আজ বলতে দ্বিধা নেই কিছু পা চাটা, স্বার্থান্বেষী লোকজন আমাকে সরকারি চাকরি ছাড়তে বাধ্য করেছিলো।
এনাদের সবচেয়ে বড়ো ঘাঁটি স্বাস্থ্য ভবন। আরও দুঃখের বিষয় তাঁদের অধিকাংশই চিকিৎসক। যদিও শেষ কবে তাঁরা একজন রোগীকে ছুঁয়ে দেখেছেন বলা মুশকিল।
এদের জন্যই আজ অবন্তিকাদি চলে গেল। অবন্তিকাদি মেডিকেল কলেজে আমাদের এক বছরের সিনিয়র ছিল। অবন্তিকাদি ভুল করলো। এইসব ইগো সর্বস্ব অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের মুখের উপর রেজিগনেশন লেটার ছুঁড়ে বাড়ি ফিরে আসা উচিৎ ছিল।
এনারাই আবার কাল বড়ো গলায় সাংবাদিক সম্মেলন করবেন, ‘নতুন ডাক্তাররা সরকারি চাকরি করতে চায় না। তাই হাসপাতাল গুলোয় কোয়াক নিয়োগ করা হবে।’
ডা. Arunachal Dutta Choudhury স্যারের কলমে?
আমার হলেও হতে পারত মেয়ে
___________________________
না, নাম বলব না তোমার। কাউকেই বলব না। তুমি চলে গেছো।
আমি তোমাকে চিনতাম না। আমার চেয়ে তিরিশ বছরের ছোট। তোমাকে চেনবার আর কোনও উপায়ও নেই আমার। শুধু এই ছবিটা।
ছবি থেকে চিনলাম যে’টুকু। হাসিমুখ এক প্রাণোচ্ছল মেয়ে। ওই বয়সের কন্যাদের মতই সাজতে ভালোবাসতে। ছবি থেকে এর বেশি কি জানা যায়? তুমি নাকি ফেসবুকে নিজের অসহায়তার কথা জানিয়েছিলে। না রে মা, আমি তোমাকে ফেসবুকে খুঁজে পাইনি। প্রোফাইল এখন নেই।
নেট ঘেঁটে আর অন্য সূত্রে যেটুকু জানলাম,
১) তুমি মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ছিলে।
২) অনেক অনেক গবেষণাপত্রের সঙ্গে তোমার নাম যুক্ত।
৩) দীর্ঘ আট বছর বাড়ির থেকে দূরে পোস্টিংয়ে ছিলে।
স্বামী কাজ করেন মানচিত্রের আরেকপ্রান্তে। অন্য এক মেডিকেল কলেজে।
৩) তোমার আটবছরের আত্মজাটি অটিস্টিক। তার জন্যেই তুমি বাড়ির কাছে পোস্টিং চেয়েছিলে।
৪) সেই পাওয়ার বদলে তোমাকে বদলি করা হল মানচিত্রে দূরের আরেক প্রান্তিক মেডিকেল কলেজে। একই পোস্টে রেখে।
৫) অথচ মেডিকেলের বেসিক টিচিংয়ে উপযুক্তদের বদলে কর্তাভজা আন্ডার কোয়ালিফায়েড ভাগ্যবানদের নিয়োগ করা হল পছন্দমত মেডিকেল কলেজগুলিতে। ধন্য আমলাতন্ত্র। ধন্যতর পয়সাতন্ত্র!
৬) ফেসবুক পোস্টের দায়ে বোকা সরকারি ডাক্তারকে সাসপেন্ডও করা যায়। কিন্তু দুঃখী কন্যার কান্না শুনতে পায় না শয়তানগুলো।
৭) গায়ে আগুন দিয়ে তুমি চলে গেছ। একটা স্বচ্ছ শয়তান বিবৃতি দিয়েছে, অভিযোগ পাওয়া গেলে নাকি স্বচ্ছ তদন্ত করা হবে।
না, তোমার আত্মা শান্তি পাক বলব না।
তুমি ‘হেভেনলি অ্যাবোড’এ চলে গেছো বলে দীর্ঘশ্বাস ফেলব না।
আমি জানি এই তালিকা দীর্ঘ হবে। দীর্ঘতর হবে। এবং লোকনাথের মিছিল চলবে কিন্তু আটকে দেওয়া হবে তোমার চলে যাওয়ায় শিউরে উঠে জড়ো হওয়া ডাক্তারদের।
তালিবান, হিটলার, এরা আফগানিস্তান বা জার্মানিতে শুধু থাকে না….
যে’দিন জয়েন্টের লিস্টে তোমার নাম উঠেছিল, আমরা, তোমার বাবা মায়েরা, আত্মজনেরা… কত আনন্দ করেছিলাম!
চমৎকার! সহমত।