আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, কলকাতা মৌলালির রাজ্য যুবকেন্দ্রে একটি কনভেনশন হতে চলেছে। চিকিৎসক, চিকিৎসা-ছাত্র, সকলস্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে আয়োজ্য এই সভায় বর্তমানে পশ্চিম বঙ্গে চিকিৎসা-শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-পরিষেবার হাল-হকিকৎ ও বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকদের ভূমিকা সংক্রান্ত দু’চারটি বিষয় নিয়ে মতগঠন করা হবে। ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী কনভেনশনগুলিতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিষয়গুলি উঠে আসবে।
চিকিৎসা-শিক্ষা ও ন্যাশানাল মেডিকেল কমিশন
নির্বাচিত মেডিকেল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)-কে প্রতিস্থাপিত করে কেন্দ্রীয় সরকার মনোনীত সদস্যদের নিয়ে সাজানো ন্যাশানাল মেডিকেল কমিশন গঠন করে। এই কমিশন চিকিৎসা-শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-পরিষেবায় চিকিৎসকদের কর্তব্য নির্ধারণ ও আচরণবিধির নিয়ামক ও নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নেয়। ২০০৪ সালে কেন্দ্রে গণমুখী যৌথ অবস্থানের ভিত্তিতে কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম (সিএমপি) স্থিরীকৃত হয়েছিল। ন্যাশানাল হেল্থ মিশন ( রুরাল ও আর্বান) পরিচালনা এবং দেশের সবকটি জেলায় একটি করে সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনা ছিল দুটি উল্লেখযোগ্য সিএমপি। নির্বাচিত এমসিআই বিধিসম্মত কঠোরতায় নতুন মেডিকেল কলেজ স্থাপনা , নতুন ও পুরনো মেডিকেল কলেজগুলিতে পঠনপাঠন ও পরীক্ষা ব্যবস্থার পর্যালোচনা প্রভৃতি কাজ পরিচালনা করে থাকত। কোন কোন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে কখনো কখনো বেনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠত। তবে সেগুলো সাধারণ অভ্যাস ছিল না। এই বেনিয়মের অভিযোগে এমসিআই-এর বিলোপ ঘটানো হয়। আনা হয় মনোনীত সংস্থা এনএমসি।
ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এনএমসি যে গেজেটেড নোটিফিকেশন প্রকাশ করছে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোন অসরকারি সভায় বিবৃতি দিয়ে তাকে বাতিল করে দিচ্ছেন। ফলে, এনএমসি তার স্বশাসিত বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলেছে। রাজনীতিতে বোড়ের ভূমিকা পালন করছে।
ব্যাঙের ছাতার মত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ খোলা হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালগুলিকে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসা করবেন সরকারি চিকিৎসক; আর সেই রোগীদের ওপর ছাত্রদের পড়াবেন অসরকারি অধ্যাপক। এমন ‘হাঁসজারু’ ব্যবস্থাও চালু হয়েছে।
থিওরি পেপারে পাশের নম্বর ৫০% থেকে কমিয়ে ৪০% করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসা-শিক্ষার মানের অবনমন ঘটবে।
এমসিআই-এর সরেজমিন নজরদারির বদলে এখন চালু হয়েছে এনএমসির দূরনিয়ন্ত্রিত নজরদারি। কলেজ কর্তৃপক্ষকেই নিদর্শ ভরে পাঠাতে হবে। মানক-সম্মত না হলে সংশোধনের সময় দেওয়া হবে। দ্বিতীয়বারেও মানক অনুযায়ী না হলে জরিমানা দিতে হবে। পুরো পর্যায়গুলি এক শিক্ষাবর্ষেই সম্পূর্ণ করতে হবে। অর্থাৎ, জরিমানা দিলেই মানকের অপূর্ণতা বা খর্বতা সত্ত্বেও কলেজগুলি পার পেয়ে যাবে। ব্যাহত হবে চিকিৎসা-শিক্ষার মান।
