কথায় কথায় এক সিনিয়র দাদাকে বলেছিলাম- আমার নিজস্ব একটি কিটামিনের গল্প আছে! একশো শতাংশ সত্যি ঘটনা, তবে যেহেতু বছর খানেক পুরানো হয়ে গেছে, তাই গল্প বলে চালিয়ে দিলাম!
একটু ভূমিকা বলি- কিটামিন একটি ওষুধের নাম!
না, ভিটামিন নয় মোটেই! ব্যবহার- অল্প সময়ের মধ্যে করা যায় এমন সার্জারিতে অজ্ঞান করার ওষুধ হিসেবে!
কখনো শুধুমাত্র এটাই, কখনো অন্য ওষুধের সঙ্গেও!
আরো কয়েকটি ব্যবহার আছে। সেই ভাট লিখবো না।
মূলতঃ তিরিশ মিনিট বা এর কাছাকাছি সময়ে যে সব সার্জারি করা সম্ভব, সেই ক্ষেত্রে এনাকে ব্যবহার করা যায়।
সতর্কীকরণ: দয়া করে, কেউ যেন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজের উপর বা অন্য কারো উপর ব্যবহার করতে যাবেন না!
যাইহোক, গল্পে আসি।
গল্প হলো- গত বছর হঠাৎ একদিন আবিষ্কার করলাম- পশ্চাৎদেশে ক্রমশঃ একটা ফোলা ফোলা ভাব। হালকা অস্বস্তি। ব্যথা দ্বিতীয় দিনে হঠাৎই মারাত্মক হয়ে উঠলো এবং আমাকে ভালোমতো কাহিল করে ফেললো!
বাধ্য হয়ে – আমার এক প্রিয় জুনিয়রকে (ডাক্তার অবশ্যই) ডাকলাম। বললাম- ভাই দেখ তো- কে এমন অসময়ে হঠাৎ পেছনটা ….
তো যা ভেবেছিলাম তাই! নিজের উপর ডাক্তারি ফলিয়ে লাভ হবে না জেনেও ওষুধ খেলাম একদিন। পরদিন আর না পেরে সার্জারির দু’একজন বন্ধুদের সঙ্গে কথা বললাম।
তারা বললো- দেখ ভাই, এই ক্ষেত্রে অনেক সময়ই বোঝা যায় না কে মেরে গেল! মানে মোদ্দাকথা – ক্রিপ্টোজেনিক – মানে ফোঁড়ার আসল কালপ্রিট কোন ভাইরাস না ব্যাকটেরিয়া- সেটা ধরা যাবে না! কিন্তু চিকিৎসা- অবিলম্বে ড্রেন করা!
কাটাকাটিতে তেমন কোন ভয়ডর কোন কালেই ছিল না।
তার উপর সার্জন বন্ধু আমাকে প্রায় বাচ্চাদের মতো বুঝিয়ে দিয়েছিল- কি কি করা হবে, কি কি হতে পারে।
কিন্তু আমি এই অজ্ঞান করা নিয়ে খানিকটা দ্বিধায় ছিলাম।
একসময় নিজে প্রচুর রোগীকে হাফ বা ফুল অজ্ঞান করেছি। কিন্তু সত্যি বলতে – নিজের শরীরে সেই একই ওষুধ ঢুকবে ভেবে একটু কেমন যেন লাগলো।
ডাক্তারদের বোধহয় এটা একটা সমস্যা- নিজেরা নিজেদের অসুখ জানে বোঝে বলে টেনশন বেশি করে!
যদিও অন্যরা ঠিক উল্টোই ভাবে। এবার আমিও যেহেতু এই অজ্ঞান করার পুরো ব্যাপারটার ভালো মন্দ মোটামুটি জানতাম, এটা নিয়েই আমার একটু কিন্তু কিন্তু হলো!
