Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

মরিশাস-মরীচিকা

FB_IMG_1650763772833
Dr. Arunachal Datta Choudhury

Dr. Arunachal Datta Choudhury

Medicine specialist
My Other Posts
  • May 25, 2022
  • 8:58 am
  • No Comments

গোরাদা ক্যামেরা ব্যাপারটা সবচেয়ে ভালো জানে। ঐতিহাসিক ভাবেই এটা সত্যি। আমাদের এই ক’জনের মধ্যে একমাত্র ওরই একটা আগফা ক্লিক থ্রি ক্যামেরা ছিল। আর সেই মহামূল্য ক্যামেরায় যদ্দিন ঝোঁক ছিল সে চেনাশোনাদের কত না ফটো তুলে দিয়েছে। গোপালের পিসি গঙ্গাচ্চানে যাচ্ছে, রামশরণের ছাগল এক চোখ বুজে কাঁটালপাতা চিবুচ্ছে, এমনধারা বহু ছবি তার সংগ্রহে। এমন কি একদিন নাকি সেজকাকা কী একটা দোষের জন্য তাকে লগুড়পেটা করতে যেতে সে নাকি অকুতোভয়ে সেই লগুড় সমেত ছবিও তুলেছিল তার সেই ক্যামেরায়।

হঠাৎই বলল গোরাদা “তোরা মিথ্যেই শোভাবাজারের মিত্র কাফে মিত্র কাফে বলে লাফালাফি করিস।”

যা ব্বাবা, হচ্ছিল ক্যামেরার কথা, কাফে টাফে এল কোত্থেকে? সে কথা শুধোতে বলল,  “আরে সেটাই তো। দোকানটা বন্ধ দেখে মেট্রো গলির সামান্য একটু ভেতরে যে ব্রেন চপের কাউন্টার রয়েছে সেখানে দাঁড়িয়ে ও বস্তুটি খেতে খেতে ভাবছিলাম কথাটা। কী অপূর্ব যে স্বাদ।”

ফুটপাতের স্টলেও কাউন্টার! এ যে গরুরগাড়ির হেড লাইট।
– ও গোরাদা “ক্যামেরার কথা কী বলছিলে, শেষ করো দেখি!”

– “ইসস্, মরিশাসের টিকিট, পাসপোর্ট ভিসা সব হয়ে গেছিল রে! দোকানটা খুললেই ব্যাপার মিটে যেত।”

এই এক দোষ গোরাদার। এই মিত্র কাফে তো পরের বাক্যেই মরিশাস।

না, এই ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বললে হবে না। একত্র করে বলি। কী ঘটেছিল তার পুরোটা। গোরাদা’ হচ্ছে গৌরহরি পুরকায়স্থ। পেশায় যে কী তা’ বোধহয় সে নিজেও জানে না। এই শুনি সে অ্যাকাউন্ট্যান্ট। ইয়া ইয়া লেজার সামলাচ্ছে কোন চার্টার্ড ফার্মে। আবার নাকি ফ্রি ল্যান্স ফোটোগ্রাফার। বিরল সব অ্যাংগেল থেকে ছবি তুলে কলকাতাকে তিলোত্তমা প্রমাণ করেছে। পাহাড় সমুদ্র জঙ্গল গ্রামগঞ্জ সর্বত্র নাকি ছড়িয়ে আছে ফ্রেম। শুধু ধরতে পারার অপেক্ষা। মরিশাস শুনে ভাবলাম, ওইরকমেরই কোনও ব্যাপার চাগিয়েছে বুঝি। কিন্তু সে’ তো অনেক খরচার ব্যাপার?

– “একেবারে মরিশাস! লটারিটটারি বাধালে নাকি?”

– “আরেঃ, না…” বলে অতি উচ্চাঙ্গের হাসি হাসল গোরাদা’!

– “ওরে, কপালে থাকলে লটারির প্রাইজ হাত জোড় করে বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। যেমন ব্রজদা’র রূপ ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।”

ব্যাপার হল, এই ব্রজমোহন কারফর্মা হচ্ছেন চার্টার্ড ফার্মের খানদানি কাস্টমার। বাপপিতামোর এন্তার জমানো পয়সায় পায়ের ওপর দিয়ে কাটিয়ে দিতে পারতেন জীবনটা। কিন্তু তা না করে তিনি হলেন অরনিথোলজিস্ট। অবশ্য এই করে যে তাঁর অর্থভাণ্ডার ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে তা’ কিন্তু নয়। এতেও অর্থাগম আছে। টাকার অঙ্ক বরং বলতে গেলে স্ফীতই হচ্ছে। সে তাঁর এই চার্টার্ড ফার্মে যাতায়াত দেখেই বোঝা যায়। কথা সে’টা নয়। সেই ব্রজমোহনের সঙ্গে কথা হল গৌরহরি সমাদ্দারের এইটেই কথা।

একটু আগের ধরতাই দিই এলোমেলো এই কাহিনিটার। একটা নতুন ক্যামেরা কিনবে গোরাদা’। ওই যে মেট্রো গলির ক্যামেরার দোকান, সেখানে যাবার আগের হপ্তায়ই গোরাদা’ গেছিল, খিদিরপুরের ফ্যান্সি মার্কেটে। তার মাসতুতো দাদা দিলীপ দাসের চেনা এক দোকানদার, যে কিনা এক ইমামও বটে, তিনি বললেন,
– “বাবু, আমরা যা বেচি, প্রায় সবই আসল মালের ফোর্থ কার্বন কপি। ফোর্থ কার্বন কপি মানে আদলটা এক কিন্তু কাজ ঘোলাটে। আমি বলে কয়ে লোক ঠকাই।”

হতাশ গোরাদা’ ইমাম সাহেবকেই পরিত্রাতা ভেবে পাকড়াল।
– “তুমিই বলে দাও, ওই আসল মাল পাব কোথায়?”

– “বাবু, তুমি মেট্রোগলির ইয়াকুবের দোকানে চলে যাও। ইমানদার আদমি। মনের মত জিনিস পেয়ে যাবে।”

মেট্রোগলিতে গোরা দা আগে যায়নি তা নয়। ক্যামেরার সুবাদেই গেছে। কিন্তু এ’বার গেল স্পেশ্যাল রেফারেন্স নিয়ে।

– “ধর্মতলার কাছেই মেট্রো গলি হচ্ছে খানদানি ক্যামেরা পাড়া। সে তোরা যতই অনলাইনের গুণগান আর বিদেশি লিটারেচার পড়ে মেগাপিক্সেল আওড়া, আসল জিনিস পেতে হলে, সেই সেখানেই যেতে হবে। গেছিস কখনও?” শেষ প্রশ্নটা আমার দিকে তাকিয়ে।

আমি বেচারাম দত্ত, নিরীহ ভাবে থাকি বলে যাকে বন্ধু বান্ধবেরা বেচারা দত্তও বলে কেউ কেউ। সেই আমাকে এই রকম ঘাঁটানো উচিত না অনুচিত কে জানে।

তো গোরাদা, উচিত অনুচিতের ধার কোনওদিনও ধারে না। ওর জন্য সবই অ্যালাউড।

সেই মেট্রোগলিতে ইয়াকুবের দোকানে গোরাদা’র আলাপ হল উলোঝুলো পোষাকের এক অ্যাংলো সাহেবের সঙ্গে। ইয়াকুবই ভিড়িয়ে দিল। ফ্রান্সিস ডিসুজা এসেছে তার মরহুম চাচার রেখে যাওয়া এক ক্যামেরা বেচতে।

ওর চাচা ছিল ডিসুজার ভাষায় সাইন্টিস। ডিসুজা যেখানে থাকে সেই বো ব্যারাকে থাকত না, এমন কি কলকাতাতেই থাকত না সে। নদীয়ার কোন গ্রামের সাইডে থাকত। কী সব নাকি আবিষ্কার করেছে। কাকার ইন্তেকালের পর খবর পেয়ে সে’খানে গিয়ে খুচরো কিছু আজিব যন্ত্রপাতি পেয়েছে। অন্যগুলোর গতি কী হবে কে জানে। চেনা জিনিসের মধ্যে, একটা ক্যামেরা পেয়েছে।

