শুরুর কিছু কথা
পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায়, কোন সমাজের জনসমষ্টির স্বাস্থ্য সুররক্ষিত রাখা প্রতিটি সমাজকে বাঁচিয়ে রাখার পূর্বশর্ত। সেই আদিমকাল থেকে মানুষ নিজের বুদ্ধিমত্তা এবং বিচারবোধ অনুযায়ী স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়মকানুন এবং সামাজিক বিধি উদ্ভাবন করেছে। আমরা যেন এরকমটা ভেবে না বসি যে, জনস্বাস্থ্য মানে বড়ো বড়ো এপিডেমিওলজিকাল স্টাডি, প্রযুক্তি-নির্ভর বিভিন্ন কৃৎকৌশল বা বর্তমানের “প্রিসিশন মেডিসিন” (precision medicine)-এর যুগে বিপুল পরিমাণ জেনেটিক স্টাডি ইত্যাদি অপরিহার্য।
কিন্তু একটি প্রশ্ন সে আদিম কাল থেকে আজ অব্দি সমানভাবে সত্যি, তাহল জনস্বাস্থ্যের কেন্দ্রীয় অবস্থানে অবস্থান করবে মানুষ। কোন প্রযুক্তিগত বিস্ময় বা রাজনৈতিক ছলচাতুরি নয়। তাহলে জনস্বাস্থ্যের কাঠামোটিই নড়বড়ে, এমনকি ভেঙে যায়। অগণিত মানুষ আর্ত, অসহায় এবং চিকিৎসাবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকে। একথাও স্মরণে রাখতে হবে, অসুস্থ মানুষের উৎপাদনশীলতা কমে যায়। দেশে সম্পদ কম উৎপন্ন হয়।
আন্তর্জাতিক জগতে মান্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মাইকেল মার্মট ২০১৯ সালে প্রকাশিত তাঁর The Health Gap: The Challenge of An Unequal World (New York: Bloomsberry) পুস্তকের শুরুতেই একটি প্রশ্ন রেখেছেন – “Why treat people and send them back to the conditions that made them sick? (আমাকে চিকিৎসা করছ কেন যদি যেখানে থেকে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি সেখানেই আবার ফেরত পাঠিয়ে দাও?)”। তিনি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন, সমাজ এবং স্বাস্থ্য ভীষণভাবে রাজনৈতিক ইস্যু এবং অল্প কিছু মানুষের যদি “অনেক” থাকে তাহলে বেশিরভাগ মানুষের “কম” থাকবে।
ঐতিহাসিকভাবে জনস্বাস্থ্য বা public health-এর বিকাশ কোন সরলরৈখিক পথে এভাবে ধাপে ধাপে ঘটেনি। বিভিন্ন দেশের জনস্বাস্থ্যের বিকাশের স্তরের এবং পর্যায়ের মধ্যে ভিন্নতা সবসময়ই ঐতিহাসিকভাবে ছিল। বিশেষ করে ইউরোপ আমেরিকাইয় জনস্বাস্থ্যের বিকাশ এবং উপনিবেশের দেশগুলোর মধ্যেকার প্রকট ফারাক। একটি সহজ উদাহরণ দেওয়া যায়। ভারতে তথা এশিয়ার আধুনিক ইউরোপীয় মেডিসিন পড়ানোর বিদ্যালয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ তৈরির পেছনে একাধিক কারণ কাজ করেছে। এর মধ্যে প্রাধান্যকারী জায়গায় ছিল – (১) ১৮২০-৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের উপযোগিতাবাদী, “লিবেরাল সাম্রাজ্যবাদ”, এবং Evangelism-এর ক্ষণস্থায়ী উত্থান, (২) ইংল্যান্ড থেকে ডাক্তার আমদানি করে রাষ্ট্রের বিপুল খরচ বাঁচানোর জন্য এদেশের মেধাকে ব্যবহার করে ব্রিটিশ ডাক্তারদের সহকারী শক্তি হিসেবে দেশীয় ডাক্তার তৈরি করা, (৩) প্রাচ্যবাদী (Orientalist) এবং পাশ্চাত্যবাদী (Anglicist) বিতর্কের অবসানবিন্দু (resolution point) হিসেবে ইংরেজিকে উচ্চতর শিক্ষার বাহন হিসেবে মেডিক্যাল কলেজের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা, এবং, সর্বোপরি, (৪) অগণিত ভারতীয় জনতার কাছে বিভিন্ন বাহকের মাধ্যমের ইউরোপীয় চিকিৎসা পৌঁছে দিয়ে একদিকে রাষ্ট্রের মান্যতা ও গ্রাহ্যতা তৈরি সৃষ্টি করা, অন্যদিকে আগ্রাসী যুদ্ধবাজ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ‘মানবিক মুখ’ হিসেবে ইউরোপীয় মেডিসিনের সুফল পৌঁছে দেওয়া।
