Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

নীলনয়না স্বর্ণকেশী ও ছাতিমসন্ধ‍্যায় পেট খারাপ

SAVE_20211019_220051
Dr. Dipankar Ghosh

Dr. Dipankar Ghosh

General Physician
My Other Posts
  • October 20, 2021
  • 8:16 am
  • 2 Comments

তখন সবে হেমন্তের একফালি চাঁদ উঁকি দিচ্ছে আকাশের কোণায়। একটি কাজের মেয়ে ক্লান্ত ঘোড়ার মতো, মুখে ফেনা তুলে, ছুটতে ছুটতে চলে গেল স্টেশনের দিকে। সারা দিন ধরে’ লোকের বাড়িতে কাজ করে, তাকে শেষ ট্রেন ধরে’ যেতে হবে দূর সুন্দরবনের এক গ্রামে। একটা নিভু নিভু নিয়নের আলোয়, ফুলন্ত ছাতিম গাছের তলায় একটা সিমেন্টের বেঞ্চিতে আমাদের আধাপাগল, মাতাল, আধবুড়ো হাতুড়ে বসে’ ছিলেন। দূর থেকে ঢাকের শব্দ আসে, শব্দ কিন্তু আগেকার মতো জলদমন্দ্র নয়। এখন ঢাকে কৃত্রিম চামড়া ব‍্যবহার করা হয়। অথচ ধর্মীয় আচার অনুযায়ী ঢাক আর শ্রীখোলের জন্য গোচর্ম ব‍্যবহার করাটাই রীতি, তাই কানে পীড়া দেওয়া শব্দ হয়।

হঠাৎ হাতুড়ের মনে পড়লো দার্জিলিংয়ের কথা। ছোটবেলায় মা বাবার সঙ্গে কেবলমাত্র বর্ষাকালেই দার্জিলিং যাওয়া হতো। হয়তো, সেই দুজনের যৌবনের কোনও মেঘমধুর, পাহাড়ি বর্ষার স্মৃতি ছিলো মনে। দুপুরে হাতে কিছু টাকা পেলেই বাচ্চা হাতুড়ে,মা বাবাকে একটা সস্তা হোটেলে ফেলে রেখে, ঘোড়ায় চাপতে চলে যেতেন ম‍্যালে। জলভরা মেঘ গায়ে মেখে, সেই তীব্র জোলো আবহাওয়ায়, পাহাড়ে ঘোরার অন্য কোনও খরিদ্দার থাকতো না।সুতরাং এই ঝাঁকড়া চুলের, জবরজং গরম জামা পরা কিশোরকে ঘোড়াওয়ালারা বিশেষ যত্ন করতো। সেদিন দুপুরে, মাথায়, গায়ে মেঘ মেখে’ বাচ্চা হাতুড়ে একঘণ্টা পাহাড়ে একা ঘোরার জন্য একটা অতীব শান্ত, ছোটোখাটো অশ্বতরকে বেছে নিয়েছেন। হঠাৎ পাশে তাকিয়ে দ‍্যাখেন, পা দাপানো, খুরে ধুলো ওড়া একটা দুধসাদা আরবি ঘোড়ার পিঠে একজন নীলনয়না স্বর্ণকেশী কিশোরী উঠে বসলো। মেঘময় বাতাসে তার সোনালী চুল ওড়ে।ঘোড়ার খুরে টগবগ শব্দ তুলে সে চলে গেলো খাড়াই পাকদন্ডী বেয়ে অন্য পথে।

