- ঘটনা-১
সকালে ঘুম থেকে উঠে লিস্ট রেডি করে নেয় রিংকা। সংসারের যাবতীয় কিছুর সঙ্গে নিজের স্যানিটারি ন্যাপকিনের কথাও লিখতে ভোলে না। অফিস যাওয়ার পথে মাসকাবারি জিনিস যেখান থেকে নেয় সেখানে লিস্ট দিয়ে যায়। ফেরার পথে নিয়ে আসে। সেদিন ওর বর প্রশান্ত ফোন করে জানায়, আজ ওর সঙ্গে গাড়ি থাকবে। কাজেই নিজেই সব নিয়ে আসবে। রিংকাকে আনতে হবে না। ব্যাগে স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্যাকেট দেখে যেন তার একটু অস্বস্তি হয়। পরে রিংকাকে বলে, এটা তো আলাদাও কিনতে পারো। কথাটা শুনে একটু বিরক্ত হলেও রিংকা মুখে কিছু প্রকাশ না করে স্পষ্টভাবে জানায়, প্রতি মাসে আমার এটার দরকার হয়। আর মাসের প্রথমেই যখন সারা মাসের জিনিস আসে, তখন এটাও আসবে। এতে সমস্যার তো কিছু নেই।
ঘটনা-২
ফেসবুকের একটা পোস্ট দেখে শাঁওলী কী রিয়্যাকশন দেবে বুঝতে পারছিল না। ফেসবুকেই পরিচয় ঝুমের সঙ্গে। পরে দুজনের মধ্যে ব্যক্তিগত বন্ধুত্বও গড়ে ওঠে। ঝুম খুবই ফেসবুক আক্টিভ। রাজনীতি, ধর্মনীতি, অর্থনীতি থেকে সিনেমা- রোজই কোনও না কোনও বিষয় বিষয় নিয়ে তার পোস্ট থাকেই। কোনওটা খুবই ভাল লাগে। কোনওটা আবার বিরক্তিকর। কিন্তু যেমনই লাগুক একটা লাইক দিয়েই থাকে। তবে আজকের পোস্টটা দুবার করে পড়ল বিষয়টা বোঝার জন্য। ঝুম ওর বাচ্চার ছবি দিয়েছে, ডোনার সিমেন ব্যবহার করে ও সিঙ্গেল মাদার হয়েছে।
ঘটনা-৩
অফিস কোলিগের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে সঞ্চিতার। বিয়ের পর অষ্টমঙ্গলায় বাপের বাড়ি গিয়েই স্বামীকে অনুরোধ করেছিল ডাক্তারের কাছে যেতে। স্বামীর পুরুষ অহং এ খুব বেঁধেছিল। রাগ করে জোড় খুলেই তার নিজের বাড়ি চলে গেছে। কিন্তু সঞ্চিতা নিজেই চলে গেছে ডাক্তারের কাছে। নিজেই জানিয়েছে স্বামীর সঙ্গে স্বাভাবিক সহবাস না হওয়ার কথা। ডাক্তারবাবুর সঙ্গে কী কথোপকথন হল তা বাড়ি ফিরে স্বামীকে জানাতে ফের একচোট ঝামেলা হল। যদিও পরে নিজে বুঝতে পেরে সঞ্চিতার কথামতো ডাক্তারের কাছে যায়। এখন খুবই সুখী জীবনযাপন করছে দুজনে।
ঘটনা-৪
হানিমুনে গিয়ে রাতের খাওয়াদাওয়ার পর ঘরে গিয়ে আচমকাই পলাশের মনে পড়ে, সে তো কন্ডোম আনতেই ভুলে গেছে। অত রাতে আশপাশের দোকানও বন্ধ। মনে মনে ভাবল, প্রথম রাত বিফলেই যাবে। কিন্তু বিছানায় গিয়ে বালিশের পাশে দেখল কন্ডোমের প্যাকেট। বুঝতে অসুবিধা হল না, রুমাই তা কিনে এনেছে। ‘নিজের সুরক্ষা এখন মেয়েরা নিজেরাই নিতে জানে, বুঝলে মশাই’ বলে হেসে ওঠে রুমা।
ঘটনা – ৫
বাব্বা, তুমি এই বয়সেও যৌবন ধরে রাখতে হরমোন খাও। রমার কথা শুনতে পেয়েও সুতনুকা এড়িয়ে গেল। কী করে ও রমাকে বোঝাবে ওই হট ফ্ল্যাশ, মুড সুইং ,কোমর আর হাঁটুর ব্যাথা সুতনুকা কে কাবু করে দিচ্ছিল। এখন HRT নিয়ে ও ভালো আছে। ছেলে মেয়েরা বাইরে থাকে, স্বামী অসুস্থ, নিজেকে নিজে না দেখলে কে দেখবো!
আজকের নারী আর কোনও কিছুতেই পিছিয়ে থাকতে রাজি নয়। যে সব কাজ মেয়েরা করতে পারে বলে কিছুদিন আগে পর্যন্ত সমাজ মানতে নারাজ ছিল আজ সেসব কাজ তারা করছে আর কোনওরকম রাখঢাক না করেই। শুধু মেয়েদের নয়, সমাজের এগিয়ে যাওয়ার জন্য এই কাজ নিঃসন্দেহে অনেকটাই সাহায্য করবে। এসব ঘটনা তারই প্রমাণ।