বছর চল্লিশের পুলিশ অফিসার দিবাকর শীল শেষ কিছুদিন ধরে বেশ অস্বস্তিতে রয়েছেন। দায়িত্ববান পুলিশ হিসেবে দিবাকর বাবু ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশ ডিপার্টমেন্টে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন।মানুষ হিসেবেও সবসময় খুব হেল্পফুল- অন্যকে সাহায্য করতে সর্বদা হাসিমুখে এগিয়ে আসেন।কিন্তু এখন যেন তিনি কেমন একটু মনমরা আলাদা! স্ত্রী অনিমা তো বটেই, অফিসের কলিগরাও বুঝতে পারছেন। আসলে শেষ কেসটা এখনও কেমন একটা ঝুলে আছে, খানিকটা তাড়াও করছে ওনাকে, ভিতরে ভিতরে।একমাস আগে যখন ১১ বছরের এক বাচ্চার রেপ কেসের তদন্তের প্রাথমিক ভার পুলিশ বিভাগ ওনার হাতে তুলে দেন তখন নিজের কাছে বেশ চ্যালেঞ্জিংই লেগেছিল তার! কারণ এর আগেও এরকম কেসে দোষীদের দের আইনের হাতে তুলে দিতে পেরেছিলেন তিনি। কিন্ত এবারের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ওনার কিছুতেই স্বস্তিকর হচ্ছে না। হয়তো তিনি সে কাজে সফলও হবেন আর কিছুদিনের মধ্যে দোষীদের ধরেও ফেলবেন !কিন্তু নিজেকে কেন জানি অনেক বিধ্বস্ত লাগছে তার!এক মাসে যখন নাফিসার বাবা-মা ওনাকে নিয়ে গিয়েছিল সেই ১১ বছরের ধর্ষিতা মেয়ের কাছে- ওর চোখ মুখ দেখে রীতিমত চমকে উঠেছিলেন বছর চল্লিশের দিবাকর।সেই অসহায় বিহ্বল চোখের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি তদন্ত ভুলে গিয়েছিলেন। প্রথম দিন ওর সাথে কথাই বলতেই পারেন নি। নাসিফার চোখে মুখে ছিল এক অজানা অসহায় বেদনার ছাপ! এই বিশ্বসংসার যে কতটা কঠোর নোংরা আর নিষ্ঠুর হতে পারে তা বুঝতে একটু সময় লাগে মানুষের, নাসিফা সেই সময়টুকুও পায় নি! অসময়ের এক বিধ্বংসী ঝড় বয়ে গেছে ওদের পুরো বাড়ির উপর দিয়ে। প্রথম দিন কোনও কথা না বলেই ফিরে এসছেন তিনি।যাওয়ার আগে ওর বাবা ঝরঝর করে কাঁদতে কাঁদতে বলল- “মেয়ে বেঁচে আছে এই অনেক! আমরা ওকে আর বাড়ির বাইরে ছাড়ব না। আমরা আর কিছু চাই না স্যার।“ দিবাকর সেদিন কিছু বলতে পারে নি।ফিরে এসছিল এই সমাজের এক রাশ ক্লেদ, দুঃখ যন্ত্রণা ক্ষোভ বয়ে নিয়ে।
দ্বিতীয় দিন নিজের চোয়াল শক্ত করে,কপালের ঘাম মুছতে মুছতে ওকে জিজ্ঞেস করছিল।উত্তরের আশা করে নি।একজন ১১ বছরের ধর্ষিত বাচ্চা মেয়েকে নিজের উপর ঘটে যাওয়া পাশবিক যৌন নির্যাতনের তদন্ত নিয়ে জিজ্ঞেস করা তো সহজ কথা নয়!নাসিফার যেন কোনও হুঁশ নেই! তবু হাল ছাড়েন না দিবাকর! ধীরে ধীরে কাজ শুরু করেন।বাড়ির লোকের কাজ থেকে ওর দৈনন্দিন কাজের তালিকা, কখন স্কুল থেকে ফিরত,খেলতে যেত এই সব জানতে শুরু করেন।ওই দিনকার ঘটনা সম্পর্কে ওর বন্ধুদের বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।নাসিফাও অল্প অল্প করে কথা বলতে শুরু করে। একসপ্তাহ পরে একটা ভিডিও টেপের সন্ধান পাওয়া যায়! যেখানে অপরাধীদের দেখা যাচ্ছে। ভিডিও টি দেখতে দেখতে বমি করে ফেলেন দিবাকর।তিনি তো এতটা দুর্বল নন।চাকরির সুত্রে তাকে দেখতেই হয় পুরোটা, অপরাধীদের মুখ, দেখে একটা বয়সের আন্দাজ পাওয়া যায়!