দীর্ঘ সময় পরে, যখন ঘোড়ার শক্ত জিনে বসে হাতুড়ের সম্ভাব্য লেজের জায়গায় অসম্ভব বেদনা, তখন পেছন থেকে ঐ স্বর্ণকেশী, চুল উড়িয়ে, টগবগিয়ে এসে হাতুড়ের ঘোড়ার পাশে দাঁড়ালো। ফর্সা গাল তার আপেল রঙা হয়ে গেছে, চূর্ণ স্বর্ণকুন্তল কপালে এসে পড়েছে। বিদেশী উচ্চারণে হাতুড়েকে যা বললো তার অর্থ দাঁড়ায়- চলো আমার সঙ্গে ঘোড়ার দৌড় করো- বলেই সে টগবগিয়ে চলে গেলো পাথুরে রাস্তায় গ‍্যালপ তুলে’। অথচ হাতুড়ের শান্ত, বাধ্য, ছোটোখাটো ঘোড়া শত খোঁচাখুঁচিতেও দৌড়োবার লক্ষণ দেখালো না, বরং লোমশ ল‍্যাজ নেড়ে নেড়ে, খাদের পাশে গজানো ফার্ন আর ঘাস খেতে ব‍্যস্ত হয়ে পড়লো।

আজও সে’কথা মনে পড়লে হাতুড়ের মনে হয়- আহা ঘোড়া যদি দৌড়তো, তাহলে হয়তো জীবনটা অন‍্য খাতে ব‌ইতো। এমন সময় একটা মিষ্টি সুরেলা গলা, হাতুড়ের কানের কাছে রিনরিন করে’ উঠলো “কি গো, কী ভাবছেন এ্যাতো? কখন থেকে এসে বসে আছি… হুঁ” ঝরা গুলঞ্চের পথ বেয়ে’ এক সুন্দরী এসে বসেছেন হাতুড়ের পাশে।

ইনি সদ‍্য হাতুড়ের প্রেমে পড়ছেন। টেকো, আধাপাগল হাতুড়ের কপালের জোর আছে, তাই না?

“আজ্ঞে, ছোটবেলায় দার্জিলিং গেস্লাম, সেই সব কথা ভাবছি”

“আমিও না একবার, দার্জিলিং গিয়েছিলাম। সেকি হিল ডায়েরিয়া, সেকি হিল ডায়েরিয়া! যদি মরে’ যেতাম ভালো হতো।আপনাকে কেউ বিরক্ত করতো না..” আফ্রোদিতির মতোন অদ্ভুত পাউটিং করে’ সুন্দরী অভিযোগ জানান। “হ‍্যাঁ গো, হিল ডায়েরিয়া কেন হয় একটু বলবেন?”

“প্রথমে ডায়েরিয়ার সংজ্ঞা ঠিক করা যাক। বলা হয় দিনে তিনবার বা তার বেশী পাতলা পায়খানা হলে তাকে ডায়েরিয়া বলা যাবে। কিন্তু হিল ডায়েরিয়া কথাটা ঠিক বিজ্ঞানভিত্তিক নয় (সুন্দরীরা বিপরীত কথা অপছন্দ করেন। বাঁকানো ধনুকভুরুর ক্রোধ উপেক্ষা করে’ই হাতুড়ে বলতে থাকেন)। আসল কথাটা হলো ট্র‍্যাভেলার্স ডায়েরিয়া। সাধারণতঃ বাইরের খাবার অথবা জল থেকে এই রোগ হয়। জীবনঘাতী নয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়াই বাঞ্ছনীয়।”

সুন্দরীর চোখ এবং আঁচল টলোমলো হয়ে যায়। “এটা কেন হয় গো? হঠাৎ করে সুস্থ লোকের কেন হবে?”

হাতুড়ে আনমনে চাঁদের চারপাশে প্রতিপ্রভায় মনোনিবেশ করেন।

উত্তর না পেয়ে আফ্রোদিতি অবাক হ’ন। “কি হলো? জানেন না?”

হাতুড়ে চাঁদের নৌকো থেকে নেমে আসেন “উঁ…সাধারণতঃ অপরিশোধিত, মাটির তলার প্রথম ইম্পার্ভিয়াস স্তরের জলে বা সারফেস ওয়াটারে এশ্চেরেশিয়া কোলাই থাকে- মানে ই.কোলাই জীবাণু থাকে। এরাই পেটে সংক্রমণ করে।”

“এসব কোথা থেকে আসে?”

