(তৃতীয় অংশ – নেটিভ মেডিক্যাল ইন্সটিটিউশনের (NMI) পরিসমাপ্তি)
এর আগের অংশে কয়েকটি বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলাম।
প্রথমত, প্যারিসের হাসপাতালগুলোতে ১৮শ শতাব্দীর শেষ এবং উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগ জুড়ে মেডিসিনের যে নতুন অধ্যায় “হসপিটাল মেডিসিন”-এর সূচনা হয়েছিল তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল – কয়েক শতাব্দী ধরে চলে আসা ফিজিসিয়ানের শ্রেষ্ঠত্ব লোপ পাওয়া এবং ফিজিসিয়ান এবং সার্জনের ব্যবধান মুছে গিয়ে এক নতুন ধরণের চিকিৎসকের উন্মেষ হয়েছিল। ফ্রান্সের অকালপ্রয়াত চিকিৎসক ফ্রাসোঁয়া জেভিয়ার বিখাট ছিলেন এই নতুন ধরণের প্রতিনিধিত্বকারী চিকিৎসক। তিনি ছাত্রদের শেখাতেন – ““Dissect in anatomy, experiment in physiology, and make necropsy in medicine; this is the threefold path without which there can be no anatomist, no pathologist, no physician.”
দ্বিতীয়ত, এই বিশেষ ঐতিহাসিক ঘটনা সম্ভব হয়েছিল মৃতদেহে ডিসেকশনের মধ্য দিয়ে জীবিত দেহে রোগের উৎসকে সুচিহ্নিত এবং সুনির্দিষ্ট করার আবশ্যিক কাজের মধ্য দিয়ে। চিকিৎসবিজ্ঞানের ইতিহাসের মান্য গবেষক রয় পোর্টার বলছেন – “The radical reform of French medical education imposed in 1794 crowned surgery’s rise; thenceforth it was taught to all students together with medicine. The prominence of the hospital in the post-1789 medical system and the prestige of pathological anatomy further elevated its status.” (The Greatest Benefit to Mankind: A Medical History of Humanity, 1999, p. 280) প্যাথলজিক্যাল অ্যানাটমি এতটাই গুরুত্ব পেয়েছিল যে ভিয়েনার ডাক্তার Rokitansky তাঁর চিকিৎসক জীবনে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে অবিশ্বাস্যরকমের সর্বাধিক ৬০,০০০ অটোপ্সি করেছিলেন। বছরে ১,৫০০-এর বেশি অটোপ্সি করতেন। (Lester S King and Marjorie C Meehan, “A History of the Autopsy”, American Journal of Pathology, 1973, 73.2: 514-543)
তৃতীয়ত, নেটিভ মেডিক্যাল ইন্সটিটিউশনের যুগে (১৮২২-১৮৩৫) এ ঘটনার কোন প্রত্যক্ষ অভিঘাত না থাকলেও আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল শিক্ষার জগতে যে রূপান্তর চলছিল এখানেও তার পরোক্ষ ছাপ দেখা যায়। এজন্য, একদিকে যেমন এই স্কুলের ছাত্রদের পোস্টমর্টেম নিজের চোখে দেখতে হত এবং শিক্ষককে হাতেকলমে সহযোগিতা করতে হত, অন্যদিকে রোগীর বেডের পাশে দাঁড়িয়ে কেস হিস্টরি নেওয়া, ওষুধ ও পথ্যের নির্দেশ লেখা এবং ওষুধ তৈরির কাজও করতে হত। এজন্য আমি সময়টিকে বলেছি ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজে পূর্ণ বিকশিত হসপিটাল মেডিসিন-এর গর্ভাবস্থা বা gestation period। এখানে উল্লেখযোগ্য, যারা সেসময়ে এই স্কুলে এবং প্রথমযুগের মেডিক্যাল কলেজে পড়াতেন তাঁদের অধিকাংশই এডিনবার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশিক্ষিত। ফ্রান্সের বাইরে ভিয়েনা এবং এডিনবার সেসময়ে মেডিক্যাল শিক্ষার সর্বোৎকৃষ্ট প্রতিষ্ঠান ছিল। ডি জি ক্রফোর্ড জানাচ্ছেন – “The most notable point is the very large proportion of Scotsmen in the first period, nearly one-half of the whole.” (Role of the Indian Medical Service, 1615-1930, p. 648) ১৮০৪ থেকে ১৮৩৬ সময়কালে ভারতে কর্মরত ডাক্তারদের মধ্যে ইংল্যান্ডে পাস করা ডাক্তারের সংখ্যা ছিল ৩৫৬, যেখানে স্কটল্যান্ড তথা এডিনবারে পাস করা সংখ্যা ছিল ৫৪১ (পৃঃ ৬৪৯)।
