“He who says he is not afraid is a superhero, we are not superheroes, we are revolutionary doctors. We are all afraid but we have a revolutionary duty to fulfill, so we take out fear and put it to one side”
বক্তা লিওনার্দো ফার্নান্ডেজ, ৬৮ বছর বয়স, ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট বিশেষজ্ঞ। ৫২ জন কিউবান স্বাস্থ্যকর্মীদের যে দল নভেল করোনাভাইরাস (বর্তমানে বলা হচ্ছে SARS-CoV2 ) সংক্রমণে বিধ্বস্ত ইতালিতে গেলেন তার অন্যতম সদস্য। শিকড়বিচ্ছিন্ন, ইতিহাসবিস্মৃত, রাজনীতিবিমুখ প্রজন্মের প্রতিনিধি আমরা, ডিসি-মার্ভেল-এর সুপারহিরো কমিক্স-সিনেমা গুলে খাওয়া আমরা কেমন থতমত হয়ে পড়ি এহেন ঘোষণায়। অথচ, ইতিহাসের পাতা ওল্টালেই বুঝব এ আসলে একটা ধারাবাহিকতা। এক বিশেষ দর্শনের, রাজনীতির ধারাবাহিকতা।
উদাহরণ আরও আছে। ১০০০ জন যাত্রীবাহী ব্রিটিশ ক্রুজ জাহাজ এম এস ব্রেমার, যার অন্তত ৫ জন যাত্রী কোভিড আক্রান্ত, যখন বিভিন্ন দেশের বন্দরে নোঙর করার অনুমতি না পেয়ে দিশেহারা অবস্থায় ক্যারিবিয়ান সাগরে ঘুরে বেড়াচ্ছে তখন এই কিউবাই তাদের সাদরে গ্রহণ করেছে, এবং তারপরে বিশেষ চাটার্ড বিমানে করে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করেছে।
এর আগে অতীতেও অ্যাঙ্গোলা, নিকারাগুয়া, লাইবেরিয়ায় ইবোলা ভাইরাস মোকাবিলা কিংবা হন্ডুরাস, গুয়াতেমালায় বিধ্বংসী হ্যারিকেন ঝড় বা ২০০৪ এর সুনামিতে শ্রীলঙ্কা, সব জায়গাতেই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য কিউবা থেকে পাড়ি দিয়েছেন হাজার হাজার স্বাস্থ্যকর্মী। ‘হাজার হাজার’ কথাটা কোনো অত্যুক্তি নয়, তথ্য বলছে এই মূহুর্তে কিউবার প্রায় ৩০,০০০ স্বাস্থ্যকর্মী বিভিন্ন দেশে হয় চিকিৎসা, চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণা অথবা সেই দেশগুলির স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের কাজে নিয়োজিত আছেন। (উল্লেখ্য, কোভিড ১৯ সংক্রমণে যে ইন্টারফেরন-আলফা2b অন্যতম কার্যকরী ওষুধ হয়ে উঠতে পারে, সে আবিষ্কারের কৃতিত্ব Chang Haber নামক কিউবান-চাইনিজ জয়েন্ট রিসার্চ ভেঞ্চারের। কিউবার এই ‘মেডিকেল ইন্টারন্যাশনালিজম’ এর ভিত্তিও কিন্তু ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলেই খুঁজে পাওয়া যাবে।
১৯৫৯ এর কিউবার বিপ্লবের পরে কিউবান মিলিশিয়ার উদ্দেশ্যে আর্নেস্তো চে গ্যেভারা এক বক্তৃতায় বলেন স্বাস্থ্যকর্মীদের এক নতুন হাতিয়ারে সজ্জিত হতে হবে। তা হল ‘সলিডারিটি’, সংহতি। এর ভিত্তিতেই একের পর এক ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে আলজেরিয়া, গিনি-বিসাও এর মত দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মেডিকেল এইড নিয়ে পাশে দাঁড়ায় কিউবার বিপ্লবী চিকিৎসকেরা। তাদেরই উত্তরাধিকার বহন করছে আজকের কিউবান হোয়াইট রোব আর্মি। সেই বক্তৃতায় চে আরও বলেন একদিন চিকিৎসাশাস্ত্রকে এমন এক বিজ্ঞান হয়ে উঠতে হবে যা রোগ প্রতিরোধে মূল ভূমিকা পালন করবে এবং জনগণকে তাদের ‘মেডিকেল ডিউটি’ বিষয়ে প্রশিক্ষিত করবে। কমিউনিটি মেডিসিনের এই একদম গোড়ার কথাটুকু আজ আমরাও বুঝছি নভেল করোনাভাইরাসের ধাক্কায়।
কিউবার আভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যব্যবস্থা যদি আমরা পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব বিভিন্ন দেশের তুলনায় স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতির সূচকগুলিতে কিউবার স্থান ও ক্রম উন্নতির হার ঈর্ষণীয়। এখানে প্রতিটি নাগরিক বিনামূল্যে চিকিৎসা পান, নাগরিকের স্বাস্থ্য এখানে সরকারের দায়িত্ব। শহর এবং গ্রামের চিকিৎসার মানের ফারাক নেই বললেই চলে, কারণ হিসেবে বলা যায় বিপ্লবোত্তর কিউবার স্বাস্থ্যনীতি অনুসারে দেশজুড়ে চিকিৎসা কেন্দ্রের বিকেন্দ্রীকরণ ও সমবন্টন। এছাড়াও এখানে রয়েছে ফ্যামিলি-ডক্টর-নার্স ব্যবস্থা যারা গড়ে নির্দিষ্ট ৬০-৭০ টি পরিবারের কেবল চিকিৎসা বাদেও সরকারের তরফ থেকে পরিবারগুলির স্বাস্থ্যসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের (পুষ্টি, আর্থিক সামর্থ্য, হাউজিং ইত্যাদি) সামগ্রিক হিসেব রাখে ও বিশ্লেষণ করে। শিশুমৃত্যু, প্রসূতিমৃত্যুর সংখ্যায় গোটা লাতিন আমেরিকা তো বটেই, প্রথম বিশ্বের নানা দেশের থেকেও এই মূহুর্তে কিউবার অবস্থান ভালো। কিউবার ইনফ্যান্ট মর্ট্যালিটি রেট এখন প্রতি ১০০০ এ ৪.২ (আমেরিকার ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৫.৮, ভারতের ক্ষেত্রে সংখ্যা ২৯.৯)এবং প্রসূতি মৃত্যুর হার প্রতি এক লাখ এ ৩৯ (ভারতের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ১২২)
কিউবার মত একটা পুঁচকে দেশ কিভাবে এত কিছু করছে? আমেরিকার রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ব্লকেড সত্ত্বেও, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক বা IMF এর থেকে আর্থিক সাহায্য না পেয়েও এ হেন উন্নতির কারণ খুঁজলে একটা অবশ্যই হল এই দেশ একটা বিপ্লব এর মধ্যে দিয়ে গেছে। সেই বিপ্লবের পরিণতি আজ ঠিক কী, কিউবা কতটা আদৌ সমাজতান্ত্রিক সে নিয়ে তর্ক সরিয়ে রাখলেও একথা অনস্বীকার্য যে সম্পদের বন্টন ও সরকারের নানা রাষ্ট্রনীতির ভরকেন্দ্রের ক্ষেত্রে একটা আমূল পরিবর্তন যে বিপ্লবের সাথে তাল মিলিয়ে হয়েছিল তার উপর ভিত্তি করে এই উন্নতি ঘটানো সম্ভব হচ্ছে।
কিউবা নিয়ে এত বিশদে বলার কারণ একটাই, স্বাস্থ্যব্যবস্থার এক ধরনের মডেল সম্পর্কে খানিক ধারণা পাওয়া। অতিসরলীকরণের ঝুঁকি নিয়েও সহজ করে বললে পৃথিবীতে মোদ্দায় দু’ধরনের স্বাস্থব্যবস্থার মডেল রয়েছে। একটি হল জনস্বাস্থ্য বা গণস্বাস্থ্য। যার মূল ভরকেন্দ্র হল কমিউনিটি, অর্থাৎ গোটা সমাজ, রোগীর সামাজিক অবস্থান। ক্লিনিকাল দিকের পাশাপাশি রোগের সামাজিক, অর্থনৈতিক এট্রিবিউশনকে এড়িয়ে না গিয়ে সেগুলোর সাথে জুড়ে চিকিৎসাকে দেখা। সর্বোপরি যেখানে স্বাস্থ্য নাগরিকের অধিকার, দেশের সব নাগরিকের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব রাষ্ট্রের, সরকারের। অন্য মডেলটিতে স্বাস্থ্য নেহাৎই পণ্য, বা খুব বেশি হলে পরিষেবা, অধিকার নয়। সেখানে পকেটে টাকা থাকলে আপনি কিনতে পারবেন চিকিৎসা-পরিষেবা। যথেষ্ট অর্থ না থাকলে সেখানে নো এন্ট্রি। এই দুয়েরই নানা পার্মুটেশন-কম্বিনেশন বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্যনীতি হিসেবে চালু রয়েছে। কোভিড-১৯ এর মোকাবিলার প্রসঙ্গেই কয়েকটি দেশের স্বাস্থ্যনীতির তুলনামূলক আলোচনা করা যেতে পারে।