“জীবজন্তু বা মানুষের পায়খানা থেকে। মাটির তলায় প্রথম যে জলস্তর থাকে সেটা মাটির প্রথম ইম্পার্ভিয়াস (অভেদ‍্য) লেয়ারের ঠিক তলায়। একটা ইম্পার্ভিয়াস লেয়ার সব জীবাণুকে ছেঁকে ফেলতে পারে না। তাই দ্বিতীয় ইম্পার্ভিয়াস লেয়ারের তলার জল খাওয়া উচিত, অর্থাৎ ডীপ টিউব‌ওয়েলের জল। তবে যে সব আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মির যন্ত্র বিজ্ঞাপিত, বহুল ব‍্যবহৃত এবং বাজারে পাওয়া যায় সেগুলো কতোটা কার্যকরী তাতে সন্দেহ আছে, কেন না সব জীবাণু (ব‍্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাস) মারতে যতোটা সময় অতিবেগুনি রশ্মির ভেতরে জলটা রাখা উচিত, ততক্ষণ কোন‌ও কোম্পানির যন্ত্র সেখানে জলটা রাখে কিনা সেটাই সন্দেহের কথা। দুর্গম পাহাড়ে বা জনবিরল জায়গায় জলে এই জীবাণুর উপস্থিতি কম, কেননা নরবর (গোবরের মতো, অর্থাৎ ‘গো’এর জায়গায় ‘নর’ বসিয়ে নিন) কম। তাই দুর্গম জায়গায় ঝর্ণার জল খাওয়া আপাত নিরাপদ।”

আফ্রোদিতির বিষ্ময় চোখ মুখ ছাড়িয়ে জ‍্যোৎস্নায় মিশে যায়। “ওগো, তাহলে ওলাওঠা রোগটা কী? খুব যে এটার নাম শুনেছি..”

তখন বাদুড়ের দল গ্রামের ফলের বাগানের দিকে নিঃশব্দে উড়ে চলেছে গভীর, ঘন, দ‍্যুতিময় নীল আকাশ বেয়ে, বকের দল সাদা ডানায় বালেন্দুজ‍্যোতি মেখে সেই গাছটির দিকে চলেছে, যেখানে তাদের বাকি বন্ধুরা অপেক্ষায় আছে।

হাতুড়ে কপালে হাত ঠেকালেন “নমোহ শ্রী ওলাইচন্ডয়ৈঃ নমোহ” তারপর বললেন “ভিব্রিও কলেরি”

আফ্রোদিতির রহস্যময় কাজল কাজল চাঁদের আলোমাখা চোখদুটো থতমত হয়ে গেলো “এসব আবার কি?”

“কলেরার দেবী আর কলেরার জীবাণু, ওলাইচন্ডী মারা গেছেন।আর ভিব্রিও কলেরি, প্রায় অস্তমিত সূর্য, তাই দুজনকেই প্রণাম ঠুকলাম”

আফ্রোদিতি উদগ্রীব (মরালে্র মতো গলা উঁচু করে’) হয়ে তাকিয়ে র‌ইলেন।

“এক সময় এশিয়াটিক কলেরা ভয়ংকর হয়ে উঠছিলো। আমাদের দেশে, কেবল নথিভুক্ত মৃত্যু ছিলো, সাতাশি লক্ষের বেশী। সব মৃত্যু নথিভুক্ত নেই।”

দূর থেকে কোনও মন্দিরের মাইকের গান ভেসে আসছে। তার সঙ্গে মন্দ্র সপ্তকে হাতুড়ের কন্ঠ ভেসে যায় হৈমন্তী বাতাসে “যেমন হিসেবের খাতা থেকে এক বছরে অতিরিক্ত সাড়ে একচল্লিশ লক্ষ করোনামৃত্যু হারিয়ে যায়- কেন না তাদের করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।। কিছু সাদা চামড়ার সৈন্য কলেরায় মারা না গেলে কোনও সাদা চামড়ার মানুষ আমাদের কথা ভাবতোই না; কলেরায় এই মহাদেশের সব মানুষ মারা গেলেও ফিরে তাকাতো না”

