আনন্দবাজার পত্রিকা-র (২৭.০৪.২১) একটি খবরের শিরোনাম “প্রতিরক্ষা বরাদ্দে রাশিয়াকে টপকে তিনে ভারত, আগে শুধু আমেরিকা আর চিন”। পরে সংবাদে বলা হয়েছে – “২০২০ সালের প্রাপ্ত তথ্য বলছে, সে বছর আমেরিকার মোট প্রতিরক্ষা বরাদ্দ ছিল ৭৭,৮০০ কোটি ডলার (প্রায় ৫৮ লক্ষ ৩ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা)। চিনের ২,৫২,০০ কোটি ডলার (প্রায় ২২ লক্ষ ৭১ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা)। ভারতের ৭,২৯০ কোটি ডলার (প্রায় ৬ লক্ষ ৫৭ হাজার ২১২ কোটি টাকা)।” প্রায় একই সময়ে (২৪.০৪.২১) ইকনোমিক টাইমস পত্রিকার সংবাদ হল – “As COVID-19 devastates India, deaths go undercounted”। নিউ ইয়র্কার সংবাদপত্রের খবর (২৭.০৪.২১) “India’s Uncounted COVID-19 Deaths”। বলা হল – “unofficial statistics collected by journalists suggest that the true numbers are likely far greater, with one Financial Times analysis showing a death toll more than eight times the official count.”
একদিকে যুদ্ধখাতে বিপুল ব্যয়বরাদ্দ বৃদ্ধি, অন্যদিকে এক সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ভাইরাস নিয়ে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ। এরকম এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ২০২১-এর এপ্রিল শেষের ভারতবর্ষ। আমেরিকার বিখ্যাত সংবাদসংস্থা সিএনএন-এর গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ “As Covid sweeps India, experts say cases and deaths are going unreported”। এ সংবাদ থেকে জানতে পারছি যে স্বাভাবিক সময়েও দেশের ন্যাশনাল রেজিস্টারে ৮৬% মৃত্যু রেজিস্টার্ড হয়। এবং নথীকৃত মৃত্যুর মধ্যে কেবলমাত্র ২২%-এর ক্ষেত্রে ডাক্তারের সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। এরপরে যোগ করা হচ্ছে – “Covid fatalities could be underreported by a factor of between two and five — meaning the real death toll could be close to 990,000.” ব্লুমবার্গ-এর সংবাদের (২৩.০৪.২১) শিরোনাম “Even Record Death Toll May Hide Extent of India’s Covid Crisis”। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর সংবাদ (২৮.০৪.২১) সম্ভবত বর্তমান সময়ের নির্যাসকে তুলে ধরেছে – “Not just the coronavirus, the government’s ineptitude has brought this tsunami on us”।
কেন এরকম একটি স্বাস্থ্যসংকটের সুনামির সম্মুখীন হতে হল আমাদের? কেন কোন বেড পাওয়া যাচ্ছেনা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে? সামান্য অক্সিজেনের জন্য খাবি খেতে খেতে কেন এত এত রোগী মারা যাচ্ছে, এমনকি হাসপাতালেও? কেন ভেন্টিলেটরের এমন সংকট শুরু হল? অথচ গতবছরের অমানুষিক লকডাউন আমাদের হাতে দিয়েছিল প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা, সামাজিক সুরক্ষা এবং সংকটজনক পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট সময়। বিশেষজ্ঞরা – এপিডেমিওলজিস্ট, মেডিক্যাল এক্সপার্ট, হেলথ অ্যাক্টিভিস্ট, সামাজিককর্মী এবং পরিসংখ্যানবিদ প্রমুখ – সতর্ক করে আসছিলেন এরকম এক পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে এই মর্মে। আমরা কর্ণপাত করিনি। আমাদের স্বাস্থ্যনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে (শুধু স্বাস্থ্য কেন, সব নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রেই) প্রধান ভূমিকা নেয় আমলা এবং রাজনীতিবিদরা। এক্সপার্টরা উপেক্ষিত থাকেন। এটা দেশের এবং জাতির দুর্ভাগ্য। নীতিনির্ধারকেরা এই সতর্কবাণীতে আদৌ কর্ণপাত করেননি। তার একটি পরিণতি আজকের এই মর্মান্তিক মৃত্যু মিছিল। সিএনএন সংবাদসংস্থার এই ডায়াগ্রামটি (১.০৫.২১) দেখলে আরও ভালোভাবে সংকটের চেহারা বোঝা যাবে। এ সংবাদে বলা হয় – “Modi’s apparent inaction prompted a wave of anger, spurring hundreds to share hashtags on Twitter such as #ModiMustResign and #ModiMadeDisaster. This week, the national vice president of the Indian Medical Association, Navjot Dahiya, called Modi a “super spreader” for holding political rallies and allowing millions of pilgrims to descend on Haridwar in northern India, to celebrate the Hindu festival Kumbh Mela, local media reported.”
