আর্যতীর্থের কবিতা
।শহীদ দিবস।
শত্রু যখন নাগরিকের শরীরময়,
মানুষ ছুঁলে আত্মঘাতী বোমার ভয়,
ঘরের ভেতর থাকতে বলেন রাষ্ট্র এবং বিজ্ঞানী
এমন সময় বাইরে টহল দিচ্ছে যে কেউ, ঠিক জানি।
সৈন্য ওরা বর্ম পরা, সবঢাকা সেই সফেদসাজ,
লড়াই চালায় শব্দবিহীন স্টেথোস্কোপের কুচকাওয়াজ।
মেডেল পাবে হাতি ঘোড়া এই লড়াইয়ে জিতলে কি?
সমাজ তাদের মালা দেবে জ্বরের আপদ মিটলে কি?
কক্ষণো না, ভাগ্য জুড়ে আছেন শনি বক্রতেই
মৃত্যু হলেও নামের আগে বীর মহাবীর চক্র নেই।
বৃথাই করা অমন আশা যোদ্ধা বলার ভান দেখে,
মেডেল পাওয়া দূরের কথা, শহীদ বলেও মানছে কে?
সীমান্তে যে ঠায় দাঁড়ানো তন্দ্রাহীন,
তার কাছে নেই কেবল জমা দেশের ঋণ।
খাটছে যারা হাসপাতালে ঘুমহারা আর ঘরছাড়া,
চাও কি না চাও তাদের কাছেও জমছে ধারের পড়চা’ রা।
তোমরা যারা উঠলে সেরে এবং যাদের হয়নি জ্বর,
সবাই জানো কাদের ওপর ভরসা অসুখ ঢুকলে ঘর।
স্বজন গেছে যাদের জ্বরে, স্থির বুঝেছে প্রায় সবাই
যমের সাথে পাঞ্জা কষে করলো কারা শেষ লড়াই।
বিল নিয়ে আজ ক্ষুব্ধ যে লোক কর্পোরেটের পাঁচতারায়,
তারাও জ্ঞাত যুদ্ধরত’র মাইনে কত সেই ভাড়ায়।
কিন্তু যখন সেনার ঘাড়েই কোভিড মারে মরণকোপ,
ঘরের কোণে একলা কাঁদে বেকার হওয়া স্টেথোস্কোপ।
বাড়ির লোকও কাঁদতো সাথে, কিন্তু তার আর সময় কই,
প্রজন্ম যায় ব্যাঙ্কে নিয়ে মা বা বাবার অ্যাকাউন্ট বই।
রোজগারও যে শূন্যে তখন থমকে মৃত’র ডাক্তারি,
যতই গলা উচ্চে তুলে যোদ্ধা বলে হাঁক পাড়ি
পায়না কিছুই, লাল ফিতেতে আটকে থাকে বীমার ধন,
রাষ্ট্র যেটা দেবেন বলেন, পায় সেটা আর হায় ক’জন।
পয়লা জুলাই সেসব ভুলাই সবাই মিলে বিশ একুশ,
স্যালুট জানাই শহীদ বলে জুটলো যাদের জ্বরের ক্রুশ।
আমাদেরই রোগ তাড়াতে জীবন যারা করলো শেষ,
পয়লা জুলাই তাদের জন্য একটু নাহয় কাঁদুক দেশ।
দেশের কাছে স্টেথোস্কোপের আর চাহিদা নেই বিশেষ।