চাঁদের আলোয় অপার্থিব হয়ে ওঠা, সুন্দরী, মুগ্ধ বিষ্ময়ে তাকিয়ে থাকেন।

“কলেরার অপর নাম হলো ভেদবমি। প্রচন্ড বমি আর চালধোওয়া জলের মতো পায়খানায় শরীরের সব তরল বেরিয়ে যায়।”

“সব তরল বেরিয়ে যায়” চিরপ্রেমিকা তোতাপাখির মতো প্রতিধ্বনি করেন। তাঁর কাঁচাপাকা এলো চুল উড়ে হাতুড়ের গালে পড়ে।

“হ‍্যাঁ। শরীর শুকিয়ে যায়। সব অঙ্গ প্রত‍্যঙ্গ-কিডনি, হার্ট, সবাই শুকিয়ে মরে যায়। তাই প্রচুর জল, সঙ্গে লবণ, চিনি আর লেবু মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।”

হাতুড়ে পকেট হাৎড়ে বিড়ির বান্ডিল থেকে একটা বিড়ি দাঁতে চেপে, তাতে অগ্নিসংযোগ করেন। হেমন্ত কুজ্ঝটিকায় বিড়ির গন্ধ মিশে যায়।

“কিন্তু এই রোগে বড্ড বমি হয়- মুখে কিছু খাওয়ানো মুশকিল। তাই যাতে বমিতে না উঠে আসে সেভাবে শিরায় নুন, চিনির দ্রবণ চালানো হয়। এই অসুখ নিজের থেকেই ‘কমে’ যায়। কিন্তু রোগী ভবিষ্যতে রোগের বাহক হয়ে উঠতে পারে- বিশেষ যে দেশে পেয় জলের অভাব- শৌচালয়ের অভাব। কেন না আপাত সুস্থ রোগীর পায়খানায় এই রোগের জীবাণু থেকে যায় এবং সেই খোলা মাঠে করা পায়খানা থেকে ঐ জীবাণু বৃষ্টির জলে মিশে পুকুরে বা পানীয় জলের উৎসে পৌঁছে যাবে। সেটা ঠেকানোর জন্য কেউ কেউ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ব‍্যবহারের পক্ষে।”

হাতুড়ের চন্দ্রাহতের মতো অবাক বিষ্ময়ে আবছা চাঁদের আলোয় ধুয়ে যাওয়া খালপাড়, বাঁশঝাড়ের থেকে ভেসে আসা ব‍্যাঙের কড়াকিয়া নামতা পাঠের মতো ডাকাডাকি শুনতে থাকেন।

সুন্দরী হাতুড়ের শিরা ওঠা, কুঞ্চিত চর্ম, রুক্ষ হাতে, কোনোদিন কাজ না করা কোমল তালুটি রেখে বলেন “আর আন্ত্রিক?”

যদিও ঐ চন্দ্রমুখে আন্ত্রিক কথাটা ঠিক শোভন হয় না। কিন্তু হয়তো ওনার আন্ত্রিক হয়েছিলো।
হাতুড়ে অপলক কাজলনয়নার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকেন। ভদ্রমহিলা সঙ্কুচিত হয়ে’ নিজের আঁচলসজ্জা ঠিক করেন।

হাতুড়ে অস্ফুটে বলেন “আন্ত্রিক বলে’কোনও রোগ নেই। কাছাকাছি নামে ‘এন্টেরিক ফিভার’ আছে, কিন্তু সেটা টাইফয়েড।”

“তাহলে? সে বছর অতো লোক যে মারা গেলো, তারা..?”

