হাত ধুয়েই অনেক রোগ থেকে বাচা যায় বলছেন ডাঃ স্বর্ণপালী মাইতি।
দৈনন্দিন ছোট ছোট কয়েকটি সু-অভ্যাস আমাদের অনেক অসুখ থেকে বাঁচাতে পারে। এর মধ্যে একটি হল সঠিক উপায়ে হাত ধোয়া।
কখন?
WHO এবং UNICEF এর সমীক্ষা অনুযায়ী কিছু সঙ্কটকালীন অবস্থা ( critical time)চিহ্নিত করা হয়েছে, যখন অবশ্যই হাত ধুতে হবে।
১) শৌচকর্মের পর
২)খাবার আগে
৩) রান্না ও পরিবেশনের আগে
কিভাবে?
সাধারণ হাত ধোওয়া সাবান ও পরিষ্কার জল ই যথেষ্ট। হাত ধোওয়ার সময় হাতের তালু বা চেটো, হাতের পিছনে, আঙুল, আঙুলের ভাঁজ, নখের ডগা এবং কব্জি অবধি ভালোভাবে রগড়ে ধোওয়া চাই। হাসপাতালের কর্মীদের জন্য,জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধে হাত ধোওয়ার বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক ধাপ সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
কেন?
১)সবথেকে ক্ষতিকারক যে রোগটিকে দূরে রাখা যায় সেটি হল ডায়েরিয়া। একটি পরিসংখ্যান ই যথেষ্ট। ভারতে ১৯৯০ থেকে ২০১৬ অবধি ১৩১৬ মিলিয়ন মোট মৃত্যুর ১৫.৫% এর কারণ হল ডায়েরিয়া ও আন্ত্রিক সংক্রমণ।
২) ফুসফুসের সংক্রমণে দায়ী বেশ কয়েকটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া কে ঠেকিয়ে রাখা যায়। UNICEF এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী হাত ধোওয়ার ফলে ফুসফুসে সংক্রমণ ২০% পর্যন্ত কমানো যেতে পারে।
৩)শিশুদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সার্বিক উন্নতির একটি বুনিয়াদ হয়ে দাঁড়াতে পারে এই অভ্যাস। স্কুল গুলিতে মৌলিক প্রয়োজনীয়তার মধ্যে একটি হল সাবান ও পরিষ্কার জলের সরবরাহ। অসুখের জন্য অনুপস্থিতি র হার ৫০% অবধি কমতে দেখা গেছে। ডায়েরিয়ার সংক্রমণ কমেছে ৩০% এর বেশী। মিড -ডে মিলের আগে বাচ্চাদের একসঙ্গে হাত ধুতে উৎসাহ দিচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলি। বাচ্চারা মুখোমুখি দাঁড়াবে, একে অপরকে দেখে শিখবে ও উৎসাহ দেবে ভালো ভাবে হাত ধুতে এবং এই শিক্ষা তারা পৌঁছে দেবে নিজেদের গৃ্হস্থালীতেও। বড়দেরও বাচ্চাদের থেকে শেখার অনেক কিছুই আছে।
কত খরচ -?
সাবান, জল ও হাত ধোবার জায়গা সহজলভ্য, স্থানীয় উদ্যোগেই পাওয়া যেতে পারে। । পরিমিত জলের ব্যবহার সুনির্দিষ্ট করার জন্য পরিদর্শকের কোন বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজন হয় না৷
সাবান দিয়ে হাত ধোয়া স্বাস্থ্যরক্ষার একটি অন্যতম ” cost-effective ” উপায়। বিশ্বজোড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষায়, পরিষ্কার পানীয় জল(WATER)পরিষ্কার শৌচালয়(SANITATION) ও স্বচ্ছতা (HYGIENE) – WASH অভিযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ছোট্ট অভ্যাস টি।