Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

ওই বুঝি কালবৈশাখী

lightning-1-1526964688277
Dr. Arunachal Datta Choudhury

Dr. Arunachal Datta Choudhury

Medicine specialist
My Other Posts
  • October 30, 2022
  • 9:14 am
  • No Comments
কালবৈশাখী চৈত্র মাস থেকে শুরু হয়ে বৈশাখ পেরিয়ে জৈষ্ঠ্যমাস অবিধি হানা দেয়।কালবৈশাখী এলে খুব সাবধানে থাকতে হয়। এই সব স্কুল জীবনে রচনার খাতায় লিখত সে।
কিন্তু রচনার খাতা তো জীবন না। কালবৈশাখী আসে। চলেও যায়। কিন্তু তার রেশ সহজে যেতে চায় না।
এমনিতেই বৈশাখ মাসে কী কী হয় জিজ্ঞেস করলে অনেক উত্তর আসবে। সুরঞ্জন জানে। পয়লা বৈশাখে আদেখলা বাঙালি বাংলা কত সাল হল বলতে পারুক না পারুক, হ্যাপি নববর্ষ মার্কা হাঁসজারু মেসেজ পাঠাবেই পাঠাবে। হালের ফেসবুকে পান্তাভাত আর শুঁটকি মাছের ছবি দিয়ে মিথ্যেমিথ্যি স্ট্যাটাস দেবে। কলকাতায় থাকলে পঁচিশে বৈশাখে পচপচে গরমের মধ্যে হেদিয়ে ভিড় করবে রবীন্দ্রসদনে নইলে জোড়াসাঁকোয়। মফসসলে এই সব নেই। তাতে কী? সেখানে নানান রকম গ্রুপবাজির আখড়া, কোনও গ্রুপের নাম চেতনায় রবীন্দ্রনাথ, কেউ বা রবির আলো। মোটমাট নিজের সংস্কৃতি প্রমাণে ব্যস্ত বাঙালি মধ্যবিত্ত ওই দিন তাক থেকে ধুলো ঝেড়ে সঞ্চয়িতা আর গীতবিতান নামাবেই।
এর মাঝে আবার একটা দিন অক্ষয় তৃতীয়া। পয়লা বৈশাখ আর অক্ষয় তৃতীয়া মিলে হালখাতার হুল্লোড়। একটা ক্যালেন্ডার, ছোট্টো একটা প্যাকেট আর ট্যালটেলে শরবত নামের তরল ফিনফিনে পলিথিনের কাপে।
সুরঞ্জনের জীবনে কিন্তু বৈশাখ এসব না। বৈশাখ মানেই কালবৈশাখী। যে কালবৈশাখীর দাপট এখনও অবধি সহ্য করে যেতে হচ্ছে তাকে।
ঘটনার শুরু কালবৈশাখীতে, দুর্ঘটনার আপাত শেষটুকুও সেই কালবৈশাখী দিয়েই। কিন্তু শুরু আর শেষ পেরিয়ে সেই কালবৈশাখীর জের চলছে আজও।
মধ্যবিত্ত বাড়ির একমাত্র ছেলে সুরঞ্জন। পড়াশুনোয়ও কী বলে… ওই মাঝারিই।
সেই সুরঞ্জন আর রঞ্জনা একই অফিসে কাজ করত। সুরঞ্জন চাকরি পেয়েছিল অতি কষ্টে ইনটারভিউয়ের সিঁড়ি পেরিয়ে। পঁচিশ তিরিশ বছর আগে পরীক্ষা ইনটারভিউ দিয়ে চাকরি পাওয়া যেত। প্যানেলে নাম ওঠার পর হা-পিত্যেশ করে অবস্থান করতে হত না।
রঞ্জনাও চাকরি পেয়েছিল অনেক কষ্টেই। কিন্তু ইনটারভিউ দিয়ে নয়। কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ডে। মা আর নাবালক ভাইকে ওর হাতে রেখে বাবা চোখ বুজেছিল।
সে বছর বৈশাখে গরম পড়েছিল খুব। সে আর নতুন কথা কী? প্রতি বছরেই পড়ে। কলকাতায় আরও বেশি করে পড়ে।
ওদের অফিসটা ডালহৌসির দিকে। একটা পুরোনো বাড়ির পাঁচ তলায়। মন্দের ভালো, ঝরঝরে একখানা লিফট রয়েছে। সুরঞ্জন আর রঞ্জনা, একই অফিস যদিও, অবিবাহিত সুরঞ্জন এই রঞ্জনাকে সেকালের ভাষায় যাকে বলত লাইন মারা (এখনের পরিভাষায় ঝাড়ি), সে রাস্তায় মোটেই হাঁটেনি।
হাঁটবার ইচ্ছে ছিল না তা নয়। বিশেষ করে অর্থনৈতিক ব্যাপারটা ইমপর্ট্যান্ট, মানে চাকরি করা মেয়ে তো। হয়ে গেলে মন্দ কী। এরকম ভাবাটা দোষের না।
কিন্তু ক্ষমতা ছিল না। সুরঞ্জন হাইটে পাঁচফুট সাড়ে চার ইঞ্চি। ঊনপঞ্চাশ কিলো। কলজের মাপ নিজের হাতের মুঠোর চাইতে কম। আর ওই ছোটো মাপের অফিসেও তার সম্ভাব্য কমপিটিটর যারা তাদের পাল্লা নেওয়া সুরঞ্জনের সাধ্যের বাইরে ছিল বলেই সে নিজে মনে করত।
তা প্রেমের শেষ টার্মিনাস যদি বিয়ে হয়, তবে তখনও বিয়ে না হওয়া তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী যুবক ছিল ওই অফিসেই।
তার মধ্যে বিপুল দাস নিজে ব্যায়ামবীর। বাহান্ন ইঞ্চি ছাতি। সারা শরীরে কিলবিল করছে মাংসপেশি। হাফ হাতা জামার ফাঁক দিয়ে যেটুকু দেখা যেত, তাইই বেশ ভয়াবহ।
আর একজন হল দীনেশ ভদ্র। তার মাসতুতো ভাই বেলেঘাটার গালকাটা পাঁচু গুন্ডা। মাঝে মধ্যেই অফিসে আসত। গলা উঁচিয়ে দীনেশকে শুধোত, – কোনও লাফড়া কারওর সঙ্গে হলেই খবর দিবি, বুইলি! চলে যাবার সময় অকারণে নিজের কোমরের কাছটায় চাপড় মেরে মাসতুতো ভাইকে নেহাত ফিসফিস না করেই বলত, – মেশিন সঙ্গে রাখি। কখন কোথায় কাজে লেগে যায়। হ্যা হ্যা হ্যা…
আর তৃতীয় জন সুনন্দ রায়। বড়লোক বাড়ির ছেলে। লাল টুকটুকে পাকা আপেলের মত চেহারা। গাড়ি চালিয়ে অফিস আসে। কেন যে এই চাকরি করে কে জানে!
এদের সঙ্গে কমপিটিশনে নামার ইচ্ছে বা সামর্থ্য, সুরঞ্জনের কোনওটাই ছিল না।
এই তিনজন বৈধ প্রার্থী ছাড়া আরও দুজন ছিল। বিয়ে নয়, এক্সট্রাম্যারাইটাল কমপিটিটর তারা। সুরঞ্জন আন্দাজ করত। বড়বাবু আর বড়সাহেব দুজনেই। দুটোই ডেট এক্সপায়ারি মাল যদিও, সুযোগ পেলে খেলতে উৎসুক। এই অফিসে আরও গোটা চারেক কন্যা আছেন। সব পুকুরেই পালা করে টোপ ফেলেন এঁরা দুজন। ওই আর কী, এক্সট্রাকারিকুলার অ্যাক্টিভিটি বা ওঁদের হবি যাই বলা যাক একে।
রঞ্জনার দিকের ইস্যু অন্য। তারও মোটেই বসন্ত রাগে গান গাওয়ার ক্ষমতা নেই। ইচ্ছেও নেই। নাবালক ভাই আর মা সমেত বাড়ির ব্যাপারে সে নাস্তানাবুদ। মা কিম্বা ভাই কেউ যে খুব অবুঝ, কিম্বা অনেক দাবীদাওয়া তাদের এমন নয়। কিন্তু তাদের দিকে মনোযোগ দিতেই হয়। এই ব্যাপারটা ছেড়ে দিলেও তার নিজের সমস্যাও প্রণিধানযোগ্য। এই সমস্যাটা ওর মাথায় রোপন করে গেছেন ওর চলে যাওয়া বাবা। এমনিতেই ও পড়াশুনোয় যাকে বলে অ্যাবাভ অ্যাভারেজ।
বাবার খুব আদরের মেয়ে ছিল সে। বাবা ওকে কথায় কথায় বলত, – বুঝলি মা, আমাদের আপিসে ডিপার্টমেন্টাল পরীক্ষা দিয়ে সরকারি চাকরিতে অনেক ওপরে যাওয়া যায়। আর তাছাড়া পড়াশুনো করলে কত রকমের যে ওপরে ওঠার রাস্তা!
সেই মায়াঅঞ্জনের অবশেষ সদ্য চাকরিতে ঢোকা মেয়েটার চোখে লেগেছিল।
তার স্বপ্নে হানা দিত রায়মশাইয়ের নায়ক। স্বপ্নে উত্তমকুমারের সেই ব্যারিটোন মন্ত্র শুনতে পেত সে। আই উইল গো টু দি টপ! দি টপ! দি টপ!
এই ব্যাকগ্রাউন্ডে নাটকের যবনিকা উঠল এক বৈশাখের বিকেলে। সেদিন বিকেলে তৎকালে দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী ইউনিয়নের ডেপুটেশন ছিল হেড অফিসে। সবাই সেই ডেপুটেশনে যাক বা না যাক অফিস কিন্তু ফাঁকা। ডেপুটেশনের পুণ্যদিনে অফিসে থাকা মানে কেরিয়ারে দাগ পড়ে যাওয়া।
শুধু রয়ে গেছে সুরঞ্জন। তাকে একগাদা বকেয়া কাজ ধরিয়ে ইউনিয়ন নেতা বড়বাবু বলেছেন,
– শোনো, আমায় তো যেতে হবেই। আমি না গেলে ডেপুটেশন অচল। তুমি কিন্তু কাজটা তুলে রেখো!
হাসিমুখে বললেও চোখ রাঙানোটা স্পষ্ট টের পাওয়া গেল।
আর রয়ে গেছে রঞ্জনা। সে সবে চাকরিতে ঢুকেছে। ইউনিয়নের মেম্বার নয় এখনও। মহিমা বোঝেনি।
বিপুল দাস যদিও বেরোবার আগে চান্স লাগিয়েছিল, – বেরোবেন নাকি মিস রঞ্জনা? ঠিক আছে, হেড অফিসে যদি নাও যান, গঙ্গার ধারে একটু ঘুরতে যাওয়া যেতেই পারে। যা গরম পড়েছে!
রঞ্জনা উত্তর না দিয়ে ঘাড় গোঁজ করে টেবিলে বসে থেকেছে।
ঠিক পাঁচটা বাজতে খাতা পত্তর গুছিয়ে সুরঞ্জন উঠল। দেরি করা যাবে না। খোলা জানালা দিয়ে পরিদৃশ্যমান কলকাতার আকাশে ঘন কালো মেঘের ঘনঘটা। বিজলি চমকাচ্ছে। অন্য প্রান্তের রঞ্জনারও টেবিল গুছোনো শেষ।
বাইরে ঝড় উঠেছে টের পাওয়া যাচ্ছে। ঝড় মোটেই বাউল বাতাস নিরীহ টাইপের নয়। প্রবল ঝড়।
লিফটের সামনে পৌঁছে বোতাম টিপে সুরঞ্জন ভাবল, ভালোয় ভালোয় বাড়ি পৌঁছোতে পারলে হয়। ওকে যেতে হবে দূরে। বনগাঁ লাইনে, মছলন্দপুর পেরিয়ে। ইতিমধ্যে রঞ্জনাও এসে পৌঁছেছে। লিফট উঠে এসেছে। লিফটম্যান নেই। অটোমেটিক মোডে রেখে সে কোথাও গেছে হয় তো।
এই অফিসের লোকেদের অভ্যেস আছে। ভেতরের আর বাইরের গেট টেনে নিয়ে চালাতে হয়। নিজেরাই পারে। পুরোনো দিনের টানা কোল্যাপসিবল গেট ওয়ালা লিফট।
★
