স্থান বাংলা বিহার সীমান্ত। সময় দু হাজার ঊনিশের শরৎ।একটা বাইরে প্লাস্টার না করা পাকা বাড়ি। ভেতরে দুটো ঘরে লন্ঠন জ্বলছে। সময় সন্ধ্যা বা প্রদোষকাল। চারপাশে ঝোপ জঙ্গল। পাশ দিয়ে একটা মাটির রাস্তা চলে গেছে। রাস্তার দুপাশে ইতস্ততঃ শাল, শিমুল, গাছ। দুএকটা বাঁশঝাড়।
[একটা ঘরের বারান্দা। জানালা দিয়ে অল্প আলো আসছে। লং শটে দেখা যায় দুজন মানুষ বসে আছে সিঁড়িতে। ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকের সঙ্গে চায়ের কাপের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। ক্যামেরা ঘুরে যায় সামনে।একটা রাস্তা। সন্ধ্যার আলো আঁধারির আবছা আলোয় রাস্তাটা মাটির সেটা বোঝা যায়। ঝিঁঝিঁর ডাক তীব্রতর হয়।দূরে কিছু লোকের গলার আওয়াজ। উত্তেজিত কথোপকথনের শব্দ। কিন্তু একটা কথাও বোঝা যায় না।একটি পুরুষকন্ঠ শোনা যায়। কাট।ক্লোজআপ।]
পুরুষ||আবার বোধহয় তোমার ডাক আসছে।
[রোগা তীক্ষ্ণনাসা, চোখের তলায় কালি কিন্তু স্বপ্নিল চোখ। পেছন থেকে আলো পড়ে। বিনয় সান্যাল, মধ্যবয়স্ক। হাতে চায়ের কাপ, অন্য হাতে বিড়ি। ক্যামেরা পুরুষের ক্লোজআপেই থাকে।]
নারী||তাই মনে হয়।
[ক্যামেরা পুরুষকে ফ্রেমে রেখে ক্লোজ থেকে ক্রমশঃ লং শটে চলে যায়। দরজা দৃশ্যমান হয়। নারী চায়ের কাপ নিয়ে হেঁটে ভেতরে চলে যায়]
পুরুষ||আরেঃ…..চা’টা তো খেয়ে যেতে পারতে..
[ভেতর থেকে নারী উত্তর দ্যায়]
নারী||হয়ে গেছে। চা শেষ হয়ে গেছে..তুমি ওদের সঙ্গে কথা বলো… আমি আসছি…..
পুরুষ||আরে অন্য কিছুর জন্য আসছেও তো হতে পারে….
[লোকজনের শব্দ নিকটবর্তী হয়। আস্তে আস্তে ঝিঁঝিঁর আওয়াজ চাপা পড়ে যায়। কাট]
[ক্যামেরা নারীকে ওভার দি শোলডার শটে ধরে। মুখে ঐ দলের লোকজনের আনা লন্ঠনের আলো পড়েছে। মধ্যবয়স্ক। ক্ষীণতনু। হনু প্রকট। চোখে চশমা। মণীষা, ডাক্তার, যৌবন থেকে এখানেই পড়ে আছে এই আদিবাসী অধ্যুসিত এলাকায়। শ্যামল বর্ণ। চুল পাতলা হয়ে এসেছে। চারপাশে গন্ডগোল।]
মণীষা||(উচ্চকন্ঠে) আরে…..একসঙ্গে না.. একজন বলো। কি হয়েছে?
[ক্যামেরা ঘুরে আসে একজন মধ্য যৌবন মানুষের মুখে]
সূদন||সন্ঝেবেলাকে আমরা ঘরে ছিল্যম, হেই বুধন ছিল্যঁ মাঠপারে।
পেছন থেকে কেউ বলে||হোই সুবল মাঝির বেটাট্যঁ গ্য ….
সূদন বলতে থাকে||উয়ারা এসে উয়ার সামনে ভটভটি খাড়া করাঁয়ে গুলি করে…..মনে লাগে গতকাল চুল্লুর ঠেক ভাঙার বদলা লিঁল…বুধন ত সবার পের্থম যেছল বট্যেঁ…
মণীষা [ঘাড় ঘুরিয়ে]||(বিনয়কে) তোমার দলের লোক… কাল দুপুরে তোমাদের মিটিংয়ে ও ছিলো, না?