ক্রমে ক্রমে রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব কমানো হচ্ছে; হয়ত অচিরেই গুরুত্বহীন করে দেওয়া হবে। পাঠ্য বিষয়গুলি এক ধাঁচে তৈরি করা হয়েছে। এত বড় একটি দেশে স্থানীয় ভৌগোলিক বিভিন্নতা, জনগণের আচার-আচরণ-বিশ্বাসের বহুরূপতা; এবং সে’কারণে রোগব্যাধির বৈচিত্র্য যথোচিত গুরুত্ব পাচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত হবে চিকিৎসা-প্রাপক জনমানুষ। অন্ধভাবে অনুকরণ করা হচ্ছে মার্কিন দেশের সাধারণ চিকিৎসা-শিক্ষা ব্যবস্থা। সেটির গ্রহণযোগ্যতা পৃথিবী জুড়েই ভাল নয়। তাদের অচিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মিনির্ভর প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল বিশেষায়িত চিকিৎসা ভ্যবস্থার প্রতি সেদেশের মানুষের মধ্যে অসন্তোষ থয়েছে বরং, চিকিৎসা-শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্যে অনেক বেশি মান্য ব্যবস্থা ব্রিটেনের। ভারতে পৌনে দু’শ বছর ধরে সেটিই অনুসৃত হত। বিশ্বখ্যাত ভারতীয় চিকিৎসককুল এই ব্যবস্থারই ফলশ্রুতি। অন্ধ মার্কিন আনুগত্যের কারণে সেটির অবলোপ ঘটানো হয়েছে।
উপর্যুপরি বৈজ্ঞানিক যুক্তি বিবর্জিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, গ্রহণের পূর্বে অনাকাঙ্ক্ষিত দোদুল্যমানতা ও প্রায়োগিক প্রশ্নে কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা,এবং অচিরেই অনির্দিষ্টকালের জন্য ঠাণ্ডা ঘরে প্রেরণ এনএমসি-কে বারেবারে হাস্যাস্পদ করে তুলছে।
চিকিৎসা-শিক্ষা ও ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেল্থ সায়েন্সেস
উপাচার্য-নিয়োগে বেনিয়ম ও উপাচার্যের অপসারণে পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসা-শিক্ষার ক্ষেত্রে নৈরাজ্যের সূচনা হয়েছে। বোর্ড অফ স্টাডিজের মিটিংগুলি যথাযথভাবে না হওয়ায় পঠনপাঠন ও পরীক্ষা ব্যাহত হয়ে চলছে।
সিবিএমই কারিকুলাম অনুযায়ী পাঠনের পরিকাঠামো ও পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক-চিকিৎসক কলেজগুলিতে — বিশেষত দূরবর্তী কলেজগুলিতে — রয়েছে কিনা তার নজরদারিতে দীর্ঘকালীন ঘাটতি হেল্থ ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে রয়ে গেছে।
স্বজনপোষণ ও রাজনৈতিক অভিপ্রায় তাদের কাজের গুণগত অবনমন ঘটিয়ে চলেছে। পরীক্ষা ব্যবস্থাও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের কারণে কলুষিত হচ্ছে। সাধারণ ও শাসকবিরোধী ছাত্ররা অকারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষার ও মূল্যায়নের অবনতি ঘটছে। বৃহদর্থে সাধারণ মানুষ আগামীদিনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শিক্ষাবর্ষের একেবারে শেষ পর্বে লগবুক প্রকাশ করা হচ্ছে। ফলে, লগবুক একটি আনুষ্ঠানিক আচরণে পর্যবসিত হচ্ছে। স্বল্প ব্যয়ের লগবুক বহুমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
পরীক্ষার ফি, পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনের ডিজার্টেশন ফি, পরীক্ষার খাতা রিভিউয়ের চার্জ অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর্থিক অসুবিধায় পড়ছে স্বল্পেয়ে পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা।
‘ফেল না করলে খাতা রিভিউ করা যাবে না’ নির্দেশ জারি করে ইউনিভার্সিটি নিজের পোড়ামুখ আড়ালের ন্যক্কারজনক চেষ্টা করলেও শাসকবিরোধী ছাত্রদের বঞ্চনার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে গেছে।