কিন্তু বিদ্বজনেরা বলেন: অনিচ্ছাকৃতই হউক আর ইচ্ছাকৃতই হউক, কাহারো পশ্চাৎদেশ যদি কেহ কোনক্রমে একবার মারিয়া যায়, তাহা হইলে তৎপরবর্তী সহস্রবার সেই একই পশ্চাৎদেশ মারা যাইবার উপক্রম হইলেও ভিকটিমের চেহারায়, চেতনায় নতুন করিয়া কোন উদ্বেগ ধরা পড়িবে না।
আমিও ভাবলাম – যাকগে বাবা, কোনমতে অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেলেই বাঁচি।
বন্ধুর পরিচিত সিনিয়র এক দাদাকে পেলাম হাতের কাছে। ঠিক হলো- সেই করবে অপারেশন।
সব ফর্মালিটি শেষে আমি একটি কেবিনে বন্দী হলাম।
তারপর দেখতে দেখতে একসময় আমার ডাক পড়লো।
সবুজ ওটি ড্রেস পড়লাম। ওটিতে ঢুকে সিনিয়র অ্যানাস্থেটিস্ট স্যারের সাথে কথা বললাম।
তিনি বললেন- যা তো, চুপচাপ শুয়ে পড়।
সত্যি বলতে আমার ডাক্তারির প্রথম জীবনের অ্যানাস্থেসিয়ায় হাউজস্টাফশিপ করার সময়ের কথা মনে পড়ে গেল। তখন হেব্বি জোশ ছিল কাজ করার। পরপর ঝটাপট রোগীকে অজ্ঞান করে ফেলতাম। হয় পেছনে মানে মেরুদণ্ডের ভেতরে স্পাইনাল অ্যানাস্থেসিয়া অথবা গলায় টিউব ঢুকিয়ে জেনারেল অ্যানাস্থেশিয়া !
একবার scoline apnoea (এটি অন্য একটি ওষুধের সাইড এফেক্ট) বাদ দিলে ছ’মাসের সেই সময়টা বলা যায় বেশ ভালো কেটেছিল।
মাঝে মাঝেই রোগীরা অপারেশনের আগে একটু ভয়টয় পেতো- ডাক্তার বাবু, অজ্ঞান করলে আবার জ্ঞান ফিরবে তো? যদি আর জ্ঞান না ফেরে?
মিথ্যা বলবো না- তখন কেমন যেন একটা অলৌকিক ক্ষমতাশালী মনে হতো নিজেকে- আরে না না… যতই অজ্ঞান হয়ে পড়ুন, ফের আবার ফিরিয়ে আনবো! (সবক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয়, জেনেও!) কতবার মনে মনে হেসেছি এটা নিয়ে আর বিজ্ঞানের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দিয়েছি।
একবার তো স্পাইনাল দেয়ার সময় রোগী বললো- ডাক্তারবাবু, এই যে আপনি আমাকে অজ্ঞান করে দেবেন, এটা তো প্রায় মেরে দেওয়ার মতোই!
আমি রোগীর পেছনে টুলে বসে ইনজেকশন রেডি করছিলাম। মুখ ফসকে বেরিয়ে গিয়েছিল- হুম, মারবো, তবে পুরোপুরি নয়! হেসে ফেলেছিলাম তারপর।
আরেকবার এক রোগী আড়চোখে তাকিয়ে স্পাইনাল অ্যানাস্থেসিয়ার বড় নিডলটা দেখে হাঁ করে তাকিয়ে ছিল!
– ও মা! ডাক্তারবাবু, ওইটা দিয়ে মারবেন আমাকে?
আমি নির্বিকার গলায় কিছু না ভেবেই বলেছিলাম- হ্যাঁ, আমি এটা দিয়েই মারি।
নার্সদিদি আর সিনিয়র স্যার খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে ফেলেছিলেন।
তখন আমি বুঝলাম- একটা মিসনোমার ব্যবহার করে ফেলেছি!
যাইহোক, এ গল্পগুলো অন্য কখনো লিখবো।
তখনও শুধু বই থেকে পাওয়া নলেজ ছিল- অজ্ঞান করলে একজন মানুষ কোন অবস্থায় পৌঁছে যাবে। কি কি হবে বা হতে পারে। কিন্তু সেই অবস্থা হলে ঠিক কি কি হতে পারে, সেটার অভিজ্ঞতা হয়নি তখনো।
অতঃপর আমি সজ্ঞানে অজ্ঞান হবার অনুমতি দিলাম।
অ্যানাস্থেশিয়ার সিনিয়র স্যারের কনফিডেন্স দেখে আমি আর কিছু বলার দরকার বোধ করলাম না। বুঝলাম- পুরোপুরি মারবেন না!
