Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

আরম্ভের শুরু কথা

IMG_20210917_212150
Dr. Dipankar Ghosh

Dr. Dipankar Ghosh

General Physician
My Other Posts
  • September 18, 2021
  • 7:52 am
  • 2 Comments

রাস্তা ধরে ফিরতে ফিরতে পকেট হাতড়ে বিতান চাবির থোকাটা বার করে হাতে নিলো, যে চাবিটার মাথার ঘাটগুলো খুব কাছে কাছে ছোটছোট একটু বেশী মসৃণ সেটা কোলাপ্সিবল গেটের চাবি। উল্টো দিক থেকে দুজন মানুষ আসছিলো। লঘু পায়ের আওয়াজে মনে হয় কমবয়সী দুজন মানুষ। হালকা সুগন্ধ – একজন নিশ্চয়ই নারী। বিতানকে দেখে একটু সরে দাঁড়ালো। একটুখানি বাড়তি সম্মান। এবার গেট এসে গ‍্যাছে। ডানদিকে দুপা। আবার গেট টেনে বন্ধ করে তিনপা এগোলেই দুধাপ সিঁড়ি। তারপর একএকটা পর্বে বারোটা ধাপ। মাঝখানে সমান মেঝে। তখন বাঁদিকে ঘুরতে হবে। সব চেয়ে লম্বা চাবিটা ঘরের সদর দরজার। ঢুকে দরজা ঠেলে বন্ধ করা।

ক্লিক করে দরজার ভেতরের ইয়েল তালা আটকে গ‍্যালো। বিতান ছিটকিনি লাগায় না। উঠে গিয়ে খোলা বড় ঝামেলা। দরজার বাঁদিকে হাওয়াই চটি রাখা। পায়ে চটিটা গলিয়ে নিয়ে শোবার ঘরে গ‍্যালো। মনুদার দোকানে চারটে রুটি আর আর আলুর দম খেয়েছে। এখন বিতান একটুখানি বারান্দায় বসবে। অনেক দিনের ওভ‍্যেস। বাবা যখন ছিলেন তখন থেকেই। এরপর শুয়ে পড়বে। ততক্ষণ একটু খোলা বাতাস খাওয়া আর কি!

এখন ঠান্ডা অনেক কম। তবু বাতাসে একটা শিরশিরানি ভাব- কুয়াশা কুয়াশা গন্ধ। মনে হচ্ছে কারেন্ট চলে গেছে। কোনও বাড়ি থেকে টিভির শব্দ আসছে না। এ্যাতো তাড়াতাড়ি তো সব চুপচাপ হয় না। এখন আবার ভোরের দিকে শিশির পড়ে। সকালে চা খেতে গেলে পায়ে ভেজা ভেজা ছোঁয়া লাগে। বিছানার কাছে গিয়ে যে চাদরটা সব চেয়ে খসখসে মোটা সেটা গায়ে টেনে লম্বা হ‌ওয়ার অপেক্ষা। তারপর এই বস্তির ভেতরেও পাখিদের ডাক শুনে- চায়ের দোকানের উনুনের ধোঁয়ার গন্ধে ঘুম থেকে ওঠা।

চা খেয়ে ফিরতে আজ বেলা হয়ে গ‍্যাছে। বাইরে বেশ চচ্চড়ে গরম পড়ে গেছে। আর একটু দুপুর হলে চান করে খেতে বেরোনো। সুইচ বোর্ডের ওপরের ডানদিকের সুইচটা ফ‍্যানের। রেগুলেটর বাঁ দিকে ঘুরিয়ে বিতান ফ‍্যানের শব্দটি মন দিয়ে শোনে। একটা গঁং গঁং আওয়াজ হচ্ছে। তারমানে খুব আস্তে আস্তে ঘুরছে। জোরে চললে খটখট খটাখট শব্দ হয়। বিছানা রোদ্দুরে গরম হয়ে গ‍্যাছে। রাতে চাদর আর দিনে ফ‍্যান।

