একটা নতুন ওয়েব ম্যাগ তৈরী হচ্ছে, স্বাস্থ্য বিষয়ে। সেখানে মনের স্বাস্থ্যের হাল হদিস খোঁজার অল্পসল্প চেষ্টা হবে, এই বিভাগে। ভালো উদ্যোগ, ভালো ব্যাপার। আসলে কিন্তু “মন্দের ভালো। ভালোর ভালো বলে তো আসলে কিছু হয়না”। (শিব্রাম চক্কোত্তি / ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা)
আমাদের একটা চলতি নাম আছে, ‘পাগলের ডাক্তার’। আমজনতার কাছে তো বটেই, বহু চিকিৎসক বন্ধুর কাছেও। আর ‘শা.., পাগলের ডাক্তার, পাগল’, এমন কথাও যে শুনতে হয়নি বা হয়না, তাও নয়। কিন্তু আমাদের অভিধানে এই ‘পাগল’ কথাটাই একটা নিষিদ্ধ শব্দ। যতক্ষণ না একজন মানুষকে তার সমস্ত রকম অস্বাভাবিক আচরণ স্বত্বেও একজন মানুষের স্বীকৃতি না দেওয়া যায়, ততক্ষণ চিকিৎসার প্রাথমিক ধাপেই হোঁচট খেতে হয়। আমি হয়তো এটুকু জানি, যে কি ওষুধ প্রয়োগ করলে মানুষটির অস্বাভাবিক আচরণের খানিক নিবৃত্তি ঘটবে, কিন্তু তার আগে তাকে একজন অসুস্থ ‘মানুষ’ হিসেবে চিহ্নিত করাটা বেশী জরুরী, “পাগল” হিসেবে নয়।
যখন এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা শুরু করি, একটা কথা আমার শিক্ষাগুরু প্রথমেই বলেছিলো । এই বিষয়টা নানাদিকে ছড়িয়ে আছে, ‘Abstract’ ভীষণ, একে একটা সীমার মধ্যে বাঁধাটাই চিকিৎসক হিসেবে আমাদের কাজ, আমাদের চ্যালেঞ্জ। তাই বলে অসীমের খোঁজ নিতে হবে না তা নয়, বরং বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা মনোজগতের বিষম আচরণের গতিপ্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করতে হবে, সেগুলোর ছন্দেই ‘সীমা’ কে চিহ্নিত করতে হবে। যেন কবিগুরুর বাণী, “সীমার মাঝে অসীম তুমি, বাজাও আপন সুর”…
যাক, অনেক আদ্যোপান্ত, ইতিবৃত্তান্তের চরকা কাটা হলো। আসলে কাজটা হলো মনকে নিয়ে। তা, মনটা আসলে কি? শরীরের কোথায় তার অবস্থান? সত্যি কি সে আছে, নাকি বায়বীয়? এসব নানা প্রশ্নের উত্তরে নানা “হু” “হা” জাতীয় উত্তর হয়। কিন্তু সেসব উত্তরে কাজ নেই। ‘মন চল নিজ নিকেতনে’!
নিকেতন হল মস্তিষ্ক, তার মধ্যেকার রাসায়নিক গতি প্রকৃতি, চিন্তা বা আবেগের উদয়, স্মৃতির কলাকৌশল, পারিপার্শ্বিকের অনুরণন, ভ্রান্তি বা বাস্তব, কত্ত কি!! এইসবের মধ্যে মনের ভাষ্য, কখনো কবিতায়, কখনো গদ্যে, কখনো সুরে, কখনো বা বেসুরে। কখনো বা সমাজের আস্ফালন, কখনো বা তার নিষ্ক্রিয়তা। এইসব নিয়েই মনের ছন্দ। বিজ্ঞানীরা অতিসচল যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অস্তিত্বের গতিপথ খোঁজেন, সে প্রক্রিয়া সত্য বটে, তবে মহাসত্য নয়!!
না না, অত জটিল গল্প দিয়ে লাভ নেই, বরং গরুতে ফিরে আসি, তা সহজপাচ্য, সহজবোধ্যও বটে।
যেমন, আমার কাছে একজন অনেকদিন আসেন, রোগী বলবো না, তাতে অসম্মান হয়। তিনি বেশ কিছুদিন পরে এসে যা জানালেন, তা হলো… ভালোই তো ছিলাম, ওষুধও খাচ্ছি, কিন্তু কিছুদিন আগে বড় জার্সি গরুটা মরে গেলো। আহা কি ভালো গরু ছিলো, দিনে দশ লিটার দুধ দিতো, তারপর থেকেই…। ওনার স্বামী ঘাড় নাড়লেন, মানে এটি ঘোর বাস্তব। কিন্তু প্রতিক্রিয়ায় এতটা মুহ্যমান হওয়া তত বাস্তব নয়। তাই, আবার দ্রুত আমার স্মরণ!!
যাক সেকথা, আরেকজন বাবাকে নিয়ে এসে কথাপ্রসঙ্গে বললেন, বাড়িতে যখন গরু ছিলো বাবাই দেখতেন। বাবা অশক্ত হয়ে পরায় সেসব বাদ। আর এখন তো… এই বাবার এখন স্মৃতিভ্রংশ হয়েছে, কিছুই মনে থাকে না, এমনকী গরু পালনের কথাও কষ্ট করে….
নানা, মনের গরুকে গাছে চড়ানো আমার উদ্দেশ্য নয়। যদি ভুলবশত চড়ে গিয়েও থাকে তবে নামাতে হবে….
সেসব অনেক কথা, আরো বেশ কিছু কথা। সেগুলো নাহয় পরের দিন, পরের পর্যায় বা কিস্তিতে!!!…
সফল হক এই প্রয়াস।
ধন্যবাদ।
গরু সহজপাচ্য ?
না।
“গরু নিয়ে গল্প” সহজপাচ্য।
শুভ কামনা রইলো।
অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা রইলো। সাথে থাকবো।
অনেক ধন্যবাদ।
বাহ্ দারুন উদ্যোগ.. এমন উদ্যোগ আরো আগে প্রয়োজন ছিলো… আপনার লেখায় ও অনেক মানুষ সমৃদ্ধ হবে এবং মানসিক অসুস্থতায় যে চিকিৎসা এবং কাউন্সেলিং প্রয়োজন, আমার ও যে মন ভালো থাকার অধিকার আছে তা বুঝতে পারবে…
অনেক ধন্যবাদ। সঙ্গে থাকুন।
খুব ভালো উদ্যোগ, আছি, থাকবো। অজ্ঞানতা অসীম, কমাতে চাই।
অনেক ধন্যবাদ।