Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

রোসেনহ্যানের পরীক্ষা

WhatsApp Image 2021-10-25 at 9.57.46 AM
Dr. Aditya Sarkar

Dr. Aditya Sarkar

MD trainee in Psychiatry
My Other Posts
  • October 30, 2021
  • 7:27 am
  • No Comments

১৯৭৩ সালের জানুয়ারি মাসে সায়েন্সে প্রকাশিত হল নয় পাতার এক পেপার। লেখক হলেন স্ট্যান্ডফোড ইউনিভার্সটির আইন ও সাইকলোজি বিভাগের প্রফেসর ডেভিড রোসেনহ্যান (David Rosenhan)। এই পেপার তৎকালীন মানসিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেকটা উল্কাপাতের মতই আছড়ে পড়ল যেন। একদম ভিত নাড়িয়ে দিল সেই সময়কার মানসিক রোগ নির্ধারণের পদ্ধতিকে, চ্যালেঞ্জ করল মানসিক চিকিৎসার উপর জনমানসের বিশ্বাসকে, যার কোনও জোরালো সদুত্তর তৎক্ষণাৎ হাজির করতে পারল না সেই সময়ের চিকিৎসা মহল। শুধু তাই নয় ইউরোপ ও আমেরিকা জুড়ে মিডিয়া হাউসও প্রচণ্ড গুরুত্ব দিল এই স্টাডির বক্তব্যকে, রোসেনহ্যান হয়ে উঠলেন রাতারাতি বিখ্যাত ও আলোচনার বিষয়বস্তু।

ঠিক কী করেছিলেন ডেভিড রোসেনহ্যান তাঁর স্টাডিতে?? কী ই বা লিখেছিলেন তাঁর সেই নয় পাতায়, যা নিয়ে গোটা দুনিয়াজুড়ে হুলস্থুল পড়ে গেল?

রোসেনহ্যান নিজের পেপার শুরু করছেন এইভাবে- “যদি পাগলামো (Insanity) বা উন্মাদ এবং মানসিক সুস্থতা (Sanity) দুটোরই নিজস্ব নিজস্ব অস্তিত্ব থাকে, আমরা কীভাবে তাদেরকে চিনব, আলাদা করব?”

এই স্টাডির জন্যে তিনি আট জন ছদ্ম-মানসিক রোগী (Pseudopatient) কে নিযুক্ত করলেন। অর্থাৎ মানসিক রোগ হলে যে সমস্যা হয় তা তাদের শিখিয়ে দেওয়া হল ভালো করে যাতে তারা সেগুলো হাসপাতালে সবার সামনে বলতে পারে! মূলত তাদেরকে অডিটরি হ্যালুশিনেশান(Auditory Hallucination )-এর সমস্যা। এই আট জনের মধ্যে তিন জন মেয়ে আর পাঁচ জন ছেলে, যার মধ্যে মধ্যে রোসেনহ্যান নিজেও একজন ছিলেন। পেশার দিক থেকে একজন ছিলেন সাইকোলজির ছাত্র, তিনজন সাইকলজিস্ট, একজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, একজন সাইকিয়াট্রিস্ট, একজন চিত্রকর এবং একজন গৃহবধূ। হাসপাতালে গিয়ে তারা বলত আশেপাশে কেউ বা কোনও আওয়াজ না থাকলেও একা থাকাকালীন তারা কানে স্পষ্ট শব্দ শুনতে পাচ্ছে, সেগুলো হল- শূন্য (Empty), ফাঁকা (Hollow), ধপ (Thud) শব্দ। এই শব্দগুলো এই ভেবে পছন্দ করা হয়েছিল যে এটা শুনে কেউ চিন্তা করতে পারে যে সে একটি ভয় বা কোনরকম সংকটজনক অবস্থায় (Existential Crisis) আছে, যা কিনা সাইকোটিক (Psychotic) সিম্পটমের তৎকালীন বোঝাপড়ার সাথে সামঞ্জ্যস্যপূর্ণ।