করোনা প্যানডেমিকের প্রথম এপিসেন্টার চীন। প্রাথমিক মৃত্যুমিছিলের ধাক্কা সামলে চীন আপাতত যুদ্ধ চালাচ্ছে করোনার বিরুদ্ধে, এবং সেই যুদ্ধে সে আপাতত বেশ স্বস্তিজনক জায়গায়। এর আগে ২০০৩ এ SARS এপিডেমিক এর সময় গোটা দেশ জুড়ে চীন বানায় অসংখ্য ফিভার ক্লিনিক। সেই ফিভার ক্লিনিগুলোই কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই প্রাথমিক ও মূল যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানে স্ক্রিনিং-এর পর প্রয়োজনমত রোগীদের বুকের সিটি স্ক্যান করা হচ্ছে এবং তাতে ফুসফুসে বাইল্যাটেরাল পেরিফেরাল কন্সোলিডেশন থাকলে সরকারি খরচে টেস্টিং কিট দিয়ে পরীক্ষা করে নিশ্চিত করা হচ্ছে। ফলে গোটা দেশে সমসত্ত্ব হারে টেস্টিং চলছে। পরীক্ষায় পজিটিভ রোগীদের ট্রায়াজ করা হচ্ছে এবং রোগের সিভিয়ারিটি অনুযায়ী আইসোলেশন, জেনারেল অথবা ক্রিটিকাল কেয়ার দেওয়া হচ্ছে। লকডাউন কার্যকরী করার জন্য খাবার, ওষুধ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে সরকার। বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পরিষেবা যাতে বকেয়া বিলের জন্য বিচ্ছিন্ন না করা হয় তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিশ্বরাজনীতির দাদা আমেরিকার অবস্থা বেশ শোচনীয়। ইতিমধ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে সে। WHO যেখানে বলছে এপিডেমিকের স্টেজ থ্রিতে ট্রেস এন্ড টেস্ট-এর গুরুত্ব অপরিসীম, সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ পেরোলেও এখনো আমেরিকার ২০শে মার্চের হিসেব অনুযায়ী প্রতি দশ লক্ষ জনগণের মধ্যে টেস্ট-এর সংখ্যা মাত্র ২৬ (চীনের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা প্রায় ২৮০০) এ হেন প্রতিপত্তিওয়ালা দেশের এমন অবস্থা কেন? কারণ খুঁজতে গেলে আসতে হবে আবার সেই স্বাস্থ্যনীতির প্রসঙ্গে। আমেরিকার স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রায় গোটাটাই বেসরকারি এবং স্বাস্থ্যবীমা নির্ভর। কিন্তু সমস্যা হল প্রায় তিন কোটি মানুষ এই স্বাস্থ্যবীমার আওতাতেই পড়েন না, যা আমেরিকার মোট জনসংখ্যার ৮.৫%। আবার যাঁরা আওতায় পড়েন তাঁদের একটা বিশাল অংশের কেবল টেস্টিং-এর খরচ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে কভার করা হচ্ছে, চিকিৎসার নয়। শেষ ২০১৮ সালেও ট্রাম্প সরকার সরকারি স্বাস্থ্য-সুরক্ষা খাতের ৮০% ছাটাই করে স্বাস্থ্যক্ষেত্রের বেসরকারিকরণ প্রায় সম্পূর্ণ করেছে। যার ফলে নিছক টেস্ট করতেই বেসরকারি জায়গায় খরচ হচ্ছে ২০০০ থেকে ৩৫০০ ডলারের রেঞ্জে। অর্থনীতি যাতে ধাক্কা না খায় ট্রাম্প সরকার এখনও এমনকি লকডাউন এর সিদ্ধান্তও নিতে পারেনি।ই তিমধ্যে চাকরি খোয়াচ্ছেন বহু মানুষ। করোনা-প্রকোপ শেষে যে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াতে পারে আমেরিকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০%। হায়, দেয়ার ইজ নো অল্টারনেটিভ এর একনিষ্ঠ প্রচারকেরা, আংকল স্যামের এ হেন দুরবস্থা তেও কি একবারও মনে হবে না, দেয়ার শ্যুড বি অ্যান অল্টারনেটিভ?