মজার কথা হল, “মেট্রোপলিটান সায়ান্স” অর্থাৎ ইংল্যান্ডে যেভাবে বিজ্ঞানের চর্চা হয়েছে ভারতের মতো উপনিবেশিক দেশে এসে – যারা সভ্যতার থাকবন্দী সিঁড়িতে অনেক নীচের ধাপে রয়েছে – বিজ্ঞানের অভিমুখ কিছুটা বদলে গেল, প্রতিসৃত (refracted) হল, মৌলিক চরিত্রেও পরিবর্তন হল, যাকে আমরা ‘mutation’ বলতে পারি।। ওদেশে বিজ্ঞানের জগতে প্রধান নজর ছিল “capable inquirers” তৈরি করা করা। এদেশে এসে তা হয়ে গেল “capable practitioner” তৈরি করা। যারা সাধারণভাবে গবেষণার জগৎ-বিমুক্ত দক্ষ চিকিৎসক। কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া যে বিপুলসংখ্যক ছাত্র মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করে বেরিয়েছে, তারা কেউ গবেষণাকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলনা। উন্নত মানের প্রাক্টিশনার ছিল।
এক্ষেত্রে আরও দু’একটি দুঃখজনক এবং কার্যিকরী উদাহরণ দেওয়া যায়। চিকিৎসা-সম্মিলনী (বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য, ১২৯৬ বা এপ্রিল-জুন ১৮৮৯) পত্রিকায় মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবি পাশ করা সেসয়ের কম-বেশি নামী চিকিৎসক শ্যামনগর নিবাসী যদুনাথ গঙ্গোপাধ্যায় “বাংলার চিকিৎসক সমাজ” নামে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ লিখেছিলেন (পৃঃ ১৭৮-১৯২)। এই প্রবন্ধে সে সময়ের বাংলার চিকিৎসক সমাজের “অধঃপতিত” অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এবং এই চিকিৎসকদের প্রায় সবাই ছিলেন মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাশ করা এমবি কিংবা এলএমএস।
লেখকের মতানুযায়ী, উইলিয়াম বেন্টিংকের হাতে প্রতিষ্ঠিত মেডিক্যাল কলেজকে ঘিরে অনেক প্রত্যাশা ছিল। “কিন্তু আজি যদি তিনি জীবিত হইয়া উঠিতেন, তাহা হইলে দেখিতে পাইতেন যে, বাঙ্গালার চিকিৎসককুল, শিশুর ন্যায় অদ্যাপি ও ইউরোপীয় শিক্ষকগণের পদানুসরণ করিতেছেন … নিজের স্বাধীনচিন্তা, স্বকৃত অনুসন্ধান, অভিনব মত কিছুই নাই, অভিজ্ঞতা লাভ করিবার ব্যগ্রতা নাই … আমরা যেন মৃৎপিণ্ড, ইংরাজের জ্ঞানালোক প্রাপ্ত হইয়াছি বটে, কিন্তু সে আলোক প্রতিফলন করিতে সমর্থ নহি।” (পৃঃ ১৭৮-১৭৯)
লেখকের তীব্র ধিক্কার প্রকাশিত হয় – “এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে একজন চিকিৎসকও গবেষণা বা আবিষ্কারের জন্য খ্যাতনামা হয়েন নাই … হা ধিক্, যদি মহেন্দ্রলাল সরকার না থাকিতেন তাহা হইলে কলিকাতায় যে কেহ চিকিৎসা শিক্ষা করে, তাহা বাহিরের লোক জানিতেই পারিতেন না … এই সুদীর্ঘ কালের ভিতর একখানিও নতুন পুস্তক বাহির হয় নাই।” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৭৯) তিনি গবেষক-চিকিৎসকদের মধ্যে দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সূর্য্য গুডীব চক্রবর্তী, ও’শনেসি প্রমুখদের নামোল্লেখ করেছেন।
লেখকের মতে, “ভারতীয় জাতির স্থিতিশীলতা ও ইউরোপীয়ের উন্নতিশীলতা … ইউরোপ ও মার্কিণের উন্নতির গতি মেল ট্রেণের ন্যায়, আমাদের গতি কচ্ছপের ন্যায়”। (পৃঃ ১৮৭-১৮৮) এ অবস্থা থেকে উৎক্রমণের জন্য তাঁর একটি পরামর্শ ছিল “উদার ভাবে সত্যানুসন্ধান … সত্য কোন মতবিশেষের ভৃত্য নহে।” (পৃঃ ১৯০-১৯১)
ভারতের প্রথম গবেষণার কাজে নিবেদিত Indian Association for the Cultivation of Science-এর প্রতিষ্ঠাতা (মেডিক্যাল কলেজের ২য় এমডি) মহেন্দ্রলাল সরকার উত্তরপাড়া হিতকরী সভার “লিটারারি ব্র্যাঞ্চের” মিটিং-এ (১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৮৭২) “On the desirability of a national institution for the cultivation of the sciences” শীর্ষক একটি দীর্ঘ বক্তব্য পাঠ করেন। এটি পরে আলাদা প্রবন্ধ হিসেবে (সাথে আরও অনেকের বক্তব্য ও মিনিটস সমেত) ৪৮ পৃষ্ঠার প্রবন্ধ হিসেবে ছাপা হয় (Indian Journal of History of Science, vol. 29, Supplement, 1994, pp. S1-48)।