নেচার পত্রিকায় (৬.০৫.২১) প্রকাশিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদের শিরোনাম “Indian government should heed its scientists on COVID”। প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হল – “The world stands aghast at the COVID-19 crisis in India. There have been more than 300,000 new cases per day for the past week; hospitals are full; oxygen supplies are short; and cremation sites are unable to keep pace.” শ্মশানে উপচে পড়ছে মৃতদেহ। দাহ করার জায়গা দেওয়া যাচ্ছেনা। বলা হল – “For months, individual epidemiologists, virologists, immunologists and public-health experts had been warning that the fight against the pandemic was not over, that better data were needed and precautionary measures were warranted. They went unheard. Their arguments did not fit the government’s narrative that the pandemic was under control.” সরকারের দেওয়া তথ্য এবং বয়ানের সাথে এত এত এক্সপার্টের মতামত খাপ খাচ্ছিলনা বলে সরকার এঁদেরকে কোন তথ্য সরবরাহ তো করেইনি, এঁদের কোন পরামর্শই কানে তোলেনি।
২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বর সদ্য ক্ষমতায় আসা বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং লক্ষ্ণৌ-এর কিং জর্জেস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির ১০ম কনভোকেশনে বলেছিলেন – “যদি আমাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে শক্তিশালী করে তুলতে পারি তাহলে এইমস, সঞ্জয় গান্ধী পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়ান্সেস এবং কিং জর্জেস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে শতকরা ৮৫ ভাগ বোঝা কমিয়ে আনা যাবে।” সমধর্মী কথা আজ থেকে ৪০ বছর আগে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা বলেছিলেন। ১৯৮১ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ কংগ্রেসের ৩৪তম অধিবেশন বসেছিল জেনেভাতে, ৪-২২ মে, ১৯৮১। সে সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, “আমাদের অবশ্যই অসামান্য আধুনিক হাসপাতাল প্রয়োজন।” এরপরের কথা ছিল, “স্বাস্থ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছুতে হবে। কেন্দ্রাভিমুখী হবার বদলে প্রান্তাভিমুখী হবে স্বাস্থ্যব্যবস্থা।” আরও বললেন, ”স্বাস্থ্য কোন পণ্য নয় যা পয়সা দিয়ে কেনা যায় কিংবা এটা কোন ‘সার্ভিস’ নয় যা দেওয়া হবে। এটা জানার, বেঁচে থাকার, কাজে অংশগ্রহণ করার এবং আমাদের অস্তিত্বসম্পন্ন হবার চলমান একটি প্রক্রিয়া”। আরও বলেছিলেন, “আমাদের স্বাস্থ্যসেবা শুরু হবে সেখান থেকে যেখানে মানুষ রয়েছে, সেখান থেকে, যেখানে রোগের সমস্যার শুরু সেখান থেকে”। আধুনিক সময়ের পূর্ণত পণ্যায়িত ঝকমকে, চোখ-ধাঁধানো স্বাস্থ্য পরিষেবার (স্বাস্থ্য নয় কিন্তু, এই ভুল করবেন না) যুগে ৪০ বছর আগের এ উচ্চারণ এবং উপলব্ধি বৈপ্লবিক বলে মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়। গুরুত্বপূর্ণ কিছু অভিমত দিলেন ইন্দিরা গান্ধী – স্বাস্থ্য, প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা, স্বাস্থ্যের পণ্য হয়ে ওঠা বা স্বাস্থ্যের অধিকার ইত্যাদি কিছু মৌলিক বিষয়ের স্বাভাবিক, সহজলভ্য সমাধানের পথে। আজ ৪০ বছর পরে একবার খোঁজ নিতে পারি স্বাস্থ্যের সরণিতে কোথায় দাঁড়িয়ে আছি আমরা।