অনেক চেষ্টা করেও,
যুদ্ধের অংকটা এখনো শেখা হলো না।
একটা দেশে এক হাজার একশো উনচল্লিশ জন নাগরিক জঙ্গী আক্রমণে মারা গেলে,
বিপরীত আক্রমণে ঠিক কত মানুষ ছিন্নভিন্ন হলে এক্স ইজ ইকুয়াল টু ওয়াই হবে,
এটা পৃথিবীর কোনো গণিতের ফর্মুলায় খুঁজে পাচ্ছি না।
চল্লিশ জন নিহত ইজরায়েলি শিশু
ইজ গ্রেটার দ্যান পাঁচ হাজার খুন হওয়া ফিলিস্তিনি শিশু,
আধুনিক পৃথিবীর হিসেব এখন এটাই,
কিন্তু কোন সূত্র ধরে এই সমাধান, সেটা কেউ বলছে না।
তারপর ধরো, সেই অলীক রুট ওভার মাইনাস ওয়ান,
চিরকালীন ইমাজিনারি নম্বর।
দুবছরে ইউক্রেনে রাশিয়ার নাকি ছয় হাজার সৈন্য মারা গেছেন,
অন্তত রাশিয়ার তাই বিবৃতি ।
ইউক্রেনের সরকারি হিসেবেও তাদের মানুষ গেছে পনেরো হাজারের আশেপাশে।
অথচ বেসরকারি হিসেবে দুতরফেই সংখ্যাটা কয়েক লাখ।
এই যে কাগজপত্র প্রিয়জন আর পরিবার থাকা
এত মানুষ
কলমের এক খোঁচায় ‘নেই’ হয়ে গেলেন,
এটা রুট ওভার মাইনাস কত, এটা আবিষ্কার করতে পারলে হয়তো নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য নাম উঠতো।
আর ওই ইউনাইটেড নেশনের ধ্রুবকের মান, দেশ বিশেষে কেমন শূন্য থেকে একশো হয়,
সেটা বেশ গোলমেলে।
আমেরিকা কোথাও মানুষ মারলে সেটা ‘ শান্তিরক্ষা’,
রাশিয়া করলে সেটা ‘ অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা’
ইজরায়েল কোথাও হাজার কুড়ি মানুষ মেরে ফেললে সেটা ‘ হামাস আক্রমণের প্রতিবর্ত ক্রিয়া’,
কাজেই এসব সময়ে ইউ এন মৌন, মান-এ হয়তো বা শূন্যের থেকেও গৌণ।
কিন্তু আফ্রিকার দুটো দারিদ্রসীমার নিচে দেশের মধ্যে ঝামেলা হোক,
তখন তার মাতব্বরি দেখে কে!
এই যে কখনো লিমিট টেন্ডস টু ইনফিনিটি কখনো টু জিরো,
ক্যালকুলাসের এই দোদুল্যমান ক্যালকুলেশন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ায়?
যে সব দেশে যুদ্ধ এখনো আসেনি,
তাদেরও নাগরিকদের জুজুর ভয় দেখিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য থেকে ক্রমাগত সাইফন হয়ে যাচ্ছে বাজেটের টাকা,
অংকটা এরকম হচ্ছে এখনঃ
‘একটি চৌবাচ্চায় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের তিনটি নলের মুখ এক্স অনুপাতে ছোটো
এবং অস্ত্র কেনার লগ্নী ওয়াই অনুপাতে বড় করিলে,
কখন সম্পূর্ণ জল বড় নলটি দিয়া যাইবে নির্ণয় করো।
রাফ শিট জমা না দিলে নম্বর কাটা যাইবে।
টোকাটুকি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ,
তবে রাষ্ট্রীয় ক্যালকুলেটারের সাহায্য লওয়া চলিবে’
যুদ্ধের অংকের প্রশ্নপত্র হাতে করে বসে আছি,
একটাও কমন পড়ছে না,
কোন সিলেবাসের থেকে তুলে পৃথিবীর অধিশ্বরেরা এই পেপার সেট করেছেন,
এমন কি গার্ড দেওয়া কঠিন মুখের উপশাসকরাও সেটা বলতে পারছেন না,
কাজেই খাবি খেয়ে সাদাপাতায় আঁকিবুকিই কেটে যেতে হচ্ছে একা।
জানি গোল্লাই পাবো,
এ মারণ- গণিতের একখানা সূত্রও কোত্থাও পাচ্ছি না লেখা।
ধ্যাত্তেরি , যুদ্ধের অংকটা এ জীবনে আমার আর হলোই না শেখা।