আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চলমান আন্দোলন থেকে জনসাধারণের নজর সরিয়ে দিতে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দুর্নীতির নানান অভিযোগ সামনে আনছে সংবাদমাধ্যম। এই দুর্নীতিগুলি অনেক দিন ধরে ঘটে চললেও যথাযোগ্য গুরুত্ব পায়নি আগে। ঘুরিয়ে ঈঙ্গিত করা হচ্ছে আরজি করে দুর্নীতির ঘুঘুর বাসা ভাঙ্গতে যাওয়াতেই নাকি প্রিন্সিপালের অপসারণের দাবী উঠেছে।
২২শে অক্টোবর ২০২১এ মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা এক পত্রে দুর্নীতিগুলির বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করল জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
এই পত্রে বলা হয়েছে– ‘আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে সাম্প্রতিককালে স্বাস্থ্যবিভাগে তথ্যপ্রমাণসহ একের পর এক বড় অঙ্কের আর্থিক কেলেঙ্কারীর অভিযোগ উঠেছে সংবাদমাধ্যমে। অতিমারির শুরুর দিকে পিপিই ক্রয়কে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্যভবনের কেলেঙ্কারী থেকে শুরু করে হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে মেডিক্যাল কলেজগুলোতে চিকিৎসক নিয়োগে নেতা-মন্ত্রীদের স্বজনপোষণের অভিযোগ, কোলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শাসকদলের এক বর্তমান বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রীর সরাসরি যোগসাজসে দশ লক্ষাধিক টাকার টসিলিজুম্যাব (কোভিডের ইঞ্জেকশন) কেলেঙ্কারী, উত্তরবঙ্গে অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (জনস্বাস্থ্য) পদে আসীন ডাঃ সুশান্ত রায়ের নীলবাতি-গাড়ি ও অন্যান্য দুর্নীতি, এসএসকেএম হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নতুন বাক্সে পুরনো যন্ত্রপাতি সরবরাহের কেলেঙ্কারী এবং আরজিকরের সাম্প্রতিকতম ছেষট্টি লক্ষ টাকার মেয়াদ-উত্তীর্ণ কার্ডিয়াক স্টেন্ট কেলেঙ্কারী – এগুলো আসলে সরকারী টাকা নয়ছয়ের হিমশৈলের চূড়ামাত্র। জনগণের করের টাকা এভাবে নয়ছয় করার পিছনে কারা রয়েছেন, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে জনসমক্ষে নিয়ে আসা ও আইন মোতাবেক কঠোরতম শাস্তিদানের জন্য একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিচারবিভাগীয় কমিটি গঠন করে দেবার ও তদন্তের সময়সীমা বেঁধে দেবার দাবী জানাচ্ছি আমরা।’
পাশাপাশি আরজি কর হাসপাতালে ছাত্র-আন্দোলনের জেরে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তার নিরসনে রাজ্য প্রশাসন যাতে দ্রুত ছাত্রদের দাবী মেনে সমাধান সূত্র বের করে সেই দাবীও জানানো হয়েছে।
ভবিষ্যতে এধরণের ঘটনা এড়াতে মনোনীত ছাত্র কাউন্সিলের পরিবর্তে অবিলম্বে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে দীর্ঘদিন থমকে থাকা ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘোষণা করুক, এই দাবিও আছে।
জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স (অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স, ওয়েস্ট বেঙ্গল; ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম; হেলথ সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন; ডক্টর্স ফর ডেমোক্রেসি; শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ) মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করেছে।