মাথার উপরে কয়েকটি লাইট জ্বলছে। আলো আঁধারির অপারেশন থিয়েটারে জনা চারেক মানুষ। আমার হাতে একটা স্যালাইন দেয়ার চ্যানেল লাগানো ছিল। প্রথমতঃ হাত দু’টো বেঁধে ফেলা হলো।
জীবনে সেই প্রথমবারের মতো কেন জানি না মনে হয়েছিল- ঠিক এভাবেই একজন মানুষকে শাস্তি দেয়ার জন্য হাতে পায়ে পেরেক পুঁতে আটকে দেয়া হয়েছিল আজ থেকে দু’হাজার বছর আগে!! কথিত আছে, রক্তাক্ত সেই মানুষটি নাকি তারপরও ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল ঈশ্বরের কাছে!! হ্যাঁ, যারা তাঁকে শাস্তি দিয়েছিল, তাঁদের জন্যই!!
আর সেদিন, আমারও একই কাজ করা ছাড়া উপায় ছিল না! আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল- অ্যানাস্থেশিয়ার স্যারের উপর। আমি শুধু সময়ের কাছে সেই ডাক্তার স্যার আর সার্জারির দাদার সাফল্য কামনা করেছি!!
মিথ্যা বলবো না- সেই সময় একবার, মাত্র একবারই আমার মনে পড়ে গিয়েছিল scoline apnoea-র সেই রোগীর কথা! ভয়ে! আমি মুখ ফিরিয়ে ফের স্যারকে জিজ্ঞেস করলাম- স্যার, কি ওষুধ দেবেন?
কেন জানি না স্যার বোধহয় তখন আমার চোখে ভয় দেখেছিলেন। তাও অসীম সাহসী সেই স্যার ধমকে বললেন- এই চুপ করে থাক তো!
বাধ্য হয়ে চুপ করে গেলাম। ইতিমধ্যে আমার চোখ ক্রমশঃ বুজে আসতে লাগলো। আমার মনে পড়তে লাগলো কি কি ওষুধ পর পর দেয়া হবে। গলায় টিউব ঢোকানো হবে। একটা মেশিনের উপর নির্ভর করবে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া!! কিন্তু স্বভাবমতোই আমি বোঝার চেষ্টা করতে লাগলাম- আমার শরীরে ঠিক কি কি পরিবর্তন হচ্ছে! অভিজ্ঞতাটা মনে রাখতে হবে যে করেই হোক! (আসলে আমি নিজেকে খানিকটা ডাইভার্ট করতে চেয়েছি ওটা করে)
হালকা ঝিমুনির ভেতরও শুনতে পেলাম- আমার সার্জন দাদা আর অ্যানাস্থেশিয়ার স্যার কথা বলছেন- হাঁ ওটা দিয়েই হয়ে যাবে … তিরিশ মিনিটের কাজ … না হলে দেখা যাবে …
টুকরো টুকরো এই কথাগুলো শুনতে শুনতে আমি ক্রমশঃ অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলাম … জোর করেও আর চোখ খুলে রাখতে পারছি না … চারদিক থেকে শুধু অল্প অল্প অবোধ্য কিছু শব্দ ভেসে আসছে … আমি সেগুলোকে আলাদা করতে পারছি না।
এরপরের ঘটনা অলৌকিক! সত্যি অলৌকিক! কি করে আমার সেটা মনে আছে এখনো, ব্রেনের সেই কারিকুরি আমি এখনো জানি না! শিখিনি।
আমি হঠাৎ যেন দেখতে পেলাম- আমার শরীর বলে কিছু থাকছে না! আমার চারপাশ এক অলৌকিক রামধনুর মতো আলোয় ভরে উঠলো। পরে বুঝেছি সেটা অপারেশন থিয়েটারের আলোই ছিল। তখন আমার চোখ দেখতে পারছে না, কিন্তু ব্রেন দেখছে! অপারেশন কি হচ্ছে আমি জানি না।