চতুর্থত, চার্লস মলিজ জানাচ্ছেন – “By the early- to mid-i82os then, English medical students were well aware of the strong advocacy of their teachers toward the value of the Paris study tour.” (Morbid Appearances, p. 147) এরসাথে যুক্ত হবে – “By 1828 there were about two hundred studying anatomy in the French capital, compared with perhaps four times that many in London and Edinburgh. It was enough to provoke a great deal of consternation at home.” (পৃঃ ১৫০) ফলে মেডিক্যাল শিক্ষার ওপরে ইংলিশ চ্যানলের দুপারের প্রভাবই কাজ করছিল। এর পরম্পরা ভারতে শিক্ষকতার সাথে যুক্ত শিক্ষকেরা বহন করছিলেন।
পঞ্চমত, নেটিভ মেডিক্যাল ইন্সটিটিউশনে ব্রেটনের উত্তরসূরী জন টাইটলার রবার্ট হুপারের Anatomist’s Vade-Mecum ১৮৩০ সালে আরবিতে The Anis Ul Mushaharahhin শিরোনামে অনুবাদ করেছিলেন। এ বইয়ের ভূমিকায় তিনি বলেন – “Before the knife of the anatomist every artificial distinction of society disappears; and if all the individuals of the human race be equal in grave, they are still more so on the dissecting table.” (পৃঃ ১৪) অর্থাৎ, অ্যানাটমির গুরুত্ব মেডিক্যাল কলেজ তৈরির আগে থেকেই ছাত্রদের কাছে উজ্জ্বলভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করে।
এ ব্যাপারে একটি কৌতূহলোদ্দীপক উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। টাইটলারের অ্যানাটমি ক্লাসের একজন হিন্দু ছাত্র দর্শন লাল এতটাই উজ্জীবিত হয়েছিল যে গঙ্গার পাড় থেকে একটি আস্ত মাথার খুলি নিয়ে এসে টাইটলারকে দেয়। যদিও খুলিতে পচন ধরেছিল, কিন্তু “sufficient of the Dura mater had remained to enable exhibition of its processes.” (S N Sen, Scientific and Technical Education in India, 1781-1900, 1991, p. 141)
একটি ভিন্ন প্রসঙ্গের অবতারণা এখানে করা যেতে পারে। পরিচিত ইংরেজ কবি (১৭৭৪-১৮৪৩) রবার্ট সাদি তৎকালীন ইংল্যান্ডের কোয়াক (quack) তথা হাতুড়ে চিকিৎসক নিয়ে খুব কড়া ভাষায় কিছু চিঠি লিখেছিলেন। সময়কাল ১৮১০ থেকে ১৮২০। ১৮২২ সালে কলকাতায় নেটিভ মেডিক্যাল ইন্সটিটিউশন তৈরি হচ্ছে। এর অনুসারী বোম্বে স্কুল ফর নেটিভ ডক্টরস তৈরি হয় ১৮২৪ সালে। প্রায় একই সময়ের ইংল্যান্ডের চিত্র নিয়ে সাদি লিখছেন – “quackery is carried to greater perfections of villainy here than in any other part of the world. Sickness humbles the pride of man; it forces upon him a sense of his own weakness, and teaches him to feel his dependence upon unseen Powers: that therefore which makes wise men devout, makes the ignorant superstitious.” (Robert Southey, Letters from England, 3 vols, II, 3rd edn., p. 284) আরেক জায়গায় বলছেন – “The abracadabra of the old heretics was lately in use as a charm for the ague, and probably still is where ague is to be found, for that disease has almost wholly disappeared within the last generation. For warts there are manifold charms.” (প্রাগুক্তঃ ২৮২) একথা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিল্পবিপ্লব ঘটে যাওয়া দেশেও আপামর জনমানস এবং উপরিস্তরের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে এক বিভাজন বিরাজ করতো। এখানে ভারতবর্ষ খুব বড়ো ব্যতিক্রম নয়।