লিফটে ঢুকেছে সুরঞ্জন আর রঞ্জনা। সবে কোল্যাপসিবল গেটটা টেনে গ্রাউন্ড ফ্লোরের বোতাম টিপেছে। বাইরে ঝড়টা আছড়ে পড়ল। লিফট নামতে শুরু করেছে, এমন সময় ঝপ করে কারেন্ট চলে গেল। ঝড় এলে কারেন্ট চলে যায়। যাবেই। ইলেকট্রিসিটি কোম্পানির অলিখিত কোড অফ কনডাক্ট এটি।
এটি নব্বইয়ের দশকের… সেই আমলের কুখ্যাত লোড শেডিং। যখন বিদ্যুৎ চলে গেলে লোকে কীর্তনের সুরে গাইত, “ইলিকটিরির তারে জ্যোতি… দেশের হইল মহা ক্ষতি, এখন কী হবে উপায় রে!”
সেই ঘুরঘুট্টি অন্ধকারে তিনতলা আর চারতলার মধ্যে আটকানো লিফটের ভেতরে যে কাণ্ড ঘটল তাতে দেশের ক্ষতি হল না লাভ হল বলা মুশকিল। করিডরের আলো নেভেনি। তার খুব সামান্য আভা পেনসিলের মত সরলরেখায় পৌঁছোচ্ছে লিফটের ভেতর।
দারুণ গুমোট। বন্ধ লিফটের ভেতরে সমূহ সর্বনাশের হু হু ঘাম নেমে আসছে বন্যার মত।
এমন সময় দাঁড়িয়ে থাকা রঞ্জনা হঠাৎই এলিয়ে পড়ল লিফটের মেঝেতে।
মহাবিভ্রান্ত সুরঞ্জন কী হল কী হল বলে লিফটের মেঝেতে বসে, সেই বেপথু যুবতীকে বাঁচানোর চেষ্টায় কী করবে ভেবে পেল না। রাস্তায় ঘাটে এমতাবস্থায় ঘাড়ে মুখে জল দেওয়ার বিধান। এই বন্ধ লিফটে জলের যোগান নেই। স্কুলে স্কাউটের ট্রেনিং প্রোগ্রামে হঠাৎ অজ্ঞান মানে সিনকোপ হওয়া পেশেন্টের প্রাণ বাঁচানোর জন্য মাউথ টু মাউথ ব্রিদিং বলে একটা রিসাসিটেশন প্রক্রিয়া শিখিয়েছিল। সেটা এই পর্যায়ে প্রযোজ্য কি না জানে না সে। কিন্তু ওইটুকুই করল, মানে করতে পারল সে।
জ্ঞান কিন্তু ফিরে এল মিনিট তিনেকের মধ্যেই।
সুরঞ্জন জানত না, অতিরিক্ত ঘামে আর উদ্বেগে এই রকম ঝপ করে ব্লাড প্রেশার কমে গিয়ে ভেসোভেগাল অ্যাটাক বলে একটা সমস্যা হয় কখনও। মানুষ চেতনাহীন হয়ে পড়তে পারে। ব্রেনে রক্ত চলাচল নর্মাল হয়ে গেলেই ফের জ্ঞান চলে আসে। সে যাই হোক রঞ্জনা জ্ঞান ফিরতেই তার নিজের মুখে সুরঞ্জনের ঠোঁটের স্বাদ টের পেল। তার মাথাটা সুরঞ্জনের দুহাতে ধরা।
এক কালবৈশাখী ঝড় সুরঞ্জনের যাবতীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের স্রেফ উড়িয়ে দিল।
কারেন্ট বেশি দেরি করেনি। লিফটম্যান কী সব কারসাজি করে তিনতলায় বাবু আর বিবিকে নামানোর ব্যবস্থা করে দিল। সঙ্গে ফাউ দিল ফ্রি উপদেশ। – এরপরে কখনওই ঝড় উঠলে লিফটে উঠবেন না। ক্ষতি হয়ে যাবে।
ক্ষতি না লাভ কী ভাবে কী কী হল অতঃপর আমরা তার বিস্তারিত বিবরণ দেব না। রঞ্জনার একগুঁয়েমিতেই কোর্টশিপ চালিয়ে যেতে হল সুরঞ্জনকে। টানা তিন বছর।