“তারা দূষিত জল থেকে, ব‍্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন হয়ে’ মারা গেছে। কী ব‍্যাক্টেরিয়া বা কী ফাঙ্গাস-সরকার সেটা জানার চেষ্টা করেনি। কেন না, তাহলেই পেয় জল জোগানোর সরকারি ব‍্যর্থতার কথা প্রকাশ হয়ে যাবে। এরকম আরেকটা উদাহরণ ‘ক‍্যালকাটা ফিভার’। ঊনিশশো নব্বইয়ের পরেপরেই এই রোগ বহু মানুষের দুর্দশার ডেকে আনে। তারপর ডেঙ্গু। ডেঙ্গু হলো এক অজানা জ্বর। ডেঙ্গুকে ডেঙ্গু বলে’,মানুষের দুর্দশার কথা বলে’ একজন সরকারি ডাক্তার সাময়িক বরখাস্ত হয়ে’ গেলেন। সব শেষে আসে করোনা। গতবছর ‘অজানা জ্বর’ আর শ্বাসকষ্টে ভারতের গড়মৃত্যুর পরেও একচল্লিশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার মানুষ মারা গেলেন- যাঁরা গণচিতা, নদীর জল আর গণকবরে (রাজস্থান,বালিতে কবর) নিঁখোজ হলেন। সেই রকমই ঘটনা এটা। সব সরকার, সব দল, সব গণতন্ত্রে স্বাস্থ্য ব‍্যবস্থা এভাবেই চলে। যা হোক গে, ব‍্যাক্টেরিয়াল পেটের রোগে প্রবল জ্বর হবে, কাঁপুনি হতে পারে, পেটে মুচড়ে মুচড়ে ব‍্যথা হবে আর জলের মতো পায়খানা হবে। বমি হতেও পারে না’ও হতে পারে। আসলে একই অসুখ বিভিন্ন মানুষের শরীরে ভিন্ন ভিন্ন লক্ষণ তৈরি করে। পায়খানায় রক্ত যাওয়ার সম্ভাবনা আছে” অবশেষে হাতুড়ে আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞপ্তির মতো বক্তব্য শেষ করেন।

“হ‍্যাঁ গো, তাহলে রক্ত আমাশাটা কী রোগ?”

 

হাতুড়ে বকবক্তাগিরি করে’ ক্লান্ত হয়েছেন। কিন্তু এনাকে তো চৈনিক চায়ের অর্ডার করা যায় না।তাই অগত্যা সেই বিড়ির ধোঁয়ায় তৃষ্ণা মোচন। “আমাশার জীবাণুর নাম অ্যামিবা। পৃথিবীর প্রাচীনতম অসভ‍্যতা। এরা পেটের ভেতরে নালীটার, একদম ভেতরের স্তরে (লেয়ারে) ভৃঙ্গারের (পানপাত্র বিশেষ, গলাটা সরু আর পেটটা মোটা) বা গ‍্যাস সিলিন্ডারের মতো অতিক্ষুদ্র বাসা তৈরি করে। মিউকাস মেমব্রেনের ভেতরের এই ফুটোগুলো থেকে মিউকাস (আম) বেরিয়ে আসে। অনেকগুলো ফুটো তৈরি হলে, একটা ফুটোর সঙ্গে অন‍্যটা জুড়ে যায়, তখন রক্ত আসে, পেট মোচড়ায়। এর জন্য শরীরের নির্দিষ্ট কোনও প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই। তবু, কারো বেশী হয়, কারো কম। বলা হয় কারো কারো স্থানীয় ভাবে কিছু প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়- অনেকটা পাড়ার ছেলেদের দিয়ে তৈরি নাইট গার্ডের মতো। তবে এর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক বা অবৈজ্ঞানিক অ্যান্টিবায়োটিক মেশানো আমাশার ওষুধের মিক্সচার খাওয়া অযৌক্তিক”

রমণীয় সুরে রমণীর বক্ষস্থিত মোবাইল বাজে। পুরো ব‍্যাপারটাই হাতুড়ের খুব বাজে লাগে।কৃষ্ণকেশী সুন্দরীও ডাক শুনে ঐতিহাসিক স্বর্ণকেশীর মতো হৈমন্তী কুয়াশায় ঝরা ছাতিম (চিত্র নম্বর এক)পায়ে দলে’-সব পাখি, সব নদীর মতো নীড়ে ফেরেন।