কলকাতার অবস্থা হুতোমের কাছ থেকে আমরা যেমনটা জেনেছি তার সাথে সাদির তিরস্কৃত সময়ের মিল খুঁজে পাওয়া যায় – “জ্বর বিকার ওলাউঠোর প্রাদুর্ভাব না পড়লে এঁদের মুখে হাঁসি দেখা যায়না – উলো অঞ্চলে মড়ক হওয়াতে অনেক গোদাগাও বিলক্ষণ সঙ্গতি করে নেছেন; কলিকাতা সহরেও দু-চার গোদাগাকে প্র্যাক্টিস কত্তে দেখা যায়, এদের অষুধ চমৎকার, কেউ বলদের মতো রোগীর নাক ফুড়ে আরাম করেন; কেউ শুদ্ধ জল খাইয়ে সারেন। সহুরে কবিরাজরা আবার এঁদের হতে এক কাটি সরেশ, সকল রকম রোগেই “সদ্য মৃত্যুশ্বর” ব্যবস্থা করে থাকেন – অনেকে চাণক্য শ্লোক এবং দাতাকর্ণের পুঁথি পড়েই চিকিৎসা আরম্ভ করেচেন!” (সটীক হুতোম প্যাঁচার নকশা, সম্পাদনা, অরুণ নাগ, আনন্দ, ২০০৮, পৃঃ ৪৭)
যাহোক, এর আগে NMI-এর দ্বিতীয় সুপারিন্টেন্ডেন্ট ব্রেটনের যে অবজ্ঞাসূচক মনোভাব দেখেছি এদেশের দেশীয় চিকিৎসকদের অ্যানাটমি জ্ঞান এবং চিকিৎসাবিদ্যা নিয়ে সেই ব্রেটনের A Vocabulary of the Names of the Various Parts of the Human Body and of Medical and Technical Terms in English, Arabic, Persian, Hindee and Sanscrit…-এ এদেশের উপযোগী ফার্সি, আরবি, সংস্কৃত এবং ইংরেজিতে বিভিন্ন প্রতিশব্দ লিপিবদ্ধ করেছিলেন।
NMI-এর সময়কাল অবধি দেশজ ভাষার সহাবস্থান এবং উচ্চতর শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি একমাত্র মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। উচ্চতর শিক্ষার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ইংরেজির প্রতিষ্ঠা হবে মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার পরে। ব্রেটন, টাইটলার, উইলসন বা প্রিন্সেপের মতো “ওরিয়েন্টালিস্ট”রা অপসৃত হবেন। এক্ষেত্রে গৌরি বিশ্বনাথনের একটি পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ – “Underlying Orientalism was a tacit policy of what one may call reverse acculturation, whose goal was to train British administrators and civil servants to fit into the culture of the ruled and to assimilate them thoroughly into the native way of life.” (Masks of Conquest: Literary Study and British Rule in India, 1998, পৃঃ ২৮)
NMI-এর কার্যক্রম – ১৮২২ থেকে ১৮৩৫
ডেভিড আর্নল্ড তাঁর Science, Technology and Medicine in Colonial India গ্রন্থে বলছেন – “The function of the Calcutta Native Medical Institution was never to promote indigenous medicine (which anyway formed a secondary part of the curriculum) as an equal or alternative to the Western system, but to ‘train up a class of native practitioners who would employ suitable native medicines with skill’. Offering instruction in Ayurveda and Unani medicine was also a ploy to attract recruits from the Vaidyas and other communities with a tradition of medical practice.Once recruited, it was assumed that they would come to recognise the superiority of Western medicine, even if they used cheap ‘native remedies’ instead of costly imported drugs in their professional work.” (পৃঃ ৬২-৬৩) মন্তব্যটি লক্ষ্যণীয়। মোদ্দা কথা হল, কোন সরলরৈখিক ঐতিহাসিক পথে এদেশের, আমার বিবেচ্য, মেডিক্যাল শিক্ষার যাত্রাপথ বিকশিত হয়নি। এর মধ্যে একাধিক স্তর, উদ্দেশ্য এবং স্বার্থ আছে – কখনো পরস্পরের সম্পূরক, কখনো পরস্পর বিরোধী।
সঠিক অর্থে NMI-এর কার্যক্রম শুরু হয় ১৮২৩ সালে। জেমিসনের মৃত্যুর পরে ৪ জন সুপারিন্টেডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন – W. Farquhar, George T. Urqhart, Peter Breton এবং জন টাইটলার। এদের মধ্যে Farquhar এবং Urqhart এডিনবারে শিক্ষালাভ করেছিলেন। যাহোক, শেষ অবধি, ব্রেটন জেমিসনের মনোনীত ছিলেন বলে নির্বাচিত হন। (এস এন সেন, পূর্বোক্ত, পৃঃ ১৩৩)
১৮২৩ সালে পার্ক স্ট্রিটে ব্রেটনের জন্য মাসিক ২৩০ টাকায় ভাড়া নেওয়া বাড়িতে ছাত্রদের থাকার এবং ক্লাস নেবার ব্যবস্থা হয়। (সীমা আলাভি, পূর্বোক্ত, পৃঃ ৭৩)
