দেশের জনস্বাস্থ্যের হালটা কেমন আর কোন দিকে আমাদের নিয়ে চলেছে স্বাস্থ্যসাথী-আয়ুষ্মান ভারতের মতো স্বাস্থ্যবিমাগুলো, লিখছেন স্বাস্থ্যগবেষক প্রাবন্ধিক ডাঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য।
একেবারে ভিন্ন একটি বিষয় দিয়ে শুরু করি। ১২ ডিসেম্বর, ১৯৯১ সালে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ লরেন্স সামার্স একটি গোপন নোট তৈরি করে সহকর্মীদের মধ্যে বিলি করেন, মতামত চান। ১৯৯২-এর ফেব্রুয়ারি মাসে বিখ্যাত পত্রিকা The Ecnomist নোটটি প্রকাশ করে “Let Them Eat Pollution” শিরোনামে। নোটটির মোদ্দা কথা ছিল ধনী বিশ্বের সমস্ত প্রাণঘাতী, দূষিত আবর্জনা আফ্রিকা তথা LDC বা কম উন্নত দেশগুলোতে পাচার করতে হবে।এজন্য একটি স্বাস্থ্যের যুক্তিও দিয়েছিলেন সামার্স। তাঁর বক্তব্য ছিল আমেরিকার মতো দেশে ১,০০,০০০ জনে ১ জনেরও যদি দূষিত বর্জ্যের জন্য প্রোস্টেট ক্যান্সার হয় তাহলেও আফ্রিকার মতো দেশগুলোতে যেখানে ৫ বছরের নীচে শিশুমৃত্যুর হার ১০০০-এ ২০০ জন তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং সেখানে পাচার করতে হবে এই বিষাক্ত বর্জ্য। এরকম ধারণার পুরস্কার হিসেবে ক্লিন্টন প্রশাসনে ৭ বছর U.S. Treasury Secretary পদে ছিলেন। সে মেয়াদ শেষ হলে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। এসব পুরস্কারের কথা থাক। আমরা যদি স্বাস্থ্যের চোখ দিয়ে দেখি তাহলে বুঝবো স্বাস্থ্যের জগতে দু’ধরনের নাগরিকত্ব (health citizenship) তৈরি হল। একটি পূর্ণ রাশি, আরেকটি ০ রাশি। আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের নাগরিকত্বও এরকম integer দেখা হয় – হয় ০ কিংবা ১। এখানে ভগ্নাংশের কোন জায়গা নেই। যেমনটা আজকের ভারতে এবং বিশ্বে দেখছি আমরা। স্বাস্থ্য নাগরিকত্বের প্রশ্নটিতে আমাদের মনোযোগ দেবার প্রয়োজন এ জন্য যে বিশ্ব স্বাস্থ্যের দুনিয়ায় একজন নাগরিক নৈতিকভাবে স্বাস্থ্যের সমস্ত সুবিধে ভোগ করার অধিকারী, “স্বাস্থ্য আমার অধিকার” এই শ্লোগানের বাইরে। এরকম সাওস্থ্য নাগরিকত্বের অবস্থান থেকে মান্য জনস্বাস্থ্য গবেষক এবং দার্শনিক (যিনি social determinants of health-এর ধারণার প্রবক্তাও বটে) মাইকেল মার্মট প্রশ্ন করেন – “রোগীদের কেন চিকিৎসা করছো এবং যে পরিস্থিতিতে থেকে তাদের অসুখ শুরু হয়েছিল সেখানে আবার ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছ?” প্রশ্ন করেন সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর জন্য – “Shouldn’t the doctor, or at least this doctor, be involved?” (আমরা কি যুক্ত হবোনা হয় ব্যক্তি চিকিৎসক হিসেবে কিংবা ডাক্তার-সমাজ হিসেবে?) (The Health Gap, 2016)
জেনেভা শহরে ১৯৮১ সালে ৩৪তম ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যসেম্বলি-র অধিবেশনে(৪-২২ মে) বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার সদস্য ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তাঁর ভাষণে বললেন, “আমাদের অবশ্যই অসামান্য আধুনিক হাসপাতাল প্রয়োজন।” এরপরের কথা, “স্বাস্থ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছুতে হবে। কেন্দ্রাভিমুখী হবার বদলে প্রান্তাভিমুখী হবে স্বাস্থ্যব্যবস্থা।” আরওবললেন যেস্বাস্থ্য ক্রয়যোগ্য কোন পণ্য কিংবা কোন “সার্ভিস” নয়,স্বাস্থ্য কোন পণ্য বা পরিষেবাও নয়, “এটা জানার, বেঁচে থাকার, কাজে অংশগ্রহণ করার এবং অস্তিত্বসম্পন্ন হবার চলমান প্রক্রিয়া”। এ কথাগুলোর প্রায় ৪০ বছর পরে একবার খোঁজ নিতে হবে স্বাস্থ্যের সরণিতে কোথায় দাঁড়িয়ে আছি আমরা।