সেটাই ইয়াকুবের কাছে বেচার ধান্দায় এনেছে। জিনিসটা আজিব। ডিজিটাল ক্যামেরাই। কিন্তু দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, এটার পার্টস ওটায়, আরও কী কী সব লাগিয়ে বানানো। কেমন যেন দেখতে। এমনি ক্যামেরার মত ফোকাস অ্যাপারচারের ব্যবস্থা তো আছেই। তার সাথে আবার আর একটা নম্বর লাগানো কী যেন আছে। পঞ্চাশ থেকে পাঁচশ অবধি দাগানো। এখন দাগটা দুশোর ঘরে সেট করা।

বলছে তো ওই ক্যামেরায় ছবি ওঠে। কম দামে ঝেড়ে দেবে। যে দামে বেচাকেনা হবে ইয়াকুবকে ফাইভ পার্সেন্ট দিলেই হবে। ক্যামেরার বাক্সের ওপরে যে কোম্পানির নাম লেখা সেই নামটাও কোনও দিন শোনেনি ইয়াকুব। অবিশ্যি সে’টা কোম্পানির নাম নাও হতে পারে। রঙ দিয়ে লেখা।

কী নাম? অ্যাভিস্কোপ!

ঠিক হল পরের দিন সকালে ওই ক্যামেরা নিয়ে হাতে-কলমে ছবি তোলা হবে। সেই ছবির প্রিন্ট দেখে নেওয়া হবে কিনা, আর হলে দাম কত সে’টা ঠিক হবে। তাই হল। গোরাদা’ ডিসুজাকে সঙ্গে নিয়ে পরের দিন কলকাতার নানান অঞ্চলে সারা দিন ধরে কলকাতার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে, হরেক রকম লাইটে ও শেডে ছবি তুলল। ইয়াকুবের দোকানের কাছেই একটা স্টুডিওতে প্রিন্ট করতে দেওয়া হল। সেই ছবি দেখে ক্যামেরা পছন্দসই হলে কিনবে। ছবি ডেলিভারির দিন ইয়াকুবের দোকানে বিকেলে অ্যাপয়েন্টমেন্ট।

কিন্তু অফিসের হুজ্জুতিতে আটকে পড়ে ইয়াকুবের দোকানে যাওয়া হল না। পর পর দিন তিন চার অফিসে খুব কাজ পড়ে গেল। তারপরে দোকানে গিয়ে শোনে সেই সাহেব পরপর দু’দিন এসে ঘুরে গেছে।

ইয়াকুব নিশ্চিন্ত করল,- “কুনো চিন্তার ব্যাপার নাই। এই তো কাছেই বো ব্যারাক…”

স্টুডিও থেকে সেই ছবির কটা প্রিন্ট অবিশ্যি নিয়ে এসেছিল গোরাদা’। সব ক’টা দিতে পারল না স্টুডিও। বলল রেডি হয়নি।
কাণ্ড হল সেই ছবি নিয়েই। ব্রজমোহন, মানে ওই পক্ষীবিশারদ সেদিন অফিসে এসে কাজটাজ সেরে ফেলেছেন। এমনিতে কাস্টমারদের সঙ্গে কথা বলার ফুরসত মেলে না গোরাদার। কিন্তু সে’দিন কাজের চাপও কম ছিল। কথায় কথায় পাখির কথা উঠতে, গোরাদা’ বলল,- “ইয়ে, ব্রজদা’ আপনাকে গোটা কতক ছবি দেখাই। হপ্তা খানেক আগে তোলা। তোলার সময় খেয়াল করিনি। কী সব পাখির ছবি উঠেছে গোটা কতক ফটোতে। দেখুন দিকি!” এই বলে ফোলিও ব্যাগ থেকে খামটা বার করে ব্রজমোহনের দিকে বাড়িয়ে দিল গোরাদা’।

