শিশু যতই বায়না করুক না কেন, কম্পিউটার, মোবাইল ও ট্যাব নিয়ে কাটানোর সময় বেঁধে দিন। সময় বেধে দিন টিভি দেখারও।
শিশুর ঘ্যানঘ্যানানি থেকে রেহাই পেতে বা তাকে ব্যস্ত রেখে নিজেদে হাতের কাজ শেষ করতে অনেকসময়ে মা বাবা নিজেরাই হাতে তুলে দিচ্ছে মোবাইল। কখনও চালিয়ে দিচ্ছে কম্পিউটার। আর ঘন্টার পর ঘণ্টা এসবে মশগুল থেকে শিশুর আখেরে ক্ষতিই হচ্ছে। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে মোবাইল, কম্পিউটার ইত্যাদি।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা আগেই বাচ্চাদের সুস্থ রাখার জন্য মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি ও ট্যাবলেট ব্যবহারের ওপর কিছু নিয়মকানুন বেঁধে দিয়েছে। কারণ, কখনো মোবাইল গেমস তো কখনো কম্পিউটার আবার কখনো টিভির সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটায় এ সময়ের বেশিরভাগ কচিকাঁচা। বাবা, মায়ের সামনেই এসব নিয়ে মেতে থাকলেও তাঁদের অজান্তেই বাচ্চাদের এই অভ্যাস থেকে দেখা দিচ্ছে নানা ধরনের সমস্যা। সমস্যা এতটাই গুরুতর যে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বাচ্চাদের এই স্ক্রিন টাইমের জন্য গাইডলাইন করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
অতিরিক্ত সময়ে নানা ধরনের স্ক্রিনের সামনে সময় কাটানোর জন্য শিশুর মানসিক বিকাশ ঠিকমতো হতে পারে না। শিশুর রেটিনার গঠন অল্প বয়সে সম্পূর্ণ হয়। কিন্তু একভাবে ছোট বা মাঝারি পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার জন্য টিভি বা মোবাইলের থেকে বিচ্ছূরিত ক্ষতিকর আলো রেটিনার বিকাশে বাধা দেয়। ফলে অল্প বয়সেই কখনো ২-৩ বছর থেকেই চোখে চশমা পরতে হয়। কাজেই বাচ্চাকে ঠিকমতো শারীরিক ও মানসিকভাবে গড়ে তোলার জন্য এসব যন্ত্র ব্যবহারে লাগাম পরাতেই হবে। এছাড়াও বেশ কিছু কাজ করলে শিশুকে এই বদভ্যাস থেকে দূরে রাখতে পারবেন।
খাওয়ার সময় টিভি বা মোবাইলে ইউটিউব না চালিয়ে নানারকম গল্প বলুন। মোবাইল বা ট্যাবলেট শিশুর থেকে দূরে রাখুন। সঙ্গে নিজেও যেন মোবাইলে গেমস খেলবেন না। অন্যথায় শিশুকে সামলাতে পারবেন না।
শিশুকে শান্ত করার জন্য মোবাইল গেমস চালু করে না দিয়ে রঙ তুলি দিন, ছবি দেওয়া বই দিন। আর পাশে বসে উৎসাহ দিন।
শিশুর বোঝার ক্ষমতা হলে মোবাইল, ট্যাবলেটের ক্ষতিকর দিকগুলোর কথা ভাল করে বুঝিয়ে বলুন।
আজকের দিনের শিশুরা বেশিরভাগই টেক স্যাভি। বড়দের থেকেও তারা অনেক বেশি এসব বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। ওদের এর খারাপ দিক সম্পর্কে বোঝানোর আগে বাবা, মায়ের বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া দরকার। তাহলেই শিশুদের ভালোভাবে বোঝাতে পারবেন।
শিশুর ঘরে কোনো রকম টিভি বা কম্পিউটার রাখবেন না। রাত জেগে এসব নিয়ে থাকলে ঘুমের ব্যঘাত ঘটবে।
ছবি: ডাঃ Akhiles Pal এর দেওয়াল থেকে।