দায়িত্ব বুঝে নেবার পরেই ব্রেটন দেশীয় ভাষায় ছাত্রদের জন্য ১৫টি বই প্রকাশ করেন। এর মধ্যে পূর্বোল্লেখিত Vocabulay যেমন আছে, তেমনি আছে লন্ডন ফার্মাকোপিয়ার হিন্দুস্থানী সংস্করণ। হিন্দিতে “Introductory Lecture on Anatomy” এবং সাপের বিষ, অস্টিওলজি (অস্থিবিদ্যা), চোখের গঠন, ছানি পড়া, Demonstration of the Abdominal Viscera, Thoracic Visera-ও ছিল। এছাড়া ছিল বাংলায় Cholera Morbus-এর ওপরে লেখা জনপ্রিয় বই। এ বইটি নিয়ে রাধাকান্ত দেবের প্রতিক্রিয়ার কথা আগেই উল্লেখ করেছি। ১৮২৪ সালের অক্টোবর মাসে “দ্য স্কুল ফর নেটিভ ডক্টরস” নামটি পরিবর্তিত হয়ে “নেটিভ মেডিক্যাল ইন্সটিটিউশন” হয়। ১০ জন ছাত্রের লেখাপড়ার সুবিধের জন্য ব্রেটন দুটি নরকঙ্কাল কেনার নির্দেশ দেন। বাথগেট কোম্পানি ৭০৯ টাকা মূল্যে এই নরকঙ্কাল দুটি আনিয়ে দেয়। স্কুলের উন্নতি এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য ১৮২৫ সালের অক্টোবরে তিনি মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে একগুচ্ছ পরিকল্পনা পেশ করেন। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা বাড়িয়ে ২০ জন থেকে ৫০ জন করা ছিল। তিনি এসময় স্কুলে “মনিটর” অর্থাৎ সর্দার পড়ো প্রথার প্রচলন করেন। এর মাধ্যমে সেরা ৪ জন ছাত্রকে বেছে নিয়ে প্রথমজনকে জেনারেল হাসপাতালে অ্যানাটমি শিক্ষাতে, দ্বিতীয়জনকে কোম্পানির ডিসপেনসারিতে ওষুধ প্রস্তুত ও প্রয়োগের কাজে, তৃতীয়জনকে নেটিভ হাসপাতালে রোগীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ সহ ওষুধ ও পথ্য প্রয়োগ কিভাবে করতে হবে, এবং চতুর্থজনকে নিজের স্কুল NMI-তে কাজকর্ম পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্ব ন্যস্ত করেন। (বিনয়ভূষণ রায়, পূর্বোক্ত, পৃঃ ২৯)
প্রত্যেক বৃহস্পতি ও রবিবার হিন্দি ভাষায় “In the pharmacy class, various experiments were shown including preparartions of different substances such as sulphate of soda, magnesia, muriatic and nitric acids, calomel, hyd. Precip. Rubrum, caustic bougies, spirits of wine from rice and goor, and distilling the same” শেখানো হত। (সেন, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৩৫) তাঁর ছাত্ররা হাসপাতালে নিয়মিত শিখতে যেত এবং সুযোগ এলেই অত্যন্ত উৎসাহভরে সার্জনদের ডিসেকশনে সাহায্য করতো। তাঁর ছাত্রদের সম্পর্কে ব্রেটন মন্তব্য করেন – “I have no hesitation in saying that they already knew as much of anatomy and medicine as the generality of the medical students in England (who have not had the advantage of seeing Hospital Practice and attending public lectures) do after the completion of their apprenticeship.” (সেন, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৩৬) এ প্রসঙ্গে তিনি সাতকড়ি নামে একজন ছাত্রের উল্লেখ করেন। এই ছাত্রটি চোখের ছানি অপারেশনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কুশলী ছিল। এই ছেলেটি “was also skilled in performing operations for the dropsy, hydrocele, spleen etc.”। আরেকজন ছাত্র প্রসূন সিং-এর কথা ব্রেটন উল্লেখ করেছেন, যে ছেলেটি ব্রেটনের বাড়িতে ২ জন বৃদ্ধ মানুষের বাঁ চোখে সফলতার সাথে অপারেশন করে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়। (প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৩৭)
ব্রেটন বলেছিলেন – “When not engaged in these operations, the students are made to read the Pharmacopoeia and Ramsay’s Materia Medica, and to explain every part they read.”