প্রথমে দেখলাম আমার শরীর সেই অলৌকিক আলোর বৃত্তের ভেতর অশরীরী হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে। একটু একটু করে আমার হাত পা পেট বুক গলা এবং সবশেষে মাথা, যেন এক একটি আলাদা অনু পরমাণুতে ভেঙে গিয়ে মিলিয়ে যেতে লাগলো। কোথায় কোন শূন্যে মহাশূন্যে তারা মিলিয়ে যাচ্ছিল, আমি জানি না। সেখানে এই পার্থিব পৃথিবীর কোন কিছুই নেই। না আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধব না ডাক্তারি না অন্য কোন কিছু! সুখ দুঃখ ব্যথা বেদনা লোভ মোহ সব ত্যাগ করে আমি যেন আক্ষরিক অর্থেই মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়লাম।
শুধু আলো আর আলো … আলোর ভেতরে আমার অণু পরমাণুগুলোকে আর আলাদা করে বোঝার ক্ষমতা রইলো না। তবু এখনো মনে পড়ে- একটা সময় আমি সেই সর্বব্যাপী আলোর ভেতরে পুরোপুরি মিলিয়ে গেলাম। আরো অদ্ভুত- সেই সময় আমার মতো নাস্তিকেরও মনে হয়েছিল- আত্মা বোধহয় এভাবেই একসময় মিলিয়ে যায় ! এই বোধহয় শেষ , মৃত্যু! না, আমার আর কিছুই রইলো না! আমি পুরোপুরি মরে গেলাম! আর বোঝার ক্ষমতা রইলো না।
এবং এখানেই ঘটনাটি শেষ হলো না ! কারণ- এই জন্মেই আমাকে পরজন্মের সুখ দুঃখ ভোগ করতে হবে- এমনটাই লেখা আছে। হঠাৎ করেই, একদম হঠাৎ করেই যেন ফের সেই মহাবিশ্বের আলো দেখলাম। অলৌকিক আলোর ভেতরে আবার একটা একটা করে অণুপরমাণুর ঘোরাঘুরি টের পেতে শুরু করলাম। ঠিক যেমনটা সারি বেঁধে তারা ছড়িয়ে পড়েছিল অনন্তে, সেরকমই দল বেঁধে তারা ফের কাছাকাছি আসতে শুরু করলো। কিন্তু কি অদ্ভুত কাণ্ড! তারা এসে আর একসাথে মিশে যাচ্ছে না!
একটি অশরীরী আবছায়ার চারপাশে তারা ঘুরঘুর করতে লাগলো যেন ! আমার ব্রেন সেটা দেখতে পেল যেন! জানি না কিভাবে! ততক্ষণে অপারেশন শেষ হয়ে গিয়েছিল।
পরে শুনেছিলাম- ঘন্টাখানেক মতো লেগেছিল অপারেশনে। কিন্তু আমার শুধু মাত্র ব্রেনই হালকা কাজ করছিলো। আমি স্পষ্ট দেখতে পেলা – মগজের ছাড়া আমার শরীর বলে কিছু নেই! রাক্ষসের মতো সেই মুণ্ডুটাকে শুধু আমি নিজে দেখতে পাচ্ছি তখন!
পরে জেনেছি, আমি নাকি তখন অদ্ভুত সব শব্দ বলেছি … ভয় পাওয়ার মতো চিৎকার করেছি … কি বলেছি কেউ ভালো করে বুঝতে পারেনি!
আমি মরিনি, অথচ রাহু কেতুর মতো হয়ে গেছি, এটা বুঝতে বুঝতে কখন যে অপারেশনের জায়গায় শুরু হয়ে গেছে অসহ্য যন্ত্রণা, জানি না। আর মগজ ঠিক সেই সময়েই, সেই অলৌকিক আলোর বৃত্তের ভেতর থেকে এক একটি অণুপরমাণুকে যেন এক ঝটকায় গুছিয়ে নিয়ে সাজিয়ে দিল!! আমার শরীর বানিয়ে ফেললো !!