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ফলে একজন আরএমও-কে দেখা গেছে তদানীন্তন উপাচার্যের সঙ্গে পরীক্ষার হলে ঘুরতে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে ও পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে।
স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের Hack- O – Med কর্মসূচিতে নগ্ন স্বজন পোষণ, পরীক্ষার মূল্যায়নে দুর্নীতি, অজস্র অনার্স, সত্তরোর্ধ নম্বর পুনর্মূল্যায়নে ত্রিশে নেমে যাওয়া, এক অংশের দলদাস পরীক্ষার্থীদের কলেজ নির্বিশেষে উত্তরপত্রে দৃষ্টিকটু অভিন্নতা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের লজ্জাজনক নীরবতা ও অপ্রত্যক্ষ প্রশ্রয়দান রাজ্যের বদনাম ঘটিয়েছে।
সামগ্রিকভাবে ইউনিভার্সিটির অপদার্থতার ফলে রাজ্যে চিকিৎসা-শিক্ষার অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে চলেছে।
স্বাস্থ্য-পরিষেবা ও রাজ্য স্বাস্থ্য প্রশাসন
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ঘাটতি রাজ্যে স্বাস্থ্য-পরিষেবাকে খাদের কিনারায় এনে দাঁড় করিয়েছে। ওষুধ ও পরিকাঠামোর অপ্রতুলতায় রোগীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। বলির পাঁঠা করা হচ্ছে স্বাস্থ্যপরিষেবায় যুক্ত সম্মুখবর্তী কর্মীদের। ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলা হচ্ছে। কর্মী ও ব্যবস্থাবিহীন বড় বড় ইমারতকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নামে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে। তাদের প্রত্যাশা ও হতাশা দুইই বাড়ছে। জনরোষের মুখে পড়ছে চিকিৎসক ও সেবিকারা।
রাজনৈতিক অভিসন্ধি-পরায়ণ বদলি ব্যবস্থায় কেবল চিকিৎসকদের মধ্যে কাজের প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হচ্ছে না, ঘটছে আরও গুরুতর ঘটনা। অত্যন্ত অসুস্থ চিকিৎসক বারেবারে আবেদন করে বদলি হতে না পেরে মারা যাচ্ছেন, নেফ্রোলজির ডিএম পড়ুয়াদের পঠনপাঠন উপেক্ষিত হচ্ছে, অঙ্গপ্রতিস্থাপনের কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে; আবার অন্যদিকে বহু অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির বদলির আদেশ একদিনের মধ্যে বাতিল হচ্ছে। মরদেহের অনৈতিক ও অবৈধ ব্যবহারের বিরোধিতা করায় শাস্তিমূলক বদলি করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য প্রশাসন শাসক দলের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ল্যাবরেটরি হয়ে উঠেছে। এতে সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের অধিকার ও সুবিধা।
স্বাস্থ্যব্যবস্থায় বদলি ব্যাপারটা, বর্তমান সরকারের কর্মকুশলতার নিরিখেও, আশ্চর্য এক অরাজকতায় পৌঁছেছে। এক শ্রেণির চিকিৎসক দশকের অধিক কাল কলকাতার হাসপাতাল আলো করে রেখেছেন – শোনা যায়, রাজনৈতিক সংযোগ ও যথাস্থানে উৎকোচ প্রদানের কারণে – আবার একই সার্ভিসের কিছু ডাক্তার দশকের অধিক কাল প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাটাচ্ছেন, বদলি হলেও একটি প্রান্তিক হাসপাতাল থেকে আরেকটি প্রান্তিক হাসপাতালেই বদলি হচ্ছেন। আমরা এই দুই ধরনের চিকিৎসকদের একটি তালিকা প্রস্তুত করার কাজে হাত দিয়েছি, শিগগিরই সে তালিকা প্রকাশ্যে আসবে। তদুপরি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার উদ্দেশে চিকিৎসক-অধ্যাপকদের বদলি করে রাতারাতি রিলিজ করা হচ্ছে, আরেকদিকে সরকার-ঘনিষ্ঠ একাধিক চিকিৎসক-অধ্যাপকের বদলির অর্ডার দুদিনের মধ্যে বাতিলও হয়ে যাচ্ছে। উভয়ক্ষেত্রেই, পরবর্তী প্রজন্মের চিকিৎসক তৈরির দায়িত্ব যাঁদের হাতে, তাঁদের নিয়ে এইপ্রকার ছেলেখেলা শিক্ষকের সম্মানের পরিপন্থী। রাজ্যের চিকিৎসাশিক্ষাব্যবস্থায় ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কে শ্রদ্ধা বস্তুটি গত এক দশকে অপসৃয়মান – অধ্যাপকদের নিয়ে এই প্রকাশ্য ছেলেখেলা শ্রদ্ধা-সমীহ বিষয়টিকে শূন্যতায় পর্যবসিত করবে।