তার পরে যেও তুমি চলে

ঝরা পাতা দ্রুতপদে দলে’

নীড়ে ফেরা পাখি যবে

অস্ফুট কাকলিরবে

দিনান্তের ক্ষুব্ধ করি’ তোলে।

বেণুবনচ্ছায়াঘন সন্ধ্যায় তোমার ছবি দূরে

মিলাইবে গোধূলির বাঁশরির সর্বশেষ সুরে।

রাত্রি যবে হবে অন্ধকার

বাতায়নে বসিও তোমার

সব ছেড়ে যাব, প্রিয়ে,

ফিরে দেখা হবে না তো আর।

ফেলে দিয়ো ভোরে-গাঁথা ম্লান মল্লিকার মালাখানি।

সেই হবে স্পর্শ তব, সেই হবে বিদায়ের বাণী।।

রবীন্দ্রনাথ

PrevPreviousপিজিয়ান সুপারস্টিশন
Nextআরজিকর মেডিকেল কলেজের আন্দোলন পশ্চিমবাংলার সমস্ত গণতান্ত্রিক মানুষকে পাশে চায়।Next
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
2 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
অনিরুদ্ধ কীর্তনীয়া
অনিরুদ্ধ কীর্তনীয়া
7 months ago

চমৎকার !

0
Reply
দীপঙ্কর ঘোষ
দীপঙ্কর ঘোষ
Reply to  অনিরুদ্ধ কীর্তনীয়া
7 months ago

ধন্যবাদ দাদাভাই।

0
Reply

সম্পর্কিত পোস্ট

অষ্টপদী

May 27, 2022 No Comments

ক্লাস ফাইভ না সিক্স এখন আর মনে নেই, খুব সম্ভবত সিক্স। অলক বাবু স্যার বাংলা পড়াতে এসে মধুসূদন দত্তের চতুর্দশপদী কবিতার কথা বলছিলেন। কী বুঝেছিলাম

অমৃতবায়ুর সন্ধানে

May 27, 2022 No Comments

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অক্সিজেনের জন্য হাহাকার চিকিৎসার ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। একদিকে করোনার ভয়ংকর ছোবল, তার ওপরে হাসপাতালে অক্সিজেন, বেডের অভাব। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি

প্রশ্ন-উত্তরে মাথা যন্ত্রণা

May 27, 2022 No Comments

প্রশ্নঃ অনেকেই তো মাথা যন্ত্রণার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে আসেন।সব মাথা যন্ত্রণার পিছনেই কি খারাপ কোন কারণ থাকে? উত্তরঃ মাথা যন্ত্রণা বা হেডেক মূলত দুই

চুরির পাঁচালী

May 26, 2022 No Comments

কেউ খায় ডুবে ডুবে,কেউ খায় ভেসে নেতানেতি ঘুষ খায় ফিকফিক হেসে। কেউ খায় চাকরি, কেউ খায় টাকা ঘুষাকার রাজ‍্যের কোষাগার ফাঁকা। কেউ খায় লুটেপুটে, কেউ

চেম্বার ডায়েরী ১

May 26, 2022 No Comments

সপ্তাহটা শুরু হোক একটা মিঠি মিঠি লেখা দিয়ে। এটাও পুনর্মুদ্রণ যদিও। এখন এই বয়স ব্যালান্স ভেঙেই খাবার বয়স। ______ বাগনান-কাশমলি অটোতে চাঁপা বসে আছে। শীতের

সাম্প্রতিক পোস্ট

অষ্টপদী

Dr. Abhijit Mukherjee May 27, 2022

অমৃতবায়ুর সন্ধানে

Dr. Soumyakanti Panda May 27, 2022

প্রশ্ন-উত্তরে মাথা যন্ত্রণা

Dr. Aritra Chakraborty May 27, 2022

চুরির পাঁচালী

Dr. Chinmay Nath May 26, 2022

চেম্বার ডায়েরী ১

Dr. Belal Hossain May 26, 2022

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

395786
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।