ব্রেটনের কাছে প্রশিক্ষিত ১৮ জন ছাত্রের লিস্ট দেওয়া হল।
এখানে ভিন্ন একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ভারতীয় চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসে রোগীর কেস হিস্টরি নেবার কোন প্রচলন ছিলনা। একজন অসুস্থ মানুষকে পূর্ণ মানুষ হিসেবেই দেখা হত, যে ঘটনাচক্রে ত্রি-দোষ ও ত্রি-ধাতুর ভারসাম্য বিঘ্নিত হবার দরুন রোগী হয়েছে। NMI-তে ভারতের ইতিহাসে প্রথম রোগীর কেস হিস্টরি নেওয়া শুরু হল। এবং একজন মানুষের রোগীতে রূপান্তরিত হয়ে কেবলমাত্র একটি কেস নম্বর হবার সূচনা ঘটলো। টাইটলার তাঁর একটি উক্তিতে জানিয়েছিলেন – “The pupils of the Native Medical Institution, — persons certainly of no very high education, — keep a case-book of the symptoms and treatment of the sick on the establishment. The language of this is left entirely to their own choice, and they uniformly write in Persian.” (Monier Williams, History of The Application Of The Roman Alphabet To The Languages Of India, 1859, p. 56)
১৮৩১ সালে সরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই স্কুলের ছাত্রদের যোগদানের যে লিস্ট পাওয়া যায় এতে হিন্দু এবং মুসলিমদের এক সুন্দর সমন্বয় দেখা যায়। নেটিভ ডক্টর হিসেবে এরা ভারত এবং বাংলার সুবস্তীর্ণ ওণচোলে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রসাদ সিং এবং শেখ পিটার বক্স – সাগরে পোস্টিং; গঙ্গাপ্রসাদ তিওয়ারি, মীর রিওয়াজ আলি এং শেখ তেগ আলি – ব্যারাকাপুর; শেখ মুশকিন – মীরাট; গণেশ প্রসাদ – ভাগলপুর; শেখ ইনায়াত হোসেন এবং রঞ্জ্বনীম দাস – গভর্নর জেনারেলের বাড়িতে; মীর কাশিম আলি এবং শেখ শাহেদ আলি – রামরি; কাশী প্রসাদ – কমান্ডার-ইন-চিফের অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জন, ষেখ হায়দার আলি – পাগলা গারদের সহকারী; বলদু তিওয়ারি – বালাসোর এবং রঙ লাল – এটোয়া। ১৮৩৩-এ এই স্কুলে ৩৮ জন মুসলিম ছাত্র ছিল, ৬০-এর বেশি হিন্দু। (আলাভি, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৭৪)
১৮৩০ সালে ব্রেটনের মৃত্যুর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হল জন টাইটলার। টাইটলারের সম্পর্কে যে দু-একটি কথা শ্রদ্ধার সাথে বলা উচিত –
(১) NMI-কে এক অর্থে টাইটলারের মস্তিষ্কপ্রসূত বলা যেতে পারে। পিণ্ডারি যুদ্ধ বা ৩য় মারাঠা যুদ্ধের (১৮১৭-১৮১৯) সময়ে সেনাবাহিনীতে নেটিভ ডাক্তারদের ঘাটতি মাথাব্যথার বিশেষ কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এসময় টাইটলার সরকারকে প্রস্তাব দেন NMI ধরণের একটি ট্রেনিং স্কুল গড়ে তোলার জন্য। সরকার এ প্রস্তাবকে ভিন্নভাবে গ্রহণ করে। টাইটলারের মৃত্যুর পরে লেখা হয় – “at the end of 1830, that Mr. Tytler was placed at the head of an institution of which he might be considered as in some measure the founder.” (Asiatic Journal, vol. XX111 – New Series, May-August 1837, p. 6)
(২) চিকিৎসক সার্জন হওয়া ছাড়াও তিনি একইসাথে ভাষাবিদ, অংকবিদ এবং সুদক্ষ অনুবাদক ছিলেন। ইউরোপীয় ক্লাসিক্যাল এবং টিউটনিক ভাষা ছাড়াও তিনি হিন্দুস্তানী, বাংলা, ফারসি, আরবি, হিব্রু এবং সংস্কৃত ভাষা ভালোভাবে জানতেন।
(৩) ১৮২৮ সালে তিনি Anatomy of the Heart নামে আরবিতে একটি ছোট পুস্তিকা লেখেন।