[ফিরে তাকিয়ে] কোথায় গুলি লেগেছে?
সূদন||বুক এ ফোঁড়ে ও ফোঁড়ে কর্যে গেছে দি’মুণি….
[মণীষা অবিশ্বাসে ঘাড় নাড়ে]||এখনও বেঁচে আছে?
[ক্যামেরা হাই লং শটে চলে যায়। মণীষা মাঝখানে। সামনে গোলাকৃতি ভীড়। বারান্দায় বিনয় বসে আছে, হাতে আরেকটা বিড়ি।ভীড়ের থেকে একজন বলে]
আছে কিন্তু কী রক্ত, কী রক্ত…কাপড়জামা সব ভেস্যে গেল্য গ্য
[মণীষা ঘরে গিয়ে একটা ব্যাগ নিয়ে মাথার চুল হাতে করে ঠিক করতে করতে বেরিয়ে আসে। ক্যামেরা ওর যাওয়া আর ফেরা পুরোটাই লংশটে ধরে রাখে। বারান্দা থেকে নামার সময় বলে
||তুমি ভাতটা আলু দিয়ে ফুটিয়ে রেখো…সঙ্গে দুটো ডিম সেদ্ধ…
[ওদের সঙ্গে এগোতে থাকে]
||মন্টুকে খবর দিয়েছো?
অন্য একজন বলে ||সি তখুন থেকে ঐ সেন্টারের ঠাঁয়ে বস্যা করছে…
[কাট]
[ক্যামেরা পেছন থেকে ওদের একটা ওয়াইড লং শটেই ধরে রাখে। মণীষা পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে পড়ে।ক্যামেরা ওয়েস্ট শটে চলে যায় ]
||(উচ্চকন্ঠে)শোনো, তুমি কিন্তু ওখানে যাবে না। পুলিশ কেস….ঘরে বসে ভাতটা করে’ লেখাটা শেষ করো… পরশু হিতেন লেখা নিতে আসবে
[ক্রমশঃ পুরোটা ফেড আউট করে]
[ক্যামেরা লং শটে বাড়িটা ধরে।বিনয় বিড়িতে টান দিয়ে ওটা ছুঁড়ে ফ্যালে তারপর উঠে ভেতরে যায়। ক্যামেরা জুম করে’ একটা জানালায় এসে দাঁড়ায়। একটা শিল্যুয়েট দুহাত তুলে পাঞ্জাবি বা ফতুয়া কিছু একটা পরছে। কাট।
লং শট। জানালার আলোগুলো কমে আসে। কাট। তারপর অন্য মিডশটে দেখা যায় বিনয় নিচু হয়ে দরজায় তালা লাগাচ্ছে। চাবি পকেটে রেখে ও হাঁটা দেয়।]
[জাম্প কাট
প্রবল চিৎকার চেঁচামেচি। ট্রলিতে ক্যামেরা ভীড়ের চারপাশে ঘোরে। কয়েকটা হ্যাজাক, পঞ্চাশ ষাঠ জন উত্তেজিত নর নারী।তাদের দীর্ঘ ছায়া। ক্যামেরা এগিয়ে যায় ঘরের ভেতরে। হ্যাজাক জ্বলছে। একটা লোক পাঁচ ব্যাটারি টর্চ ধরে আছে। মণীষা নিচু হয়ে হয়ে একটা লোকের প্রেসার মাপছে। কপালে ঘামের বিন্দু।ব্লাউজের বগল, পিঠ ভেজা।]
[মণীষার মুখের ক্লোজআপ]
মণীষা||মন্টু আমি চ্যানেল করছি… তুই একটা হিমাক্সিল খুঁজে দ্যাখ… একটা প্রেসার ব্যান্ডেজ করবো….
