আমার একটি লেখা পড়ে, একজন সহৃদয় পাঠক আমাকে হেব্বি বকে দিয়েছে ইনবক্সে!
কারণ কি?
কারণ হলো – আমি মাঝে মাঝেই এটা ওটা নিয়ে লেখার চেষ্টা করি! বেশিরভাগই ডাক্তারি করতে করতে ঘটে যাওয়া, দেখে ফেলা বা শোনা সত্যি ঘটনা নিয়ে! না, কল্পবিজ্ঞান বা ভুতের গল্প লেখা আমার দ্বারা হয় না। অত যোগ্যতা নেই।
এবং সেই লেখাগুলো যে আদৌ কোন লেখা হয় না, সাহিত্য তো বহুদূরের কথা, সেটা মনে করিয়ে দিয়ে বেশ কড়া বকুনি দিয়েছে আমাকে! এর চেয়ে ছোটদের গল্প, ভুতের গল্প ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে লেখা অনেক ভালো – এরকম উপদেশ পেয়ে আমিও হেসে হেসে বলে দিয়েছি- আমাকে কে মাথার দিব্যি দিয়েছে যে- আমাকে সাহিত্য সৃষ্টি করতে হবে?? আমি খুব ভালো করেই জানি যে – আমার লেখা বলে যেগুলো চালানোর চেষ্টা করছি, ওগুলো কোনমতেই পাতে দেয়ার জন্য নয়!
কারো ইচ্ছে হলে পড়বে, না হলে পড়বে না! আমার বয়েই গেছে!! আমি ডাক্তারি করি, এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় কথা!
সমাজ সংস্কৃতি সংসার সাহিত্য রাজনীতি অর্থনীতি মানুষ অমানুষ সকল প্রকার অনুভূতি, কল্পনা – সব কিছু এই পেশায় এতো কঠিন বাস্তব হয়ে ধরা দেয় প্রতিদিন, যে নিজের মানসিক শান্তি ও অশান্তি – কোনটার জন্যই আমাকে অন্য কিছুর উপর নির্ভর করতে হয় না!!
কেউ বলতেই পারেন- সাহিত্য আলাদা, সিনেমা আলাদা, নাটক আলাদা, অন্য সব শিল্প সৃষ্টি আলাদা আলাদা! প্রত্যেকেই আলাদা করে মনোযোগের দাবী রাখে।
অবশ্যই। একদম সত্যি কথা। কিন্ত আমার মনে হয় – একজন মানুষের জন্য, সব ধরনের মানুষকে জানার বোঝার শোনার চেষ্টা করার জন্য কয়েক বছর ডাক্তারি করাই যথেষ্ট!! সবকিছু যখন মানুষকে নিয়েই, তখন আমার পেশায় সেই সুযোগ সবচেয়ে বেশি বলে মনে করি। এমনকি রাজনীতিও!
কতটা ডাক্তারি পারি বা পেরেছি বা পারবো- সেটা এক্ষেত্রে বিবেচ্য নয়, কারণ এই পেশায় থাকলেও আমি মোটেই কেউকেটা কেউ নই। অমুক ডাক্তার- বলে কেউ কখনো আমার নাম বলে না, চেনেও না! গালি দেয়ার জন্য বলে কিনা জানি না! সামনে থেকে দেখলেও বেশিরভাগ মানুষ ডাক্তার বলে মনেই করে না!