(৪) “The Late John Tytler, Esq., of the Bengal Medical Service” শিরোনামে ১৬ পৃষ্ঠার একটি স্মরণবার্তা এশিয়াটিক জার্নাল-এ প্রকাশিত হয়। সেখানে লেখা হয় – “Without violating the principles of the establishment, or offending the prejudices of the people, the Committee conceived it practicable to engraft upon the native system, and finally thereby supersede its objectionable parts, instruction in European Anatomy and Medicine” (এশিয়াটিক জার্নাল, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১০) সেখানে একথাও বলা হয়, যে ভারতীয়রা কদিন আগেও মানুষ বা জীবজন্তুর হাড়কে অস্পৃশ্য জ্ঞান করত তারা দ্রুত নরকঙ্কালের সমস্ত হাড়গোড় কোন দ্বিধা ছাড়া প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করে এবং “attend at the post-mortem examinations at the European hospitals.” (প্রাগুক্ত, পৃঃ ১০)
টাইটলার NMI-এর উন্নততর প্রশিক্ষণ ও পরিচালনার জন্য কয়েকটি বিষয়ের ওপরে বিশেষ জোর দিয়েছিলেন। প্রথম, একটি সঠিক পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আলাভি বলেছেন – “The NMI systematized medical instruction and laid out strict code of medical apprenticeship and training.” (আলাভি, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৭৫) আমরা নজর করলে বুঝবো, এরকম “systematized medical instruction” এবং “strict code of medical apprenticeship and training” প্রকৃতপক্ষে মেডিক্যাল কলেজের ট্রেনিং-এর ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি করেছিল। যেজন্য বারেবারেই এই স্কুলকে আমি মেডিক্যাল কলেজ পূর্ববর্তী period of gestation বলেছি।
দ্বিতীয়, উন্নততর পুস্তকের প্রকাশ। টাইটলার ব্রেটনের শুরু করা hands-on ট্রেনিংকে আরও উন্নত করে তোলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের প্রবেশকালীন সময়ে ন্যূনতম শিক্ষার মান বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এবং শিক্ষাবর্ষকে বৃদ্ধি করার প্রস্তাবও ছিল।
তাঁর নিজের ভাষায় – “After a preliminary Lecture I begin with bones and commencing as usual with the head go regularly through the whole, pointing out their processes and foramina, the attachment of muscles and passage of vessels and nerves … the soft parts in similar manner on the sheep beginning with the Viscera and the Thorax, then the abdomen, the Pelvis” (সেন, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৩৯)
ব্রেটন যেমন লিজারের অ্যানাটমিক্যাল প্লেট ব্যবহার করেছিলেন, টাইটলার ক্লোকেটের (Cloquet’s) অ্যানাটমিক্যাল প্লেট ব্যবহার করেন অ্যানাটমি শিক্ষার জন্য।
তাঁর ক্লাসে প্রথম বর্ষের ছাত্ররা অ্যানাটমি শিখত, সবচেয়ে উঁচু ক্লাসে মেটেরিয়া মেডিকা এবং মেডিসিন, এবং মধ্যবর্তী স্তরের ছাত্ররা শিখত কেমিস্ট্রি ও অন্যান্য বিষয়। ডিসেকশন বলতে ভেড়ার ডিসেকশন (zootomy) বোঝাত।
মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে একটি প্যারাডাইম শিফট হল – zootomy থেকে cadaveric dissection। মেডিক্যাল শিক্ষার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হল।
টাইটলার হুপারের অ্যানাটমিস্ট’স ভেডে-মেকাম-এর আরবিতে The Anis Ul Mushaharahhin শিরোনামে অনুবাদ ছাড়াও ছাত্রদের জন্য আরও ৯টি বই লিখেছিলেন। (১) ৩৭ পৃষ্ঠার Introduction to Materia Medica, (২) ১৭৮ পৃষ্ঠার Account of the most useful articles of the Materia Medica, (৩) ৬৯ পৃষ্ঠার a System of Osteology, (৪) ৯ পৃষ্ঠার Account of Abdominal and Respiratory Muscles, (৫) ৪১ পৃষ্ঠার Account of the Vascular System, (৬) ৬ পৃষ্ঠার Tract on Gun-shot Wound, (৭) ৩৬ পৃষ্ঠার An account of surgical operations, (৮) ছাত্রদের পরীক্ষার উপযোগী বিভিন্ন ধরণের প্রশ্নোত্তর, যেমন নিউমোনিয়া, অ্যাম্পিউটেশন, আমাশয় ইত্যাদি, এবং (৯) ইঙ্গরেজি, ফারসি এবং নাগরিতে হাসপাতালে ব্যবহার করা হয় এমন সমস্ত মেডিসিন এবং যন্ত্রপাতির লিস্ট। (সেন, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৪২-১৪৩)