কোর্টশিপ? বিবরণ শুনলে কান্না পায়। ময়দান না, গঙ্গার পাড় না, নিদেন ভিক্টোরিয়া কী রবীন্দ্রসদন-নন্দন না। কোর্টশিপের চক্করে পড়ে, রঞ্জনার সঙ্গে সুরঞ্জনকে যেতে হয় ন্যাশনাল লাইব্রেরি, কম্পিটিটিভ কোচিং সেন্টার, কলেজ স্ট্রিটের বইদোকান। ওই যেটুকু পাশাপাশি হাঁটা, শাড়ির খসখসানি শোনা। আর রঞ্জনার যাবতীয় সিরিয়াস প্ল্যানিংয়ে অবাক হবার ভান করে সায় দেওয়া।
খুব কপাল ভালো থাকলে ফেরার পথে পুঁটিরামের দোতলায় দশ মিনিট।
তিনবছর বাদে, এই রঞ্জনার সঙ্গেই বিয়ে হল বেচারার। রঞ্জনার মত ধীময়ী কন্যা যে রিসাসিটেশনের সেই ঠোঁটের ছোঁয়াকেই এই যুগেও এত সিরিয়াসলি নেবে ভাবা যায়নি।
হ্যাঁ, যা বলছিলাম। বিয়েও হল এক বৈশাখ মাসেই। সেই বিয়ের দিনেও এমনিই কালবৈশাখী ছিল। বৌভাতের প্যান্ডেল উড়ে গেছিল। মছলন্দপুরে সেই দিন বৃষ্টিও হয়েছিল খুবই। তার মাঝে এক কাণ্ড, অনিমন্ত্রিত অতিথি নিমন্ত্রিত অতিথির দ্বিগুণ।
সে কালে গ্রামের দিকে ও’রকম হত। যাঁদের বাড়ির একজনকে হিসেবে ধরা হয়েছে, তাঁরা বাড়ির কাজের লোক মায় তাদের ছেলেপুলে সমেত আসতেন। কাজেই ব্যাচ চলাকালীন মাংস ফুরিয়ে গেল। অতিথিরা ঠায় বসে থাকলেন, নতুন পাঁঠা এনে কেটে মাংস রান্না করে পরিবেশন করা অবধি। ঝড়ে প্যান্ডেল উড়ে যাওয়া, প্যাচপেচে কাদা তার ওপরে এই মাংস-নাটক সবে মিলে যাকে বলে, আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার!
সেই তিন বছর আগে কালবৈশাখী দিয়ে লিফটের ভেতরে যে নাটক শুরু, অ্যাদ্দিন বাদে বিয়ের কালবৈশাখীতেই তার যবনিকা পড়ল।
★
আজ্ঞে না। কালবৈশাখীর রেশ এর পরেও কমেনি। সুরঞ্জন, আগেই বলেছি উদ্যমী নয় কোনও কালেই। মেধার সঙ্গতিও কম। এলডিসির থেকে ইউডিসি হতে পেরেছে শুধু চাকরির নিয়ম মত।
ওদিকে রঞ্জনা তার বাবার কথা মত কাজে উন্নতির পরীক্ষা পরপর দিয়ে গেছে। টকাটক প্রোমোশনও পেয়েছে। প্রথমে একই অফিসে সুরঞ্জনের বস হল। তারপর কমপিটিটিভ পরীক্ষা দিয়ে হেড অফিসের আরও উঁচু পোস্টে।
এতই উঁচু সে পোস্ট যে প্রথম দিকে একদিন ছোটোমেয়ের স্কুলফেরত দেখা করতে গেছিল। দরকারেই। গার্জিয়ান মিটিংয়ের রিপোর্ট দাখিল করতে। তাও অনেকদিন হল। মেম সাহেবের খাস বেয়ারা স্লিপ লিখে হাতে নেবার পরেও দেড় ঘণ্টা বসিয়ে রেখেছিল। ম্যাডাম খুব ব্যস্ত থাকেন অফিস নিয়ে।
বেচারা সুরঞ্জন দায়ে পড়ে, তার নাবালক শালাকে মানুষ করেছে। নিজের একছেলে একমেয়ে হয়েছে। তাদেরও মানুষ করেছে।
সেই কবেকার এক কালান্তক কালবৈশাখীর রেশ সারাজীবন ঘরে বাইরে বয়েই চলেছে নিরীহ সুরঞ্জন।
জীবনভর কালবৈশাখী চলেছে তার।
PrevPreviousবইওয়ালা
Nextএকটা লকডাউন গল্প -ব্যাঙNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