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের “ছায়া তহবিলের কারণে’ গ্রামীণ ও জেলা শহরের ছোট ছোট স্বাস্থ্য পরিষেবা বন্ধ হওয়ার মুখে। অতিশীঘ্রই তার কুপ্রভাব প্রকট হয়ে উঠবে।
রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে প্যারাসিটামল, নর্ম্যাল স্যালাইনের মতো ওষুধের সরবরাহ প্রায় নেই বললেই চলে। সরবরাহকৃত ওষুধের গুণমান নিয়ে বহু অভিযোগ শোনা যায়। ডেঙ্গু পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। সরকার তথ্য চাপতে ব্যস্ত। অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সরকারের ব্যর্থতা আড়ালের অপচেষ্টা মাত্র।
রাজ্য স্বাস্থ্য প্রশাসনের নগ্ন রাজনৈতিক আনুগত্য, বিক্রীত শিরদাঁড়া– এগুলোর সাথে হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ও আরজিকর মেডিকেল কলেজের বেনজির দুর্নীতির অভিযোগে হিরণ্ময় নীরবতা, অভূতপূর্ব স্বজনপোষণ, দুর্নীতিতে সরাসরি মদতদান জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ও/বা চিকিৎসা-শিক্ষায় যুক্ত সকল অংশের চিকিৎসকদের নিরন্তর হতাশ করে চলেছে।
পরিষেবার ক্ষেত্রে
৹ প্যাথোলজি, রেডিওলজি ইত্যাদি প্রশ্নে Patient Turn Around Time– ক্রমবর্ধমান ও বাইরে করা ( Out of pocket expenses)।
৹ স্টেন্ট/ প্রস্থেসিস/ পেসমেকার –বাড়ন্ত। অগত্যা অসরকারি হাসপাতাল থেকে করা।
৹ ভেন্ডরদের Outstanding Bill — কটা দিন আগেও আকাশছোঁয়া। ফলত প্রয়োজনীয় ওষুধের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে ঘাটতি, অনেক দামী কিছু ওষুধ এপেক্স টায়ারে থাকলেও প্রান্তবাসী প্রাথমিক স্তরে মাঝে মাঝেই সাধারণ ওষুধ কিনতে বাধ্য হতে হচ্ছে । ফেয়ার প্রাইস মেডিসিন স্টোরে বিক্রি বাট্টা বেড়েই চলেছে। কারণ সহজবোধ্য। স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে সহযোগী কর্মীদের সংখ্যা ভয়ঙ্কর ভাবে অপ্রতুল। ফলে সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য-পরিষেবার সর্বনাশ।
একের পর এক সরকারি মেডিকেল কলেজ খুলছে, কিন্তু অধ্যাপক-চিকিৎসক নিয়োগ বন্ধ। শোনা যায়, গতবারের নিয়োগের সময় আরএমও/এসআরের চাকরির দর উঠেছিল দশ-বারো লাখ। চিকিৎসকদের টাকা দিয়ে চাকরি কিনছেন, এ প্রায় অকল্পনীয় ঘটনা, যদিও সরকারের দাবি, তাঁরা নাকি ডাক্তার পান না। প্রচুর তরুণ চিকিৎসক স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে অধ্যাপক-চিকিৎসক হওয়ার প্রত্যাশায় অপেক্ষা করতে করতে ভিনরাজ্যে বা ভিনদেশে পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রের পরিচালকদের হাতে প্রচুর স্পেশালিস্টের জোগান বাড়ছে – কিন্তু সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থা উত্তরোত্তর আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে।
এই বিষয়গুলি নিয়ে আলাপচারিতায় গড়ে তোলা যাক আগামী আন্দোলনের রূপরেখা।
সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ একান্ত কাম্য।