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ৫ টি রাজ্যের মোট ১২ টি হাসপাতালে তাঁরা এই অডিটরি হ্যালুশিনেশানের ভান করলেন, এই ১২ টি হাসপাতালের মধ্যে অন্যতম ছিল সেন্ট লুই এলিজাবেথ হাসপাতাল যা বর্তমান ওয়াশিংটন ডিসির কাছে, এখন পরিত্যক্ত ও বন্ধ। অন্যান্য হাসপাতালগুলো ছিল মিলিয়ে মিশিয়ে, কিছুটা গ্রামের দিকে, কয়েকটা শহরের খুব স্বনামধন্য সরকারি হাসপাতাল, কিছু নামি বেসরকারি হাসপাতাল। এবং সমস্ত হাসপাতালেই তাদের ভর্তি করে গুরুতর মানসিক রোগের ডায়াগনোসিস দেওয়া হল। আট জনের মধ্যে ৭ জনকে সিজোফ্রেনিয়া ও একজনকে ম্যানিক-ডিপ্রেসিভ সাইকোসিস বলে শনাক্ত করা হল। তাদের হাসপাতালে থাকার সময়সীমা ছিল প্রায় ৭ থেকে ৫২ দিন, গড়ে ১৯ দিন। হাসপাতালে রোজ ডাক্তারদের রোগীর সামানাসামনি দেখার সময় ছিল গড়ে প্রায় ৬.৮ মিনিট।

এই ছদ্ম-রোগীরা হাসপাতালে ভর্তির পর একদম স্বাভাবিক আচরণ শুরু করত। শুধুমাত্র ভর্তির সময় প্রথমদিকের দুশ্চিন্তা বাদ দিলে তাদের খুব বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি। তারা তাদের অতীতে ঘটে যাওয়া অডিটরি হ্যালুশিনেশানের কথাই শুধুমাত্র বলত। তাদেরকে তাই সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia) রোগ হ্রাসপ্রাপ্ত দশা (In remission) বলে ডায়াগনোসিস করা হয়!

তারা ওয়ার্ডে (রোগীরা যেখানে ভর্তি থাকেন) নিজেদের স্টাডির জন্যে অনেক কিছু লিখে রাখত। আশ্চর্যের বিষয় হল কোনও ডাক্তার বা হাসপাতাল কর্মী এদেরকে সন্দেহ করে নি একবারের জন্যেও! এমনকি এই লেখা ব্যাপারটাকেও প্যাথোলজিকাল বলে দিয়েছিল কয়েকজন নার্স! তবে ১১৮ জন আসল রোগীর মধ্যে ৩৫ জন রোগী এই ছদ্মরোগীদের উপস্থিতিকে সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করে এবং কোনও একটা কাজে তারা হাসপাতালে রয়েছে এইটা তারা বলতে শুরু করে- ‘তোমরা এখানে সাংবাদিকতা করতে এসছ।’ কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই কেউ কর্ণপাত করেন নি!

রোসেনহ্যানের এজেন্টরা অর্থাৎ ছদ্ম রোগীরা এরপর নিজেরা হাসপাতাল থেকে স্ব-ইচ্ছায় ছুটি নিতে চাইলে তাদের আটকে দেওয়া হয়, ছদ্মরোগীদের বক্তব্য ছিল যে তারা আর এই আওয়াজ অর্থাৎ অডিটরি হ্যালুশিনেশান শুনতে পাচ্ছে না- তারা এখন ঠিক আছে! কিন্তু তখনকার হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী একবার ভর্তি হলে এবং ডায়াগনোসিস হয়ে গেলে, কোনও রোগী যতক্ষণ না এটা মানে যে তার রোগ আছে এবং মেডিসিন খেতে রাজি হয় ততক্ষণ তাদের ছুটি করা হয় না! ছদ্ম রোগীরা নিজেদের অসুখের কথা মেনে নিল এবং ওষুধ নিতে শুরু করল, কিন্তু সেই ওষুধ তারা কেউ খেত না, হাসপাতালের বাথরুমে ফ্লাশ করে দিত। আর নিজেদের ডায়ারি লিখে রাখত। কোনও হাসপাতাল কর্মচারী এটা লক্ষ্য করে নি!