ভোট মানে ভোট শুধু।

December 7, 2023 No Comments

পাঁচখানা রাজ্যতে ভোট হয়ে গেলো। চারখানাতেই গদি ওলটপালট, হাত ছেড়ে জনগণ গেরুয়া বেছেছেন তিনটেতে, একটায় গাড়ি ছেড়ে হাত ধরেছেন। এক্সিট পোলগুলো কিছুটা মিলেছে আর বাকি

পুণ্যের সংজ্ঞা কি?

December 7, 2023 No Comments

ভারতে তীর্থস্থানগুলির বেশিরভাগই দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত কেন? কেনই বা শতকের পর শতক ধরে মানুষ এত কষ্ট করে যেতো পুণ্য অর্জনে? আসলে অতি দুরূহ দুর্গম

গোখরো কেউটে সাপের কথা।

December 7, 2023 No Comments

ডা দয়ালবন্ধু মজুমদারের ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেওয়া।

বসন্ত মালতী

December 6, 2023 No Comments

তক্তপোশের উপর গুটোনো তেলচিটে শতরঞ্চি মোড়া ছেঁড়া তোশকে হেলান দিয়ে লোকটা, গরাদে দেওয়া জানলার বাইরে চায়। কাছের জিনিস দেখতে অসুবিধে হতো আগেই— এখন দূরের জিনিসও

সততার পরাকাষ্ঠা

December 6, 2023 No Comments

★ বারাসত থেকে নিউটাউন ফিরছিলাম। এখন গোটা চারেক রুটের বাস আসে, ওদিক থেকে এপাশে। সবচেয়ে খুশি হই সরকারি বাসটা মানে সি-এইট পেলে। সেই বাসের ভাড়া

সাম্প্রতিক পোস্ট

ভোট মানে ভোট শুধু।

Arya Tirtha December 7, 2023

পুণ্যের সংজ্ঞা কি?

Dr. Amit Pan December 7, 2023

গোখরো কেউটে সাপের কথা।

Dr. Dayalbandhu Majumdar December 7, 2023

বসন্ত মালতী

Dr. Sukanya Bandopadhyay December 6, 2023

সততার পরাকাষ্ঠা

Dr. Arunachal Datta Choudhury December 6, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

465120
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]