এবার আসা যাক ভারতের প্রশ্নে। গোটা দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা হয়ে গেল, কিন্তু লকডাউন কার্যকরী করতে গেলে যে যে পরিকল্পনার প্রয়োজন ছিল তার ছিটেফোঁটা দেখা গেল না। লকডাউনের ফলে বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করতে আসা ভিনরাজ্যের লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকেরা কোথায় থাকবেন, কি খাবেন, কিভাবে ফিরবেন, ‘কমিউনিটি স্প্রেড’ এর দোরগোড়ায় তাঁদের কোয়ারান্টাইনের কি ব্যবস্থা হবে তা নিয়ে একটা বাক্য খরচ করল না সরকার।‘শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা আর হাত নিয়মিত ধোয়া’র বিজ্ঞাপন শুনতে শুনতে কাতারে কাতারে লাইন দিচ্ছেন তাঁরা কখনো দিল্লির আনন্দ বিহার বাস স্ট্যান্ডে, কখনো ২০০-৩০০-৪০০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ন্যাশনাল হাইওয়ে বরাবর চলেছেন অনিশ্চিত গন্তব্যে। যাঁরা দিন-আনি-দিন-খাই তাঁদের জন্য (তাঁদের সংখ্যা ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ৩৭%) অর্থনৈতিক সহায়তার কোন ঘোষণা হল না। যথাযথ হাসপাতাল পরিকাঠামো নেই, নেই পর্যাপ্ত টেস্টিংএর ব্যবস্থা। এখনও প্রতি দশ লাখ জনসংখ্যায় টেস্টের সংখ্যা মাত্র ১৮। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের সামনের সারিতে যাঁরা লড়বেন সেই ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের নেই পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট-এর কোন ব্যবস্থা। কোথাও রেনকোট, কোথাও আবর্জনা ফেলার ট্র্যাশ-ব্যাগ দিয়ে তৈরি পি পি ই দিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠানো হচ্ছে সুইসাইড মিশনে। এখনও বেসরকারি ল্যাবে ৪৫০০ টাকা লাগছে টেস্ট করতে, সরকারের তরফে এই দাম বেঁধে দেওয়ার কোন পরিকল্পনা নেই। এর পিছনে কারণ খুঁজলে বেরিয়ে আসবে নয়া উদারনীতিক স্বাস্থ্যনীতির মাধ্যমে স্বাস্থ্যকে পণ্য বানানোর, নাগরিকের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলার যে পরিকল্পনা ভারত সরকার দীর্ঘদিন নিয়ে এসেছে এসব তারই প্রতিচ্ছবি।
ভারতবর্ষের মত দেশে যেখানে জিডিপির ৩% খরচ বরাদ্দ করলে সমস্ত নাগরিকের (শ্রীনাথ রেড্ডি কমিশনের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ টিমের রিপোর্ট অনুযায়ী) জন্য ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ায়ের দায়িত্ব সরকারের পক্ষে নেওয়া সম্ভব সেখানে স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বাড়ানো নিয়ে সরকার ন্যূনতম উৎসাহী নয়, তার বদলে প্রতিরক্ষাখাতে বাজেট বেড়েই চলেছে ক্রমশ। নভেল করোনাভাইরাস(SARS-CoV2)এর আক্রমণ আমাদের ঘাড় ধরে দেখিয়ে দিচ্ছে যে একে ঠেকাতে কোনো মিসাইল-যুদ্ধবিমান কাজ করবে না, কাজ করবে না মন্দির-মসজিদ, কাজ করতে পারে একমাত্র উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, জনমুখী স্বাস্থ্যনীতি এবং বৈজ্ঞানিক জনদরদী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা।
এর বিশ্বব্যাপী আক্রমণ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে স্বাস্থ্য কোনো ‘প্রাইভেট’ বিষয় নয়, নয় কোনো একমাত্রিক বিষয়, হতে পারে না। বোঝা যাচ্ছে ‘জনস্বাস্থ্য’-এর গুরুত্ব। এতদিন ধরে গণস্বাস্থ্য আন্দোলনের কর্মীরা ভারতের মত দেশে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এর দাবি তুলছেন, কেন রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেওয়া উচিত সকল নাগরিকের স্বাস্থ্যের সে কথা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাচ্ছে।এ মহামারী কাটিয়ে উঠতে পারলে মন্দির-মূর্তি-মিসাইলের চেয়ে হাসপাতাল-ভেন্টিলেটর-স্বাস্থ্যখাতে বাজেট কেন অনেক বেশি জরুরি সে যুক্তি জনমানসে মান্যতা পেতে আশা করি খুব সমস্যা হবে না।
ততদিনের জন্য থাক করোনার করাল মৃত্যুমিছিলের কালরাত্রি পেরিয়ে নতুন ভোরের স্বপ্ন, থাক করোনা পরবর্তী পৃথিবীতে লিওনার্দো ফার্নান্দেজ দের উত্তরাধিকার বহনের অঙ্গীকার।
খুবই তথ্যপূর্ণ লেখনী।