এই অভিভাষণের প্রায় সূচনাতেই তিনি বলেন – “How is it that we can scarcely name a single individual who may be said to be pursuing with steadiness any branch of science? How is it that the Medical College of Calcutta, which has been in existence for nearly half a century, and within whose walls some of the noblest of the physical sciences are practically and experimentally taught, has not yet turned out a single student who has even thought of cultivating any of these sciences for which such ample foundation has been laid during his term in the College?” (পূর্বোক্ত, পৃঃ S-2)
সহজ কথা হল, ‘capable inquirers’-এর পরিবর্তে কেবলমাত্র ‘capable practitioners’ তৈরির বিদ্যায়তন হিসেবে মেডিক্যাল কলেজকে দেখে এরা আশাহত, হতাশ এবং, হয়তো বা, কিছুটা ক্রুদ্ধও। এ পটভূমিতে এদেশে মেডিসিন, মেডিক্যাল গবেষণা এবং জনস্বাস্থ্যকে বুঝতে হবে। মাথায় রাখতে হবে মেট্রোপলিটান সায়ান্স, আগে যেমন বলেছি, ‘refracted’ এবং ‘mutated’ অবস্থায় এদেশে চর্চিত হয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মেডিক্যাল কলেজ তৈরির এবং ক্লাস শুরু হবার একেবারে গোড়ার দিকে ফ্রেডেরিক করবিন (Frederick Corbyn) তাঁর সম্পাদিত ভারতের প্রথম বিজ্ঞানের জার্নাল The India Journal of Medical and Physical Science (New Series 1836, 1 (1): 187)-এ সতর্কবাণী রেখেছিলেন – “Principal Mr. Bramley, arrived in India in August, 1829, and has had no experience in the diseases of India as they prevail in various situations and in different constitutions. Dr Goodeve did not arrive until April, 1831, and therefore has had less. But Dr. O’Shaughnessy, the other professor, has had least of all, having arrived so late as August, 1833. Now we are willing to admit that each and all of these gentlemen may be thoroughly acquainted with the principles of Cullen; they may be well versed in the arguments and subtleties of Brown and Darwin; endued with the doctrines of revulsions, of Broussais, familiar with French pathology; fresh from the theatre of Anatomy and the laboratory of Chemistry; and may have witnessed the whole of the clinique of Europe: but when they come to India their knowledge is bounded. Here they are to receive and not to afford instruction! In tropical surgery and diseases they are wanting in practice and experience; these are the defects, and against which alone our commentary is directed.” চিকিৎসাবিজ্ঞানের ফলিত রূপ এবং, কার্যত, মূল বিজ্ঞানটিই প্রতিসৃত হল।
এখানে আরেকটি উল্লেখযোগ্য তথ্য হল, ভারতে প্রথম এপিডেমিওলজিকাল স্টাডি প্রকাশিত হয় ১৯০৮ সালে – “The etiology and epidemiology of plague. A summary of the work of the Plague Commission”। ফলে ইংল্যান্ডে জনস্বাস্থ্যের বোধ ও বিকাশ যে পথে হয়েছে ভারতে একেবারেই সে রাস্তায় হয়নি। ১৮৪০-এর দশক থেকে অনেক ঘোরা পথে এদেশে জনস্বাস্থ্যের জন্ম, বৃদ্ধি, বিকাশ এবং কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এখানে ঐতিহাসিক দীপক কুমার একটি গোড়ার প্রশ্ন তুলেছেন – “how ‘public’ waspublic health? … Could there be a Chadwick in colonial India?” (Science and Society in Modern India, Cambridge University Press, 2023, p. 104) স্পষ্ট উত্তর হচ্ছে, না।
