আসলে আমরা বুঝতে পারি না পৃথিবীর সব যুদ্ধই হয় শান্তি আনতে।
হিটলারের কনসেনট্রেশন ক্যাম্প আর ট্রুমানের হিরোসিমা নাগাসাকি,
দুটোই সাদা পায়রা ওড়ানোর জন্য হাততালি ছাড়া কিছু ছিলো না।
ভিয়েতনাম থেকে সিরিয়া,
আফগানিস্তান থেকে হালের ইউক্রেন,
সবখানেই শান্তির দূতেরা মৃদু অশান্ত হয়েছেন কোনো বদমাসকে টাইট দিতে,
রাবণ দুর্যোধন আর হেক্টরের সময় থেকেই তো জানা আছে,
যদা যদা হি ধর্মস্য বলে স্বয়ং ভগবানই আসেন ওইসব অসুরবধে।
কোল্যাটারাল ড্যামেজে কয়েক কোটি লাশ,
কয়েক শো লাখ ধর্ষিতা নারী
আর অগুন্তি অনাথ বাচ্চা দেখে আবার দুঃখ পেয়ো না,
কুরুক্ষেত্রে আঠেরো অক্ষৌহিনী খরচা হয়েছিলো, মনে নেই?
বাংলাদেশ কঙ্গো আর বসনিয়ায় সেনাদের গণধর্ষণ শান্তির জন্য।
জোসেফ মেঙ্গলের শিশুদের ওপর পরীক্ষানিরীক্ষা সব শান্তির জন্য।
মধ্যযুগের থেকে পৃথক করা সুসভ্য আধুনিক যুগে
পৃথিবীর প্রায় সব দেশে খোঁড়া গণকবর, শুধুই শান্তির জন্য।
শান্তির জন্য সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার বিমান কেনে সাত কোটি অপুষ্ট বাচ্চার দেশ।
শান্তির জন্য সমস্ত দেশের স্বাধীনতা দিবসে তাদের মিলিটারি অস্ত্রের বিজ্ঞাপনরা প্যারেড করে,
ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার স্থপতি শিল্পী কৃষক শ্রমিক ইত্যাদি ঘর্মজীবীরা নয়।
শান্তির জন্য দুটো দেশের সীমান্ত যুদ্ধে খরচ হয়ে যায় সেই টাকা,
যার এক দশমাংশে দুটো দেশেরই সব বাচ্চা পেট ভরে খেয়ে স্কুলে যেতো।
শান্তির জন্যই চীন কোঁত করে গিলে খেয়েছে তিব্বতকে,
শান্তির জন্যই প্যালেস্টাইন আর ইজরায়েল নিয়ম করে মিসাইল ছোঁড়ে,
শান্তির জন্যই পাকিস্তান নিয়ম করে ভারতে তরুণ জঙ্গী পাঠায়,
কখনো ফিরবে না জেনে,
শান্তির জন্যই ঝাঁকে ঝাঁকে আমেরিকান তরুণ কফিনে বাড়ি ফিরেছে আফগানিস্তান আর ইরাক থেকে,
পৃথিবী শান্তিতে এতটাই আগ্রহী যে যুদ্ধের বিরুদ্ধে ইউ এন একটা শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করে রেখেছে।
প্ল্যানচেট করে দেখো হিটলার মুসোলিনি চার্চিল ট্রুম্যানকে,
সকলেই এসে বলবেন শান্তিই তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য ছিলো।
বাইডেন লুকাশেংকো, কিম জং পুতিন আর জিংপেং বাকি সব কিছুতে আলাদা হলেও,
তাঁরা যে শান্তি চান সেই দাবীতে অবিকল এক ,
আলেক্সান্ডার চেঙ্গিজ খাঁ বা তৈমুর লংয়ের অন্তত এই ভণ্ডামীটা ছিলো না।
ইউনাইটেড নেশনস নামক সংস্থার ভেটোগুলো বুঝিয়ে দেয়, পৃথিবীতে শান্তির পক্ষে কত শতাংশ রাষ্ট্র,
আধুনিক ক্যালেন্ডারে প্রতি কটা দিন শান্তির স্বস্ত্যয়ণে জ্বলে থাকে, জ্বলতেই থাকে যুদ্ধের রাবণের চিতা।
শান্তি। অভিধানে যে শব্দটি মানুষের দ্বারা রোজ গণধর্ষিতা।