কোনো সরকারই আদি অনন্ত কাল ধরে সারা দেশকে তালাবন্ধ করে রাখতে পারে না!
সেটা কাম্যও নয়!
এটা কোনো স্থানীয় সমস্যা নয়, এ এক বিশ্বজোড়া সঙ্কট!
গত দশ সপ্তাহ ধরে এই অসুখটি নিয়ে সারা পৃথিবী জুড়ে সরকারী-বেসরকারী যাবতীয় সংবাদ মাধ্যমে এবং সামাজিক মাধ্যমে ক্রমাগত বহু তথ্য পাখি পড়ানোর মত করে মুখস্ত করানো হয়েছে!
সভ্য জগতের সঙ্গে সম্পর্কহীন ব্রাজিল /আফ্রিকা বা আন্দামানের গহন জঙ্গলের কোনো কোনো আদিবাসী ছাড়া এই গ্রহে এমন মানুষ আজ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যিনি করোনা মহামারী নিয়ে ওয়াকিবহাল নন!
এবার দায়িত্বটা আমাদের ঘাড়ে!
এতোদিন আমরা যা শিখেছি এবার সেগুলো পালন করতে হবে।
কয়েকটা জিনিস মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে নিন
১. করোনা নিয়েই বাঁচতে হবে।
২. বাইরের লকডাউন শেষ , ভেতরের লকডাউন শুরু।
৩. মাস্ক ছাড়া বেরোবেন না, রোজ ব্যবহারের পর ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
৪. ভিড় সর্বোতভাবে এড়িয়ে চলুন।
৫. বাইরে বেরোলে নিয়মিত হাত ধুয়ে পরিচ্ছন্ন রাখুন, বাড়ি ফিরে, সঙ্গে সঙ্গে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
৬. আংটি, ঘড়ি না পরাই ভালো।
৭. অসুস্থ অথবা বয়স্ক মানুষরা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বেরোবেন না !
৮. বাড়ি ফিরে এসে পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের কাছে যাবেন না।
এতো কিছু মনে না থাকলে, বেশি না,
স্রেফ তিনটি জিনিস মেনে চলুন
শারীরিক দূরত্ব
মাস্ক পরা
হাত পরিচ্ছন্ন রাখা
আর অসুস্থ বা বয়স্ক মানুষের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা !
এটুকু যদি আমরা পালন করতে পারি তাহলে আমরা এই সঙ্কট থেকে মুক্তি পাবো!
আর যদি না পারি, তবে… সমূহ সর্বনাশ!
পৃথিবীর ইতিহাসে বৃহত্তম ও দীর্ঘতম লকডাউনের সাক্ষী হয়ে রইলাম আমরা!
শুধু আমাদের দেশেই প্রায় একশোচল্লিশ কোটি মানুষ প্রায় সত্তর দিন ধরে স্বাভাবিক জীবনযাপন বন্ধ করে পালন করেছেন এই অভূতপূর্ব এবং আক্ষরিক অর্থেই ঐতিহাসিক এই লকডাউন!
লকডাউনের উদ্দেশ্য পুরোপুরি না হলেও কিছুটা যে অবশ্যই সফল হয়েছে এটা মানতেই হবে!
রোগাক্রান্ত মানুষের সুনামি বা মৃত্যুমিছিলে বিহ্বল হয়ে যাওয়ার মত পরিস্থিতি এখনো হয় নি!
প্রতি দশলক্ষে আমরা এ যাবৎ আড়াই হাজার মানুষের টেস্ট করতে পেরেছি।
পরিসংখ্যানটা খুব আহামরি না হলেও মনে রাখতে হবে দেশজুড়ে প্রায় ছত্রিশ লক্ষ মানুষের টেস্ট করা সম্ভব হয়েছে !
সারা দুনিয়ায় মাত্র পাঁচটি দেশ আমাদের চেয়ে বেশি টেস্ট করতে সক্ষম হয়েছে!
কিন্তু এটা আদৌ যথেষ্ট নয়, আরো অনেক বেশি বেশি টেস্ট আমাদের প্রতিদিন করে চলতে হবে!
সুষ্ঠু চিকিৎসা ব্যবস্থার প্ৰসার ঘটাতে হবে!
মনে রাখতে হবে বাইরে-ভেতরে যত লকডাউনই চলুক, পেটে কিন্তু কোনো লকডাউন চলে না! আর সাধ করে কেউ পরিযায়ী শ্রমিকও হয় না!
কয়েক কোটি মানুষ ঘরে ফিরছেন, যাঁরা আমার আপনার মতই ভারতবাসী, তাঁদের সঠিক ভাবে টেস্ট করে, কেস সনাক্ত করে , প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণ এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
আনলক ১.০ অথবা লকডাউন ৫.০, যাই বলি, তবেই সেটা সফল হবে।
নইলে নয়!