উপনিবেশিক ভারতে যে মেডিসিন ও গবেষণার যে বাস্তবতা শুরুতে আলোচনা করেছি সে বাস্তবতায় কোন জন স্নো বা চ্যাডউইক ১৮৪০-এর দশকে ভারতে ভারতে এক অসম্ভব ব্যাপার ছিল। অথচ জনস্বাস্থ্যের অঙ্কুরোদ্গম ভারতে সেসময়েই হয়েছিল। ডরোথি পোর্টার ইংল্যান্ডের এপিডেমিওলোজিকাল সোসাইটি নিয়ে জানাচ্ছেন –“In 1850, epidemiology came of age in London with a society of its own. Its conceptual origins were obvious from the name first proposed: ‘The Asiatic Cholera Society’, reflecting the growing threat of the disease (main outbreaks 1832, 1848, 1854, and 1866). By the time of the first meeting, the name had become the more general ‘Epidemiological Society’.” (Dorothy Porter, “Public Health,” in Companion Encyclopedia of the History of Medicine, ed. W. F. Bynum and Roy Porter, Routkedge, 1993, পৃঃ ১২৭৩) এখানে প্রথম এপিডেমিওলজির স্টাডি ১৯০৮ সালে।
ডিসপেনসারির প্রসার এবং জনস্বাস্থ্যের সূচনা
মেডিক্যাল কলেজে ১৮৩৬ সালে ভারতের প্রথম অ্যানাটমির প্রোফেসর হেনরি গুডিভ, প্রিন্সিপাল ব্রামলে এবং ও’শনেসি ১৮৩৬ সালের ৩ মে তারিখে লর্ড অকল্যান্ড সহ কলকাতার ব্রিটিশ এবং ভারতীয় কেষ্টবিষ্টু এবং হিন্দু কলেজের ছাত্রদের সামনে (প্রায় ৬০০ জন উপস্থিত ছিল) “Practice of Physic”-এর ওপরে “Introductory Lecture” দিয়েছিলেন। সে লেকচারে তিনি বলেন – “There is but one school wherein you can hope to succeed in your studies to any great purpose. In the school of experience, it is only at the bed side of the sick by observing closely the symptoms and progress of disease, watching the effect of remedies, and should the termination of the malady prove a fatal one and the death of your patient afford you an opportunity to inspect the body, by carefully noting the changes which have taken place in the various organs. It is only by these means that you can hope to render yourselves worthy and useful members of the profession you have chosen.” (Calcutta Monthly Journal for the year 1836, Third Series (May, vol. II): 25) এ যেন ক্লিনিকাল মেডিসিনের মন্ত্রোচ্চারণ করলেন গুডিভ।
পরিষ্কার করে বুঝলে, মেডিক্যাল কলেজে ছাত্ররা যা শিখতো তা হল ক্লিনিকাল মেডিসিন বা ব্যক্তি রোগীর চিকিৎসা। কিন্তু ১৮৩৮-৩৯ সালে প্রথম ৫ জন ছাত্র পাস করে বেরনোর পরে এদের সবার পোস্টিং হল ডিসপেনসারিগুলোতে – তখন ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ডিসপেনসারিগুলো খোলা হচ্ছে। স্বাস্থ্যের মধ্যে “জন” প্রবেশ করতে শুরু করল। মেডিক্যাল কলেজের ডিসেকশন রুমে এবং ওয়ার্ডে প্রশিক্ষিত চিকিৎসকেরা জনসমাজের মধ্যে প্রবেশ করে তাদের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নিতে শুরু করল। এটা ভারতে চিকিৎসার জগতে এক মৌলিক রূপান্তর বলা যায়।
(GCPI, 1840-41 & 41-42)
মেডিক্যাল কলেজের ৫ম বছরের রিপোর্টে (General Committee o0f Public Instruction, GCPI, 1839-40) বলা হল, একটি ডিসপেনসারি হাসপাতালের সাথে যুক্ত ছিল। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা এবং বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকত। কলেজের স্নাতক নবীনচন্দ্র মিত্র ডিসপেনসারির দায়িত্বে ছিল। ডঃ গুডিভও দেখাশোনা করতেন। (পৃঃ ৩৬) মোট ১১টি ডিসপেনসারির কথা ১৮৩৯-৪০-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে। এই রিপোর্টে অ্যাপেনডিক্সের পৃষ্ঠা clxxiii (173) থেকে clxxx (180) অব্দি বিস্তৃত এই রিপোর্ট। বলা হয়েছে – “Some operations, both capital and minor, have been performed, but neither do the Surgical nor the Medical cases seem to possess any remarkable degree of interest.” (পৃঃ clxxiv) আগ্রা ডিসপেনসারির রিপোর্ট তুলে ধরে রাম ঈশ্বর অবস্থির কৃতিত্ব স্বীকার করা হয়। (প্রাগুক্ত)
