নিজে ছাপোষা মানুষ হলেও আমার সৌভাগ্য অথবা দুর্ভাগ্য যাই বলুন না কেন, এ জীবনে বহু প্রতিবাদী চরিত্রের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়েছে। তাদের কেউ জীবিত কেউ মৃত, কেউ বয়স্ক, কেউ আবার কম বয়েসী। কেউ ছেলে তো কেউ মেয়ে। নানান অমিল। কেবল মিল দেখেছি একটা জায়গায়। এরা কেউ বিশেষ সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন কাটান না, কমবেশি দুঃখ কষ্ট সংগ্রামের জীবন কাটান। প্রতিবাদ করতে হলে তার কিছু মূল্য তো দিতেই হয়। এদের কাউকে গাঁজা ফুঁকে চার অক্ষর শব্দ ব্যবহার করে কোনোদিন প্রতিবাদ করতে দেখিনি। তাতে তাদের প্রতিবাদের ধার ভার কোনোটাই কমে গেছে এমনটা নয়।
শ্রী অনির্বাণ রায় একটি প্রতিবাদী চরিত্র তৈরি করেছেন। তাঁর অল্টার ইগো বলা যেতে পারে। রোদ্দূর রায় তার নাম। চরিত্রটি নেশা করে, ভুল ভাল শব্দ মিশিয়ে সংলাপ বলে যে সংলাপের রচয়িতা অনির্বাণ বাবু নিজেই। সেই সব ইউ টিউবে আপলোড হয়। অনেক অনুরাগী দেখেন। বুদ্ধিমান সৃষ্টিশীল অনির্বাণ বাবুও তাঁর প্রতিবাদ বিক্রি করে বেশ দু পয়সা কমিয়েছেন। মোটের ওপর দিব্যি দুধে ভাতে ছিলেন তাঁর অনুপ্রেরণার উৎস নবারুণের মতোই। আমার দেখা বাস্তবের চরিত্রগুলির সাথে অনির্বাণবাবুর এটাই অমিল। পুলিশ এবারে তাঁকে ধরেছে। আরো অনেক প্রতিবাদী চরিত্রও এই মুহূর্তে জেলে আছেন অনেক দিন হয়ে গেল যাঁরা জামিন পান নি।
অনির্বাণ বাবু আশা করি জামিন পাবেন তাড়াতাড়ি, বেশি কষ্ট পেতে হবে না। মিলিয়ে নেবেন আমার কথা। অমিলটা এখানেও। ওঁর এই গ্রেফতারি নিয়ে ইতিমধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। যাঁর যা মনে হয় প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। আমার শুধু এটুকুই জানানোর যে দুধে ভাতে থাকা কোনো প্রতিবাদী চরিত্রকে আমি বিশ্বাস করতে অপারগ। ওঁকে ভিকটিম বলে মেনে নিতে পারি কিন্তু হিরো বলে মেনে নেয়ার প্রশ্নই আসে না। হিরো ওয়ার্শিপ করার লোক কম পরেনি।
অমলকান্তি রোদ্দূর হতে চেয়েছিল কিন্তু রোদ্দূর রায় হতে চায় নি।