এবার শুধু খুঁজে বের করতে হবে। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা ওকে জানতে হবে নাসিফার থেকে।সঠিক বয়ান নিতে হবে ওর থেকে না হলে কেস দাড় করানো যায় না, অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যান অনেক সময়েই। শুরু হয় রোজ ওদের বাড়িতে যাওয়া, প্রতিটি ঘটনার বিশদ বিবরণ নেওয়া! সেই ঘটনা মিলিয়ে মিলিয়ে এর ওর থেকে শোনা টাইম জায়গা সব মিলিয়ে পোক্ত অ্যালিবাই বানাতে হবে। এই মর্মান্তিক ঘটনার খুঁটিনাটি তথ্য, তার ধারা বিবরণী ও কেস ফাইল দিন রাত জেগে দিবাকর তৈরি করে ফেলে।দিবাকরের গাঁয়ে কাটা দিয়ে ওঠে! এক সাংঘাতিক গভীর মানসিক আঘাত ওকে যেন রোজ প্রশ্ন করে, তাড়া করে বেড়ায়! বাড়িতে নিজের ছোট মেয়ের দিকে তাকিয়ে ভয়ে বুক শিউরে ওঠে ওর! বুঝতে পারে ওর সমস্যা বাড়ছে। এই কেসে পর ছুটি নেবেই। শেষদিন নাসিফার চোখের জল দেখে দিবাকরও কেঁদে ফেলেছিল।আর ধরে রাখার চেষ্টাও করে নি! ওর বাবাকে বলে এসছিল- অপরাধীরা শাস্তি পাবে। নাসিফা আর একটু সুস্থ হলে, ওকে যেন কোনও বড় শহরের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে দেখিয়ে নেয়।
দিবাকর রাতে ঘুমাতে পারেন না।ঘুম ভেঙ্গে যায়, প্রচণ্ড দুঃস্বপ্ন দেখেন, ঘামতে ঘামতে বিছানা ছেড়ে উথে দাঁড়ান।স্ত্রী অনিমা বুঝতে পারে নিশ্চয়ই কোনও মানসিক আঘাত পেয়েছে ও।সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করে।দিনের বেলা অদ্ভুত এক ফ্ল্যাশব্যাক আসতে থাকে দিবাকরের চোখের সামনে নাসিফার সেই মর্মান্তিক চিৎকারের ভিডিও যা শেষ একমাস ওকে বার বার দেখতে হয়েছে, শুনতে হয়েছে।তার প্রতিটি সেকেন্ড ওর চোখের সামনে ভাসছে! একদম কাজে মনোযোগ দিতে পারছেন না ও।পরবর্তী অফিসারকে কেসের দায়িত্বভার দিয়ে ছুটি নিয়ে নিয়েছেন।শেষের দিকে নাসিফার বাড়ির দিকের রাস্তাটা ধরে আর বাড়ি ফিরতে পারতেন না! যে ইট ভাঁটার পেছনে এই ঘটনাটি ঘটেছিল সেদিকেও নয় অনেক টা ঘুরে বাড়ি ফিরত ও।মাঝেই রেগে যাচ্ছেন, মাঝে মাঝে না চাইলেও বার বার সেই ঘটনার খুঁটিনাটি বিবরণ ওর মাথায় চলে আসছে!প্রচন্ড ভয়ে দিশেহারা লাগছে মাঝে মাঝে কাঁদছেন। এইবার স্ত্রী অনিমা সক্রিয় হয়ে ওঠেন। অনেক জোর করে চেপে ধরায় দিবাকর কেসের কথাটা বলে।আর দেরি না করে কলকাতায় বোনকে ফোন করে বলে বেশ কিছুদিন থাকবে জানিয়ে রাখে দিবাকরকে ডাক্তার দেখাতে হবে। দিবাকরকে বলে দেন অফিসে ছুটি বাড়িয়ে নিতে। অনিমা ওকে নিয়ে আসে কলকাতায়;বোনের বাড়িতে।
প্রায় একমাসেরও বেশি পুলিশ অফিসার দিবাকর শীল যে মানসিক সমস্যার সম্মুখীন তাকে বলে PTSD(Post Traumatic Stress Disorder)অর্থাৎ গভীর কোন মানসিক আঘাত (Trauma-ট্রমা) এর পরে উথাল পাথাল মানসিক অবস্থা! এই PTSD বুঝতে গেলে আমাদের সবার আগে ট্রমা বুঝতে হবে।স্ট্রেস আর ট্রমা কিন্তু এক নয়!সহজ ভাষায় ট্রমাকে বলা যেতে পারে আকস্মিক গভীর এক তীব্র স্ট্রেস! ট্রমা এক ভীতপ্রদ মানসিক এক আঘাত যা সেই ব্যাক্তির কাছে আলাদা রকম তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।তাই যে ঘটনা আমার কাছে ট্রমা হিসেবে আসতে পারে সেই একই ঘটনা অন্য আর একজনের কাছে ট্রমা হিসেবে নাও যেতে পারে! PTSD এর ক্ষেত্রে ট্রমা বলতে আমরা যা বুঝি-