ব্রজমোহন প্রথমে একটু তাচ্ছিল্য করেই, “ও কী আর হবে” এই রকম ভাব করে খাম খুলে ছবিগুলো দেখতে শুরু করলেন। আস্তে আস্তে ভুরু কুঁচলে উঠল। যে কটা ছবিতে ওই পাখি আছে দেখে, মন্তব্য করলেন,- “তা বাপু গৌরহরি, ফোটোশপের কাজটাও ভালোই শিখেছ, দেখছি! ভালো বানিয়েছ ছবিগুলো। বাহবা দিতেই হবে!”

আঁতকে উঠল গোরাদা’। বলে কী? ছবি তো প্রিন্ট করিয়েছে স্টুডিওতে। ওই সব ফোটোশপের কারিকুরি সে করা দূরের কথা আদৌ জানেই না। বলল সে কথা ব্রজবাবুকে। উনি বিশ্বাস করতে চাইলেন না।

“ছবির ওপর আঙুল দিয়ে দিয়ে দেখালেন। এই যে দেখ এই পাখিটা কাদাখোঁচা। কলকাতায় দেখা যেত বহুদিন আগে। আদতে পরিযায়ী এই পাখি Gallinago stenura কলকাতায় আসেনা বহুদিনই।”

– “আর এইটিতে তো ফোটোশপের প্রত্যক্ষ প্রমাণ। এই পাখিটির নাম হাড়গিলে। ইংরেজিতে বলে গ্রেটার অ্যডজুট্যান্ট। এই পাখি এককালে গিজগিজ করত কলকাতায়। কিন্তু এখন সারা পৃথিবীতেই মোট হাজারখানা আছে কিনা সন্দেহ! এটা তো কালিঘাট ব্রিজ। এই যে। এতগুলো হাড়গিলে তোমরা ওখানে পেয়ে গেলে, এই দুহাজার একুশে? শত শত হাড়গিলে অবশ্যি এককালে ভাগাড়ের মড়া জীবজন্তু খেয়ে, এই শহরটাকে পরিষ্কার রাখত। এমনই ব্যাপার যে কলকাতা মিউনিসিপালিটির লোগো না এমব্লেম কী যেন বলে, এককালে তাতে দু’টি হাড়গিলের ছবি ছিল। অবিশ্যি উনিশশ’ একষট্টিতে সেই লোগো পালটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবু এখনও নিউমার্কেটের ওপরে সেই পুরোনো হাড়গিলেওয়ালা এমব্লেম দেখতে পাবে। কিন্তু গত একশ বছর কলকাতায় হাড়গিলে দেখেনি কেউ!”

হতবাক গোরাদা ব্রজমোহনকে বলল,- “মাইরি বলছি ব্রজদা’, কোন্নো দু’নম্বরি নেই। অফিস তো ছুটি হয়ে এল। ওই স্টুডিওটাতে চলুন না, দুজনেই যাই। বাকি ছবিগুলো দেখি গিয়ে?”

তো গোরাদা আর ব্রজমোহন স্টুডিওয় গিয়ে বাকি ছবিগুলো উদ্ধার করলেন। ছবিগুলো দেখে পক্ষীবিশারদ ব্রজমোহন আত্মহারা।- “না হে! এই অ্যাতোগুলো পাখির ছবি জোগাড় করে ফটোশপ সম্ভব না। কী জানো, কলকাতা আর তার আশপাশ থেকে পঞ্চাশ ষাটটা পাখির প্রজাতি স্রেফ উবে গেছে গত একশ দেড়শ বছরে। নাম শুনবে? রাক্ষুসে কাক, বড়ো হাড়গিলে, রেড ব্রেস্টেড ম্যারগান সার, শকুন, কালো ঈগল, ফিয়ার, সাকসাল, বালিহাঁস… কত বলব!
কিন্তু ভারি আশ্চজ্জি এ’টাই, তোমার তোলা এই ছবিগুলোতে তার অনেক ক’টাই দেখতে পাচ্ছি। কী করে হল বলো তো?”