ডাক্তার মহলে আমার পরিচিতি আরো ভয়ানক। আশেপাশের কয়েকজন আর ফেসবুকের ফ্রেন্ডলিস্ট বাদ দিলে – ডাক্তার বলে আমার কোন পরিচিতিই নেই! গোদা বাংলায়- আমি এই পেশায় প্রায় অচ্ছুৎ অস্পৃশ্য একটি প্রাণী।
বিশাল সাফল্য বলতে ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো আর অসুখ ডায়াগনসিস করা ছাড়া তেমন কিছু নেই, অতএব ঢাক পিটিয়ে বলার চেষ্টা ও করিনি কোনদিন।
আমার ডাক্তারি সাহিত্যে মানে পেপার পত্রিকায় নাম তোলায় ভীষণ অনীহা। সেমিনার ওয়েবিনার ইত্যাদি মডার্ন বিষয়ে আমার অবদান বলতে- পেছনে সারিতে বসে নাক ডেকে ঘুমানো!আমার ফেসবুকের প্রোফাইলে তাই ডাক্তারির বিষয়ের চেয়ে ভুলভাল লেখা থাকে বেশি।
একটা অপকর্ম শুধু করে চলেছি পাঁচ বছর ধরে – ফেসবুকে লাখখানেক সদস্যের একটি রেডিওলজির গ্রুপে ফ্রি, ওপেন লার্নিং প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন রোগের ডায়াগনসিস নিয়ে কেস শেয়ার করা, আলোচনা সমালোচনায় নিজের গোবর সার ঢেলে দেয়া!
শেষ কিছুদিন ধরে দেখছি- সেটিও মারাত্মক বিরক্তিকর হয়ে গেছে। কিছু লোকজন সারাদিন নানা পোস্টে ট্যাগাতে থাকে। তারপর সেই ডায়াগনসিস লিখে দিয়ে বেশ পয়সা কামায়!
ফোন করে, মেসেজ করে এটা কি ওটা কি এসব জিজ্ঞেস করতে থাকে। অতএব আমার মানসিক শান্তির দফারফা !
এই অবস্থায় এসে – ‘আমাকে দু’দণ্ড শান্তি দিয়েছিল …’ ধারায় ভাবছি – বনলতা সেনের চেয়ে ভুলভাল লেখালেখি করা অনেক ভালো।ডাক্তারিতে টপিকের অভাব নেই।
যাকগে, ভুমিকায় বেশ ঘ্যানঘ্যান করলাম।
আসলে এও এক ধরনের চালাকি ?। এই যে আমি কিছু নই, কিছু করছি না, করতে পারছি না, সেটাও ফুলিয়ে ফুলিয়ে বলা এক ধরনের (অপ)প্রচার!!☺
ব্যাপারটা খানিকটা ‘বিখ্যাত না হতে পারলেও কুখ্যাত হওয়াই যায়’ এর মতোই! আসল গল্প তেমন বড় নয় বলে, গল্পের আগে ভুলভাল ভাট দু’একজন কে পড়িয়ে ফেলা!
আসল ঘটনায় আসি। গত শনিবার। ডাক্তারি করছিলাম। বেশিরভাগ রোগীর নানারকম সমস্যা ছিল কাল । এক একজন রোগীকে দেখতে বেশ সময় লাগছিল। স্ক্যান করতে করতে মায়োপিক ভিশনের সমস্যায় ভোগা চোখ ঘোলাটে হয়ে জল নেমে আসে মাঝে মাঝে। কখনো রোগীর কষ্ট দেখে, কখনো কম্পিউটারে তাকিয়ে থাকতে থাকতে। আলাদা করে কেউ বোঝে না। বৃষ্টির মধ্যে কাঁদলে যেমন কেউ আলাদা করে কান্না দেখতে পায় না, ঠিক তেমনি।
প্রেগন্যান্ট ভদ্রমহিলা এলেন। টেবিলে শুয়ে পড়লেন। মুখে হাসি। কারণ কি জানি না। তবে পেটের বাচ্চার বয়স সাত আট মাস হয়ে গেলে কোন মহিলাই হেসে হেসে টেবিলে শুয়ে পড়েন, এমনটা হয় না। তখন পেটে ব্যাথা হয় স্বাভাবিক নিয়মে। একটু অবাক হয়ে তাকালাম তার দিকে।
বললাম- বলুন কিছু সমস্যা আছে কিনা?
মহিলা হাসলেন। গ্রামের মানুষ। হাসি অমলিন। কোন চালাকির আশ্রয় নেই তাতে। – আমার বাচ্চা কেমন আছে?
