হাওয়া বয় শনশন
তারারা কাঁপে ।
হৃদয়ে কি জং ধরে
পুরনো খাপে !
কার চুল এলোমেলো
কিবা তাতে আসে গেল!
কার চোখে কত জল
কেবা তা মাপে?
দিনগুলো কুড়াতে
কত কি তো হারাল
ব্যথা কই সেই ফলা-র
বিধেঁছে যা ধারালো!
হাওয়া বয় শনশন
তারারা কাঁপে ।
জেনে কিবা প্রয়োজন
অনেক দূরের বন ।
রাঙা হলো কুসুমে, না
বহ্নিতাপে?
হৃদয় মর্চে ধরা
পুরনো খাপে!!
জং – প্রেমেন্দ্র মিত্র
শেষ কবে এমন গ্রন্থপ্রকাশ অনুষ্ঠান দেখেছে কলকাতা ?
লিভার ফাউন্ডেশনের কাছে ঋণী হয়ে রইল স্মৃতি-সুখ-বৃষ্টি-ভেজা শহর !
প্রকাশিত হলো শতাধিক বাঙালি চিকিৎসকের মহাজীবনের অভাবনীয় আলেখ্য!
অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ছুঁয়ে এই মহাগ্রন্থ পৌঁছে গেল মঞ্চের অন্য বুধজনের হাতে। ডাঃ সুবীরকুমার চট্টোপাধ্যায়, ডাঃ দেবেন্দ্রনাথ গুহমজুমদার, ডাঃ অরুণাভ চৌধুরী , ডাঃ সুকুমার মুখার্জি,ডাঃ অশোকানন্দ কোনার, ডঃ সৌগত বসু।
ধীর পদক্ষেপে সিঁড়ি ভেঙ্গে মঞ্চে উঠেছিলেন প্রবীণ সুশ্রুতেরা !
অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদারের গলার ঝরে পড়ল অকৃত্রিম শ্রদ্ধা আর বিস্ময়, কতটা পথ পেরোলে তবে এই এক একটা পদক্ষেপ পাওয়া যায় ?
ডাঃ মণি ছেত্ৰী উপস্থিত ছিলেন একটি চলচ্ছবির মাধ্যমে ! পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে উপলব্ধি করলো পর্দায় প্রক্ষেপিত শতাব্দী পেরিয়ে আসা মহাচিকিৎসকের ঋজু, সটান, সতেজ উপস্থিতি ।
প্রকাশক গাঙচিলের প্রাণপুরুষ কবি অধীর বিশ্বাস শব্দে শব্দে কি অবলীলায় এঁকে ফেললেন এক অবিস্মরণীয় জলছবি!
চোখ ঝাপসা হয়ে, গলার কাছে দলা পাকিয়ে ওঠে কান্না ।
তাঁর লেখাটি গ্রন্থের পরবর্তী সংস্করণে ঠাঁই পেতে পারে কি !
যেমন ঠাঁই পেতেই পারেন সারা বাংলার বিভিন্ন জেলা শহরে, মফস্বলে, চা বাগানে প্রবাদ হয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকা আরো অনেক চিকিৎসক । অনেককে জায়গা দেওয়া যায়নি সে আক্ষেপ অন্যতম সম্পাদক ডাঃ অশোকানন্দ কোনারের কণ্ঠেও ।
ফটোগ্রাফ বা পোর্ট্রেট স্কেচ নয়, অবয়বে যথাযথ করার চেষ্টাও করা হয় নি, তবে প্রতিটি ছবিতেই চেষ্টা হয়েছে সেই মানুষগুলির অন্তরাত্মা ছোঁয়ার, তাঁদের সামগ্রিকতায় ধরার ! অলঙ্করণ তো নয়, রেখায় রেখায় লেখাগুলির অনুভববেদ্য অনুরণন সুগত দাশগুপ্ত র তুলিতে !
আর ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী!
তাঁরই কল্প-সন্তান এই মহাসঙ্কলন!
তৃপ্তি নয়, ক্লান্তি ও নয় তাঁর কণ্ঠে ফুটলো এক আশ্চর্য উচ্চারণ!
একশো তারার আলোয় দাঁড়িয়ে বিনম্র প্রত্যয়ে সহস্র তারার আলো ফোটাবার স্বপ্ন দেখালেন মানুষটি!
নাকি শপথ নিলেন?