ক্যামেরাটার আজব গঠন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করলেন ব্রজমোহন। গোরাদা’ সব বলল সময় নিয়ে। ব্রজমোহন ওই এক্সট্রা নম্বর লেখা চাকতিখানার কথা শুনে জিজ্ঞেস করলেন,
– “ওইটি কতর ঘরে সেট করেছিলে?”

– “আমরা সেটটেট কিছু করিনি। দুশোর ঘরে সেট করা ছিল। কী থেকে কী হবে ভেবে ওতে হাতটাত দিইনি।”

তো দুজনে মিলে মাথা খাটিয়ে যা বেরোলো, অবিশ্বাস্য এক কল্পনা। ডিসুজা সাহেবের কাকার আবিষ্কার তবে ওই ক্যামেরাটাই। কোনও অবাক করা কায়দায় এই ক্যামেরায় ধরা পড়ে এখনকার ফ্রেমে অতীত কালের পাখি। ওই এক্সট্রা চাকতিটা যতয় সেট করা, তত বছর আগের। অতীতের আর কিছু নয়, পাখিই শুধু। সেই জন্যেই নাম অ্যাভিস্কোপ। অ্যাভিস মানে তো পাখি!

পরের দিন ব্রজমোহন আবার। নিজেই এসে হাজির। গোরাদা’কে তাঁর সঙ্গে ওই ক্যামেরা সমেত যেতে হবে মরিশাস। টিকিট ফিকিট কোনও ব্যাপার না। পাসপোর্ট ভিসা ধরে নাও হয়ে গেছে।

– “কিন্তু মরিশাস কেন ব্রজদা’?”

– “আরে পৃথিবীতে কারওর কাছে যা নেই, মুখে মুখে শুনে আঁকা ছবি ছাড়া যার কোনও প্রমাণ নেই, তার ফটোগ্রাফ পৃথিবীকে দেখাব আমি। এই ব্রজমোহন কারফর্মা। তোমার ওই ক্যামেরায় পাঁচশ বছর পেছোতে পারলেই, মরিশাসে গিয়ে তাদের ছবি পাবো।”

ব্রজদা’র উত্তেজনা কমতে তার কথায় যা বোঝা গেল, মাদাগাস্কারের কাছের দ্বীপরাষ্ট্র মরিশাস। এখন ট্যুরিস্টদের গন্তব্যস্থল তার অতুলনীয় সৌন্দর্যের জন্য। কিন্তু এই মরিশাসের ওপর ব্রজমোহনের টান অন্য কারণে। এই মরিশাসেই পক্ষীপ্রেমীদের এক গভীর ব্যথা লুকিয়ে আছে। সে’টা হল ডোডো পাখি। এই পাখিরা উড়তে পারত না। আর সেই দ্বীপের ডোডোরা মানুষজন আর অন্য শিকারি প্রাণীও পনেরশ ষোলোশ সালের আগে দেখেনি।

দেখেনি বলেই টিঁকে ছিল। যেই না মানুষ এল মানে নাবিকেরা আর তাদের সঙ্গে দ্বীপে এল কুকুর আর অন্য প্রাণীরা, কয়েকটা ব্যাপার একই সঙ্গে ঘটল। শিকারিরা ব্যাপক হারে তাদের মারল তো বটেই, ডোডোদের খাবারের ভাঁড়ারেও টান পড়ে গেল। সতেরশ শতকের প্রথম দিকেই ডোডো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল ঝাড়েবংশে। গুটিকয় হাতে আঁকা ছবি আর কিছু হাড়গোড় আধা ফসিল ছাড়া কোনও চিহ্নই রইল না পুরো একটা প্রজাতির।
সেই ডোডো পাখির প্রামাণ্য কোনও ছবি নেই কোত্থাও। ছবি যা আছে, একটার সঙ্গে অন্যটার মিল নেই। সন্দেহ হয়, হয় তো বা অন্য পাখির ছবি।

