বর্তমান পরিস্থিতিতে কৃষিকাজে অতিরিক্ত কীটনাশক, আগাছানাশক, ছত্রাকনাশক ব্যবহারের ফলে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে কৃষক ও সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর।
এই কীটনাশকগুলি আমাদের স্বাস্থ্যের উপর নানাভাবে প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রথমে দেখা যাক এগুলি শরীরে কিভাবে প্রবেশ করে। এগুলি বিভিন্ন উপায়ে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে।
যেমন চামড়া বা নাক ও মুখের মিউকাস ঝিল্লির মধ্যে দিয়ে শোষিত হতে পারে, বিশেষ করে, যদি কেউ প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ছাড়াই কীটনাশক নিয়ে নাড়াচাড়া করে। শুধু চামড়াই নয় চোখকেও প্রভাবিত করে।
অ্যারোসোল বা গ্যাস হিসাবে প্রয়োগ করা কীটনাশক শ্বাসনালীর মাধ্যমে সহজেই শরীরে প্রবেশ করে। কীটনাশকগুলির সংস্পর্শে এই রুটটি সবচেয়ে সরাসরি এবং দ্রুততম বিষক্রিয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কীটনাশক সংস্পর্শের আর একটি মূল উৎস হল খাবার ও পানীয় জল। বিশেষত, তাজা ফল এবং শাকসব্জীগুলিতে খুব কম পরিমাণে হলেও পেস্টিসাইড থাকে। অনেকসময় শস্য ক্ষেতে ব্যবহার করা কীটনাশক জলাশয়ে মিশে যায়।
#তাৎক্ষণিক বিষক্রিয়া
শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় প্রবেশ করলে মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, খিদে না পাওয়া, পেটে ব্যথা, মাথা ঘোরা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
#দীর্ঘস্থায়ী বিষক্রিয়া
দীর্ঘ কয়েক মাস বা বছর ধরে কম মাত্রার কীটনাশকের সংস্পর্শে আসার পরে একজন মানুষের শরীরে দীর্ঘস্থায়ী বিষক্রিয়ার দরুন নানান জটিলতা তৈরি হয়। মূলত অল্প পরিশ্রমে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়া, মানসিক অবসাদ, খিদে কমে যাওয়া, শরীরের ওজন কমে যাওয়া, প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো জটিলতা তৈরি হয়।
আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা (W.H.O.) এবং কিছু অনুমোদিত ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্র কিছু কীটনাশককে “সম্ভবত” কার্সিনোজেনিক অর্থাৎ ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।
এটা প্রমাণিত যে শরীরে ক্রমসঞ্চিত কীটনাশকগুলো আমাদের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ওপর দীর্ঘস্থায়ী বিষক্রিয়া তৈরি করে এবং নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ (Neurodegenerative diseases) সৃষ্টি করে। এই রোগগুলির মধ্যে পারকিনসন ডিজিজ (Parkinson’s disease), অ্যালজাইমার ডিজিজ (Alzheimer’s disease) অন্যতম।
#প্রতিরোধ
সঠিক ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (Personal Protective Equipments) যেমন হাতে গ্লাভস, পায়ে জুতো, চশমা ইত্যাদি ব্যবহার করে কীটনাশকগুলির সাথে সরাসরি সংস্পর্শ এড়াতে হবে।
রাসায়নিক কীটনাশকের বদলে ফল ও সবজি চাষে জৈব পরিবেশ বান্ধব কীট নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিগুলির ব্যবহার কৃষকদের জানা উচিৎ।
সরকারি তরফ থেকে সাধারণ মানুষদের এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল করার প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করতে হবে।
জনগণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার পদক্ষেপ হিসেবে লেখার জন্য ধন্যবাদ !