– দেখে বলবো।
– আচ্ছা, ডাক্তার বাবু, আমার কি মেয়ে হবে??
এই প্রশ্ন এতোবার শুনেছি যে, আলাদা করে এখন বিরক্তি ছাড়া কিছু আসে না!
নিশ্চিত একটি ছেলে চাই, আগের দু’চারটে মেয়ে আছে অতএব বংশরক্ষার ভীষণ তাগিদ, শ্বশুরবাড়িতে গঞ্জনা – ইত্যাদি নানা গল্প আগে শুনেছি। কিন্ত এই মহিলার গলা, মুখ দেখে শুনে মনে হলো না যে কোন ভান করছে।
তাও নিয়মমাফিক কথা বললাম- বাচ্চা ছেলে না মেয়ে ওসব বলা হয় না। আশা করি জানেন।
সহকারী বললো- তোমার কত নম্বর বাচ্চা?
– পাঁচ নম্বর।
আমি ধরেই নিয়েছি- এর গল্পও এই সমাজের গল্প। আলাদা কিছুই নয়।
সহকারী খানিকটা বকুনি দেয়ার মতো করে বলে – আর ক’টা বাচ্চা নেবে গো? ফুটবল টিম বানাবে নাকি?
আমাদের মতো নিধিরাম সর্দার ডাক্তারদের এহেন পরিস্থিতিতে চুপ করে থাকা অভ্যাস করতে হয়। না হলে কি জানি কখন কে কোন দিক দিয়ে এসে ঠুকে দেয়!! কিন্ত মহিলা দেখলাম – হাসছেন। আমি আমার কাজ করছি।
সহকারী জিজ্ঞেস করলো- ক’টা মেয়ে?
মহিলা হেসে হেসে যা বললো, সেটা শুনে আমার হাত থেকে ইউএসজি প্রোব পড়ে যাওয়ার উপক্রম হলো। প্রায় নড়েচড়ে উঠলো শরীরের প্রত্যেকটি স্নায়ু। প্রত্যেকটি মাংসপেশী দৃঢ় টানটান উত্তেজনায় সোজা হয়ে গেছে। চোখ দুটো টাক পড়ে ফাঁক হয়ে যাওয়া কপালে তুলে আমি তাকিয়ে আছি।
মহিলা বলছেন- এট্টা মাইয়ার জন্যিই তো! চার চাইড্ডা পোলা। এট্টা মাইয়া জন্যিই তো এইবার ….। মহিলা হাসছেন।
আমি নিজের গায়ে চিমটি কেটে দেখলাম – জেগে আছি কিনা! ব্যথা লাগতেই বুঝলাম -সত্যিই এই সমাজে এখনো এরকম একজন বা অনেক মানুষ আছে তাহলে!! এরকম একজন গ্রামের মহিলা, যে হয়তো পেরোয়নি স্কুলের গণ্ডি, যাঁর বাড়িতে , শ্বশুরবাড়িতে একমাত্র দাবি হবার কথা- পোলা চাই, সে কিনা হেসে হেসে বলছে, এট্টা মাইয়ার জন্যিই …
না ! মহিলার মুখের দিকে তাকিয়ে আমার মোটেই মনে হচ্ছে না যে আমার বদহজম হয়েছে!! একটা অদ্ভুত ভালো লাগার অনুভূতি ছেয়ে গেল। আমি নিমেষে ভুলে গেলাম- মহিলার চারটি ছেলে। ভুলে গেলাম এই মহিলা পরিবার পরিকল্পনার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন অলরেডি!! ভুলে গেলাম এই মহিলা গ্রামের প্রায় অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত একজন!