কাজেই নতুন পাওয়া এই ক্যামেরায় মরিশাসে গিয়ে যদি হারানো ডোডো পাখির ছবি তোলা যায়! যদি যায় কেন? যাবেই! ওঃ, ভাবাই যাচ্ছে না, সে যে কী কাণ্ড হবে।

কিন্তু না। পাসপোর্ট ভিসা সবই হল। টিকিটও। ইয়াকুবের কাছে হদিশ জেনে বো ব্যারাক, মায় ডিসুজার কাকার যেখানে আস্তানা ছিল নদিয়া জেলার সেই চাপড়া অবধি ধাওয়া করে ফ্রান্সিস ডিসুজার টিকিটিরও খোঁজ পাওয়া গেল না। সেই জাদু-ক্যামেরা সমেত হাওয়ায় উবে গেছে ছোকরা। বো ব্যারাকের লোকেরা বলল, সেই নেশাখোর ছেলে দেখুন গে কোথাও হয় তো ওজনদরে বেচে দিয়েছে ভাঙাচোরা যারা কেনে সেই তাদের গুদামে।

গোরাদার হাতে সম্বল বলতে রইল ওই কালিঘাট ব্রিজের ব্যাকগ্রাউন্ডে তোলা ছবিতে কাদাখোঁচা আর হাড়গিলে। অবিশ্যি তাদের ছবি তো এমনিতেই পাওয়া যায়।

আর বুকে আটকে রইল মাঝে মাঝে ম্যাপে মরিশাসের ছবি দেখে ফেলা দীর্ঘশ্বাসটুকু।

(প্রকাশিত)

PrevPreviousIVF কেন ব্যর্থ হয়, বিশদে জানুন।
Nextদল্লী রাজহরার ডায়েরী ১Next
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

ভোট মানে ভোট শুধু।

December 7, 2023 No Comments

পাঁচখানা রাজ্যতে ভোট হয়ে গেলো। চারখানাতেই গদি ওলটপালট, হাত ছেড়ে জনগণ গেরুয়া বেছেছেন তিনটেতে, একটায় গাড়ি ছেড়ে হাত ধরেছেন। এক্সিট পোলগুলো কিছুটা মিলেছে আর বাকি

পুণ্যের সংজ্ঞা কি?

December 7, 2023 No Comments

ভারতে তীর্থস্থানগুলির বেশিরভাগই দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত কেন? কেনই বা শতকের পর শতক ধরে মানুষ এত কষ্ট করে যেতো পুণ্য অর্জনে? আসলে অতি দুরূহ দুর্গম

গোখরো কেউটে সাপের কথা।

December 7, 2023 No Comments

ডা দয়ালবন্ধু মজুমদারের ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেওয়া।

বসন্ত মালতী

December 6, 2023 No Comments

তক্তপোশের উপর গুটোনো তেলচিটে শতরঞ্চি মোড়া ছেঁড়া তোশকে হেলান দিয়ে লোকটা, গরাদে দেওয়া জানলার বাইরে চায়। কাছের জিনিস দেখতে অসুবিধে হতো আগেই— এখন দূরের জিনিসও

সততার পরাকাষ্ঠা

December 6, 2023 No Comments

★ বারাসত থেকে নিউটাউন ফিরছিলাম। এখন গোটা চারেক রুটের বাস আসে, ওদিক থেকে এপাশে। সবচেয়ে খুশি হই সরকারি বাসটা মানে সি-এইট পেলে। সেই বাসের ভাড়া

সাম্প্রতিক পোস্ট

ভোট মানে ভোট শুধু।

Arya Tirtha December 7, 2023

পুণ্যের সংজ্ঞা কি?

Dr. Amit Pan December 7, 2023

গোখরো কেউটে সাপের কথা।

Dr. Dayalbandhu Majumdar December 7, 2023

বসন্ত মালতী

Dr. Sukanya Bandopadhyay December 6, 2023

সততার পরাকাষ্ঠা

Dr. Arunachal Datta Choudhury December 6, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

465037
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]