কক্সিডাইনিয়া হল coccyx অর্থ্যাৎ tailbone বা ল্যাজের হাড়ে ব্যথা।কোমরে ব্যথার প্রায় 1% থেকে 3% এর জন্য দায়ী ল্যাজের হাড়ে ব্যাথা।
মানুষের শরীরে ককসিক্স হল বিবর্তনের ফলে অবলুপ্ত ল্যাজের শরীরে থেকে যাওয়া চিহ্ন।
যদিও কক্সিডাইনিয়া বা দীর্ঘস্থায়ী কক্সিক্সের ব্যথা প্রথম চিহ্নিত হয়েছে এবং রোগটি নির্ণীত হয়েছে বহুকাল আগে ষোড়শ শতকে, কিন্তু এর সঠিক এবং সর্বজনগ্রাহ্য চিকিৎসা আজও খুঁজে পাওয়া যায় নি।
তাই বলে শরীরে কক্সিক্সের কোনো ভূমিকা নেই- তা কিন্তু নয়। কোমর বিশেষতঃ পেলভিক ফ্লোর অর্থ্যাৎ পেলভিসের তলার দিকের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মাংসপেশী ও লিগামেন্ট কক্সিক্সে লেগে থাকে। মলত্যাগ, প্রস্রাব, প্রসব ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে এই সব পেশী ও লিগামেন্টের ভূমিকা আছে। পাশাপাশি একজোড়া ইশ্চিয়াল টিউবারোসিটি (পশ্চাৎদেশের ঢিবির মত দুটো হাড়)-র সাথে মিলে কক্সিক্স মানুষের বসার ব্যপারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
ল্যাজের হাড়ে ব্যথা নানান কারণে হয়- যেমন চোট লাগা, অত্যধিক মোটর সাইকেল বা বাইসাইকেল চড়া, শক্ত এবং সরু জায়গায় অনেক সময় ধরে বসে থাকা, প্রসব কালীন চোট ও জটিলতা ইত্যাদি।
কক্সিডাইনিয়া নানান শারীরিক পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত। যেমন স্থুলত্ব, মেরুদন্ডের বাত, দ্রুত রোগা হওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, মলদ্বারের আশেপাশে ঘা অথবা সাইনাস ইত্যাদি। কিছু কিছু মানসিক রোগ- যেমন হতাশা ইত্যাদি এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
কক্সিক্স বা ল্যাজে ব্যথা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যথার ওষুধপত্র, গরম শেঁক (বাথটাব বা গরমজলের গামলার মধ্যে বসে থাকা), শক্ত জায়গায় বসা বন্ধ করা, বাইক বা সাইকেল চড়া কমানো, শরীরের ওজন ঠিক রাখা- এইসব মেনে চললেই কমে যায়। যদি এতে না কমে- তখন লোকাল ষ্টেরয়েড ইঞ্জেকশন, অপারেশন থিয়েটারে ভ্যইমপার গ্যাংলিয়ন ব্লক করা ইত্যাদির প্রয়োজন হতে পারে। অবশ্য খুব কম রোগীর এসব দরকার পড়ে।
ল্যাজের ব্যথায় অপারেশন বা সার্জারী লাগে না। আর করেও কোনো লাভ হয় না। অনেক ক্ষেত্রে এত সব কিছু করেও ব্যথা কমে না। তবে কখনো খুব মারাত্মক জটিলতা কিছু হয় না।