[ক্যামেরা মন্টুর মুখে জুম করে। তরুণ ছেলে। অসহায়, উদ্বিগ্ন মুখ। ক্যামেরা একটু সরে এসে ওর মিডশট ধরে। ও একটা হ্যারিকেনের আলোয় স্যালাইনের বোতল হাঁটকে হিমাক্সিল খুঁজছে]
[কাট]
[ এক্সট্রিম ক্লোজআপে মণীষার আঙ্গুল দেখা যায়। একটা জখমের জায়গা পরিষ্কার করছে। একটা গ্লাভস পরা হাত তার মধ্যে এগিয়ে এসে ফরসেপসে করে’ গজ, এগিয়ে দ্যায়। মণীষা হাত পেতে গজ নিতে নিতে কথা বলে। মুখ দেখা যায় না]
তুমি ক্যানো এলে? বাইরে পুলিশের গাড়ি। এটা পুলিশ কেস….
[ক্যামেরা সরে মন্টুর স্যালাইনের বোতল লাগানো হাত দেখায়।]
(চাপা গলায়) আমি কিছু ফেরারি আসামি নই। অযথা পালিয়ে বেড়িয়ে লাভ কি?
[কাট। ক্যামেরা এবার আরেকটা লং শট ধরে। ভীড়ের মধ্যে মণীষা।]
মণীষা|| শোনো….সবাই চুপ… আমার কথা শোনো… আমার এখানে ব্লাড নেই…পেটে গুলি ঢুকেছে, হুহু করে রক্ত বেরিয়ে যাচ্ছে….ওর এক্ষুণি রক্ত দরকার, ভেতরে সেলাই করে রক্ত বন্ধ করতে হবে, গুলিটা বার করতে হবে। এখানে সেসব কিচ্ছু নেই….ওকে শহরে নিয়ে যেতে হবে
[এক বয়স্কা মহিলা। ক্যামেরা ওর মুখে জুম করে। ভয়ানক উত্তেজিত]
দিদিমুণি, এখেনে তুমি আছো…ওখানে পুলিশ উয়াকে লিয়ে যাবে… উয়াকে রাস্তায় মেরে রাখবেক, লয়তো হাসপাতালে ফ্যালা কর্যেঁ রাখবেক….উ বাঁচবেক নাই….
[ক্যামেরা মণীষার মুখে ওভার দ্য শোলডার শটে ঘুরে আসে।পাথরের মতো মুখ]
ও এখানে থাকলে মরবেই… সঙ্গে আমাদের লোক যাবে তাছাড়া
মন্টু উয়ার সাথে ভ্যানে করে যাবে, অফিসার (উচ্চকন্ঠে ডাকে)[কাট]
[ক্যামেরা আবার লং শটেই গাছতলায় ঘুরে আসে। আধো অন্ধকারে কয়েকজন পুলিশ আর একটা পুলিশ ভ্যান দেখা যায়।একজন পুলিশ অফিসার এগিয়ে আসে। ক্যামেরা ওনাকে ফলো করে জুম করতে থাকে]
ম্যাডাম আপনার কাজ শেষ? এবার উয়াকে লিয়ে যাই…(একটু থেমে মণীষার মুখের অভিব্যক্তি লক্ষ্য করে’ বাকি পুলিশদের) এই তুয়ারা উটোকে ভ্যানে তোলা কর…
[ক্যামেরা পুরো ঘুরে মণীষার মুখে ক্লোজআপে আসে]
(মণীষা দৃঢ় কন্ঠে বলে) আমাদের মন্টু সঙ্গে যাবে
অফিসার|| আইন নেই। সঙ্গে কেউ যাবে না।
মণীষা||(পুলিশের চোখে চোখ রেখে) যাবে, মন্টু বুধনকে নিয়ে এসো… প্রয়োজনে স্যালাইন বদলাতে হবে… কেউ আর একটা হিমাক্সিল আর দুটো রিঙ্গার ল্যাকটেট সঙ্গে দিয়ে দাও…একটা হাইড্রোকর্টিজোন আর একটা ভর্তি অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গে রাখবে…মাস্ক নেবে (পুলিশের দিকে ফিরে) আপনাকে একটা অনুরোধ…
অফিসার|| বল্যাঁ করেন
মণীষা||গাড়ি মাঝরাস্তায় থামাবেন না… পেছন পেছন গ্রামের দুটো মোটরসাইকেল যাবে…মনে রাখবেন।
[ক্যামেরা ঘুরে আসে গাড়ির ক্লোজআপে। মন্টু আর অন্য দুজন বুধনকে ভ্যানে তোলে।]
অফিসার||আসুন ইঞ্জুরি রিপোট করে দ্যান….