সার্জারির বিভিন্ন পুস্তক ছাড়াও মেডিসিনের বিভিন্ন রোগ সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা লিখেছিলেন “including phrenites, pneumonia, neurites, gastrites, hepatites, nephrites, cystites, apoplexy etc.” (সেন, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৪৫। এখানে বিভিন্ন অসুখের সেসময়ের ব্যবহৃত বানানকে অনুসরণ করা হয়েছে।)
১৮৩৩ সালে টাইটলার মাসিক ২৫০ টাকা ভাড়ায় ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের পূব দিকে একটি বড় বিল্ডিং-এ তাঁর বাসস্থান তৈরি করেন। এ নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের সাথে তাঁর সংঘাত বাঁধে কারণ বোর্ডের আগাম অনুমতি না নিয়ে তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন। এ বাড়ির মালিক ছিলেন রাজা বুদ্ধিনাথ রায়। (আলাভি, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৯৩)
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার জন্ম দিল NMI। সমস্ত ইংরেজি টেক্সটের vernacularization (হিন্দি, আরবি, ফার্সি কিংবা উর্দুতে) করা শুরু হয়েছিল ছাত্রদের শিক্ষার সুবিধার জন্য। কিন্তু এতে ইংরেজি টেক্সটের কর্তৃত্ব খাটো হতে শুরু করল, যার চূড়ান্ত পরিণতি হল টাইটলারের সময়কালে। টাইটলার নিজেও এ সমস্যা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাঁর কথায় – “this renders the tract so irregular and unsystematic so to be very unfit for the Institution and lastly the Anatomy in many places too minute for them to comprehend with our present opportunities. I could not however render it more general without the risk of its being condemned as incomplete or incorrect.” (Letter of John Tytler to James Hutchinson, dated May 21, 1832 (Proceedings of the Medical Board, National Archives, New Delhi). Bengal Establishment-এর একজন উচ্চপদস্থ সার্জন ছিলেন হাচিনসন। নজরটান আমার)
এর পরিণতিতে, যে অ্যানাটমি শিক্ষার ওপরে আধুনিক মেডিসিনের নতুন জ্ঞানের ভিত্তি গড়ে তোলা হয়েছে সেটাই লঘু হতে শুরু করেছিল। এরকম সময়েই এদেশে উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক গভর্নর জেনারেল হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। মেকলে, ট্রেভেলিয়ানের মতো পাশ্চাত্যবাদীদের হাতে প্রায় নিরঙ্কুশ ক্ষমতা অর্পিত হয়। একইসাথে অ্যাংলিসিস্ট-ওরিয়েন্টালিস্ট বিতর্কের সমাধান ক্ষেত্র (resolution point) হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটবে মেডিক্যাল কলেজের। উচ্চতর শিক্ষার একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠবে ইংরেজি।
১৮৩৩ সালে বেন্টিঙ্ক এদেশে মেডিক্যাল শিক্ষার হাল-হকিকত বোঝার জন্য এবং নতুন মেডিক্যাল শিক্ষার খুঁটিনাটি বুঝতে একটি কমিটি তৈরি করলেন – “for the purpose of enquiring into the condition of the then existing medical institutions and of revising the whole question of Indian medical education. The members of this Committee were: Surgeon John Grant, Apothecary (Medical Store-keeper) of the Company; J. C. C. Sutherland Esqr., Secretary to the Education Committee; C. C. Trevelyan Esqr., Deputy Secretary to the Political Department; Assistant Surgeon Spens of the Bodyguard; Assistant Surgeon M. J. Bramley, Assistant Marine Surgeon; and Babu Ram Comul Sen.” (Centenary of the Calcutta Medical College, 1935, p. 7) ২০ অক্টোবর, ১৮৩৪-এ এই কমিটি একটি দীর্ঘ রিপোর্ট জমা দেয়। খুব সংক্ষিপ্ত আকারে বললে কমিটির রেকমেন্ডেশন ছিল এরকম – “(1) The absence of a proper qualifying standard of admission; (2) scantiness of means of tuition; (3) the entire omission of practical human anatomy in the course of instruction; (4) want of regularity in the time of admitting students; (5) the shortness of the period of study; (6) the want of means and
