ভবিষ্যত নাগরিকদের কথা মাথায় রেখে….
#চলুন_নিজেরা_পাল্টাই
চিকিৎসা ও মনোবিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা বলে, শিশুদের লেখাপড়া শেখা শুরু করার বয়স পাঁচ বছর বা তার পর।তার আগে শিশু তার পাঁচটা ইন্দ্রিয় দিয়ে প্রকৃতি-পরিবেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে পার্থিব বোধ তৈরি করে।
মস্তিষ্ক যখন যা নিতে প্রস্তুত, তার আগে তার উপর কিছু চাপিয়ে দিলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ ও কার্যকারিতা ব্যাহত হয়।আমরা এসব না বুঝে আমাদের শিশুদের প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে তাদের উপর ছোটবেলা থেকে চাপিয়ে দিচ্ছি অবৈজ্ঞানিক সিলেবাসের বোঝা, সঙ্গে তৈরি হচ্ছে প্রত্যাশাপূরণের চাপ।
পড়াশোনার ধুয়ো তুলে শিশু গুটিয়ে যাচ্ছে ইন্টারনেটের জগতে। ব্যাহত হচ্ছে তার শারীরিক ও মানসিক ও বৌদ্ধিক বিকাশ।বিপন্ন শিশু অবসাদে ভুগছে। সে অবসাদের দুটো উপসর্গ হলো বেশি খাওয়া,বিশেষ করে রাস্তার খাবার খাওয়া, অপরাধপ্রবণতা, যার প্রাথমিক ধাপ হলো মিথ্যে বলা।ক্ষেত্রবিশেষে দূর্বলচিত্তের কিছু শিশু তাদের সীমাবদ্ধতার কথা না বুঝে তারা আত্মহননের পথ নিচ্ছে।সে দায়ও তাদের ঘাড়ে চাপাচ্ছি বুদ্ধিমান বড়রা।
শিশুর শারীরিক দক্ষতা কমছে, স্থূলতা বাড়ছে। বাড়ছে তাদের মধ্যে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের প্রাদুর্ভাব।
প্রতিটা শিশু তার নিজের মতো। এক একজন এক এক ব্যাপারে বুদ্ধিমান ও মেধাবী। সেটা খুঁজে বের না করে আমরা তাদের সাধারণ পড়াশোনার ইঁদুর দৌড়ে দৌড় করিয়ে হাঁফ ধরিয়ে মারছি। যার গানের গলা আছে তাকে ছবি আঁকাচ্ছি, যে আঁকতে পারে তাকে ক্যারাটে শেখাচ্ছি।
আমরা ভুলে যাচ্ছি শিশু নিজেও একটা মানুষ, তার ভাল লাগা, তার স্বপ্ন আমাদের মতই হবে এটা অস্বাভাবিক। তেমন কোনও নিয়মও নেই।
তাকে নিজের কিছু নির্বাচনের সুযোগ না দিয়ে একদা কোনও ব্যাপারে ব্যর্থ আমাকে তার মধ্যে সফল আমরা করে দেখতে গিয়ে তার সর্বনাশ করছি লাগাতার।
যুক্তিগ্রাহ্য যা তা হলো, আগেই দেখতে হবে শিশু কি চায়। সে কি পারে। সে ব্যাপারে তাকে সুযোগ দিতে হবে। তার পাশে থাকতে হবে নৈতিক সমর্থন নিয়ে।যে ব্যাপারে শিশুর মেধা নেই সে ব্যাপারে শিশুকে বিফল দেখলে যে অভিভাবক ও শিক্ষককুল বেচারার কাউন্সেলিং চান, সামগ্রিক ও নিশ্চিতভাবে তাঁদের কাউন্সেলিং আগে দরকার।
অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গে এ বিষয়টা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভাবতে হবে সরকার প্রশাসনকে।শিক্ষাব্যাবস্থার খোলনলচে তাঁরা ছাড়া অন্য কোনও গোষ্ঠীর পক্ষে পাল্টে ফেলা সম্ভব নয়।
পৃথিবী এখনও মানুষের হলেও তার কাছে খুব কঠিন বাসভূমি। তাতে ভবিষ্যত নাগরিকদের জীবনযাপন আমরা আরও কঠিন করে দিচ্ছি আমাদের অপরিণামদর্শিতায়।
শিশুরা যখন বড় হবে শরীর ও মনে অসমর্থ হয়ে তখন আমরা থাকব না-
কেবলমাত্র এই সামান্য কথাটা ভেবেই আমাদের বড়দের পাল্টে যাবার সময় এসেছে।
স্বার্থপর দৈত্য হয়ে কোনও লাভ নেই।
২৮.০২.২০২৪