[ক্যামেরা হাই লং শটে দেখায় বিনয় ফিরে যাচ্ছে। বাকিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে। হ্যাজাকের আলোয় আধো-অন্ধকারে ওর পাজামা ফতুয়া পরা, একটু পা টেনে টেনে চলা ক্যুব্জ শরীরটা বোঝা যায়। ক্যামেরা ঘুরে হেল্থ সেন্টারের ওপরে আসে। মণীষা আর পুলিশ অফিসার হেল্থ সেন্টারে ঢুকছে।
জাম্প কাট।]
[ওয়াইড লং শটে দ্যাখা যায় দুটো লন্ঠনের আলো এগিয়ে আসছে। কারা য্যানো লাঠি ঠুকতে ঠুকতে আসছে। সাপ তাড়াতে গ্রামে লাঠি ঠুকে চলার প্রচলন আছে। দরজা খোলার শব্দ।আলো এগিয়ে আসে। মণীষার গলা শোনা যায়।]
তোমরা এবার চলে যাও।অনেকটা যেতে হবে। রাত হয়েছে।
[কেউ কিন্তু উত্তর দ্যায় না।আলো আরও কাছে আসে।ক্যামেরা ক্লোজআপে মণীষাকে ধরে।]
এই তোমরা দুজন যাও তো! ঐ তো দাদা টর্চ নিয়ে বারান্দায় এসে গেছে।
[কাট]
[ওয়েস্ট শটে লন্ঠনের আলোয় দেখা যায় বিনয় থালা বাসন ধুচ্ছে। একটা নিভে যাওয়া স্টোভ। একটা উল্টোনো বাটি। শুইয়ে রাখা বঁটি। বালতির জলে বিনয় বাসন ধুচ্ছে। মণীষার গলা শোনা যায়]
এই চোলাই মদ ব্যবসায়ীরা এখন প্রচুর ক্ষমতা জোগাড় করেছে।
[ক্যামেরা ঘুরে ওয়েস্ট শটে মণীষাকে ধরে। সদ্যস্নাতা। চোখে চশমা নেই। এলো চুল। গায়ে একটা ম্যাক্সি। হাতে হাতপাখা।]
আগামীকাল মালপাড়ায় মিটিং হবে… সরো আমি ধুয়ে দিচ্ছি।
[ক্যামেরা লং শটে দুজনকেই ধরে। একটা ছোট্ট ঘরে মণীষা।তাতে একটা টিনের ফোল্ডিং টেবিল। দুটো টিনের চেয়ার। একটা মোড়া। টেবিলে দুয়েকটা বই। লেখার কাগজ। একটা ডট পেন।একটা ছাইদানি। বিড়ির বান্ডিল। দেশলাই। শূন্য দেওয়াল।দেওয়ালের তাকে কয়েকটা কাজের টুকিটাকি জিনিস। একটা পুরোনো ট্র্যানজিস্টার রেডিও। একটা খোলা জানালা। দরজার বাইরে শান বাঁধানো বারান্দা। সেখানে বালতি করে জল রাখা।বিনয় বাসন ধুচ্ছে।]
বিনয়||আরে হয়েই গেছে তো…আবার তুমি হাত লাগাবে কেন?এখুনি চান করে আবার… আমি মুছে একটু গায়ে জল ঢেলে আসি…
মণীষা||আগামীকাল কী যে হবে… পরের সপ্তায় শহরে যাওয়ার কথা ভাবছিলাম…
বিনয়||কেন?