আমার হাত পা পেট বুক গলা সব মিলে আবার পার্থিব শরীরের জন্ম দিল!
সেই অনুভূতি সত্যি বলে বোঝানো আমার কম্মো নয়।
আমি অসহ্য ব্যথায় চিৎকার করে উঠলাম। সার্জন দাদা ছুটে এলো। আমার গিন্নী, যে নাকি অতটা সময় বাইরে হাত জোড় করে বসেছিল, তাকে টের পেলাম হাত ধরে আছে।
কি থেকে কি হয়ে গেল পুরোটা গুছিয়ে বোঝার আগেই দাদা বোধকরি opioid ইনজেকশন দিয়ে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিল কয়েক ঘন্টার জন্য।
বুঝলাম- ব্যথায় যেমন মানুষের মৃত্যু হয়, হয়তো অলৌকিক এক ব্যথা থেকেই একজন মানুষের জন্ম হয়!
জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কি ঠিক এমনটাই হয়?
পরে বুঝেছি- কিটামিন নামক ভিটামিন দিয়ে আমার অপারেশন হয়েছিল! এবং কপাল ভালো (মন্দ আর বলবোই না!) কিটামিনের একটি জানা সাইড এফেক্ট ডিসোসিয়েটিভ অ্যানাস্থেসিয়া আমার ক্ষেত্রেই হয়েছিল!!
আমি পৌঁছে গিয়েছিলাম ট্রান্স স্টেটে! হ্যাঁ জীবন আর মৃত্যুর একদম মাঝখানে! সেখান থেকে যে কোন দিকে যেতে পারতাম হয়তো!
কিন্তু বোধকরি- এই গল্পটা একদিন লিখবো বলেই, ফিরে এসেছিলাম! এসে দেখেছি- পৃথিবীর সবকিছু আগের মতোই আছে! সুখ দুঃখ ব্যথা বেদনা ভালোবাসা হিংসা ঘৃণা বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন- সব আছে! আরো আছে ফুল ফল গাছপালা পাখপাখালি নদী পাহাড় আকাশ বাতাস ভরা একটি অসম্ভব সুন্দর পৃথিবী- যে পৃথিবীর জন্য আমি হাজার বার কেন লক্ষ কোটি বার ট্রান্স স্টেট থেকে ফিরে আসতে চাইবো এদিকে !!
মহাবিশ্বের অণু পরমাণু হতে আমার কোন ইচ্ছে নেই!
ধন্যবাদ সেই অ্যানাস্থেশিয়ার স্যারকে, ধন্যবাদ আমার সেই সার্জন দাদাকে, ধন্যবাদ অন্যান্য স্যারদের,
ধন্যবাদ সকল নার্সিং স্টাফ এবং অন্যান্য সকলকে।
ধন্যবাদ আমার সেই সময়ে পাশে দাঁড়ানো এবং না দাঁড়ানো সকল বন্ধুদের।
জীবনে একবার অন্ততঃ এই কিটামিন নামক ভিটামিন দিয়ে আমাকে ফিরিয়ে না আনলে এই অলৌকিক অভিজ্ঞতা আমার না জানাই থেকে যেত!
এখন শুধু মনে হয়- ফিরে এসেছিলাম নতুন জন্ম পেয়ে!
জানি শুকনো ধন্যবাদ জানিয়ে এই ঋণ শোধ করা যায় না। তবু মনে হয় – এই অলৌকিক জীবনকে, এই জীবনের সবকিছু কে, পরিচিত সকল মানুষকে শুধু ধন্যবাদই জানাতে পারি আমরা। সবশেষে ধন্যবাদ কিটামিন কে!
বিঃ দ্রঃ আমি মন থেকে চাইবো না, অসম্ভব জেনেও, আর কাউকে এই ওষুধ দেয়ার দরকার হোক!৷ দিতে হলেও যেন কারো আমার মতো না হয়।
*রাজা বসাক দাদা, যদি পারো আমার তরফ থেকে সেই অ্যানাস্থেশিয়ার স্যারকে আমার প্রণাম পৌঁছে দিও।