(১) সরাসরি এমন এক ঘটনার সম্মুখীন হওয়া যা জীবন মরণের সাথে জড়িত, খুব ভয় পাওয়ানো এক ঘটনা যেখানে মৃত্যু আপনাকে আঁচড় কেটে বেরিয়ে গেছে, প্রচন্ড হিংসা (Violence) এর কোন ঘটনা (বিশেষত যৌন হিংসামূলক বা নির্যাতন) বড় ধরনের কোন শারীরিক অসুখ।
(২) একটা ভয়াবহ কোন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হওয়া- চোখের সামনে দেখা এক বিস্ফোরণ, কিম্বা কোনও অ্যাকসিডেন্টে কাউকে চোখের সামনে মর্মান্তিকভাবে মারা যেতে দেখা কিম্বা কাউকে নির্মমভাবে খুন হতে দেখা।
(৩)খুব কাছের কোনও বন্ধুর সাথে ঘটে যাওয়া ট্রমাটিক ঘটনার বিশদ বিবরণ ওর সাথে থাকতে থাকতে জেনে যাওয়া!বার বার সেই ঘটনা শুনে শুনে আক্রান্ত হওয়া বা প্রভবাতি হওয়া! মনে রাখতে হবে এক্ষেত্রে ঘটনাটি অবশ্যই হতে হবে তার কাছে ভীতিপ্রদ এবং দুর্বিষহ।
(৪)কেউ যদি বার বার অন্য কারো সাথে ঘটে যাওয়া সেই ভয়ংকর ট্রমাটিক ঘটনাটি অনুভব করতে করতে যায়, বার বার সেই ঘটনার পুঙ্খ্যানুপুঙ্খ বিরূপ একটা বিস্তারিত বিবরণ জোগাড় করতে গিয়ে যা হতে পারে। তাই কোন পুলিশ অফিসার যাকে কোনও শিশুর যৌন নির্যাতনের বা বাচ্চাদের পর্ণোগ্রাফি নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে ওই ঘটনার বার বার কোন সম্মুখীন হতে হয়, শুনতে হয় সমস্ত ঘটনাবলীর বিশদ খুঁটিনাটি, ছবি দেখতে হয়, জানতে হয় স্থান কাল পাত্র, কোন মহামারি বা যুদ্ধের পরে যাকে প্রাথমিক ভাবে পরে থাকে জ্বলন্ত, খণ্ড-বিখন্ড পচা-গলা মানুষের দেহ সংগ্রহ করতে, হয় তাদের ক্ষেত্রে PTSD হতে পারে।
অর্থাৎ ট্রমা হল এমন একটা অপ্রত্যাশিত আকস্মিক ভয়াবহ ঘটনা যা সেই ব্যক্তির কাছে প্রচণ্ড ভয়ের ও উদ্বেগের কারণ যার প্রভাব স্বাভাবিক স্ট্রেসের এর চেয়ে অনেকগুণ বেশি!যেকোনো হিংসাত্মক দুর্ঘটনা বা অপরাধ, যুদ্ধ, মিলিটারি আক্রমণ, কিডন্যাপ হওয়া, ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের স্বাক্ষী থাকা, যৌন নির্যাতন, শারীরিক আঘাত, মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া এক অসুখ, একের পর মৃত দেহ দেখতে থাকা, (যা কোভিড এর সময় যে কোনও স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে পীড়াদায়ক হয়ে উঠতে পারে) সবগুলই পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে কারো কাছে ট্রমা হয়ে উঠতে পারে! এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে পরোক্ষভাবে মানে কিন্তু ঘরে বসে ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে টিভি বা ভিডিও বা শুনে এই সব ঘটনা দেখলে বা শুনলে হবে না যতক্ষণ না সেটা আমার আপনার কাজ অর্থাৎ প্রফেশানের সাথে জড়িত হচ্ছে!