কি আবহাওয়া রে বাবা, বিতান একটু মুচকি হাসে। হাত বাড়িয়ে বালিশটা ঠিক জায়গায় নিয়ে বালিশে মাথা পাতে। ফ‍্যানের আওয়াজ- পাশের বাড়িতে বাপ ছেলের তর্কের জড়ানো জড়ানো দ্রুতকথন। আর কোনও বাড়িতে বাসন ধোয়ার শব্দ। এরমধ্যে আবার দরজা খোলার শব্দ হলো। খুট করে ল‍্যাচ কি ঘোরানোর আওয়াজ।এখন আবার কে এলো? মাসি আসার তো এখনও দেরী আছে!

দরজা বন্ধ হলো। ছিটকিনি তোলার শব্দ। ছিটকিনি দেওয়া মানে মাসি নয়। বাড়িওয়ালি বৌদি। বাড়িওয়ালা সুবীরদা অফিস চলে গেলে মাঝে মাঝে বৌদি আসেন। আজও তাই। বৌদি ঘরে এলে একটা মাথার তেল আর জর্দার গন্ধে ঘরটা ভরে যায় হাতে শাঁখা চুড়ির ঠুং ঠুং আওয়াজ হয়। বারান্দার দরজা বন্ধ করার শব্দ তারপর গায়ের ওপর শাড়ির আলতো ছোঁয়া- বিছানার পাশের জানালা বন্ধ হলো। চুড়ি শাঁখার আওয়াজ শাড়ির খসখস- ফ‍্যনটা বেড়ে গেল। খটাং খট করে পুরোনো ফ‍্যান পূর্ণ গতিতে চলতে থাকলো। হাওয়া কাটার হুহু শব্দ। বৃষ্টির মতো কানে আসে। দেওয়াল ক‍্যালেন্ডার হুহু হাওয়ায় ডান পাশ বাঁ পাশে ছটফট করে দুলতে লাগলো একটু পরে আবার ছিটকিনি খোলার শব্দ। বৌদি চলে গেছে।

এসময়ে খুব একটা পাপবোধ হয়। একটা দমবন্ধ ভাব গলার কাছে দলা পাকিয়ে ওঠে। কিন্তু এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে আবার শরীর নারীসঙ্গ চায়। জৈবপ্রবৃত্তি আর অপরাধবোধ ঢেউয়ের মতো আসে আর ঢেউয়ের মতো যায়। বিতান উঠে পাজামাটা হাতড়ে হাতড়ে পরে শুয়ে পড়লো। এরকম সময়টা নিজের ওপর ভীষণ ঘেন্না হয় ।

কি করবে কোথায় আর যাবে? মাঝে মাঝে ভাড়ার টাকা দিতে না পারলেও সুবীরদা কিছু বলে না। হয়তো বৌদি বারণ করে দিয়েছে। নাহলে তো বিতানের পেট চলতো না, বাড়িও ছেড়ে চলে যেতে হতো। ঐ তো মাস গেলে পোস্ট অফিসের কটা মাত্র টাকা।

মা যখন চলে গেল তখনও বিতান চোখে অল্প অল্প দ‍্যাখে। তারপরেই বাবা কেমন চুপচাপ হয়ে গেল। তারপর ক্রমশঃ বাবা অফিস যাওয়া বন্ধ করে দিলো। বিতান বুঝতে পারছিলো বাবার টাকা ফুরিয়ে আসছে। বাবার হাত ধরে আগের পাড়া ছেড়ে এপাড়ায়। তখন দৃষ্টি শক্তি চলে গেছে। বাবা সন্ধে হলেই গান গাইতে বসিয়ে দিতো। বলতো গানটা ছাড়িস না রে- তোকে স্পেশাল স্কুলে পাঠিয়ে লেখাপড়া শেখানোর ক্ষমতা তো আমার নেই- এটা অন্ততঃ ধরে রাখ।”