১৮৩৮ থেকেই বিভিন্ন বড় শহরে ডিসপেনসারি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এদিকে মেডিক্যাল কলেজ থেকে স্নাতক যে চিকিৎসকেরা বেরোচ্ছে তাদের ওপরে এই ডিসপেনসারিগুলোর দায়িত্ব দেওয়া শুরু হল। এখানে ১৮৪৬ সালে লেখা W. H. Sykes-এর মূল্যায়নের গুরুত্ব আছে – “India sanctioned the establishment of Dispensaries in some of the large towns in the Bengal Presidency. They were to be under the Civil Assistant Surgeon of the station, who was to be allowed fifty rupees per mensem, including his vaccination duties. An educated young man from the Medical College at Calcutta, on a salary varying from 40 to 100 rupees, but latterly fixed at 100 rupees, was to be placed in charge of the Dispensary.” (Sykes, “Statistics of the Government Charitable Dispensaries of India, Chiefly in the Bengal and North-Western Provinces”, Journal of the Statistical Society of London, March 1847, Vol. 10, No. 1, pp. 1-37)
সাইকস আরও জানাচ্ছেন – “Confining myself to the broad features, I may state, that 267,456 cases including house and outpatients, were treated – of this number 168, 871 were cured, 2417 died, and 96,168 ceased to attend”। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৪)
এই বিপুলসংখ্যক মানুষ ডিসপেনসারির আওতায় তথা ইউরোপীয় মেডিসিনের আওতাইয় চলে এল। এর সাথে আধুনিক হাইজিন এবং স্যানিটেশনের কৃৎকৌশলও ধীরে ধীরে রপ্ত করতে শুরু করল। মহামারি বা এপিডেমিকের সময় জনস্বাস্থ্যের কার্যকারিতার সর্বোচ্চ প্রকাশ দেখা গেছে। কিন্তু সূচনা হয়েছে অনেক আগেই।
ঢাকার ডিসপেনসারিতে নবীনচন্দ্র পাল, চট্টগ্রামে রাজকৃষ্ণ চ্যাটার্জি, পুরীতে একজন নেটিভ ডাক্তার সাব-অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজ চালিয়েছে।
চট্টগ্রাম ডিসপেনসারি – সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জন রাজকৃষ্ণ চ্যাটার্জি।
পুরী ডিসপেনসারি – সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জন নীলমনী দত্ত। মোট ৪১৮টি কেসকে ভর্তি করা হয়েছিল প্রধানত জ্বর এবং পেটের গণ্ডগোলের জন্য। (পৃঃ clxxv)
ভারতে চিকিৎসার ইতিহাসে হাসপাতাল বা ডিসপেনসারিতে এসে রোগীর আত্মপরিচয়হীন কেস নম্বরে পর্যবসিত হয়ে যাওয়া শুরু হল। যদিও ইউরোপে এই রূপান্তর শুরু হয়েছিল আরও আগে। একজন মান্য গবেষকের পর্যবেক্ষণ দেখা যাক – “The consultative relationship took the form of a processing exercise in which the ambiguity and individuality of each case was systematically eliminated by the application of foreknown diagnostic procedures, the function of which was to allocate the patient to a category within the nosological system. It was as a member of that category, i.e., as a suitable case for treatment, that he conducted the remainder of his relationship with his practitioner.” (N D Jewsosn, “The disappearance of the sick-man from medical cosmology, 1770–1870”, International Journal of Epidemiology 2009; 38: 622–633)