কোন দেশেস্বাস্থ্যেবিমা থাকবে কিনা নির্ভর করেরাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিকদর্শন এবং রাষ্ট্র কোন চোখে জনতার স্বাস্থ্যকে দেখবে তার ওপরে।আমেরিকাতে স্বাস্থ্যবিমার বাড়বাড়ন্ত সবচেয়ে বেশি। বস্তুত পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো হাঙ্গর-সদৃশ আন্তর্জাতিক বিমা কোম্পানির প্রায় সবকটিই আমেরিকার। সে দেশেই ইন্সিউরেন্স তথা স্বাস্থ্য বিমা-বিহীনএক ক্যান্সার আক্রান্ত কালো নাগরিকের হতদরিদ্র অবস্থায় প্রায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু দেখে চিকিৎসকরা উপলব্ধি করেন – “এটা আমাদের কাছে ভয়ংকর ভাবেএক ট্র্যাজেডির মতো অমানবিক যে এই ধনী দেশেমি. ডেভিসের মতো হাজার লক্ষ মানুষ অসহায়মানুষস্রেফ ইন্সিউরেন্সেনা থাকার কারণে মারা যাবে।(নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন (NEJM), নভেম্বর ১৪, ২০১৩)বিমা ব্যবস্থা পৃথিবীতে চিরকাল ছিলনা।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর এক বিশেষ আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যে বিমা জোরদার এবং ক্রমসম্প্রসারিত হয়েছে।ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ (UHC) এবং “সকলের জন্য স্বাস্থ্য” – এই দুটি ধারণার মাঝে গুণগত ফারাক আছে। UHC-তে ধরে নেওয়া হয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো যে পরিষেবা দেবে মানুষকে তার জন্য মানুষ স্বাস্থ্যের জন্য ইন্সিউরেন্স থেকে টাকা পাবে। কিন্তু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর ভিত্তিই ছিলো “বুনিয়াদি স্বাস্থ্য-সুযোগের জন্য সকলের সমান প্রবেশাধিকার” এবং এর জন্য ব্যয় বহন করবে রাষ্ট্র, রোগীকে কোন ব্যয় বহন করতে হবেনা।
স্বাস্থ্য কি তাহলে পরিশেষে বেসরকারি ইন্সিউরেন্সের আওতায় আসবে? হাঙ্গরের মতো হাঁ করে রয়েছে বহুজাতিক ইন্সিউরেন্স কোম্পানিগুলো। একবার যদি স্বাস্থ্য সুরক্ষার রাষ্ট্রীয় কবচ সরিয়ে দেওয়া যায় তাহলে সরকারের তরফে ঢাকঢোল পিটিয়ে সরকারি ইন্সিউরেন্সের কথা বলা হলেও শেষ অব্দি তা বেসরকারি ইন্সিউরেন্সের হাতেই চলে যাবে। ল্যান্সেট পত্রিকায় ২৪ আগস্ট, ২০১৯-এ প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ জানাচ্ছে – ২০১৮-তে সবচেয়ে বেশি রেভেন্যু দেয় এরকম ১০০টি সংস্থার ৬৯টি কর্পোরেট সংস্থা, ৩১টি সরকারি সংস্থা।অথচ১৯৭৮ সালে WHO এবং UNICEF-এর উদ্যোগে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের জন্য সংহত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা বা comprehensive primary health care কনফারেন্স (১৩৪টি দেশ এবং শতাধিক অ-সরকারি সংগঠন ও ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেছিল) বা আলমা-আটার ঘোষণাপত্রে উচ্চারিত হয়েছিলো “নিউ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অর্ডার (NIEO)”-এর ধারণা। দেশের সম্পদ বিতরণের ব্যাপারেও সেখানে আলোচনা হয়েছিলো। স্বাভাবিকভাবেই এরকম দৃষ্টিকোণ থেকে মেডিক্যাল সিলেবাসও তৈরি হচ্ছিলো।জন্ম নিচ্ছিল নতুন উজ্জীবনা নিয়ে “স্বাস্থ্য নাগরিকত্ব”তৈরি হবার পরিস্থিতি।
ঐতিহাসিকভাবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মেডিক্যাল সিলেবাস এবং শিক্ষার ধরণও বদলে যেতে শুরু করলো। আরও আগে লিগ অফ নেশনস-এর যুগে ১৯৩৭ সালে ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং-এ ৩-১৩ আগস্ট একটি জনস্বাস্থ্য সম্মেলন হয়েছিল – “ইন্টারগভার্নমেন্টাল কনফারেন্স অফ ফার-ইস্টার্ন কানট্রিজ অন রুর্যাল হাইজিন” শিরোনামে। গ্রামীন জনতা কিভাবে সঙ্ঘবদ্ধভাবে পারস্পরিক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে পুষ্টি (বিশেষ করে শিশু ও মায়েদের), সুষম খাদ্য, স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে নিজেদের স্বাস্থ্য তথা জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে পারে এগুলো ছিল সে সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়। বিমার কোনরকম প্রসঙ্গ ছিলনা।
১৯৬০ সালে প্রকাশিত ফ্রেডেরিখ হায়েকের লেখা অতি বিখ্যাত “দ্য কন্সটিটিউশন অফ লিবার্টি” গ্রন্থে তিনি রাষ্ট্রের তরফে দেওয়া বিনামূল্যের স্বাস্থ্যের সুযোগ-সুবিধে এবং পরিষেবাকে সরাসরি আক্রমণ করলেন। এমনকি ব্রিটেনের সফল ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বা এনএইচএস-ওবাদ গেলোনা। তাঁর কথায় – “বেভেরিজ স্কিম এবং সমগ্র ব্রিটিশ ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের বাস্তবের সাথে কোন সম্পর্ক নেই।”তাঁর যুক্তি অনুযায়ী – “বিনা মূল্যে চিকিৎসাপ্রদান দুটি মৌলিক ভুলের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে।”এ থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবেবললেন স্বাস্থ্যকে বোঝার এবং দেখাশোনার দায়িত্ব মুক্ত বাজারের হাতে তুলে দেওয়া – “এনিয়ে কোন সংশয় নেই যে স্বাস্থ্য-ইন্সিউরেন্সের বৃদ্ধি খুবই আকাঙ্খিত।”এর তিনবছর পরে ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত হল কেনেথ অ্যারো-র সমধিক বিখ্যাত তথা প্রভাবশালী “আনসার্টেনটি অ্যান্ড দ্য ওয়েলফেয়ার ইকোনমিক্স অফ মেডিক্যাল”-এওভিন্ন যুক্তিতে মুক্ত বাজারের হাতে চিকিৎসাকে প্রায় পূর্ণত ছেড়ে দেবার কথা অত্যন্ত জোর দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হল – বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য মিলবেনা, চাই ইন্সিউরেন্স।
১৯৪০-এর দশক থেকেই শুরু হয়ে গেছে কাঞ্চন মূল্যে স্বাস্থ্যকে নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া। হার্বার্ট ক্লারম্যান“হেলথ ইকোনমিক্স অ্যন্ড হেলথ ইকোনমিক্স রিসার্চ”-এদেখাচ্ছেন ১৯৬০-এর দশকে স্বাস্থ্যের অর্থনৈতিক গুরুত্ব এবং ইন্সিউরেন্স সংক্রান্ত বিষয়ে সবচেয়ে আগ্রহী ছিলো ফোর্ড ফাউন্ডেশন।এরাএকটি আন্তর্জাতিকসেমিনারেরখরচ বহন করেছিলো, জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটি সেমিনারটিকেস্পনসরকরেছিলো।