কে বেশি ভ্রমণে সক্ষম ?
তোমার আদিম পূর্বজ, বল্কল-সজ্জিত পাথুরে অস্ত্রজীবী গুহার মানুষ
নাকি তুমি, ফোনে যার মেক মাই ট্রিপ , উবের আর ওলা,
হুট বললেই চলে যেতে পারো হুউশ?
প্রশ্নটা বোকার মতো মনে হচ্ছে?
চাকা আবিষ্কারের আগের সময় বনাম জেট-যুগের
তুলনাই তো ভুল !
পকেটে পয়সা আর মনে যদি থাকে সেই ইচ্ছে,
এখন ব্রেকফাস্ট লাঞ্চ ডিনার তিনটে আলাদা মহাদেশে করা সম্ভব।
কোথায় আমরা ,
আর কোথায় সেই ফলপাকুড় খোঁজা ম্যামথের তাড়া খাওয়া জরদগব!
দাঁড়াও, জি পে আর মেক মাই ট্রিপ নিয়ে ঘোরা পথিকবর।
তিষ্ঠ ক্ষণকাল.. ভালো করে বলো দেখি ভেবে,
শেষ কবে ‘ মনে হলো , চলে গেলাম’ বলে গিয়েছো কোনখানে?
সংখ্যায় নগন্য হিসেবে,
গেলেও ব্যবস্থা করে যেতে হয় স্থায়ী আস্তানাটার,
পড়শিকে চাবি দিয়ে বলে যেতে হবে গাছে কবে জল দরকার,
কাজ হলে ছুটি নিতে হবে .. সি এল ই এল ইত্যাদি করা অ্যাপ্লাই.
ব্যবসায় আরো চিত্তির, সেখানে তো দিন খাই দিন সাপ্লাই,
ক্লায়েন্ট না চটে যেন, মাল যেন না দিয়ে যায় ভেন্ডর..
এরকম কত না থাকে জীবনের দাবী..
মোটকথা, যেইখানে যাও,
তোমার কোমরে গোঁজা ঘর বলে ভাবা এক ঠিকানার চাবি।
আর সেই আদিম মানব? তার ঘর অরণ্য গিরি কন্দর,
সাগরের বেলাভূমি, নদীদের তীর
সংক্ষেপে ,মালিক সে গোটা পৃথিবীর।
তল্পিতল্পা কিছু নেই। রোজ ভোরে উঠে সে ইচ্ছে মতন হাঁটে যেই দিকে দুচোখ তার যায়,
ফেরার ভাবনা নেই, সামনে এগোনো শুধু, কাউকে বলবারও নেই কোনো দায়,
সঙ্গীরা চলমান তার সাথে সাথে, যাত্রা ও বসত সব ইচ্ছানুসারী,
দরকারে বাড়ি ভাবা জায়গাকে স্থায়ীভাবে ছেড়ে, হুট করে দিতে পারে পাড়ি।
ওহে মেক-মাই- ট্রিপ-ধারী, যাওয়ার উপায় আছে বলে,
সত্যি কি যেতে পারো?
বাঁধা তুমি ‘বাড়ি’ বলে ভাবা এক ভ্রমের শেকলে।
‘হাজার বছর আমি পথ হাঁটিতেছি’..
কোনো আধুনিক কবি নয়,
এ পংক্তি-রচয়িতা অনেক প্রজন্ম আগে পূর্বজ যাযাবর কেউ আসলে।