মুর্শিদাবাদের ডিসপেনসারিতে সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত হলেন মেডিক্যাল কলেজের গ্র্যাজুয়েট পঞ্চানন শ্রীমনী। এখানে আরেকবার উল্লেখ করা দরকার, মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করে বেরলেই সে সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট পদমর্যাদার হত। ফলে পরবর্তী সময়ে বারংবার এটা বলার কোন প্রয়োজন নেই। এখানে ১৩৯১ জন রোগীকে দেখা হয়েছিল – প্রধানত জ্বর, রিউম্যাটিজম এবং পেটের গণ্ডগোলের রোগী। গড়ে প্রতিদিন দেখাতে আসা রোগীর সংখ্যা ১৩৩। উল্লেখ করা হল – “some Country Medicines, such as Kala Dana and Kut Kelija, have been introduced into use.” (পৃঃ clxxvi) ইউরোপীয় মেডিসিনের সাথে দেশীয় মেডিসিনের বহুল প্রয়োগ হতে শুরু করল গ্র্যাজুয়েট ডাক্তারদের হাত ধরে ডিসপেনসারির মধ্য দিয়ে।
পাটনার ডিসপেনসারির দায়িত্বে ছিলেন রাম ঈশ্বর অবস্থি। ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৬০ – ৪৪ জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছিল, ৭ জন পলায়ন করেছিল, ৫ জন মারা গিয়েছিল। বহির্বিভাগের মোট রোগীর সংখ্যা ৫৪৯২ জন, যার মধ্যে ৩৩২০ জন সুস্থ হয়েছিল এবং ১৮০৩ জন পরে আর দেখাতে আসেনি। রাম ঈশ্বর অবস্থির কাজ এত ভালো মানের ছিল যে কমিটির তরফে রেকমেন্ড করা হয় – “we again beg to report our recommendation for the higher grade of Sub-Assistant Surgeon, as suggested in our despatch No. 823, dated 26th March last.” (পৃঃ clxxvi)
বেনারস সিটি হাসপাতাল এবং সেক্রোল ডিসপেনসারি – দায়িত্বে গ্র্যাজুয়েট ঈশানচন্দ্র গাঙ্গুলী। ইনি অত্যন্ত খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এঁর সম্পর্কে বলা হয়েছিল – “he expects peculiar advantage from his services in introducing indigenous remedies, and in the preparation of Chemical articles.”
সেক্রোল ডিসপেনসারিতে দুজন শিক্ষানবিশকেও নিযুক্ত করা হয়েছিল – ঝামার এবং ভান্ডি দাস। (পৃঃ clxxvii)
এলাহাবাদ ডিসপেনসারির মূল দায়িত্বে ছিলেন পঞ্চম যে যুবককে ১৮৩৮-এর পরীক্ষায় পাস করানো হয়েছিল সেই শ্যামাচরণ দত্ত। এখানে বহির্বিভাগে মোট রোগীর হিসেব পাওয়া যাচ্ছে ২৭৬২ জনের – ১৬২২ জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে। এখানে লক্ষ্যণীয়ভাবে কিছু অপারেশন করা হয়। নীচে তালিকা দিলাম।
১৮৪০-এর বিচারে মেডিক্যাল কলেজে নয়, একটি ডিসপেনসারিতে এত রকমের এবং এসব অপারেশনের তালিকা রীতিমতো সম্ভ্রম এবং ঈর্ষা করার মতো।
বেরিলি ডিসপেনসারির মূল দায়িত্বে ছিলেন যাদবচন্দ্র শেঠ। তিনি যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে ঐ অঞ্চলে দীর্ঘদিন প্র্যাক্টিস করেছেন। যাহোক, বহির্বিভাগে মোট রোগীর সংখ্যা ৩০৬২ – এর মধ্যে ১৯৬৫ জন সম্পূর্ণ সেরে উঠেছে, ৭৪৫ জন পালিয়ে গেছে, এবং ২০ জন মারা গেছে। (পৃঃ clxxviii)
কানপুর ডিসপেনসারির মূল দায়িত্বে ছিলেন রামনারায়ণ দাস। এঁর ব্যাপারে আগে আলোচনা করেছি “concussion of brain”-এর রোগীকে সারিয়ে তোলার ঘটনায়। প্রসঙ্গত, রামানারায়ণ দাস মূত্রথলির পাথর বের করা বা লিথোটমি অপারেশনের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট দক্ষতা দেখিয়েছেন। এমনকি একটি ৭ বছরের শিশুর অপারেশন করে শিশুটিকে সুস্থ করে তোলেন। তাঁর নিজের বয়ানে – “all the lithotomy operations that have been performed in this dispensary were successful, and all the cases got well without any dangerous symptoms, as peritonitis and others, and we are proud to say that we have not lost a single patient in this operation.” কানপুরের পরে জবলপুরে গিয়েও তিনি সফলভাবে এই অপারেশন করেন। (Half-yearly Reports of the Government Charitable Dispensaries established in the Bengal and, North-western Provinces, from lst August 1840, to 31st January 1842)