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো কার্যত খণ্ডহরের মতো অবস্থা। দ্রুত কিছু তথ্য আমরা দেখে নিই। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে প্রায় প্রতিস্থাপিত করে ২০১৮-১৯ থেকে শুরু হয়েছে শ্রুতিমধুর “হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টারস”। এখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের “মতো” চিকিসা হবে বলে আমরা শুনেছি। ১,৫০,০০০ সেন্টারের জন্য বরাদ্দ টাকার পরিমাণ ১,২০০ কোটি টাকা। গড়ে প্রতিটি সেন্টার পাবে বছরে ৮০,০০০ টাকা। যদি সপ্তাহে সপ্তাহে ১০০ জন করে রোগীও দেখা হয় তাহলে সবচেয়ে কমসংখ্যক রোগী হতে পারে ২৫,০০০ জন। গড়ে রোগী পিছু বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ টাকার মতো। এতে ওষুধ বা টেস্ট – কোনটার খরচ উঠবে? সেন্টার চালানোর খরচ বাদই দিলাম।
২০১৬ সালে সংসদীয় কমিটির প্যানেল রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি ১০,১৮৯ জন মানুষের জন্য ১ জন সরকারি ডাক্তার, প্রতি ২,০৪৬ জনের জন্য সরকারি হাসপাতালে একটি বেড বরাদ্দ এবং প্রতি ৯০,৩৪৩ জনের জন্য একটি সরকারি হাসপাতাল – এই হচ্ছে সেসময় পর্যন্ত স্বাস্থ্যের চিত্র। ২০২০ সালের মার্চ মাসের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৩৭ কোটি মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে বেড রয়েছে ৭,১৩,৯৮৬টি। এর অর্থ দাঁড়ায়, প্রতি ১০০০ ভারবাসীর জন্য ০.৫টি করে বেড। বিহারে আবার এই সংখ্যা ১০০০-এ ০.১১, দিল্লিতে ১.০৫ – বৈষম্য সহজেই চোখে পড়ে।
এখানে আরেকটি তথ্য উল্লেখযোগ্য। এবারের স্বাস্থ্য বাজেট পেশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নন, করেছেন অর্থমন্ত্রী। স্বাস্থ্যকে রাষ্ট্রের দায়িত্বের আওতা থেকে পূর্ণত বিদেয় দিয়ে মুক্ত বাজারের হাতে তুলে দেবার কোন ইঙ্গিত কি এর মাঝে প্রচ্ছন্ন আছে? Wire.in সংবাদপত্রের খবর ছিল (০১.০২.২১) “Despite Govt Claims, India’s Health Budget Only Around 0.34% of GDP”। এই সংবাদে বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে – “যেখানে এরকম সংকটকালীন মুহূর্তে স্বাস্থ্যখাতে ব্যয়বরাদ্দ বাড়ানোর একান্ত প্রয়োজন ছিল সেখানে সমস্ত হিসেবনিকেশ করে দেখা গেছে জিডিপির মাত্র ০.৩৪% স্বাস্থ্যখাতের জন্য বরাদ্দ আছে। গতবছর এই সংখ্যা ছিল ০.৩১%।“ যদিও মুদ্রাস্ফীতির হিসেব এর মধ্যে ধরা হয়নি। প্রতিবেদনের সিদ্ধান্ত – “if a globally debilitating pandemic could not prompt the government to prioritise health spending, it is difficult to imagine what will.” ফেব্রুয়ারি মাসের এরকম সতর্কবাণীর পরেও স্বাস্থ্যখাতে ব্যয়বরাদ্দ নিয়ে আলাদা করে কোন চিন্তাভাবনা করা হয়নি। এর খেসারত সমগ্র ভারতবাসী দিচ্ছে – অগণিত চিতা জ্বলছে যমুনা এবং সবরমতি নদীর ধারে।
এখানে মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্য রাজ্যের তালিকাভুক্ত বিষয়, কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব নয়। কেন্দ্রীয় সরকার স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে, এমনকি কোভিডের এই মারণান্তক সময়েও, প্রায় হাত ধুয়ে বসে আছে।