রোসেনহ্যানের এই বিখ্যাত পেপারের নাম ছিল-On being Sane in Insane Places। তিনি শেষ করলেন এই বলে- ‘ আমরা জানতাম যে মানসিক রোগ নির্ধারণের পদ্ধতি ভরসাযোগ্য নয়, এখন প্রমাণ হয়ে গেলো যে আমরা পাগলামি আর অ-পাগলামির (সুস্থতার) মধ্যে কোনও সুনির্দিষ্ট পার্থক্য করতে পারি না!

বলা বাহুল্য এই পেপার একটা বিস্ফোরণের চেয়ে কম কিছু ছিল না! পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত শোরগোল পড়ে গেলো! এমনিতেই তখন অ্যান্টি-সাইকিয়াট্রি আন্দোলন (Anti-Psychiatry– এটা নিয়ে পরে বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে) জোরদার হয় উঠেছিল। মানসিক রোগ নির্ধারণের পদ্ধতি, মানসিক চিকিৎসার ন্যায়নীতি, মানসিক রোগীদের অধিকার, জোর করে পাগালা গারদে ভর্তি করে রাখা সমস্ত কিছু নিয়েই প্রশ্ন উঠছিল, যার কোনও সদুত্তর ছিল না তৎকালীন মানসিক রোগ চিকিৎসকদের কাছে ! রোসেনহ্যানের এই পরীক্ষা যেন আগুনে ঘি ঢালার কাজ করল।

দ্বিতীয় পর্ব

রোসেনহ্যানের এইরকম বাড়বাড়ন্ত দেখে তৎকালীন আমেরিকার এক প্রসিদ্ধ মানসিক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ওনাকে চ্যালেঞ্জ করে বসলেন, বললেন রোসেনহ্যান তার ছদ্মরোগীদের আমাদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেখাক, আমরা খুঁজে বের করব। রোসেনহ্যান চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেন। তাঁদের মধ্যে রফা হল আগামী তিনমাসের মধ্যে রোসেনহ্যান সেই হাসপাতালে এক বা দুজন ছদ্মরোগী পাঠাবেন! সেই হাসপাতাল আগামী তিন মাস খুব সময় দিয়ে, কড়া নজরদারির উপায়ে রোগীদের দেখাশোনা করতে শুরু করল। ১৯৩ জন রোগীদের মধ্যে ৪২ জনকে অভিনয় করছে বলে ভাবা হয়, তারপর আরও ৪১ জনকে রোসেনহ্যানের লোক বলে শনাক্ত করা হয়। শেষমেষ এক বা দুজনকে রোসেনহ্যানের ছদ্ম রোগী বলে জানানো হয়! রোসেনহ্যান জনসমক্ষে জানালেন যে তিনি আদৌই কোনও রোগী ওই হাসপাতালে পাঠাননি!

রোসেনহ্যান কেন এই পরীক্ষার কথা ভাবলেন?

