বাঙালি ক’দিন হিপ নিয়ে হিপ হপ নেচে নিয়েছে বেশ। কারণ, একজন হিপ নিয়ে ছিপ ফেলেছিলেন! অতঃপর নাকি পোস্ট ফোস্ট ডিলিটও করছেন।
যাইহোক, এই সুযোগে বাঙালি কিন্তু জেনে গেছে – হিপ জয়েন্ট বলে একটি/দুটি জয়েন্ট থাকে মানুষের শরীরে।
আর মাঝে মাঝে ডাক্তাররা নাকি সুযোগ পেলেই জোর করে সেগুলো কেটে নিয়ে কি সব দিয়ে রিপ্লেস করে দেয়!
যাকগে… অতশত বোঝাতে পারবো না। আমার কাজও নয়। সেই ঘটনা নিয়ে বলবোও না। কারণ, কিছু রাম শ্যাম বাঙালি এতো বুদ্ধি ধরেন (মগজে) যে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়ে এসেও, ঠিক বাঙালি থেকে যান! অতঃপর হুজুগে … হে হে হে
আমি শুধু আমার মত কিছু না জানা মানুষের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করতে চাই শুধু।
Femur বলে দুই খানা হাড় থাকে মানুষের। তার মাথা ঢুকে থাকে পেলভিসের হিপ বোনের অ্যাসিটাবুলাম নামক গুহায়। আর তার মধ্যেই ফিমারের মাথাটা নড়াচড়া/ ঘোরাঘুরি করে বলে সেটির চারপাশে বিভিন্ন জিনিস দিয়ে গড়ে ওঠে একখানা জয়েন্ট। যাকে বলে নাকি হিপ জয়েন্ট! তাহলে মানব শরীরে দুই খানা হিপ জয়েন্ট হলো, তাই না?
এবার ব্যাপারটা একটু খুলে বলা যাক। জয়েন্ট হলেই তো আর হলো না, জয়েন্ট হলে তার জন্য দরকারি হাড়, মাংস, লিগামেন্ট, ক্যাপসুল, ল্যাব্রাম, জয়েন্ট ফ্লুইড ইত্যাদি ইত্যাদি কতগুলো জিনিসের পাশাপাশি যেটা দরকার হয় সেটি হলো রক্তের সরবরাহ। দরকার রক্তনালী। সব জয়েন্টের ক্ষেত্রেই ব্যাপারটা মোটামুটি একই রকম।
কিন্তু এই যে দু’খানা হিপ জয়েন্ট আছে, সেখানে ফিমার নামক সবচেয়ে লম্বা যে হাড়টির মাথা অ্যাসিটাবুলামে ঢুকে থাকে, সেটির ক্ষেত্রে ছোট্ট অসুবিধা আছে! মাথায় অক্সিজেন কম যাওয়ার মত ব্যাপার নয় কিন্তু! রক্ত/অক্সিজেন যথেষ্টই ঢোকে ওখানে, শুধু ঢোকার রাস্তাগুলো একটু যা গোলমেলে। সঙ্গের ছবি দুটো খেয়াল করুন।
ফিমোরাল হেড, ক্যাপসুল, আর লাল রঙের রক্তনালীগুলো খেয়াল করুন শুধু।
দেখুন, সবচেয়ে জরুরি রক্তনালীগুলো ফিমার নামক হাড়ের গলা বরাবর গিয়ে মাথার আগে থেমে যাচ্ছে। আসলে কি হয়, এরা ফিমারের মাথায় রক্ত সাপ্লাই দিতে যাবার সময় সরাসরি মাথায় না ঢুকে ক্যাপসুল নামক চাদরের মধ্য দিয়ে ঢোকে। ওই যেমন বড় বড় নেতা মন্ত্রীরা ঘুষের টাকা ঠিক নিজের সরাসরি নেন না, একটা দুটো চামচা রাখেন!
এবার এই যে ব্যাপারটা, এটার বেশ কিছু সুবিধা যেমন আছে, অসুবিধাও আছে। অসুবিধাটা কি রকম? ক্যাপসুল নামক চাদরটি সরিয়ে নিলে বা কোনভাবে চাদর ছিঁড়ে গেলে/নিচের হাড় থেকে চাদরটি উঠে এলে, সাথে রক্তনালীগুলোও নষ্ট হবে। মাথা র কাছে ঘুষ থুড়ি রক্ত পৌঁছাবে না! আর মাথা যতই ক্ষমতাশালী হোক, রক্ত বা ঘুষ ঠিকঠাক না পৌঁছালে, পচন ধরতে বাধ্য। কাজ করতে পারবে না কিছুতেই! আস্তে আস্তে শুকিয়ে শুঁটকি হয়ে যাবে! তখন কেটে বাদ দেওয়া ছাড়া/রিপ্লেসমেন্ট করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।
(চলবে)