Center for Disease Dynamics, Economics and Policy (CDDP)-র (ভারতীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগ) সমীক্ষা অনুযায়ী (২০২০), সরকারি হাসপাতালে বেডের সংখ্যা প্রায় ৭,০০,০০০। এই সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, ভারতে প্রায় ১৯ লক্ষ হাসপাতাল বেড আছে (সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে), ৯৪,৯৬১টি আইসিইউ বেড আছে (এর মধ্যে সরকারি ক্ষেত্রে রয়েছে ৩৫,৬৯৯ এবং প্রাইভেট সেক্টরে ৫৯,২৬২), আছে ৪৮,০০০ ভেন্টিলেটর। ৭টি রাজ্যে ঘনীভূত হয়ে আছে এই বেড ও ভেন্টিলেটর – উত্তরপ্রদেশ (১৪.৮%), কর্ণাটক (১৩.৮%), মহারাষ্ট্র (১২.২%), তামিলনাড়ু (৮.১%), পশ্চিমবঙ্গ (৫.৯%), তেলেঙ্গানা (৫.২%) এবং কেরালা (৫.২%)। এখানে একটি চিত্র দিলে আন্তর্জাতিক মানে আমাদের দেশের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বেডের সংখ্যার একটি প্রতিতুলনা পাওয়া যাবে।
২০২০ থেকে কোভিড অতিমারি শুরু হবার পরে এ সংখ্যা খানিকটা বেড়েছে আশা করা যায়। ২০২১ সালের সর্বশেষ তথ্য আমাদের হাতে নেই।
অক্সিজেন সংকট
ভারতে প্রতিদিন ৭,৫০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন তৈরি হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় চিকিৎসার বা মেডিক্যাল ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হয় প্রতিদিন ৬,০০০ মেট্রিক টন। বর্তমানের অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য চাহিদা বহু বহুগুণ বেড়ে গেছে। এক নারকীয় পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। অক্সিজেনের অভাবে রোগী এমনকি ফুটপাথেও খাবি খেতে খেতে মারা যাচ্ছে। Scroll.in সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী (১৮.০৪.২১) – “It took eight months to invite bids for over 150 oxygen generation plants costing just Rs 200 crore. Six months later, most still aren’t up and running.”
আমাদের নীতি নির্ধারকদের কি কোন অনুমানই ছিলনা যে এরকম এক পরিস্থিতি জন্ম নিতে পারে? আমাদের রাষ্ট্রিক নীতি নির্ধারণের মাঝে জনস্বাস্থ্যের কি কোন স্থানই নেই? যে মানুষটি মারা যাচ্ছে সে কখনো এ প্রশ্ন করতে পারবেনা। কিন্তু ঢাল-তলোয়ারহীন প্রতিটি স্তরের নিবেদিতপ্রাণ স্বাস্থ্যকর্মীদের যে বাহিনী লাঠি দিয়ে কোভিডের কামানের গোলার মোকাবিলা করছে তারা এই সঙ্গত প্রশ্ন নিশ্চয়ই করবেন। এ সংকট তো আসলে ভারতের জনস্বাস্থ্যের মহাবিপর্যয়। পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী নির্ঘন্ট ঘোষণার পরেই ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম সরকারের কাছে করোনা বিপর্যয়ের আশঙ্কা করে বারংবার চিঠি দিয়েছে। সতর্ক করেছে। কিন্তু সতর্কতার বিধি শিকেয় তুলে নির্বাচন কমিশন ৮ দফায় এ রাজ্যে ভোট করিয়েছে। কোভিড ছড়িয়ে পড়ার পথ সুগম হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার কুম্ভমেলায় ধর্মাচরণের জন্য কয়েক লক্ষ লোকের জমায়েতে অনুমতি দিয়েছে। সংক্রমণ ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে।
৩.০৫.২০২১-এর সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী (ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যসূত্র) মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা – ২ কোটি ১২ লক্ষের বেশি। এর মধ্যে সেরে উঠেছে – ১৬ লক্ষ ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ। মৃত্যু হয়েছে – ২ লক্ষ ২০ হাজার ৫৭১ জনের।
এতগুলো মানুষের প্রাণ ঝরে যাওয়া কি অনিবার্য ছিল? হিন্দু সংবাদপত্রে (২৮.০৪.২১) একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে “A pragmatic approach for COVID-19” শিরোনামে। এখানে বলা হয়েছে “সংকটটিকে সংকট বলে স্বীকার করতে হবে” এবং গণটিকাকরণ করতে হবে। এরসাথে সাধারণ স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধিগুলো, যেমন আবশ্যিকভাবে নাক-মুখ ভালোভাবে ঢাকা মাস্ক, সাবান জল বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করা, ৬-৮ ফুটের দূরত্ব রক্ষা করে চলা, অবশ্যই কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
গণটিকাকরণ
এনডিটিভি-র সংবাদ অনুযায়ী (২৯.০৪.২১) – একদিকে ভারতে গত ২৪ ঘন্টায় রেকর্ডসংখ্যক (৩,২৯৩) মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন কেসের সংখ্যা (৩ লক্ষ ৬০ হাজার) বিশ্বে রেকর্ড করেছে, অন্যদিকে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ ভারতবাসী কোভিডের ভ্যাক্সিনের জন্য অ্যাপ্লাই করেছে। মৃত্যুর পাশাপাশি রয়েছে বেঁচে থাকার সুতীব্র আকাঙ্খা। বিবিসি-র সংবাদ অনুযায়ী (২৮.০৪.২১ – “India coronavirus: Can it make enough vaccines to meet demand?”) ভারতে এখনো পর্যন্ত জনসংখ্যার ১০%-এর কম লোকের ভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ নেওয়া হয়েছে।
নেচার-এর মতো জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন (“India’s COVID-vaccine woes – by the numbers”, ১৫.০৪.২০২১) জানাচ্ছে – “গতবছর জুন মাসে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ঘোষণা করেছিল সিরাম ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়াকে ১০০ কোটি ভ্যাক্সিন ডোজের জন্য লাইসেন্স দিয়েছে low- and middle-income দেশগুলোর কাছে পৌঁছনোর জন্য। কিন্তু গত মার্চ মাসে যখন ভারতের তরফ থেকে রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন অব্দি মাত্র ৬ কোটি ৪০ লক্ষ ডোজ রপ্তানি হয়েছে। এবং এর মধ্যে ২ কোটি ৮০ লক্ষ ডোজ রপ্তানি হয়েছে COVAX (দরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের দেশে সবার কাছে ভ্যাক্সিন পৌঁছে দেবার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা) মারফৎ।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-র সংবাদ অনুযায়ী (২১.০৪.২১), এখনো অব্দি পূর্ণ টিকাকরণ হয়েছে ১ কোটি ৭৪ লক্ষ ভারতীয়ের। এর মধ্যে ১ কোটি ১৪ লক্ষ জন হচ্ছেন প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মী এবং অন্যান্যদের। এছাড়াও ১৯.০৪.২১ তারিখ অব্দি ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী গ্রুপে ৪ কোটি ২৩ লক্ষ জনের এবং ৬০ বছরের ওপরে ৪ কোটি ৬৬ লক্ষ মানুষের টিকা হয়েছে। এ রিপোর্টেই বলছে, ১৯.০৪.২১-এর পরবর্তী সপ্তাহে ২৮ লক্ষ মানুষ ভ্যাক্সিন নিয়েছে। এ সংখ্যা এর আগের সপ্তাহের (১২.০৪ – ১৮.০৪) থেকে কম। আগের সপ্তাহে সংখ্যা ছিল ৩৪ লক্ষ ৫০ হাজার। অর্থাৎ, টিকারণের ক্ষেত্রে একটি দ্বিধা কাজ করছে একদিকে, অন্যদিকে টিকার সরবরাহ কম – এ দুয়ে মিলে এক সপ্তাহে টিকাকরণ অনেকটাই কমে গেছে।
২১.০৪.২১ তারিখের আনন্দবাজার পত্রিকা-র সংবাদ “টিকাঃ এখন দামও বেশি, দায়ও রাজ্যের”। টিকাকে অন্যান্য পলিসির সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে বাজারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে বর্তমানে সিরাম ইন্সটিটিউট যে টিকা ১৫০ টাকায় এবং ভারত বায়োটেক ২০৬ টাকায় দিচ্ছে সে দাম (দুটি ডোজ মিলে) ২০০০ টাকা থেকে ৮০০-১০০০ টাকা অব্দি লাগতে পারে। যেদেশে সামাজিক সুরক্ষা বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব প্রায় নেই, কয়েককোটি মানুষ কর্মহীন, দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করা মানুষের সংখ্যা ইংল্যান্ডের জনসংখ্যার চেয়ে বেশি সেদেশে এভাবে, এই অর্থমূল্যে কজন টিকা কিনতে পারবে? মোদ্দা কথা হল, সার্বজনীন টিকাকরণ হয়তো একটি কুহকী আশা হিসেবে রয়ে যাবে। ভারতে ভ্যাক্সিন সংকটের চিত্র নীচে দেওয়া হল।
২০.০৪.২০২১ তারিখ রাতে টিভিতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দ্যেশ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেঊ মোকাবিলার লক্ষ্যে ভাষণ দিয়েছেন। জোর দিয়েছেন ব্যক্তিগত আচরণবিধি এবং ঘরের মধ্যে থাকার ওপরে। কিন্তু যারা কোভিড রোগী, বিভিন্ন হাসপাতালে আক্ষরিক অর্থে অক্সিজেনের জন্য খাবি খাচ্ছেন, শ্বাস নিতে পারছেন না তাদের অক্সিজেনের ব্যবস্থা কি হবে তা জানাননি। (উল্লেখ করা দরকার, অক্সিজেনের সরবরাহের সমস্যার জন্য ভেলোরের সরকারি হাসপাতালে ১৯.০৪-এ ৭ জন কোভিড রোগী এবং ২১.০৪-এ মহারাষ্ট্রের নাসিকে ২৪ জন কোভিড রোগী মারা গিয়েছে।) দেশের মধ্যে ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার ট্রান্সমিশন চেইন আটকানোর যে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভ্যাক্সিনের ব্যবস্থা করতে হবে তার কি হবে সেকথা আমরা জানতে পারিনি। নতুন করে কোভিড হাসপাতাল তৈরি বা হাসপাতালের কোভিড বেড বাড়ানোর লক্ষ্যে নির্দিষ্টভাবে কি কি করা হবে সে প্রশ্নেরও জবাব পাওয়া যায়নি। উত্তর পাওয়া যায়নি চিকিৎসার একান্ত প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেটর এবং অন্যান্য সামগ্রীর সুরাহা কিভাবে হবে এবং তার জন্য কি পরিকল্পনা রয়েছে। এসব কোন কথাই আমরা জানিনা। যেমন আমরা জানতে পারিনি কি কারণে একেবারে ফ্রন্টলাইন কোভিডযোদ্ধা ডাক্তারদের চিকিৎসার জন্য যে ইন্সিউরেন্স কেন্দ্রীয় সরকার গতবছর চালু করেছিল সে ইন্সিউরেন্স গত কয়েকদিন আগে বন্ধ করে দেওয়া হল কেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় (১.০৫.২১) মন্তব্য করা হয়েছে – “Overconfidence and missteps contributed to the country’s devastating second wave, his critics say, tarnishing the prime minister’s aura of political invulnerability.” এর সাথে যুক্ত করতে হবে প্রবল আত্মতুষ্টির ফোলানো বেলুন। এসমস্তকিছুর সম্মিলিত যোগফলে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ বেলাগাম হয়ে গেল।
আমাদের স্বাস্থ্যনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কি “পলিসি প্যারালিসিস” চলছে?
সত্যি কথাই বলা হয়েছে। আমাদের দেশে নীতি নির্ধারণে যোগ্যতমদের কোন গুরুত্ব দেওয়া হয় না, সবটাই আমলা নির্ভর, তারই ফলশ্রুতি।
প্রয়োজনীয় লেখা, কিন্তু এভাবে এই কথা গুলোকে আটকে রাখলে তো সুরাহা কিছু হবে না। এই লেখা কে যত বেশি সংখ্যক জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
Excellent presentation sir
Sudhu policy paralysis na. Amader mind k paralyzed, nijeder mimimum requirements o amra bujte parchi na. Khub pathatic din
যুক্তিসঙ্গত।
ভয়াবহ ভবিষ্যৎ এর আশংকা।
অনিয়ন্ত্রিত দেশ।
