরং বীমা ব্যবস্থার মাধ্যমেই স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে চাইছে। আগেই বলেছি প্রায় ১২ কোটি পরিবার RSBY আর বিভিন্ন রাজ্য সরকারী বীমা যোজনার আওতাভুক্ত হয়ে আছেন। তা সত্ত্বেও কিন্তু চিকিৎসা পরিষেবা পেতে সাধারণ মানুষকে নিজের পকেট থেকে যে খরচ দিতে হয়, তার পরিমাণ ক্রমশ বেড়েছে।
• শিক্ষা সেস ৩% থেকে বাড়িয়ে ৪% করা হল যা নেওয়া হবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেস হিসাবে। এতে আয় বাড়বে ১১০০০ কোটি টাকা, যার ১০% এর কাছাকাছি মাত্র স্বাস্থ্যখাতে দেওয়া হবে।
• আয়কর ছাড়ের জন্য হেলথ ইন্সুরেন্স প্রিমিয়ামের ন্যুনতম পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০০০০টাকা করা হয়েছে।
• আমরা পরিষ্কার ভাবে মনে করি আয়ুষ্মান ভারত আসলে বেসরকারী বীমা কোম্পানী ও কর্পোরেট হাসপাতালগুলিকে জনগণের করের টাকা উপহার দেওয়ার প্রকল্প। স্বাস্থ্যবীমা কোম্পানিগুলির মোট ব্যবসা এখন ৩০,৩৯২ কোটিরও বেশি! আর এই ব্যবসার বৃদ্ধির হার এখন প্রতি বছরে ২৫%! বীমা কোম্পানিগুলির এই স্বাস্থ্যোন্নতির পেছনে সরকারী স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও তার হাজাররকম স্বাস্থ্য প্রকল্পের ভূমিকা অসামান্য। নীতি আয়োগ পুষ্টি জোগাবে এই বীমা ব্যবস্থাতে। নীতি আয়োগ প্রথম থেকেই অন্য খাতে খরচ কমিয়ে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পরিবর্তে স্বাস্থ্যে বেসরকারি বিনিয়োগের পক্ষে জোর সওয়াল করে এসেছে।
স্বাস্থ্যবীমা ছাড়া কি আর কোনো উপায় ছিল না দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবান করে তোলার?
• আমাদের হাতের কাছেই আছে ইএসআই। বেতনের উর্ধসীমা তুলে দিয়ে সমস্ত শ্রমিক কর্মচারীকে এর আওতায় চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া যায়। অসংগঠিত শ্রমজীবীদের ইএসআই-এর আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আমরা আশ্চর্য হয়ে দেখছি একটা সফল সরকারি বীমাব্যবস্থার মডেল থাকতে বেসরকারি বীমাব্যবস্থাকে জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে।
• ২০১০-এ যোজনা কমিশন দ্বারা গঠিত সবার জন্য স্বাস্থ্যের লক্ষ্যে উচ্চস্তরীয় বিশেষজ্ঞ দল হিসেব করে দেখিয়ে সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্যখাতে খরচ দেশের মোট আভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি-র ২.৫% থেকে ৩% এর মধ্যে আনতে পারলেই সরকার দেশের সমস্ত নাগরিককে অত্যাবশ্যক সমস্ত প্রাথমিক স্তরের, দ্বিতীয় স্তরের এবং অন্তিম স্তরের পরিষেবা সমস্ত মানুষকে বিনামূল্যে দিতে পারে। বরাদ্দ জিডিপি-র মাত্র ০.৫% বাড়ালে সমস্ত নাগরিককে তাদের প্রয়োজন মাফিক অত্যাবশ্যকীয় সমস্ত ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া সম্ভব। জিডিপি-র ২.৫% স্বাস্থ্যখাতে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ২০১৭-র জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিতেও। সেখানে এখন আমরা চলছি ১%-রও কম নিয়ে।
• সরকারী স্বাস্থ্যব্যবস্থা থাকলে সাধারণ মানুষও বীমার প্রিমিয়াম না দিয়ে স্বাস্থ্যের জন্যে কিছু বাড়তি ট্যাক্স দিতে কুন্ঠিত হন না। সেই টাকায় সকলের জন্যে স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করা যায়, হাসপাতালে ভর্তি বা অপারেশন জাতীয় সুবিধা ছাড়াও দীর্ঘস্থায়ী রোগের ওষুধ সরবরাহ করা যায়, রোগ যাতে না হয় তার জন্যে সমাজের স্তরে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরালো করা যায়, অন্তিম স্তরের স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় প্রাথমিক ও দ্বিতীয়স্তরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে আরো বেশি কার্যকরী করা যায়, হাসপাতালগুলিতে যাতে সবসময় ডাক্তার নার্স থাকেন তার ব্যবস্থা করা যায়, সাধারণ অসুখের চিকিৎসা, আপতকালীন চিকিৎসার অবস্থার উন্নতি করা যায়।
• আয়ুষ্মান ভারত সর্বজনীন নয়, কেবল নাকি বঞ্চিতদের জন্য। যে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সকলের জন্য একই রকম সুবিধা থাকে না, সেখানে কেবলমাত্র গরীবদের জন্যে নেওয়া কোনো প্রকল্প শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায় না, অবহেলায়, দুর্নীতিতে চাপা পড়ে যায়—এটাই অন্যান্য দেশেরও অভিজ্ঞতা। সকলের জন্যে ব্যবস্থা থাকবে একটাই, আর সকলেই প্রয়োজনমত সেই ব্যবস্থার সুযোগ নেবে, এটাই কার্যকর ব্যবস্থা। এমনটা না হলে যেটা হয় যে, যার দরকার সে পায় না, আর কেউ প্রয়োজনের অতিরিক্ত পায়।
আয়ুষ্মান ভারত নয়, সবার জন্য স্বাস্থ্যের দাবীতে সোচ্চার হোন।
©️ডাঃ পুণ্যব্রত গুণ
PrevPreviousহাসপাতাল জার্নাল
Nextজনস্বাস্থ্যের দাবীতে জুনিয়র ডাক্তাররা যেদিন পথে নেমেছিলNext