আমি স্বীকার করছি, সেক্স ডিটারমিনেশন করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ! আমি কোনদিন করিনি, করবো ও না। কারো এমন চাহিদা শুনলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিতে পারি! তবু এই প্রথম বার আমি ডাক্তারির প্রয়োজন বাদ দিয়ে একবার হলেও পেটের বাচ্চাটি ছেলে না মেয়ে- সেটা দেখলাম। নিজের অজান্তেই। কি দেখলাম না দেখলাম- সেটা বলার জন্য নয়।
কেউ ভাববেন না যেন আমি বিগলিত হয়ে মহিলাকে সেটা বলেও দিয়েছি! অতবড় হ্যাংলামি অজ্ঞান হয়ে গেলেও করবো না! এখানেও বলবো না।
ডাক্তারি করতে করতে, বহুবার বহু মানুষের ব্যবহারে প্রচণ্ড মানসিক আঘাত পেয়েছি, ভালোবাসা পেয়েছি, প্রচণ্ড রাগের, দমফাটা হাসির, অনুচ্চারিত কান্না, বুক ফাটা অভিমান, রাজনীতি কূটনীতি সমাজনীতি অর্থনীতির – ভালো মন্দ দিক দুটোই দেখেছি।
ঠিক এই কারণেই- কোন কিছু লেখার জন্য ডাক্তারদের অভিজ্ঞতা সমাজের অন্য যে কারো চেয়ে বেশি। দুর্ভাগ্য, সমাজে তাঁদের কথা শোনার মানুষ নেই, শোনানোর মঞ্চ নেই আর ডাক্তারদের সেইসব বলার সময় নেই!!
আমার মতো ‘আর কোন কিছু করতে পারিনা বলেই ডাক্তারি করি – এরকম ডাক্তারের লেখালেখিটা কখনোই ‘সত্যিকারের লেখা’ হয়ে উঠবে, এসব দুরাশা করি না।
যাইহোক, আমার মন ভরে উঠলো এক অনাস্বাদিত আনন্দে। আমি কাউকে ঢাক ঢোল পিটিয়ে বলতে পারি না, অযথা উচ্ছাস প্রকাশ করতে পারি না, বড় বড় বাতেলা নামাতে পারি না এসব নিয়ে। কিন্ত চুপিচুপি এই ভালোলাগা ধরে রাখি মনে। ধরে রাখি পরের দিন ফের ডাক্তারি করার জন্য। ধরে রাখি , আরো অন্য অনেক মানুষের কষ্ট দুঃখ অসহায়তা দেখে ভেঙ্গে না পড়ার জন্য।
কাজ শেষ হলো। হাসিমুখে বেরিয়ে গেলেন মহিলা।
সহকারীর দিকে তাকালাম। তাঁর একটা ধারণা জন্মেছে – দুটোর বেশি বাচ্চা মানেই অশিক্ষিত, সমাজের বোঝা!
হঠাৎ তাঁর একটা কথায় আমার ভালো লাগার অনুভূতি টা হঠাৎ কেঁপে উঠলো। তারপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়লো। – মেয়ে চাই না ছাই! একটা মেয়ের জন্য চার চারটে পোলা নিয়ে নিল এই ফাঁকে!! যত্তসব! আবার হেসে হেসে বলছে – এট্টা মাইয়ার জন্যিই … ঢং যত।
– ঢং কেন? হতেও তো পারে যে সত্যিই একটা মেয়ের জন্য …। আমি দ্বিধাগ্রস্ত।
– স্যার , আপনি জানেন না এঁদের। এঁরা মেয়ে চায় না। গিয়ে দেখুন এর ঘরেই হয়তো চৌদ্দ বছরের ছেলের বউ আছে !!!
সহকারীর দিকে তাকিয়ে বুঝলাম – ভুল তো কিছু বলছে না! সত্যিই তো ! একটা মেয়ের জন্য চার চারটে ছেলে হয়ে গেল!
বড় ছেলে হয়তো বিয়েও করে নিয়েছে বা করবে একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে! সেই মেয়েটিকেও তো নিজের মেয়ে ভাবতে পারতো! সেই মেয়েটিকে নিজের মেয়ে বানিয়ে তোলা কি পর পর প্রসব যন্ত্রণা সহ্য করার চেয়ে ও বেশি? সেটি কি আদৌ ভাববে?