রাত বিরেতে উঠে বাবা পায়চারি করতো, উঠে উঠে বমি করতো। রাতের বেলায় বাবাকে জড়িয়ে ধরলে বিতান বুঝতে পারতো বাবার বুকে শুধু চামড়া আর পাঁজর। ওর ভয় করতো।

বাবা বলতো “ডাক্তার দেখিয়েছি রে পাগল, ওষুধ দিয়েছে তো খাচ্ছি এখন” বলে বিতানের মাথার চুল এলোঝেলো করে দিতো। ভাবতে ভাবতে বিতান হয়তো অন‍্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলো- শুনতে পায়নি মাসি কখন এসেছে।

“হারামী মেয়েছেলেটা আজকেরে আবার এয়েছিলো?”

বিতান চমকে গিয়ে ঘাড় নাড়ে।

“ভাই তুমি বারণ করোনা ক‍্যানে?”

বিতান নিরুত্তর শুয়ে থাকে ।

“জানি সব‌ই বুজি- টাকা দে’ কিনে নে’ছে- বারণ করার‌ও উপায় নেই, সোয়ামিটাও মেনিমুখো … ” মাসি বকবক করতে করতে ঘর পরিষ্কার করতে থাকে। “ছেলেটার ভাড়ার ট‍্যাকা দেওয়ার ক্ষ‍্যাম্তা নেই তাই এদিক দে’ উসুল করে ন‍্যায় – পুরুষমানুষ পেলি আর বয়েস বিচার করেনা গো? বাচ্চা বুড়ো কারো ছাড় নেই …” বলে যেতে থাকে বিতানের ছোটবেলার কথা। চলে যাওয়া মায়ের কথা। বাবার কথা। “ভাই তোমার চোখে আলো অন্ধকার কিচ্ছু দ‍্যাখো না, না? সব কালো? ভগমানের কি বিচার বুজি না …”

বিতান মৃদু গলায় একঘেঁয়ে সুরে বলতে থাকে- “মাসি তুমি কান দিয়ে দেখতে পাও?”

মাসি থতমত খায় “এ্যাঁ?”

“তুমি কি হাতের আঙুল দিয়ে কালো সাদা রং দেখতে পাও? তেমনি আমার চোখে আমি কিচ্ছু দেখতে পাই না- কালো না সাদা না আলো না অন্ধকার না কিচ্ছু না”

মাসি চুপ করে থাকে বোধহয় বুঝতে পারে না অথবা বুঝতে পারে। কাছে এসে একটা গামছা মতোন কিছু দিয়ে মুখ বুক থেকে ঘসে ঘসে কি যেন মুছতে থাকে।

“কি মুছছো গো মাসি?”

মাসি উত্তর দ‍্যায় না, মনে হয় মাসি কাঁদছে। গামছা দিয়ে মুছতেই থাকে। সব দাগ কি মুছে ফ‍্যালা যায়?

“ভাই ওঠো জামাটা গায়ে দাও আজকেরে মাস পয়লা , পোস্ট আপিস যাবে নি?”

বিতান জানালার পাশে ফতুয়াটা খুঁজে পায়। সোজা উল্টো বোঝে পকেটটা বাইরে না ভেতরে সেটা আঙ্গুল দিয়ে অনুভব করে। মাসি পোস্ট অফিসের ব‍্যাগটা চেনে, নিয়ে ন‍্যায়। দরজায় তালা দিয়ে বিতান মাসির খসখসে কড়া পড়া আঙ্গুল ধরে সিঁড়ি ভাঙে।

দূরে কার বাড়িতে একটা খেঁকুরে স্পিৎজ চিৎকার করতে থাকে। একটা ফেরিওয়ালা হাঁকে “পুরানা টুটা ভাঙা হার্মোনিয়াম আছে, ইউপিএস বেটারি টিভি…” টিভির টি-শব্দটায় কিরকম একটা অদ্ভুত সুর দিয়ে বাক্য শেষ করে।

“ভাই তোমার হার্মোনিমাটা আছে?”