কাদের PTSD হবার সম্ভাবনা বেশি??
ট্রমা হলেই যে আমাদের সবার PTSD হচ্ছে এমনটা তো নয়! মোটামুটি ভাবে যে গুলো রিস্ক ফ্যাক্টর ধরা হয় সেগুলো হল-
(A)ট্রমার আগের কিছু কারণ (Pre-Traumatic Factor)
আভ্যন্তরীণ কারণ- আগে থেকে কোনও রকম ট্রমার সম্মুখীন হওয়া, দুশ্চিন্তার সমস্যা থাকা, চিন্তা ভাবনায় নিজেকে দোষ দেওয়ার প্রবণতা, ছোটবেলায় কোন বাজে ঘটনা, প্যানিক রোগের উপস্থিতি বার বার কোন এর সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দেয়।
বাহ্যিক কারণ- অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল, ভাঙ্গা পরিবার, সামাজিক ভাবে প্রান্তিক মানুষ, রিফিউজি এদের সম্ভাবনা বেশি।
জেনেটিক ও শারীরিক কারন- মেয়েদের তুলনায় বেশি হবার সম্ভাবনা, কম বয়সে ঘটনা ঘটলে, কারও শরীরে নির্দিষ্ট কিছু জিনের এক্সপ্রেশান এর সম্ভাবনা কে বাড়িয়ে তোলে!
(B)ট্রমা চলাকালীন (Peri-Traumatic Factors )
বাহ্যিক কারণ – ট্রমার ধরন তার প্রকৃতি তার তীব্রতা, তার আশেপাশের পরিবেশের উপর অধিক নির্ভর করে।
(C)ট্রমা পরবর্তী ঘটনার কারণ (Post-Traumatic Factors )
বাহ্যিক কারণ- ঘটনার পর বন্ধুদের আচরণ তাদের কটূক্তি টাকা পয়সার অভাব বাজে প্রভাব ফেলতে পারে।
আভন্ত্যরীণ কারণ- পারসনালিটি ইস্যু, নেশা জাতীয় দ্রব্যের দিকে আসক্তি ক্রমশ এর সম্ভবনা কে বাড়িয়ে তোলে।
আর একটু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল- বেশির ভাগ স্টাডিতে দেখা গেছে, ছেলেদের ক্ষেত্রে- কাউকে খুব হিংসাত্মক ভাবে খুন হতে দেখার ঘটনা আর মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই দুই ঘটনার সাথে PTSD হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি!
PTSD হলে কি কি হয়?
প্রথম কথা PTSD এর সাথে ওই রকম একটা ট্রমাটিক ঘটনার সময়গত ও একরকমের কারজ কারণ সম্পর্ক থাকতেই হবে। অর্থাৎ ওই ঘটনার পরে এবং ওই ঘটনার জন্যেই এই সমস্যা শুরু হয়! মোটামুটি রকমভাবে চার ধরনের সিম্পটোম গুচ্ছ নিয়ে PTSD হাজির হয়-
(এক) জোর করে চলে আসা কিছু চিন্তা
বারবার করে চলে আসা,অনধিকার ভাবে মনের ভিতরে প্রবেশ করে, অনিচ্ছাকৃত এক চিন্তা – বারবার সেই ট্রমাটিক ঘটনার স্মৃতি চলে আসা।অনেকের ক্ষেত্রে স্বপ্নের তা বিষয়বস্তু হতে পারে- যা খুব পীড়াদায়ক !কিম্বা আসতে পারে ফ্লশব্যাকের মতো-সেই ঘটনার চিত্রগুলো হুড়মুড় করে চোখের সামনে ভেসে আসা! বাচ্চাদের ক্ষেত্রে(৬ বছরের ছোট) খেলার মধ্যে এগুলো ঘটতে পারে! বিভিন্ন ধরনের বাহ্যিক উদ্দীপনা পরিস্থিতিও একে চাগিয়ে তুলতে পারে- যেমন ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে ফেরা কোন সৈনিকের বৃষ্টির দিন এলেই সেই মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার স্মৃতি সামনে চলে আসে।
(দুই)দুর্ঘটনা সম্পর্কিত সমস্ত কিছুকে এড়িয়ে চলা
ওই ট্রমাটিক ঘটনার সাথে সম্পর্কিত যে স্থান, কোনও জিনিস, কোন রকমের কথাবার্তা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করা।
(তিন) চিন্তাভাবনার ধরণে ও অনুভূতিতে নেতিবাচক পরিবর্তন
ওই ঘটনার জন্যে নিজেকে দায়ী করতে থাকা। সারাক্ষণ নেতিবাচক ইমোশান- অপরাধবোধ ভয় রাগ এর মধ্যে ডুবে থাকা।
“আমিই আসলে খারাপ।আমি ঠিক থাকলে ওই ঘটনা ঘটত না আমার সাথে। আমার শরীর নষ্ট হয়ে গেছে, আর কাউকে বিশ্বাস করব না!” এই কথা গুলো বলতে থাকা
ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস বেমালুম ভুলে যাওয়া(Psychological Amnesia- মনে না করতে পারা)। আনন্দ ফুর্তি-ভাব কমে যাওয়া, আসেপাশের লোকজনের সাথে আলাদা হয়ে যাওয়া সমস্ত কিছু তে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা!
