১. হাচিকো: এই জাপানী কুকুরটিকে বিশ্বের সবচেয়ে অনুগত কুকুর বলা হয়ে থাকে। কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য প্রভু যখন ট্রেন ধরতেন হাচিকো রোজ তাঁকে স্টেশন অবধি পৌঁছে দিত। প্রভুর ফিরে আসার সময়ও হাচিকো ট্রেন আসার আগেই স্টেশনে পৌঁছে অপেক্ষা করত। একদিন কর্মক্ষেত্রে গিয়ে প্রভুর আকস্মিক মৃত্যু হয়। তাঁর দেহ আর ফেরে না। কিন্তু হাচিকো ভাবতে থাকে প্রভু একদিন নিশ্চয়ই ফিরে আসবেন। এই আশায় শিবুইয়া রেল স্টেশনের বাইরে একটি নির্দিষ্ট স্থানে ঝড় বৃষ্টি তুষারপাত উপেক্ষা করে টানা নয় বছর নয় মাস পনের দিন অপেক্ষা করার পর অবশেষে ১৯৩৫ সালের ৮ই মার্চ হাচিকো মারা যায়।
২. নিপার: এই কুকুরটি ছিল সঙ্গীত শিল্পী মার্ক হেনরি ব্যারাউ-এর খুব আদরের কুকুর। মার্ক একবার নিজের গানের রেকর্ড তৈরি করিয়েছিলেন। এরপর মার্কের অকালমৃত্যু হয় এবং নিপার খুব ভেঙে পড়ে। তিনবছর পর মার্কের ভাই ফ্রান্সিস একদিন গ্রামোফোন যন্ত্রে সেই রেকর্ডটা বাজিয়ে শুনছিলেন। প্রভুর কণ্ঠস্বর শুনেই রুগ্ন নিপার অতিকষ্টে গ্রামোফোনের সামনে এসে চোঙার সামনে বসে তা শুনতে শুরু করল। সেই করুণ দৃশ্য সাথে সাথে ক্যানভাসে এঁকে ফেললেন ফ্রান্সিস। এর কিছুদিন পর নিপার মারা যায়। ১৮৯০ সালে লণ্ডনের গ্রামোফোন কোম্পানি ফ্রান্সিসের আঁকা ছবিটা কিনে নেয় এবং লোগো হিসাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। মার্কের প্রতি নিপারের এই চিরন্তন ভালবাসাকে স্মরণীয় করে রাখতে গ্রামোফোন কোম্পানির নাম পাল্টে রাখা হয় ‘হিজ মাস্টার্স ভয়েস’ বা এইচ.এম.ভি.।
৩. লাইকা: এই রাশিয়ান কুকুরটি হলো পৃথিবীর প্রথম মহাকাশগামী জীব। মহাকাশ অভিযানের সময় মহাকাশের ভারশূন্যতা, অক্সিজেনের অভাব, তাপমাত্রার বিশাল তারতম্য মানবশরীরের উপর কীরকম প্রভাব ফেলতে পারে তা জানার জন্য লাইকাকে ১৯৫৭ সালের ৩রা নভেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে স্পুৎনিক-২ এর সাথে মহাকাশে উৎক্ষেপন করা হয়। কিন্তু মহাকাশযানটি কয়েক ঘণ্টা চলার পর যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য হঠাৎ আভ্যন্তরীন তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে এবং লাইকার মৃত্যু ঘটে। মহাকাশ গবেষণায় বিশ্ববাসী লাইকার কাছে চিরঋণী হয়ে থাকবে।
৪. পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের প্রভাবশালী নেতার বিদেশী বংশোদ্ভূত ও জটিল কিডনীর অসুখে আক্রান্ত পোষ্য কুকুর: ২০১৫ সালের ২০শে জুন সরকার চালিত পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ মানুষের হাসপাতালে যার ডায়ালিসিসের বন্দোবস্ত করে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি মহাশয় শিখিয়েছিলেন কাকে বলে আসল প্রভুভক্তি, যা কুকুরের প্রভুভক্তিকেও হার মানায়।
(চার নম্বর কুকুরটির নাম এবং ছবি না দিতে পারার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত )