অ্যালফ্রেড নোবেলের মতো একটা মানুষ যদি আমাদের দেশে জন্মাতো!
সেইরকম মানুষটা যদি এদেশে নোবেলের মতো পুরস্কারের প্রচলন করে যেতো!
এরকম ঘটেনি। কারণ, সেরকম কিছু ঘটলে, ভারতীয় নোবেলের বংশধরদের জন্য কিছু পুরস্কারের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত থাকতো।
(এরকম ঘটনা আছে, আমি জানি। ভালো কাজে সম্পত্তি দান করে সেখানে চিরদিনের জন্য নিজেদের ক্যাণ্ডিডেটের আসন পাকা করে রাখা।)
ভারতীয় কমিটিতে যারা সুযোগ পেতো, তারা বিশেষ সুবিধাভোগী শ্রেণী থেকে উঠে আসতো।তাদের মধ্যে আইওয়াশ সিট থাকতো কয়েক পিস, যারা নিজের আলোকে আলোকিত হলেও কমিটিতে মূক ও বধিরের ভূমিকা পালন করতো।
শিক্ষাজগৎ থেকে যাদের নিয়ে আসা হতো, তাদের সুষ্পষ্ট এবং প্রকাশ্য রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থাকতে হতো।
কমিটি নিয়োগের হায়েস্ট অফিস হতো পিয়েমো বা প্রেসিডেন্ট হাউস। সে কারণে তালিকা প্রকাশ নিয়ে একটা কেন্দ্র~রাজ্য বিবাদ থাকতো। শিক্ষায় এগিয়ে থাকা রাজ্যগুলোর শাসকদলগুলোর লোকসভায় জিতে আসার নজির এত কম হওয়ার কারণে এই বিবাদ সপ্তমে উঠতো।
প্রতিটি লোকসভা নির্বাচনের পরেই কমিটিতে সুচতুর ভাবে রদবদল হতো।
পুরস্কার প্রাপক নির্বাচন প্রায় সর্বদাই বিতর্কিত বা পক্ষপাতদুষ্ট হতো। দুএকটা নিশ্চয়ই ঠিকঠাক হতো। প্রাপকের সঙ্গে গোপন আঁতাতের কাটমানি বন্দোবস্তে ফাইনাল খেলা হতো। সেখানে বুকি সিস্টেম বলবৎ থাকতো।
©BH
ভারতীয় নোবেলজয়ীর তালিকা প্রকাশ পাওয়া মাত্র কিছু লোক ফেস্টুন হাতে রাস্তায় প্রতিবাদে নেমে পড়তো, এপেক্স কোর্টে মামলা নথিভুক্ত হতো, কেস ঝুলে থাকলে প্রাইজটাও ঝুলে থাকতো, মিডিয়াতে সান্ধ্যকালীন বিচারসভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের মূল্যবান ভাষণ শোনা যেত। জনগণ বিভক্ত হয়ে যেতো, এমনকি সামাজিক, সাম্প্রদায়িক অ্যাঙ্গেলে অবিচারের কথা উঠতো।
আর, সবশেষে, অবশ্যই সেখানে SC/ST/OBC/NRI কোটা থাকতো।
তাই ভারতে সেরকম কেউ জন্মায়নি, অদূর ভবিষ্যতে কেউ জন্মাবে বলেও মাঝরাতের টিভি চ্যানেলগুলোতে কোনো মাইকে লালকে বলতে শুনিনি।
অর্থাৎ সেরকম কেউ জন্মানোর কোন আশু সম্ভাবনা নেই।
আফশোস্।
আর কোনো পয়েন্ট ছেড়ে গেলাম কি?