(৪) উদ্দীপনায় অতিরিক্ত সাড়া দেওয়া ও চমকে ওঠার প্রবণতা
মনোযোগ দিতে না পারা।খুব খিটখিটে হয়ে থাকা রাগ দেখানো! খুব বেশি পরিমানে হঠাৎ করে চমকে ওঠার প্রবণতা। কলিং বেলের আওয়াজ শুনে চমকে ওঠা। হঠাৎ করে মোবাইলে কল এলে রিংটোন শুনে ঘাবড়ে ওঠা! সবসময় অতিরিক্ত ভাবে সতর্ক হয়ে থাকা।নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করা।ঘুমের সমস্যা শুরু হওয়া।
এই সমস্যা গুলো কম-বেশি একমাসের বেশি দিন থাকে এবং সামাজিক ভাবে নিজের কাজের জায়গায় নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
PTSD ডায়াগনোসিস- একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক পালা পরিবর্তন
PTSD এর ধারনা কিন্তু খুব বেশি পুরোনো নয়।আসলে মানসিক রোগ নির্ধারণ করার জন্যে যে দুটো গাইডলাইন আছে তা হল ICD- International Classification of Diseases যা কিনা WHO এর তত্ত্বাবধানে চলে, তার একটি চ্যাপ্টারে এই মানসিক রোগ নিয়ে আলোচনা করা হয় যেমন
ICD-10 এ ছিল চ্যাপ্টার F ব্লকে, ICD-11 এ চ্যাপ্টার 6 এ রয়েছে। অন্যদিকে আমেরিকায় APA(American Psychiatric Society ) আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটি থেকে DSM (Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorder) বের করা হয়।আধুনিক কালের PTSD এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয় আসে Dr. Kardiner এর হাত ধরে ১৯৪১ সাল নাগাদ। তার আগে অবশ্য ইউরোপে একে Railway Spine(রেলগাড়িতে দুর্ঘটনার যে সমস্যা হয়), Shell shock, Battle Fatigue(যুদ্ধের পর ক্লান্তি) Soldier Heart(সৈনিকদের হৃদয়) এই সব নামে বর্ণনা করা হত বিশেষ করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়! অন্যদিকে Ramsay 1990 সালে যথার্থই বলেন DSM সিস্টেম প্রথম দিকে অনেক বেশি দ্বিধায় ছিল PTSD কে তাদের বইতে অন্তর্ভুক্ত করে মান্যতা দেবে কিনা অনেক বেশি সম্পর্কিত ছিল যে আমেরিকা যুদ্ধের সাথে জড়িত আছে কি নেই তা দেখে!১৯৫২ সালে যখন DSM এর প্রথম সংস্করণ বের হয় তখন সদ্য সদ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে তখন “Grossly Stress Reaction” বলে একে DSM এ রাখা হয় কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ১৯৬৮ সালে বিতর্কিত ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলাকালীন একে সরিয়ে নেওয়া হয়! ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর অনেক যুদ্ধ ফেরত সেনাদের সর্বনাশা এক মানসিক অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।তাই আবার ১৯৮০ সালে এর তৃতীয় সংস্করণে PTSD কে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থান দেওয়া হয়! অনেকেই এতদূর অবধি বিতর্ক টেনে নিয়ে যান এই বলে যে এটা আসলে যুদ্ধের অপরাধীদের নিজেদের অন্যায় মুছে ফেলার এক চেষ্টা! এবং যেহেতু পরবর্তী কালে ওইরকম মিলিটারি যুদ্ধ খুব কম হয়েছে তাই ১৯৯৪ সালে এর যখন চতুর্থ সংস্করণ বেরোয় তখন গবেষকরা অনেক বেশি নিত্যনৈমিত্তিক জীবনে চলা ট্রমাটিক ঘটনা বা ছোটবেলার কোন ভয়াবহ ঘটনার উপর বেশি জোর দেন।