ভারতের পলিসি প্যারালিসিসের মূলে ভারত সরকার এবং ভারতবাসীর কোভিড নামের অসুখটিকে ঠিকমতন না “চিনতে” পারার একটি সমস্যা কাজ করেছে | শুধু ভারত নয়, বহু দেশেই, বিশেষ করে যে সমস্ত দেশে চিকিৎসা পরিষেবা, এবং অসুখ প্রতিরোধ করার চাইতে অসুখ করলে তারপর তার নিরাময়ের ওপরেই স্বাস্থ্যব্যবস্থায় অধিক জোর দেওয়া হয়েছে, সেই সব দেশগুলোতে। ভারত গুটিকয়েক সেই সমস্ত দেশের মধ্যে পড়ে। এই সমস্ত দেশে যেহেতু “স্বাস্থ্যকে রক্ষা” নয়, অসুস্থতার চিকিৎসাকে “স্বাস্থ্য পরিষেবা” বলে মনে করা হয়, সেই কারণে জনমানসে এই ধারণাটি প্রথম থেকেই গড়ে ওঠে যে অসুখ করলে ওষুধ কিনে খেলেই হবে, বা ডাকতারের কাছে গেলে তিনি “সারিয়ে” দেবেন। এবং যেহেতু চিকিৎসকদের তরফ থেকে দেখা যায়, অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা করলে ব্যবসায়িক লাভ, এতে করে প্রতিষেধক, বা রোগ প্রতিরোধের চেয়েও চমকপ্রদ প্রযুক্তির দিকে আমাদের ভারতের মানুষের ঝোঁক অনেকটাই বেশী। এই একই ব্যাপার সরকারী স্তরেও দেখতে পাওয়া যায়। এই ধারণার বশবর্তী হওয়া ব্যবস্থায় দেখা গেল প্রথমবার যখন কোভিডের প্রকোপ হল, তখন ভারত হয়ে উঠল সেই দেশ, যে দোসর আমেরিকার হাতে হাইড্রকসিক্লোরোকুইনের মত অচল ওষুধ সরবরাহ করল। এমনিতেও ভারত “ফারমাসিউটিকালস” উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে প্রসিদ্ধ।
এদিকে কোভিড সম্বন্ধে গত এক বছরে বেশ কিছু চিন্তা ভাবনার পরিবর্তন হয়েছে যার ষোল আনা রোগটির প্রতিরোধ কেন্দ্রিক, এর মধ্যে এরোসল স্প্রেড, মাসক পরার প্রয়োজনীয়তা, ভ্যাকসিন, বাড়িঘরের ভেনটিলেশন | জয়ন্তদা স্বয়ং এই নিয়ে বিস্তারিত ভাবে বহু প্রবন্ধ লিখেছেন, এর প্রতিটি প্রয়োজনীয়, এবং সহজবোধ্য করে লেখা। শুধু সেই প্রবন্ধগুলো যদি পড়া যেত এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করে মানুষকে শেখানো যেত, বহু মানুষের উপকার হত।
দুঃখের বিষয়, ভারত সরকার এবং প্রাদেশিক সরকার বা তাঁদের স্বাস্থ্য দপ্তর এইসব ব্যাপার ধর্তব্যের মধ্যে আনেন না। যেমন আমরা জানি চাপা পরিবেশে, এবং জটলা হলে কোভিড হবার সম্ভাবনা সাংঘাতিক রকম বেড়ে যায়। আমরা এও জানি, অল্প সংখ্যক মানুষ বেশী সংখ্যায় সংক্রমণ ছড়ান, এই ভাবেই পরের পর ক্লাসটার গড়ে অসুখটি বিস্তার করে। এই অসুখটি গাণিতিক পরিভাষায় ওভারডিসপারসড, যে কারণে ক্লাসটার নিয়নত্রণ না করতে পারলে কোভিড নিয়ন্ত্রণ কার্যত অসম্ভব। এর অর্থ, খুব জনসমাগম হলে অসুখটির জনসমাজে দ্রুত ছড়াবার পরিস্থিতি তৈরী হয়। এতটা জানা সত্ত্বেও দেখুন দেশে শুধু নির্বাচন ডাকা হল তাই নয়, কুম্ভমেলার মত একটি জনবহুল ধর্মীয় সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হল। ভ্যাকসিন নিয়ে গড়িমসি করা হল , কারণ ওষুধে আমাদের ভরসা, “অসুখ করলে চিকিৎসাই” আমাদের ভবিতব্য। অর্থাৎ যে অসুখটি প্রতিরোধের ও যাকে প্রতিষেধন করা যায়, তাকে চিকিৎসা করে ওষুধ দিয়ে সারাতে গিয়ে কাল হল।
কাজেই, এই অবস্থা শুধু সময়ের অপেক্ষায় ছিল।
এর পর দেখবেন কোভিড নিজের নিয়মে কিছুটা কমবে |
তার পর যেহেতু ভারতে আপনার ক্লাসটার কন্ট্রোল করেন না, আপনাদের দেশে মানুষকে বোঝানো হবে কোভিড কমে গেল | আসলে যেটি হবে, সেটি কোভিড অনেকটা হবার পর (অনেকটা আগুণ জ্বালানী না পেলে কমে যায় কিন্তু ধিকিধিকি জ্বলতে থাকে), মানুষের আকাল দেখা দিলে সাময়িক যতি পড়বে | কিন্তু কিছু মানুষের মধ্যে রয়ে যাবে, তাঁরা কালক্রমে সুপারস্প্রেডার হবে, _বা_ হয় অন্যত্র থেকে, বা ভাইরাসের মিউটেশন হবে, সুপ্ত ক্লাসটারগুলো একে অপরের সঙ্গে জুড়বে কারণ তখন ভারতের আমজনতা “শিথিল হবেন”, এবং তখন আবার তৃতীয় দফার ঢেউ ভয়ঙ্করভাবে আসবে।
তবে এও আটকানো সম্ভব, সেক্ষেত্রে ক্লাসটার চিনে তাকে নিয়ন্ত্রণ করলে কাজে দেবে। তার সঙ্গে ভ্যাকসিনেশন।
এখনো ক্লাসটার নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে অবগত হলে কাজ হতে পারে।
দাবানল নেভানোর চেয়ে আগুণ না লাগতে দেওয়া বেশী কার্যকরী, তাই নয়?