এমনিতেই ষাটের দশক সমস্ত বিশ্ব জুড়েই এক উথাল-পাথাল অবস্থা। প্রাতিষ্ঠানিকতার বিরুদ্ধে লড়াই উঠেছিল জোর গলায়- ‘গে-লেসবিয়ান ট্রান্স জেন্ডারদের’ মানবিক অধিকার নিয়ে, নারীবাদী আন্দোলন (2nd wave feminism), ভিয়েতনাম যুদ্ধ, চীনের মহান সাংস্কৃতিক আন্দোলন  সমস্ত কিছুতেই এক প্রশ্ন উঠেছিল পরিবর্তনের। সাইকিয়াট্রি বা মানসিক রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও এই চুলচেরা পর্যবেক্ষণের আওতায় চলে আসে। রোসেনহ্যানের পরীক্ষার আগে, অনেকেই মানসিক হাসপাতালে ঠিক কীভাবে রোগ ঠিক করা হয়, চিকিৎসা পদ্ধতি কেমন তা নিয়ে সামনাসামনি এসে দেখছিলেন, প্রশ্ন তুলছিলেন। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা ছিল খুব অল্প সময়কালীন এবং হাসপাতাল চিকিৎসকরা তাঁদের উপস্থিতির কথা জানতেন। রোসেনহ্যান এই পদ্ধতিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইলেন। তিনি জানতে চাইলেন ঠিক কিসের উপর ভিত্তি করে এই মানসিক রোগ নির্ধারণ ও মূল্যায়ন করা হয়! আর ডি লেইং (R.D. Laing) যিনি ছিলেন সেই সময়কার অ্যান্টি সাইকিয়াট্রি আন্দোলনের অন্যতম মুখ, তাঁর বক্তব্য শুনে রোসেনহ্যান আরও বেশি উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠেন এবং এই পদ্ধতিতেই যে মানসিক রোগ নির্ধারণের ভ্রান্তি বা ফাঁকা জায়াগাগুলো ধরা যাবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে উঠলেন। তাঁরা দেখিয়েছিলেন কীভাবে সেই সময় মানসিক হাসপাতালগুলোতে অনেক সময়েই অমানবিক চিকিৎসা চলছিল, রোগীদের ব্যক্তিগত পরিসরকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছিল না, স্বাভাবিক ব্যবহারকেও সব সময় অস্বাভাবিক আচরণ বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছিল! তাঁরা একথাও লিখে গেছেন হাসপাতালের কিছু স্টাফ রোগীদের সাথে দুর্ব্যবহার ও অকথ্য আচরণ করত।

পরীক্ষার ভ্রান্তি

সায়েন্সে প্রকাশিত রোসেনহ্যানের এই আর্টিকেল মানসিক রোগের মূল্যায়নকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল, সমালোচনা করেছিল তৎকালীন চিকিৎসা পদ্ধতি যেভাবে, মানসিক রোগীর নিজস্ব অধিকার খর্ব করত তার ক্ষমতাকে, চিকিৎসা পদ্ধতির অমানবিক প্রাতিষ্ঠানিকতাকে,,যা কিনা সেইসময় ঘটে চলা অ্যান্টিসাইকিয়াট্রি আন্দোলনের স্বপক্ষে ছিল।

যদিও ধীরে ধীরে অনেকেই এই স্টাডির পদ্ধতি ও গুণগত মান বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। সাইকিয়াট্রিস্টদের মধ্যে কয়েকজন নিজেদের অবস্থানকে পোক্ত করে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেন- মানসিক রোগ নির্ধারণের বিষয়টি মূলত দাঁড়িয়ে আছে রোগী আপনাকে কী বলছে তার উপর, তাঁর ব্যক্তিগত নিজস্ব অভিজ্ঞতার উপর! সেটা যে কোনও মেডিকাল সিম্পটমের ক্ষেত্রেই সত্যি! রবার্ট স্পিটজার ( Robert Spitzer) যিনি পরে ১৯৮০ সালে DSM (Diagnostic and statistical Manual of Mental Disorder- III)-এর প্রধান ব্যাক্তি হিসেবে কাজ করেন,, সাইকিয়াট্রিস্টদের পক্ষ থেকে যুক্তি দেন- “যদি আমি খানিকটা রক্ত খেয়ে নি, এবং কাউকে কিছু না জানিয়ে যে কোনও হাসপাতালের এমারজেন্সিতে এসে রক্ত বমি করতে থাকি, তাহলে আমি জানি, এমারজেন্সির ডাক্তারবাবুরা কী করবেন – তাঁরা সবার আগে আমার পেপটিক আলসার বা গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়েছে বলে ধরে নেবেন। সেইমত চিকিৎসা শুরু করবেন, আমি কি তখন যুক্তি দিয়ে তর্ক জুড়ব যে মেডিকাল সায়েন্স জানে না আসলে কীভাবে রোগ নির্ধারণ করতে হয়?!”