স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের নতুন ডাক্তারদের ওপরে ভরসা ও বিশ্বাস উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। ইউরোপীয় আধুনিক মেডিসিন বেশি বেশি করে বিপুল জনসমাজে পৌঁছতে শুরু করলো। একইসাথে পাবলিক হেলথ বা জনস্বাস্থ্যের বীজও রোপিত হচ্ছিল।
দিল্লী ডিসপেনসারির সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জন ছিলেন আর হেমিং। বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা ১৯৩৯ – যার মধ্যে সম্পূর্ণ সেরে উঠেছে ১৪৯৫ জন, ৩৮৪ জনের ক্ষেত্রে ফলাফল অজানা।
আগ্রা ডিসপেনসারির দায়িত্বে ছিলেন উমাচরণ শেঠ – মেডিক্যাল কলেজের প্রথম ব্যাচের প্রথম স্থানাধিকারী ছাত্র। ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ – ৪ জন সুস্থ, ৪ জন পালিয়েছে এবং ১ জন মারা গেছিল। বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা ৩৪৯০। এদের মধ্যে হয় প্রবর্তীতে আর আসেনি কিংবা ফলাফল অনিশ্চিত এরকম রোগীর সংখ্যা ৩১৮৬। গড়ে প্রতিদিন ৩০৭ জন রোগী দেখাতে আসত। উমাচরণ ২০টি চোখের ছানির অপারেশন করেছিলেন। এছাড়াও ছোটখাটো অপারেশনের সংখ্যা এই হিসেবের তালিকার বাইরে। ৫টি amputation করেছিলেন। এছাড়াও “has also been zealously and successfully engaged in introducing Country Medicines.” (পৃঃ clxxvix)
সাইকসের পূর্বোক্ত প্রবন্ধের হিসেব অনুযায়ী ১৮৪৬ সালের প্রথমভাগ পর্যন্ত ডিসপেনসারিগুলোতে মোট ২৬৭,৪৫৬টি ‘কেস’ দেখা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৪,৬১৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৩-৪)
অধুনা ক্ল্যাসিক ডেভিড আর্নল্ডের কলোনাইজিং দ্য বডি-তে আর্নল্ড দেখিয়েছেন “enclave medicine” (আর্মি ব্যারাক, জেল ইত্যাদি) থেকে পাবলিক হেলথের সূচনা হয় ভারতবর্ষে – “Even if the reach and efficacy of Western medicine was strictly limited in the period up to the 1860s and, as Radhika Ramasubban contends, barely extended beyond a small European enclave, it was nonetheless important in laying the foundation for later developments and in establishing the claims of Western medicine, and of Western authority more generally, over India and its colonial subjects.” (পৃঃ ১৮)
অধিকন্তু – “arguably, the moment of transition from enclavism to public health came only in the 1890s with the establishment of a new “tropical medicine,” based on the germ theory of disease, and a corresponding intensification in state medical intervention in India as in many other parts of the colonial world, epitomized by the measures taken during the Indian plague epidemic of the 1890s and 1900s.” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৩)
আরেকজন মান্য গবেষক মার্ক হ্যারিসনের অভিমত অনুযায়ী – “The history of public health administration in India also dates from the assumption of Crown rule. In 1859, in the wake of the mutiny, a special commission was set up to inquire into the sanitary state of the British Army in India. Epidemic disease had seriously depleted the fighting capacity of British troops in 1857, and, in the light of the public outcry over preventable deaths in the Crimea, there was increasing concern in Britain over military hygiene in India.” (Public Health in British India: Anglo-Indian preventive medicine 1859-1914, Cambridge University Press, 1994, পৃঃ ৮).