খুব সুন্দর ব্যাখ্যা। অভিনন্দন!
অসামান্য।
A big real fact. Spread this article more and more. Many many thank you so much sir.
Oshadharon lekha ar obhavoniyo bishleshon. Amader deshe rajniti kotota sashtho porisheba ke niyontron kore tar joljyanto udhahoron ei Covid crisis.
লেখার মধ্যে বিনামূল্যে “সকলের জন্য স্বাস্থ্য” পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গিকারকে বাস্তবায়নের দাবী যেমন রয়েছে তেমনি এই ধরনের সময়োপযোগী লেখা স্বাস্থ্য অান্দোলনকে নতুন দিশা দেখাবে। সেজন্য চাই জনদরদী বা কল্যানকামী সরকার। ব্যবসায়ী সরকার কতটা বিপদজনক তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
অসাধারণ লেখা। পুঁজিবাদী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যে এই মহামারী রুখতে ব্যর্থ, আপনার কলম দিয়ে তা যুক্তি গ্রাহ্য ভাবে তুলে ধরেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ।
ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য এই লেখাটিতেও তাঁর স্বকীয়তা অর্থাৎ তথ্য্যনিবেশ, সাধারণের বোধগম্য করার জন্য সহজ বিশ্লেষণ এবং স্পষ্ট মতপ্রকাশ বজায় রেখেছেন।
আলোচনার নামকরণও যথার্থ অর্থবহ।
অসাধারণ লেখা। দেশের স্বাস্থ্য খাতের এই করুণ দশা এত পরিষ্কার ভাবে ভাবে তুলে ধরার জন্য তোমায় ধন্যবাদ।
ডাক্তার জয়ন্ত ভট্টাচার্য মহাশয়ের মূল্যবান লেখাগুলো যেমন অজানা কে জানতে সাহায্য করে, চিন্তা- ভাবনার প্রসার ঘটায় তেমনি কিছু প্রশ্নের ও উদ্রেক ঘটায়। ১) vaccine তৈরির infrastructure, technology, technician এবং manpower থাকা সত্ত্বেও চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ব্যহত হওয়ার কারণ ২) vaccine র ন্যায্য মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের নিজস্ব শক্তি অন্য কোনো অদৃশ্য শক্তির কাছে মাথা নত করছে ৩) private সংস্থা গুলোকে vaccine আমদানি করার ছাড়পত্র দেওয়াতে আমজনতার কোন উপকারে আসবে বা সরকার কী সত্যিই তার উপরে কোন নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে ৪) Industrial oxygen কে purified করে যে medical oxygen এ converd করা যায় যুদ্ধ কালীন তৎপরতায় সেই technology কে কার্যকরী না করার কারণ ৫) অত্যাবশ্যকীয় জীবনদায়ী drugs র plant নির্মানের পরিকল্পনা ভারতের জনসংখ্যার নিরিখে না অন্য কোন শতকরা হিসেবের উপরেই নির্মান করা হয়?
তথ্য সমৃদ্ধ, যুক্তি নির্ভর সহজবোধ্য বিশ্লেষণ, আপন উপলব্ধির স্পষ্ট প্রকাশ-ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্যের এই স্বকীয়তা এই লেখাতেও প্রকাশিত।
নামকরণ একেবারে যথার্থ।
খুব ভাল লাগল।
ধন্যবাদ!
Lekhata sab lekhar matoi tathyo purno,asadharon. Tor ei lekhar modhye freete sakoler jonyo chikitsa porisebar akta dabi royechhe jeta ajker ei churanto chikitsa bivrat,bisringkhal swasthyo porisaebar muhurte khubi tatparyopurno .
Valo thakis.
Parer lekhar apekshay roilam.
ভালো লেখা। ১ বছর সময় পাওয়ার পরেও এই অবস্থা সত্যিই দুঃখজনক।