সম্প্রতি রোসেনহ্যানের পরীক্ষা নিয়ে ২০১৯ সালে ‘দ্য গ্রেট প্রিটেন্ডার’ (The Great Pretender) বলে ৩৮৩ পাতার এক বিখ্যাত বই লেখেন নিউইয়র্কের জনপ্রিয় লেখিকা সুজানা কাহালান (Susannah Cahalan), যেখানে তিনি এই পরীক্ষার বৈধতা (Validity) ও বিশ্বাসযোগ্যতা (Reliability) ও সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন! রোসেনহ্যান মারা যাওয়ার পর তাঁর যে ফেলে রাখা তথ্য ও নথি ছিল তা ঘেঁটে কাহালান সায়েন্সে প্রকাশিত জার্নালে খুঁজে পান- অনেক অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য, বিভ্রান্তিকর বর্ণনা, ওই ছদ্মরোগীদের লিখে যাওয়া ফুটনোটে প্রচুর ভুল এবং ত্রুটিপূর্ণ নথিপত্র, যা হাসপাতালের নিজস্ব রেকর্ডের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়! আরও আশ্চর্যজনক হল ব্যাপক গবেষণা ও খোঁজার পরেও কাহালান ওই আটজন ছদ্মরোগীর মধ্যে শুধুমাত্র দুইজনের বাস্তব অস্তিত্বকে শনাক্ত করতে পারেন- এই দুইজনের মধ্যে একজন হলেন রোসেনহ্যান নিজে, আরেকজন হল এক গ্র্যাজুয়েট ছাত্র যার বয়ানের সাথে রোসেনহ্যানের আর্টিকেলের বর্ণনার কোনও মিল নেই। আসলে রোসেনহ্যান তৎকালীন সাইকিয়াট্রি প্র্যাকটিসকে সমালোচনা করতে গিয়ে, অর্ধসত্যের পাল্লাকে নিজের দিকে ভারি করতে গিয়ে অনেক বাড়তি কিছু বলে ফেলেছেন, কাহালান তাই আরও প্রশ্ন করেছেন যে কিছুজন বা বাদবাকি ৬ জন লোকই হয়তো রোসেনহ্যানের কল্পনাপ্রসূত, হয়ত তাদের কোনও বাস্তবিক অস্তিত্বই ছিল না!

রোসেনহ্যান পরীক্ষার মত পরীক্ষা আরও অনেকেই এই ধরণের পরীক্ষা করেছেন যেমন ২০০৪ সালে Lauren Slater এর Opening Skinner Box কিম্বা ২০০৮ সালে BBC এর ‘Horizon’ যদিও সব পরীক্ষার উদ্দেশ্য রোসেনহ্যানের মত ছিল না ! কিন্তু সমস্ত পরীক্ষা নিয়েই উঠে এসছে প্রচুর জিজ্ঞাসা, তার পদ্ধতি ও সঠিক ন্যায়নীতি নিয়ে! এইভাবে যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বৈধতা (Validity ) ও বিশ্বাসযোগ্যতা (Reliability) নিয়ে প্রশ্ন করা যায় না তা আজ প্রমাণিত।

আজ থেকে ৫০-৬০ বছর আগে মানসিক হাসপাতালগুলোর অবস্থা এবং আজকের মানসিক হাসপাতালে যেভাবে রোগীদের রাখা হয় তার মধ্যে অনেক পার্থক্য তা বলাই বাহুল্য! সেই সময় রোসেনহ্যানের পরীক্ষা মানসিক রোগ ও মানসিক রোগীদের হাসপাতাল নিয়ে অনেক বিতর্ক তৈরি করার পাশাপাশি কিছু গঠনমূলক কাজেও সাহায্য করেছিল বলে ভাবা হয়! যেমন মানসিক হাসপাতালগুলোর পরিষেবা এবং অবস্থান অনেক বেশি রোগীদের জন্যে হয়ে ওঠে, তাদের নিজস্ব অধিকারের কথা অনেক জোরালো হয়ে ওঠে! ১৯৭৭ সালে Declaration of Hawaii-তে তাই মানসিক চিকিৎসার ক্ষেত্র যুক্ত হয়, বিভিন্ন নৈতিক দায়িত্বর কথা তুলে ধরা হয়! ১৯৮০ সালে DSM III প্রকাশিত হয় যা মানসিক রোগ নির্ধারণের বৈধতাকে অনেক স্বচ্ছ করে তোলে।