প্রসঙ্গত, ১৯৭৮-এর সেপ্টেম্বর মাসে আলমা-আটা কনফারেন্সে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা সংক্রান্ত বিখ্যাত আন্তর্জাতিক সনদ গৃহীত হবার পরে আন্তর্জাতিক পুঁজির দুনিয়ায় স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ নিয়ে বোধহয় “গেল গেল রব” পড়ে গিয়েছিল। কারণ? (১) জনসাধারণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে স্বাস্থ্যনীতি নির্ধারিত হবে, (২) স্বাস্থ্যের বিকাশ সম্ভব অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক বিকাশের মধ্য দিয়ে এবং এর দায়িত্ব রাষ্ট্রের, (৩) যুদ্ধে ব্যয়বরাদ্দ কমিয়ে স্বাস্থ্যে এবং জনসাধারণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে রাষ্ট্রের তরফে খরচা বাড়ানোআবশ্যক, (৪) স্বাস্থ্য একটি সার্বজনীন, মৌলিক মানবাধিকার, (৫) এতদিন অব্দি জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত যেসব প্রোগ্রাম গৃহীত হয়েছে যেমন ডিডিটি দিয়ে ম্যালেরিয়া নিধন (আদৌ যা সফল হয়নি) ইত্যাদি সবগুলোই ছিল ভার্টিকাল প্রোগ্রাম অর্থাৎ রোগ-কেন্দ্রিক, (৬) জনস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন হরাইজন্টাল বা সর্বাত্মক প্রোগ্রাম, এবং, (৭) রাষ্ট্র জনস্বাস্থ্যের দায়িত্ব নিলে প্রাইভেট ইন্সিউরেন্সের আর কোন ভূমিকা থাকেনা।
এরকম একটা সর্বাত্মক আবহাওয়া যদি বিশ্বব্যাপী জন্ম নেয় তাহলে পৃথিবীর অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক কর্পোরেটরা যাবে কোথায়? কর্পোরেটদের কোষাগার তো কৃশকায় হয়ে যাবে! ১৯৭৯-র এপ্রিল মাসে রকফেলার ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট জন নোলস ইতালির বেলাজিও-তে “হেলথ অ্যান্ড পপুলেশন ইন ডেভেলপমেণ্ট”শিরোনামে একটি কনফারেন্স সংগঠিত করলেন। নির্যাস হিসেবে জে এ ওয়ালশএবং কে এস ওয়ারেন-এর “সিলেক্টিভ অ্যান্ড প্রাইমারি হেলথ কেয়ারঃ অ্যান ইনটেরিম স্ট্র্যাটেজি” গবেষণাপত্র প্রকাশিত হল NEJM-এ।১৯৭৭ সালে অ্যলান এন্থোভেন মুক্ত বাজারের উপযোগী “কনজিউমার চয়েস হেলথ প্ল্যান” তৈরি করলেন। কার্টার প্রশাসন এটাকে অনুমোদন করলো১৯৭৮ সালে দুটো কিস্তিতে NEJM-এ প্রকাশিত হল এ লেখা। ১৯৭৯-এর ২৭শে ডিসেম্বর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এ প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ জানালো – হেলথ কেয়ার করপোরেশনগুলোর নীট আয় ১৯৭৯ সালে ৩০-৩৫% বৃদ্ধি পেয়েছে, ১৯৮০ সালে আরো ২০-২৫% আয় বৃদ্ধি প্রত্যাশিত।
সব মিলিয়ে, বেছে-নেওয়া (selective) প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে “ইন্টেরিম স্ট্র্যাটেজি”বললেও শেষ অব্দি এটাই চূড়ান্ত স্ট্র্যাটেজি হয়ে গেল। জনস্বাস্থ্য আবার ফিরতে শুরু করলো ভার্টিকাল প্রোগ্রামের দিকে। শুরু হল প্রাইভেট ইন্সিউরেন্স, স্বাস্থ্যের পরিবর্তে স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং মুক্ত বাজারে স্বাস্থ্যের উপকরণকে তুলে দিয়ে রাষ্ট্রের ক্রমাগত হাত গুটিয়ে নেওয়া। “স্বাস্থ্য আমার অধিকার” পরিবর্তিত হল ব্যক্তির স্বাস্থ্যের জন্য দামী স্বাস্থ্য পরিষেবায়। মেডিক্যাল পভার্টি ট্র্যাপ-এ ভারতে প্রতি বছরে প্রায়ইংল্যান্ডের জনসংখ্যার সমান (সাড়ে ৬ কোটি মানুষ) জনসংখ্যা তলিয়ে যাচ্ছে দারিদ্র্যের অতলে।