বিতান ঘাড় নাড়ে।

“বাজাতে পারবা? আগের মতোন?”

বিতান হাসে- অন্ধের হাসি বড় সরল হয়। একটা ইঁটের টুকরোয় বিতান হোঁচট খায়।

“ভাই দেখে হাঁটবে তো?”

মাসি ভুলটা বুঝে চুপ করে যায়। “পায়ে লেগেছে? একটু ডাঁড়াই?”

বাবাকে যখন কাঁধে নিয়ে চুল্লিতে যাচ্ছে তখন বিতান একটা জ্বলন্ত কাঠের ওপর পা দিয়ে ফেলেছিলো। ও সহ‍্য করেনি? আর এই ইঁটের ঠোকায় একটু নখ উল্টোনো? ধ‍্যুস এতে কিস‍্যু হবে না। বিতান মাসির হাত ধরে হাঁটতে থাকে।

“ভাই, তুমি জানো কি? আমার সমীর যখন ছোট ছেলো তখন আমি মোড়ে মোড়ে ভিক্ষা করতাম, প‍্যাট তো চালাতে হবে। আস্তে আস্তে ঘরে কাজের মাসি হয়ে গেনু- ভাই দেখোনে সামনে গত্ত আছে ….”

ঘররররর করে অটো, হর্ন বাজানো বাস- বাসের দেওয়াল থাবড়ানোর আওয়াজ সব পার হয়ে পোস্ট অফিস। মাসি জেনে এলো লাইন আছে- লম্বা। তাই বিতানকে একটা বাক্সের ওপর বসিয়ে দিল।

হঠাৎ দুড়ুম করে একটা কিছু সজোরে পড়ে যায়। বিতানের মুখ শক্ত হয়ে ওঠে। কপালে ঘাম জমে।

সেদিন সকালে বিতান শুয়ে ছিলো। কিছু ভেঙে পড়ার শব্দে দৌড়ে যেতে গিয়ে বাবার শীর্ণ শরীরটায় হোঁচট খেয়ে পড়লো মাটিতে পড়ে থাকা ভাঙা বেসিনের টুকরোর ওপর। বাবার ঠান্ডা শরীরের পাশে। তারপর কারা যে এলো ভিড় ধূপ মালা বিতান কিছুই জানে না।

“বিতান রায় এসো টাকাটা তোলো- পেনটা ধরো- ঠিক আছে আরো নিচে হ‍্যাঁ স‌ই করতে পারবে? বাঃ ঠিক আছে।”

এবার পকেটে টাকা ভরে ফেরা।

“ভাই তুমি আমার সাথে থাকবা?”

বিতান কথাটা বুঝতে পারে না।

মাসি হাত ধরে যেতে যেতে বলে “আমার সমীর তো কথা বলতে পারে নে- শোনেও না। ও ঠাকুরের মুর্তি গড়ে – তুমি গান গাইবা – আমাদের সামনের মোড়ের অশথতলায়। কিছু টাকা পয়সা …. যা হবে আমাদের কজনার হয়ে যাবেনে।”

“রাগ করলে ভাই? জানি তুমি ভদ্দরঘরের ছেলে .. আজ নয় কপালের ফেরে – মনে কিছু নিও না”

রাস্তা ফুরিয়ে আসে। মাসি ওকে মনুদার খাবারের দোকানে ছেড়ে দিয়ে বাড়ি যাবে।

“মাসি আমি … তোমার সঙ্গেই আমি থাকবো।”

মাসি ওর খসখসে হাত বিতানের গালে বুলিয়ে দ‍্যায়। “কালকেরে নে যাবো- এসে জিনিস গুলো নিয়ে- চলে যাবো।”

✡✡✡✡✡✡
তখন মনে হয় দুপুর। বিতানের কপাল দিয়ে ঘাম পড়ছে। অশথতলায়। সামনে হারমোনিয়াম। এখন বন্ধ। অশথের পাতা ঝরে মাথায় এসে পড়ে। ও সরায় না। একটা রিকশা বোধহয় বাড়ি ফিরছে। রিকশার রেডিওতে গান বাজছে “সেতো এলো না”