একথা আজও ঠিক যে মানসিক রোগ মূল্যায়নের বৈধতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষেত্রে এখনও কিছু দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে, রয়েছে কিছু অস্বচ্ছতা, তার মানে এই নয় যে পুরোটাই ফাঁপা মিথ্যে, মানসিক রোগ বলে কিছু হয় না। মানসিক রোগ নিয়ে সমাজে স্টিগমা যেমন আছে, ঠিক তেমনি উল্টোদিকে মানসিক রোগের বাস্তবতা স্পষ্ট ভাবে রয়েছে, সমাজে তার প্রতিফলন আছে, তেমনি তার সুনির্দিষ্ট চিকিৎসাও রয়েছে! রোসেনহ্যান তৎকালীন মানসিক চিকিৎসা পদ্ধতির কয়েকটি দিক নিয়ে বেশ জোরালো প্রশ্ন তুলেছিলেন, তার কিছুটা সেই সময়ের নিরিখে প্রয়োজনীয়ও ছিল! সেই ধোঁয়াশা ও দুর্বলতা আমরা আজ কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে আমরা তা আরও স্বচ্ছ এবং জোরালো করে তুলতে পারব বলে আমাদের বিশ্বাস।

PrevPreviousঅধ্যক্ষ অপসারণের দাবীতে অনড় আর জি করের পড়ুয়ারা
Nextস্বপ্ন‌ উড়ান ২Next
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

Vicissitudes of Female Medical Education in Bengal/India – Kadambini Revisited

May 28, 2023 No Comments

Setting the Theme  At present, medicine connects with the economy by various and different routes. Not simply in so far as it is capable of

চাবি

May 27, 2023 No Comments

১ পাঠক জানেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সত্যান্বষী’ গল্প- যে গল্পে তিনি ব্যোমকেশ বক্সীকে প্রথম উপস্থাপিত করেন- তাতে অন্যতম প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে একটা ‘ইয়েল লক’-এর কথা আছে।

বিষোপাখ্যান

May 26, 2023 No Comments

২০১৫ সালে ডেবরা হাসপাতালে যখন জয়েন করি তখন হাসপাতাল এত ঝাঁ চকচকে সুপার স্পেশালিটি হয়নি। হাতে গোনা কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মী নিয়ে আমাদের রোজনামচায় রোগের চিকিৎসার

এসএসকেএম হাসপাতাল কান্ড

May 25, 2023 No Comments

কয়েকদিন আগে এসএসকেএম হাসপাতালে একজন প্রাক্তন মন্ত্রী এসে যে কাজটা করেছেন, সত্যি বলতে মন জিতে নিয়েছেন একজন মুমূর্ষু রোগী হাসপাতালে এসে বেড না পেলে একজন

নিরীহাসুরের রিটার্ন গিফ্ট (জন্মদিনে)

May 24, 2023 No Comments

দেখতে দেখতে বেয়াল্লিশ-এ পা রাখা হয়ে গেল টপটপিয়ে। আর এই মধ্যরাতে… লোভাতুর মন আমার ফেসবুক মেমোরি হাতড়ে হুতড়ে খুঁজে পেল বছর বারো আগের কিছু শুভেচ্ছা

সাম্প্রতিক পোস্ট

Vicissitudes of Female Medical Education in Bengal/India – Kadambini Revisited

Dr. Jayanta Bhattacharya May 28, 2023

চাবি

Dr. Chinmay Nath May 27, 2023

বিষোপাখ্যান

Dr. Subhendu Bag May 26, 2023

এসএসকেএম হাসপাতাল কান্ড

Dr. Subhanshu Pal May 25, 2023

নিরীহাসুরের রিটার্ন গিফ্ট (জন্মদিনে)

Dr. Sabyasachi Sengupta May 24, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

434183
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]