পুজো আসছে মানে সর্বত্রই যেন একটা খুশির আমেজ। নতুন রঙের প্রলেপ পড়ে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে বাঙালির মনেও।
“তবে এই সময় ভিড় শুধু জামা-জুতোর দোকানে না জিম গুলোতেও দেখতে পাবেন। এখন জিমে যেতে না পারলে খুব মুশকিল!” কথা হচ্ছিল পি.আর.পি (Platelet reach plasma) এর শেষ ডোজ নিতে আসা এক জিম ট্রেনারের সাথে, মোটরবাইক অ্যাকসিডেন্টে হাঁটুর লিগামেন্ট আংশিক ছিড়ে (partial tear) গেছে তার।
কেদারনাথ মন্দিরের ছবি তুলে পাঠিয়েছেন এক ষাটোর্দ্ধ মহিলা। বহুদিন ধরে অস্টিওআর্থ্রাইটিস (Grade IV)-এর ব্যথায় কাবু হয়ে কাতর আবেদন করেছিলেন, “হাঁটুর নার্ভ ব্লক (Genicular nerve block) করেই দিন। ছেলমেয়েরা এই পুজোর সময়ই ছুটি পায়, ওদের হাত ধরে কেদারনাথ দর্শনটা শুধু করতে চাই। জীবনে আর তো সুযোগ হবে না কখনও!”
কোমর থেকে পায়ের দিকে নামতে থাকা ব্যথায় প্রায় ঘরবন্দী হয়ে পড়া এক স্লিপ ডিস্কের (Prolapsed intervertebral disc) রোগী ফোন করে বললেন, “স্পাইনাল ইন্টারভেনশন (Epidural block) এর পর খুব ভালো আছি, কাল অনেক গুলো পূজামণ্ডপ পায়ে হেঁটেই ঘুরেছি।”
সেপ্টেম্বর মাসকে ব্যথা সচেতনতার মাস (Pain Awareness Month) বলা হয় এবং সারা বিশ্বব্যাপী গোটা মাস জুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। কিন্তু সদ্য প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ৪৫ বছরের ওপর বয়সী প্রায় এক তৃতীয়াংশ ভারতীয় ও অর্ধেকের কাছাকাছি (৪৬%) বাঙালি ব্যথায় কাবু এবং তার ৩৯.৮% ব্যথায় অক্ষম। তা সত্ত্বেও সেরকম ঢাকঢোল পেটানো তো দূরের কথা, বরং সামান্য সচেতনতামূলক প্রচারও নজরে পড়লো না গত একমাসে।
কিন্তু কাকতালীয় ভাবে ঢাকে কাঠি পড়ার ঠিক আগেই বাঙালি হঠাৎ ফিটনেস সচেতন হয়ে পড়েছে এই সেপ্টেম্বরেই।
হাসপাতালের ভিতরে বাইরে ধরা পড়েছে ব্যথার রোগীদেরও উপচে পড়া ভিড়ের ছবি, যে ভিড় দেবীপক্ষ আসতেই পুজোমণ্ডপ গুলোতেও আছড়ে পড়েছে।
আর আমিও সেই ভিড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে একরাতে চষে ফেললাম কালীঘাট থেকে কুমোরটুলি।
যাইহোক সকলকে জানাই ব্যথা মুক্ত আনন্দ মুখর শারদ শুভেচ্ছা, উৎসবের দিনগুলি দারুনভাবে কাটুক সবার।