কাল থেকে বিতান কিশোরের গান গাইবে। বসন্তশেষের শুকনো বাতাস পাতা উড়িয়ে নিয়ে যায়। একটা বাচ্চা ঘ‍্যানঘ‍্যান করতে করতে যাচ্ছে।

বিতান বোঝে বাচ্চাটার হাত ধরে কেউ বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে। মা না বাবা? বিতানের দৃশ‍্যটা দেখতে ইচ্ছে হয়। পিঠে কার হাত ঠেকলো। এখনও অভ‍্যেসবশে মাথাটা পেছনে ঘুরে যায়। কে যেন ভিক্ষার পাত্র আর হারমোনিয়ামটা তুলে নেয়। নিশ্চয়‌ই সমীর। বিতান হাসে। অন্ধের হাসি বড় নির্মল হয়। ও সমীরের পিঠে হাত রেখে চলতে থাকে। নতুন ঠিকানায়।

খুব ইচ্ছে হয় জিজ্ঞাসা করে আজকে কত হলো? আমার গান কেমন হলো? “দাঁড়াও আমার আঁখির আগে” গানটা বড় দরদ দিয়ে গেয়েছে। অন্ধ চোখদুটো ভিজে গেছিলো।
কিন্তু একজন বোবাকালাকে কী জিজ্ঞেস করবে ?

সমীরের তৈরি করা মূর্তি হাত বুলিয়ে দেখেছে মনে হয়েছে নিখুঁত।

মাসি নিজের মতো বলে যাচ্ছে – “বেলা হলো খেতি হবে না? বোবাকালা কানা নিয়ে আমার হয়েছে জ্বালা। একটা শোনে না অইন‍্যটা দ‍্যাকে না।”

আজ একজন বাড়ির পুজোর জন্য কালীমূর্তির অর্ডার দিয়ে গেছে। বিতানের খুচরো আর টাকা মিলিয়ে একবেলায় টাকা পঞ্চাশ হয়েছে। ভাবে – আর দুটো করে টাকা রোজগার হলে মাসিকে আর কাজ করতে দেবে না।

রোজগার? না ভিক্ষে? বিতান তার অধীত বিদ‍্যা দিয়ে রোজগার করেছে। লোকে ভিখারি বললে বললো।

আগুন গরম ভাত আলুর চোখা আর ডাল। ডালটা সমীর করেছে। ভালোই করেছে। আমিও শিল্পী- সমীর‌ও শিল্পী। দুজনে মিলে চলে যাবে। মাসি বড় ভালো। সন্ধেবেলা বেশী লোক হবে। বিতান পুরোনো দিনের গান গাইবে। হেমন্ত শ‍্যামল গাইবে। বাবার প্রিয় শিল্পী শ‍্যামল মিত্র।

গরম বেড়েছে। রাতে গরম লাগে। কোকিলটার কী হয়েছে? পাগলের মতো ডাকছে। ওদিকে ফিঙ্গেটা একটানা  শিস দিয়ে যাচ্ছে। ঘুমের মধ্যে সমীর গলায় বোবার গোঙানি আওয়াজ করে। হয়তো স্বপ্নে কথা বলে। বেচারা।

বিতান ওর গায়ে হাত রাখে। বিতান ছোটবেলায় খারাপ স্বপ্ন দেখলে মা গায়ে হাত রাখতো। মাসি অঘোরে ঘুমোয়। সারাদিন ক’ বাড়িতে কাজ করে কে জানে।

টিনের ছাতে রাতের পাখি এসে হাঁটছে। হয়তো প‍্যাঁচা হবে। হাওয়া বয়। কিন্তু এই ঘরে হাওয়া আসতে পারে না।। মাসি বলছিলো “চারপাশে বড় বড় বাড়ি। টুকুস আলো বাতাস পাই না গো।”

