ডাক্তারদের সঙ্গে MR, মানে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের সখ্যতার মধ্যে অনেকেই obnoxious relationship এর গন্ধ পায়। আছে বৈকি। অসত্য নয় মোটেই। রিপ্রেজেন্টেটিভদের সাথে ‘মাখামাখি’ থাকা ডাক্তারদের অনেক পিওর ব্লাড ডাক্তার কলীগ অশ্রদ্ধার চোখেও দ্যাখে।
কিন্তু আমার সাথে অসংখ্য ঐরকম ইয়ং ছেলের সখ্যতা রয়েছে, যেটা দিন কে দিন বাড়ছে। বেড়েই চলেছে। এখানেও স্বার্থের গন্ধটা আছে, তবে সেই স্বার্থটা পুরোপুরি one way .
সপ্তাহে একটা দিন আমি ওদের একটু বেশি সময় দিই। আমার ছেলের বয়সী সব ওরা। লেখাপড়া শিখেছে। ওদের মধ্যে কেউই নিশ্চয়ই ছোটবেলায় Aim in life রচনাতে MR হবে এমন কথা লেখেনি। জীবনের যে মোড়টাতে সংগ্রামের জন্য মাঠে নামতে হয়, সেই ক্ষণটাতেই হয়তো ওদের কাছে অন্য আর কোন দরজা বা অপশন ছিলনা। শখে কেউ MR হয়েছে আমি শুনিনি।
Sales বা Corporate জবে পারফর্ম্যান্সের চাপ কোনদিনই কমেনা, expectation উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকে।
বেসিক্যালি এরা এমন এক প্রতিষ্ঠার লড়াইতে জুড়ে আছে, যেখানে আছে কেবল প্রচ্ছন্ন অনিশ্চয়তা।
এদের সঙ্গে কথা বলে আমি অল্পতেই টের পেয়ে যাই, মেপে নিই কে কেমন ব্রিলিয়ান্ট। দরকার হলে বকা দিই। এই সেদিন একটি ছেলে ডিটেলিংএর সময় লেখা দেখে বলে উঠলো কুড়ি দশমিক সত্তর। তার কথা শোনা মাথায় উঠলো। তাকে থামিয়ে আমি 20.7 লিখে বললাম এটা কত? উচ্চারণ করো; তারপর আবার ধরলাম বলতো 20.700 এটা কতো? পরে, ভুল শুধরে দিই। এই ভুল সেদিন এক ইউটিভি সংবাদ পাঠিকা করলেন। ভাবছিলাম, কে দ্যায় এদের!
এতদিনের পরিচিতিতে আমি অনেক ছেলেকেই একটুখানি বাজিয়ে তার কেরিয়ারের শুরুতেই বলে দিয়েছি, এই পথ তোমার জন্য নয়। তুমি অন্য পথের জন্য এসেছো। বেশ কয়েকজনকে জানি, তারা পরে অন্য জবে সুইচ ওভার করেছে।
একজন আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কে অফিসার, একজন ডবলুবিসিএস হয়েছে। একজন এখন কলেজে পড়ায়। আরেকজন এটা পড়লেই নিজেই এসে কথা বলবে। ফেসবুকে সে বেশ পরিচিত। সে ব্লাড ব্যাঙ্কে সার্ভিস করে। যতটা মনে পড়লো, লিখলাম।
আসলে, যারা জীবনটাকে, নিজের ফ্যামিলিটাকে বেটার লিভিং স্ট্যাণ্ডার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে, তাদের আমি রেসপেক্ট করি। নিজের কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও পরিশ্রম ছাড়া আর কোনভাবে লিভিং স্ট্যাণ্ডার্ডের উন্নতি সম্ভব নয়। এক যদি লটারী না লেগে যায়। লটারী নিয়ে একটা গল্প জানা আছে, পরে বলবো।
শুধু MR বলে নয়, MR দের সাথে নিত্য নৈমিত্তিক ওঠাবসার সুবাদে ওদের ফাইটটা আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়। এমনকি, একটা নিম্নবিত্ত মুসলিম পরিবারে, বেশী শিক্ষাদীক্ষা নেই, স্বামীটা জাস্ট একটা মিস্ত্রি, ভালো কাজ জানে, পরিশ্রমী, তার মোটামুটি ফিটফাট স্ত্রীকে (দেখে মনে হয়, পেটে খানিক লেখাপড়া আছে) যখন সকালে দেখি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ইউনিফর্ম পরা সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, পুলকারের অপেক্ষায়, আর বিকেলে দেখি বাচ্চাটার ব্যাগটা একহাতে বুকে জড়িয়ে অন্য হাতে তাকে ধরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে, দুজনে তখনই বকবকম জুড়েছে, তখন আপনা হতেই আমার মনে ঐ মহিলার প্রতি শ্রদ্ধা এসে যায়।
আমি আদতে মোটেই ডিপ্লোম্যাটিক নই, ডিপ্লোম্যাসির কিছুই শিখিনি; Snob ও নই, মানুষের সঙ্গে মিশেই আমার যত সুখ। হয়তো খানিক গেঁয়ো টাইপ TUMPA বলে খাপ খাইয়ে নিতে অসুবিধে হয়না।
এই লেখাটার সৃষ্টির উৎসটা না বললে ভুল হবে।
ফেসবুক মেমারিতে অভিযানের কথা এই সেদিন লিখলাম না?
দুটো ছবি ভেসে উঠলো।
একটা ছবিতে, আমার ঘর ভর্তি MRদের নিয়ে আমি দাঁড়িয়ে আছি। আসলে, একটি একদম ইয়ং ছেলে, কোন হাউজের MR আমার এখন মনে নেই, ছেলেটি তমলুক শহরের ভেতরের রাস্তায় বাইক চালানোর সময় এক উদাসীন বয়স্কা মহিলাকে সেভ করতে গিয়ে নিজেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায়। রাহুলকে আমার ভালো লাগতো, ওর স্মরণে আমি দিনের শুরুতেই নিজের চেম্বারে ওদেরকে নিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছিলাম।
দ্বিতীয় ঘটনা (ছবি) হল, ফেসবুকের সুবাদে সকালেই দেখলাম বা জানলাম, একজনের জন্মদিন। সেইদিনই চেম্বারে ঢুকতে গিয়ে দেখি সেই বার্থ ডে বয় অন্যান্য কলিগদের সঙ্গে ভীড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। মীট করবে। আমি চুপচাপ চেম্বারে ঢুকে আমার সহকারীকে দিয়ে গোপনে একখানা বড় কেক আনালাম। তারপর ওরা দল বেঁধে ঢুকতেই আমি প্রথমে বললাম, চলো আমরা গোল হয়ে দাঁড়াই, আজ পোসেনজিতের জন্মদিন সেলিব্রেট করবো।
ঘটনা দুটো তুচ্ছ, কিন্তু এভাবেও মানুষকে ভালোবেসে তার মন জিতে নেওয়া যায়। তার জন্য ‘বাজিগর’ হওয়ার দরকার নেই।
বিস্তৃত ভালোবাসার গল্প শোনাবো বলেছিলাম না?
কথা রাখলাম।
Salute to you Sir.
I also mate you number of times but with my colleagues. Still I remember one incident that happened in your chamber which even today i share with some of my associates and that was a great learning for the young generation MRs.
I am proud of my profession as this profession has given me the opportunity to meet many learned Doctors more so, real good human beings with real good hearts, like you,in many different places.
Accept my Pranam. If life permits, I wud come to Kolaghat ( if i am nit wrong) and meet u again.
Regards