appliances for the convenience of private study; (7) the desultory character of the students’ attendance on the practical means of instruction; (8) the inconclusive nature of the power and authority wherewith the Superintendent is vested; (9) the mode of conducting the final examination.” (পূর্বোক্ত, পৃঃ ৮)
একইসাথে অবলুপ্তি ঘটলো NMI, সংস্কৃত কলেজ এবং মাদ্রাসার মেডিক্যাল ক্লাসের। ইতিহাস থেকে আমরা দেখলাম NMI-এর সংস্কারের কথা টাইটলার বিভিন্ন সময়ে বলেছেন। কিন্তু শেষ অবধি যূপকাষ্ঠে বলি হলেন তিনি। কিন্তু টাইটলারকে যে চিঠি কমিটির তরফ থেকে দেওয়া হয়েছিল তাতে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল – “the cause of the native Medical Institution having disappointed the expectations of the Government was in no way attributable to any deficiency of acquirements, or talents, or general qualification on his part”। (“The late John Tylter”, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৪। নজরটান মূল লেখায়।)
NMI-এর অবলুপ্তি ঘটার পরে ১৮৩৫-এর মে মাসে এই স্কুলে পাঠরত ভি্নন প্রদেশের ছাত্ররা নিজেদের পয়সায় নৌকো ভাড়া করে, ওখানে পড়ানো বইগুলো বগলদাবা করে চলে গেল। এরা মিশে গেল স্থানীয় জনতার মাঝে নতুন মেডিক্যাল জ্ঞান নিয়ে। সরকার এদের দিকে আর ফিরেও তাকায়নি। (আলাভি, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৯৮-৯৯) কিন্তু ১ জানুয়ারি, ১৮৩৯ সালের সরকারি হিসেব থেকে জানা যায় বাংলা প্রেসিডেন্সিতে মোট ৩০৫ জন “নেটিভ ডক্টর” কর্মরত ছিল। এদের মধ্যে ১২৪ জন পাস করেছিল NMI থেকে। (Centenary of the Calcutta Medical College, পৃঃ ৯)
ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে উপনিবেশিক স্বার্থের কাজে পূর্ণত ব্যবহার করা হয়েছে NMI-কে। আবার প্রয়োজন মিটে গেলে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে।
NMI-এর উপজাত হিসেবে উপনিবেশিক ভারতের মানুষ নতুন ধরণের চিকিৎসা ও শিক্ষাপদ্ধতি পেয়েছে। এর ফলভোগ করেছে। তবে ঐতিহাসিকভাবে সবচেয়ে বড় সত্যি হল এশিয়ার প্রথম আধুনিক মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষাক্রমকে গ্রহণ করার উপযুক্ত সামাজিক মানসিকতা এবং ছাত্রের জোগানের পথ সুগম করেছে NMI।
শিল্পজগতের মতো মেডিক্যাল জ্ঞান উৎপাদনেরও ভিন্ন প্রক্রিয়া ভারতে চালু হয়েছিল (যেমনটা ইউরোপেও হয়েছিল) – তবে কলকারখানায় নয়, শিক্ষার প্রাঙ্গনে, medical cosmology-তে। আমরা সে দীর্ঘ ইতিহাস এবার জানব ধাপে ধাপে।
Soumya
???
সমৃদ্ধ হচ্ছি ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্যের মেডিকাল কলেজের বিশ্লেষণমূলক ইতিহাস চর্চায়। NMI আপাততঃ বন্ধ হলেও চেতনার আগুন তো জ্বলে উঠল। সেই আগুন থেকেই নিশ্চয়ই শুরু হয়েছিল মেডিকাল কলেজের পরের ধাপ। আগামীতে সেটাই তো আমরা জানব।
ধন্যবাদ লেখককে।
excellent
লেখাটা চিকিৎসা ক্ষেত্রে র একটা মুল্যবান দলিল হয়ে উঠছে। অসাধারণ ।
সমৃদ্ধ হলাম।অনেক অজানা জিনিস জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আমাদেরকে এতো সুন্দর জিনিস জানার সুযোগ করে দেবার জন্য।
দারুন লাগলো লেখাটা পড়ে
সমৃদ্ধ হলাম
খুব ভালো লেখা।