এখানে আমাদের গবেষণা দেখাচ্ছে, আর্নল্ডের বলা সময়ের ২০ থেকে ৫০ বছর আগে ভারতে জনস্বাস্থ্যের সূচনা হয়েছিল। অর্থাৎ উপনিবেশিক ভারতে জনস্বাস্থ্যের উন্মেষকাল পেছিয়ে গেল কয়েক দশক এবং সংযুক্ত হয়ে পড়লো মেডিক্যাল কলেজের জন্ম ও বিকাশের সাথে। এ প্রসঙ্গ ভারতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে অদ্যাবধি আলোচিত হয়নি।
এতক্ষণের আলোচনায় দেখলাম ডিসপেনসারি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জনসমাজে পশ্চিমী মেডিসিন ভারতীয় জনতার মাঝে মান্যতা এবং গ্রাহ্যতা লাভ করে। এর ভরকেন্দ্রে ছিল মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করে বেরনো প্রশিক্ষিত চিকিৎসকের। ফলশ্রুতিতে মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডিসপেনসারি থেকে পাবলিক হেলথ – এরকম একটি যাত্রাপথ আমাদের সামনে ঐতিহাসিকভাবে উন্মোচিত হল।
আধুনিক রাষ্ট্রের চৌহদ্দির বাইরে বিপুল জনতা ধীরে ধীরে রাষ্ট্রের মেডিক্যাল নজরদারির আওতায় চলে এল। শুধু তাই নয়, এরা ক্রমাগত আধুনিক হাইজিন, স্যানিটেশন এবং হেলথ প্রোগ্রামগুলোর technique আয়ত্ত ও আত্মীভুত করে নিল। নতুন অর্থ নিয়ে আধুনিক রাষ্ট্র মানুষের চেতনায় স্থান পেল।
যাঁরা মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করে বেরিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে দ্বারকানাথ গুপ্ত কখনো সরকারি চাকরি করেননি। সাফল্যের সাথে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করেছেন এবং নিজস্ব ওষুধের দোকান চালিয়েছেন। রামকুমার দত্ত এবং গোবিন্দচন্দ্র গুপ্তও দ্বারকানাথের পথে হেঁটেছেন। এতে মানুষ তুলনায় অনেক কমদামে ওষুধ পেয়েছে। নবীনচন্দ্র মুখার্জি আসামের চা বাগানে মাসে ১৫০ টাকা মাইনেতে চাকরি করেছেন। শিবচন্দ্র কর্মকার এবং নবকৃষ্ণ গুপ্ত সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষকতা করেছিলেন। নবীনচন্দ্র মিত্র কলেজের আউটডোর ডিসপেনসারির দায়িত্বে ছিলেন। (GCPI, 1839-40, পৃঃ clxxx)
শেষ কথা
ইউরোপীয় জনস্বাস্থ্যের তুল্য উপনিবেশিক জনস্বাস্থ্যের বিকাশ ঘটেনি। এদেশের topography এবং demography-র ওপরে প্রাথমিকভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল, যারই পরবর্তী বিকশিত রূপ এপিডেমিওলজি। কলকাতার মেডিক্যাল topography নিয়ে প্রথম বই লেখেন জেমস রানাল্ড মার্টিন ১৮৩৭ সালে সে বইয়ে তিনি জানান – “From the natives we cannot expect any great aid, until they are shewn the usefulness of public work, when, I am confident, they will readily comprehend how clearing and proper draining”-এর ফলে ‘নেটিভ’দের উপকার হবে। (Notes on the Medical Topography of Calcutta, Calcutta, 1837, পৃঃ ১৫)
‘পাবলিক ওয়ার্ক’ এবং তার ফলে এদেশের মানুষের উপকার এ ধারণা সঞ্চারিত হতে শুরু করল। এর ১০ বছর পরে Sykes তাঁর ডিসপেনসারি নিয়ে পূর্বোক্ত রিপোর্টে জানাচ্ছেন – “A very large number of women suffer from difficult parturition and its sequeloe (sic). The country nurses who are proverbially ignorant, and know nothing of the organs they deal with … Thus a most easy and anturral phenomenon is often converted into a most troublesome and hazardous job.” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ১২) এমনকি মহিলাদের অন্দরমহলও ডিসপেনসারির পরিসরের মধ্যে চলে এল।
পরবর্তীতে Sykes-এর রিপোর্ট থেকেই জানা যাচ্ছে – “Although the people as elsewhere well know the benefits they often derive from the Institution, from the circumstance of numerous difficult and hopeless cases being cured daily; yet why they do not resort to it at the commencement of their sickness is a matter much to be wondered at.” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৩)
ডিসপেনসারির আরেকটি সুফল এ রিপোর্ট থেকে জানা যায়। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ৩৬)
১৮৩৯-৪০ থেকে ডিসপেনসারির প্রসারের মধ্য দিয়ে পাবলিক হেলথ তথা জনস্বাস্থ্যের যে সূচনা হয়েছিল তার জন্মদাত্রী মেডিক্যাল কলেজের গ্রাজুয়েটরা। এ কলেজ ২০২৪-এ ১৯০তম বর্ষ উদযাপন করছে। ভারতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে একটি মাইলস্টোন – একটি কম জানা অধ্যায়।
Excellent and nostalgic as well
Excellent article
Excellent 👏🏼👏🏼
Excellent sir🙏🏼❤️
Well researched article with Wonderful analysis of the historical context
এমন গর্বের ইতিহাস সবার পাঠ্য। অনেকের কাছে পৌঁছে যাক এ ইতিহাস ও তার স্রষ্টারা
Excellent Indian history of medicine and Doctors and then people of India under British Raj.
What I liked most is Dr Jadunath’s article where he lamented Indian Doctors have failed to prove their worth. The writing gives a full picture of those bygone days.Thanks