দূরে একটা কাক ডাকছে। তবে কি সকাল হয়ে গেল? একটু ঘুম হলো না। সকালে একটু রেওয়াজ করতে হবে। সকালে প্রথম ছাত্র আসবে। গান শিখতে।

বিতান বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে থাকে। ও মনপ্রাণ দিয়ে গান শেখাবে। আর কোনদিন গান ছাড়বে না। যেটুকু জানা আছে তাই নিয়ে জীবনের লড়াই লড়ে যাবে।

PrevPreviousদল্লী-রাজহরার জনস্বাস্থ্য আন্দোলন ও শহীদ হাসপাতাল
NextআমরাNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
2 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
পবিত্র সরকার
পবিত্র সরকার
1 year ago

ভালো লেগেছে, দীপঙ্কর। সংস্কারহীন, মানবিক গল্প।

0
Reply
দীপঙ্কর ঘোষ
দীপঙ্কর ঘোষ
1 year ago

স‍্যর আমি আপ্লুত।এই নিয়ে বেঁচে আছি।

0
Reply

সম্পর্কিত পোস্ট

দীপ জ্বেলে যাও ২

March 22, 2023 No Comments

আত্মারাম ও তার সঙ্গীরা রওনা দিল দানীটোলার উদ্দেশ্যে। দল্লিরাজহরা থেকে দানীটোলা বাইশ কিলোমিটার হবে। বিশ না বাইশ, ওরা অত গ্রাহ্য করে না। ওরা জানে এই

ভাইরাস সংক্রমণ শুধুই বায়োলজিকাল? – উত্তর ভাসে বাতাসে

March 21, 2023 1 Comment

পশ্চিমবাংলা এই মুহূর্তে অ্যাডেনভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে বিপর্যস্ত। আইসিএমআর-নাইসেড-এর সম্প্রতি প্রকাশিত যৌথ সমীক্ষা  জানাচ্ছে, ভারতের ৩৮% অ্যাডেনোভাইরাস রোগী পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে। এমনকি সুপরিচিত ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান-এ একটি

দল্লী রাজহরার ডায়েরী পর্ব-১৬

March 20, 2023 No Comments

৪/৩/১৯৯০ শৈবাল–আমাকে প্রথমে নির্বাচনের খবর। আমরা একটাও জিততে পারিনি। জনকও হেরেছে। ভেড়িয়া ৭০০০ ভোটে জিতেছে। আমরা গ্রামে ১২ হাজার ভোট পেয়েছি। বি. জে. পি. ২১

গ্রামের বাড়ি

March 19, 2023 No Comments

১৪ দিন দশেক পরে দেবাঙ্কন এসে হাজির। বলল, “তোদের কফি ধ্বংস করতে এলাম। বাপরে বাপ, যা গেল! যাক, চার্জশিট হয়ে গেছে। সাংঘাতিক কনস্পিরেসি। সোমেশ্বর নাথ

মহিলাদের জন্য মহিলা টেকনিশিয়ান!

March 18, 2023 No Comments

খবরের কাগজে কত খবরই তো আসে। বড় একটা অবাক হই না। কিন্তু একখানা খবর পড়ে একেবারে চমকে গেলাম। কলকাতার একটি নামকরা কর্পোরেট হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে

সাম্প্রতিক পোস্ট

দীপ জ্বেলে যাও ২

Rumjhum Bhattacharya March 22, 2023

ভাইরাস সংক্রমণ শুধুই বায়োলজিকাল? – উত্তর ভাসে বাতাসে

Dr. Jayanta Bhattacharya March 21, 2023

দল্লী রাজহরার ডায়েরী পর্ব-১৬

Dr. Asish Kumar Kundu March 20, 2023

গ্রামের বাড়ি

Dr. Aniruddha Deb March 19, 2023

মহিলাদের জন্য মহিলা টেকনিশিয়ান!

Dr. Bishan Basu March 18, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

428476
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]