সবসময় বিপ্লবের কথা না বলে
মাঝেমধ্যে দু চারটে ভুলভাল কথা বলে ফেলার জন্য
আমাকে ক্ষমা করবেন কমরেড।
চারিদিকে তাকিয়ে দেখি সবই আছে।
আলো ঝলমলে শপিং মলে ভিড় আছে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর সামনে
ফুচকার সামনে হাহা হিহি আছে,
নন্দন চত্বরে ব্যান্ডের গুনগুন গান,
নেই শুধু কয়েকটা প্রাণ।
ভাঙ্গর, মীনাখাঁ, হাড়োয়ার পথে পড়ে আছে প্রাণহীন দেহ।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একেবারে নিচুতলার কর্মী,
ফুট সোলজার।
ওরাই চিরকাল মারা যায়।
নেতারা টিভি চ্যানেলের স্টুডিওতে ঘাড়ে পাউডার মেখে থুতু ছিটিয়ে ওদের উদাহরণ দেন।
নেতাদের কাছে ওরা কেবল পরিসংখ্যান।
আমরা ভুলে যাই যে ওই মৃতদের পরিবারের কাছে ওরা স্রেফ কেবল সংখ্যা নয়,
ওরা এক একটা ট্র্যাজেডি।
শ্রেণী বিচারে ভুল করে থাকলে
ক্ষমা করে দেবেন কমরেড,
শ্রেণী বিচারে আমার কাছে
ওরা প্রলেতারিয়েত অথবা লুম্পেন প্রলেতারিয়েত,
যাই হোক না কেন, দিনের শেষে তো প্রলেতারিয়েত।
আমার ছেলে নাসায় যায়, গুগুলে যায়,
নিদেনপক্ষে ইনফোসিস
পাশের বাড়ির ছেলে হয় ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন।
ফাঁসিতে যায়, যেতে যেতে দেয় শিস।
নিজে ঠাণ্ডা ঘরে বসে,
নিরাপদ দূরত্বে বসে,
নিজেকে ও নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রেখে,
অন্যের রক্তের ফিনকির বিনিময়ে গড়ে ওঠা প্রতিরোধের কাহিনী শুনে ও
শুনিয়ে খুশি থাকতে পারছি না বলে,
আমাকে ক্ষমা করবেন কমরেড।
আপনি লড়াইয়ের ময়দানে আছেন,
আপনার মুখে প্রতিরোধ প্রতিবাদের কাহিনী শোভা পায়,
আমি নেই,
আমি সুখী গৃহকোণ, শোভে গ্রামোফোন টাইপ।
আমার মুখে শোভা পায় না,
ভুল বলে থাকলে ক্ষমা করে দেবেন কমরেড।