আজকাল তো সবই ভার্চুয়াল।
ভেবে অবাক লাগে, সোশাল মিডিয়ায় আমার প্রায় হাজার চার-পাঁচেক বন্ধু। আরও হাজার দুয়েক বন্ধুত্বের অনুরোধ পেন্ডিং – সে তালিকা খুলে দেখতেও ভয় করে, পাঁচ হাজারে বন্ধুত্বের উর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছেন জুকুবাবু, আর কজনকেই বা গ্রহণ করতে পারব!
আমার মতো চুনোপুঁটিরই এই অবস্থা, তো বিখ্যাত লোকজনের কী পরিস্থিতি, সে কথা ভাবলেই গা-ছমছম করে।
কিন্তু সত্যিকারের বন্ধু – দরকারে-অদরকারে যাদের পাশে পাওয়া যায়, সেরকম বন্ধু – ক’জন?
একদম অকপটে বলতে বললে স্বীকার করতেই হয় – আমি মানুষটা খানিক আত্মকেন্দ্রিক (তবে খুব স্বার্থপর নই কিন্তু)। বইকে আশ্রয় করে বেড়ে উঠেছে যারা এবং বইময় যাপনকেই বেছে নিয়েছে যারা – সম্ভবত তারা সকলেই অল্পবিস্তর তা-ই। তো আড্ডার ব্যাপারে প্রবল আগ্রহ থাকলেও – এবং সেই সুবাদে আড্ডাসঙ্গী প্রচুর থাকলেও – যাদের বন্ধু বলা যায়, সেরকমটা আমার নিতান্তই কম। (এবং আমাকেও, যদ্দূর বুঝি, খুব কম জনই বন্ধু বলে ভাবেন।)
এদিকে বিভিন্ন আলটপকা মন্তব্যের জন্য, কর্মক্ষেত্রেই বলুন বা বাকি জীবনে, ক্ষমতায় থাকা লোকজন আমাকে খুব একটা পছন্দের চোখে দেখেন না৷ সে বাবদে টুকটাক বিপদে পড়েছি – পড়ছি – ভবিষ্যতে বৃহত্তর বিপদে পড়তে পারি, এমন সতর্কতামূলক সদুপদেশও (বা হুমকি) কানে আসে। আর সেসব সাবধানবাণীর সত্যতা বিষয়ে আমার বিশেষ সন্দেহ নেই।
তো এই পরিস্থিতিতে – খুবই স্বার্থপর ও হিসেবী (যা আমার নিজের কাছেই রীতিমতো অপ্রত্যাশিত) পদক্ষেপ হিসেবে – আমি ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম, ওরফে ডব্লিউবিডিএফ, তাঁদের সঙ্গে থাকি। কেননা, আমি জানি, আমার যেকোনও সমস্যায় (পেশাগত তো বটেই, এমনকি ব্যক্তিগত সমস্যায়ও) তাঁরা আমার সঙ্গে থাকবেন। না, এটা কোনও অলীক আশা নয় – এ একেবারেই যাকে বলে ‘অনুভব করেছি তাই বলছি’ কেস – তাঁরা ইতোপূর্বে আমার সমস্যায় পাশে থেকেছেন, অনেকসময় না ডাকতেই পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, এতটুকু প্রচারের আশা/লোভ ছাড়াই পাশে থেকেছেন।
এমতাবস্থায়, ডব্লিউবিডিএফ আমার প্রিয় সংগঠন, নাকি আমার বন্ধু, সে নিয়েই সংশয়ে আছি। সেই সংশয় নিয়েই যাব কনক্লেভে। পঁচিশ তারিখ, রবিবার। বিকেলবেলায়।মৌলালি যুব কেন্দ্রে।
আসবেন না?