অথচ বিকল্প একটা ইতিহাসও ছিল পৃথিবীতে কয়েক দশক আগে। ১৯৫০-৭০-র দশক জুড়ে বিশ্বরাজনীতিতে দ্বিমেরু বিশ্বের জীবন্ত, প্রবল পরাক্রান্ত, আগ্রাসী মুক্ত পুঁজি এবং সাম্রাজ্যবাদের মুখোমুখি দাঁড়ানোর মতো ভিন্ন একটি আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার অস্তিত্ব উপস্থিত ছিল বাস্তবে তথাজনমানসে। দ্বিমেরু বিশ্ব রাজনৈতিক এবং সামাজিক একটি “তৃতীয় পরিসর”-এরঅনুঘটক হয়েছিল। বিশ্বের মানুষের কাছে ন্যায্য দাবীতে দর কষাকষির ক্ষমতা বেশি ছিল। পরবর্তীতে একমেরু বিশ্বের উদ্ভব এসবকিছুকে পরিপূর্ণভাবে বিনষ্ট করেছে। এ সময়েই শ্লোগান উঠেছিল – স্বাস্থ্য আমার অধিকার।জনস্বাস্থ্যের আতুর ঘর হল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এখানে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা হয়, চিকিৎসা হয় মাল্টি-ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি রোগীর এবং আরও অনেক অবহেলিত রোগের।“ডু উই কেয়ার”-এর সুপরিচিত বিশেষজ্ঞ লেখিকা সুজাতা রাও বলেন,“প্রচুর অর্থের বরাদ্দ থাকে হার্ট সার্জারি, অন্তঃকর্ণকে নতুন করে স্থাপন করা বা সিজারিয়ান সেকশনের জন্য।” কিন্তু প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং গোড়ার ডায়াগ্নোসিসের জন্য কোন বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ নেই“প্রিভেন্টিভ মেডিসিন, বৃদ্ধদের যত্ন, বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য কিংবা সংক্রামক বা অ-সংক্রামক রোগকে মূল থেকে ধরার ক্ষেত্রে, সাপে কাটা বা পেশাগত রোগের জন্য, যেগুলো দরিদ্র মানুষের জন্য প্রয়োজনীয়।”
আয়ুষ্মান ভারত এবং প্রস্তাবিত নতুন স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প এখানে এসে নীরব। আমজনতা কি করবে? তার স্বাস্থ্যের খোঁজ কে নেবে? আবার মার্মটের কথায় আসি। তিনি গণতন্ত্রে বিশ্বাস রাখেন। মনে করেন – “জনসাধারণ বলতে পারবে কখন তাদেরকে মিথ্যে কথা বলা হচ্ছে।” সেকাজে এখন ব্রতী হবার সময় এসেছে।
Although we are in this profession,we are practically doing nothing for common people.Miscalculation, misjudgements,misutilizations, mismanagements are prevailing all-around
Govt নিজেদের দায়িত্ব থেকে হাত ঝেড়ে ফেলছে আসতে আসতে , সব কিছু ই যখন insurance company debe তাহলে tax er টাকা গুলো কি করবে, বেসিক ফেসিলি ফর্ভাইড করতে না পারলে tax o নেওয়ার o দরকার নেই। সব আসতে আসতে pay n use system টাইপ এর হয়ে যাচ্ছে , কিযে হবে ভবি্যতে ভগবান জানে,
A timely article indeed. However I have a strong opinion on this subject. Instead of criticising the corporate world of health sector including insurance companies, we need to look at ourselves. Have we given enough importance to healthcare as one of the primary objectives of development since independence? Has any of the central and state elections in the past 75 years had health as the key issue that decided the votes? Thanks Jayanta for raising the awareness that needs to percolate to the mass. ??