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত পোস্ট

প্রাণ আছে, আশা আছে

April 20, 2021 No Comments

প্রায় কুড়ি বাইশ বছর আগের কথা, আমি তখন একটি ছোট হাসপাতালে কর্মরত। কর্মী ইউনিয়নগুলির অত্যুগ্র মনোযোগের জন্যে এই হাসপাতালের বিশেষ খ‍্যাতি। কর্মী ইউনিয়নগুলির নেতৃবৃন্দ হাসপাতালের

প্রসঙ্গঃ শিশুদের কোভিড

April 20, 2021 No Comments

প্রথমেই ভালো দিকটা দিয়ে শুরু করি। বড়দের তুলনায় শিশুদের কোভিড আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম এবং ভাইরাস আক্রান্ত হলেও রোগের ভয়াবহতা তুলনামূলক ভাবে কম। এই লেখায়

দ্বিতীয় ঢেউ এর দিনগুলি ৮

April 20, 2021 No Comments

রোজা শুরু হতেই বমি আর পেটে ব্যথার রোগীরা হাজির হন। পয়লা বৈশাখের আগের দিন দুপুরে চেম্বার করছিলাম। আজ ভোট প্রচারের শেষ দিন। ঠাঁ ঠাঁ রোদ্দুরে

চাই মাস্ক, টিকা, পর্যাপ্ত কোভিড বেড, র‍্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট এবং চিকিৎসাকর্মীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা

April 19, 2021 1 Comment

কোভিড 19 এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় দেশ এবং রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা যখন নগ্ন হয়ে পড়েছে, সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসকদের সর্ব বৃহৎ সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের

যদি নির্বাসন দাও

April 19, 2021 No Comments

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা

সাম্প্রতিক পোস্ট

প্রাণ আছে, আশা আছে

Dr. Aniruddha Kirtania April 20, 2021

প্রসঙ্গঃ শিশুদের কোভিড

Dr. Soumyakanti Panda April 20, 2021

দ্বিতীয় ঢেউ এর দিনগুলি ৮

Dr. Aindril Bhowmik April 20, 2021

চাই মাস্ক, টিকা, পর্যাপ্ত কোভিড বেড, র‍্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট এবং চিকিৎসাকর্মীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা

Doctors' Dialogue April 19, 2021

যদি নির্বাসন দাও

Dr. Chinmay Nath April 19, 2021

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

312744
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।