[মণীষার মুখ এক্সট্রিম ক্লোজআপে]
মণীষা||যদি আরেকবার একটা গাইনি… আজও তো আমাদের কোনও ইশু হলো না… সব মেয়েরই একটা শখ থাকে একটা বাচ্চা… নিজের সন্তান… যার মুখে তাকালে সব কষ্ট, সব দুঃখ ভুলে যাবো, একটা… এর বেশী তো কোনোদিন কিছু চাই নি…
[ক্যামেরা ওভার শোলডার শটে বিনয়কে ধরে। দরজার সামনে মাটিতে বসে।পেছনে ঘনতম অন্ধকার।]
বিনয়||এই জীবনের মাঝে সন্তান? চাল নেই… চুলো নেই, ফুটো কড়ি ইনকাম নেই, ট্রাস্টের টাকায়… তাহলে চলো শহরে চলে যাই। তুমি ডাক্তার, আমি মাস্টার। শহরে হাসপাতাল আছে, বাচ্চার চিকিৎসা আছে, দুটো টাকাও আছে। সন্তানের মৃতদেহ, মনি, আমি বহন করতে পারবো না। আমি এখানে ঐ সাঁওতাল, মুন্ডাদের থেকে আলাদা। আলাদা ভাবে মানুষ হয়েছি। ওদের মতো সন্তানের জন্মের পরেই তার মৃতদেহ নির্বিকার জঙ্গলে পুঁতে আসতে পারবো না। শহরেও গরীব আছে…..চলো তাদের সেবা করে কাটাই….দুটো পয়সাও আসবে… একটা ছোট বাড়ি… ভাড়ার হলেও… এখানে সাপ খোপ মৃত্যু প্রতি পলে অনুপলে…..অনেক বয়সও তো হলো!”
[ক্যামেরা ঘুরে ওয়েস্ট শটে মণীষাকে ধরে]
মণীষা|| হয়তো তুমি ঠিক… এখানে আইন নেই… খাবার নেই… স্বাস্থ্য… কিন্তু আমরা যেটা আজীবন করবো ভেবেছিলাম… সেটা ছেড়ে চলে যাবো? মাঝপথে…এই লোকগুলো….. বিনু তুমি তো জানো… শহরের সমাজসেবা… খানিকটা শৌখিন মজদুরি… ওখানে অন্ততঃ একটা হাসপাতাল আছে… অন্ততঃ… ডাক্তার… নার্স.. খাবার….ওখানে মানুষের টাকা উপার্জন করার অনেক পথ আছে… ঝি গিরি, ময়লা ঘেঁটে প্ল্যাস্টিক কুড়োনো… রিকশা টানা, মোট বওয়া… বিনু… তুমি যে বলো এদের কিচ্ছু নেই, কেউ নেই… মদ, জুয়ো… মহাজন… বিষাক্ত সাপ…হুঁড়ার….টিবি.. পেটের রোগ….”
[ক্যামেরা এক্সট্রিম ক্লোজআপে মণীষার মুখে যায়। মণীষা চশমা পরে। রাত দুই প্রহরে শেয়াল ডাকে। ঝিঁঝিঁ আর শেয়ালের ডাকফেড আউট। দুজনে বিছানায় শুয়ে। একটা হ্যারিকেনের মৃদু আলোয় ঘরটুকু বোঝা যাচ্ছে মাত্র। বিনয় বিছানায় শুয়ে, দুহাত মাথার তলায় রাখা। ক্যামেরা জুম করে বিনয়ের মুখে আসে।]
মনি, তুমিই ঠিক। আমি ভেতর থেকে এদের সঙ্গে এক হতে পারিনি। এদের সুখ, দুঃখ…..তুমি পেরেছো। আগামীকাল মালোপাড়ায় মিটিং হবে। মনি। ক’দিন পরেই আমরা শহরে যাবো। আমাদের সন্তান এখানেই হবে। এই সাঁওতাল, ওঁরাও, মুন্ডাদের মতো করে’ বাঁচবে। এখানেই মরবে….ওদের মতো করেই।
[মণীষার হাত এসে বিনয়ের গলা জড়িয়ে ধরে। ও বিনয়ের বুকে মাথা রাখে, বিনয় ওর চুলে বিলি কেটে দ্যায়। ক্যামেরা ওয়েস্ট শটে দুজনের আলিঙ্গনাবদ্ধ শরীর ধরে’ ক্রমশঃ ফেড হয়ে যায়।]
ক্রমশঃ
Nice one. Write continuously.