না! এতবড় দুরাশা করার সাহস পাচ্ছি না!
একটা ছেলে বা একটা মেয়ে – যাই হোক, তার জন্য পর পর বাচ্চা নেয়ার প্ল্যান করা, পরিবার পরিকল্পনা থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ, দেশ এর ভবিষ্যৎ ঝরঝরে করে দেয়ার এই বদভ্যাস, নোংরামি কোনমতেই সমর্থন করা যায় না।
আমি কাজ শেষ করে বেরিয়ে আসছি। মাস্ক পড়া বলে একটু অস্বস্থি হচ্ছে। বাইরে বেরিয়ে শ্বাস নিতে হবে জোরে। সহকারীর কথা শুনে মনটা একটু ভেঙ্গে গেলেও, ভালো লাগার একটা অনুভুতি আজ যাচ্ছেই না মন থেকে!
সত্যিই যদি এমন হতো – একটি মেয়ের জন্যই … মনে মনে বললাম – এমন চাওয়া অনেক মানুষের চাওয়া হোক।
যাইহোক, ডাক্তারদের কপালে ভালো জিনিস বেশি জোটে না, আর জুটলেও ক্ষণস্থায়ী! নেতার পিঠ চাপড়ানি থেকে ভগবান – সবই ক্ষণস্থায়ী।
সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসছি। সিঁড়ির একপাশে বসে আছেন সেই মহিলা। পাশে একজন পুরুষ দাঁড়িয়ে। হয়তো স্বামী। আমাকে দেখে বোঝার উপায় নেই। মুখোশে মুখ ঢাকা।
স্পষ্ট নিজের কানে শুনতে পেলাম- পুরুষটি ভদ্রমহিলাকে ধমক লাগাচ্ছেন – তোর মাতায় কিচ্ছু নাই। তোরে কইলাম যে ডাক্তারকে কবি না চাইড্ডা বাচ্চা আছে! হেইলে আর কয় নাহি পোলা না মাইয়া!
মহিলা হাসছেন কি অভিনয়ের হাসি? আমি আর তাকাতে পারছি না রাগের চোটে।
আবার শুনতে পেলাম মহিলা বলছেন – মুই তো কইলাম , এট্টা মাইয়ার জন্যিই …
পুরুষ মানুষটি রাগে গরগর করছে যেন। – মাতামোডা মাইয়া মানুষ … অ্যাকবার মাইয়া অইলে দেহামু তোরে ….
এই দেশ , এই সমাজ , এই সমাজের মানুষের কাছে নিজেকে মনে হলো কলুর বলদ। এঁরা একটি মেয়ের জন্য আসেনি, এসেছে একটি মেয়েকে হত্যা করার জন্য! সত্যি এঁরা এরকম নোংরা অভিনয় অব্দি করতে জানে, ভাবতেই গা গুলিয়ে উঠলো।
কিন্ত ওই যে, আমার মতো ডাক্তারদের না কিছু করার আছে, না কিছু বলার! এই যে একখান লেখাও লিখে ফেললাম রাগের চোটে, এ তো আর সুখপাঠ্য লেখা হয়ে ওঠেনি! উঠবেও না! না ভুতের গল্প না কল্পবিজ্ঞানের গল্প, এগুলো যে মানুষের গল্প!
তাই কেউ পড়লে পড়লো, না পড়লে বয়েই গেল আমার! আমি ডাক্তার, অসুখের কথা আমি লিখবোই! কারো কাছে অসুখপাঠ্য হয়ে উঠলেও আর কিছু যায় আসে না।
একটি মেয়ের জন্য হলেও লিখবো। লিখতে লিখতে হয়তো কোন একদিন আমার ছোট্ট সূর্য ফেটে পড়বে দারুণ বিস্ফোরণে … হয়তো …
ভালো লেখা।কে আপনাকে কি বলেছে জানি না। তবে কিছু পাঠকের জন্য ই লিখুন।