বর্তমানে DSM 5(2013) উপরে বর্ণিত ট্রমা এবং চার ধরনের সিম্পটোম গুচ্ছ ও নির্দিষ্ট সমসয়সীমা মেনে ডায়াগনোসিস করার কথা বলে।তবে সদ্য প্রকাশিত হবে ICD-11 (2022) এর PTSD এর ধারনা DSM এর PTSD ধারণার মধ্যে খানিকটা বিসাদৃশ্য আছে। যেখানে DSM-5 অনেকবেশি সিম্পটোম নিয়ে অনেক বেশি ছড়ানো ভঙ্গিতে PTSD এর আইডিয়াকে পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে কিন্ত ICD-11 এ সঙ্কীর্ণ ভঙ্গিতে PTSDকে ব্যাখা করা হয়েছে। এছাড়াও এখানে Complex PTSD বলে এক নতুন রোগের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যেখানে সাধারণ PTSD এর মূল রোগের সঙ্গে
(১) ইমোশানের খুব ওঠা নামা, মানসিক অনুভুতি নিয়ন্ত্রণে সমস্যা।
(২)নিজের আন্তঃসম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা
(৩) নেতিবাচক অনুভূতি ও চিন্তার প্রাদুর্ভাব!
আমরা কি কি লক্ষ্য করব??
(১) অনেক সময়ই PTSD এর রোগীরা প্যানিক অ্যাটাক, ডিপ্রেশান,দুশ্চিন্তা নিয়ে আসতে পারে।
(২) প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে PTSD আক্রান্ত ব্যক্তি শারীরিক সমস্যা নিয়ে উপস্থিত হতে পারেন।
(৩) কোনও রকম মানসিক বা শারীরিক সমস্যা কোনও দুর্ঘটনার পর শুরু হলে PTSD এর কথা ভাবতে হবে।
(৪) তাই খুব সতর্কতায় সচেতন ভাবে সংবেদনশীল হয়ে ওনার সাথে কথা বলে PTSD লক্ষণ গুলো আমাদের বুঝতে হবে।
কোভিড এবং PTSD
কোভিডের এই মহামারি এবং আমাদের সামজিক বিপন্নতার মাঝে PTSD কে আলাদা করে গুরুত্ব দিতেই হবে। লকডাউন, আর্থিক সংকোচ, প্রিয়জনের মৃত্যু সবেতেই PTSD আঁকড়ে ধরার রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে। এই সময়ে না না ভাবে নানা রকম লোক PTSD সিম্পটোমের শিকার হতে পারেন যেমন-
স্বাস্থ্য-কর্মীরা যেভাবে রোজ বারবার মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখছেন, যেভাবে প্রতিটি লাশের গাড়ি মহুরতে ভর্তি হয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে তা দেখে বুক কেঁপে ওঠে বৈকি!
যিনি গঙ্গার ধারে বা ধাপার মাঠে বা শ্মশানের চুল্লিতে মৃতদেহ পোড়াচ্ছেন তারও বারবার সেই মৃত মানুষের দেহাবশেষ কুড়োতে হচ্ছে।
কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তির কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর PTSD এর সিম্পটোম আসতে পারে, ওয়ার্ডে থাকালীন আশেপাশের অনেক রোগীর মৃত্যু, নিজে বেঁচে যাওয়া এইসব নিয়ে স্মৃতি ফিরে ফিরে আসতে পারে। সিসিইউ বা আইসিইউ তে থাকার দিন গুলো ফ্ল্যাশব্যাকে চোখের সামনে আসতে থাকা ঘুম না হওয়া, দুঃস্বপ্নে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া কোভিড থেকে সেরে বাড়ি ফিরেও হতে পারে।
PTSD কতদিন থাকতে পারে??
এরকম কোন বাঁধাধরা নিয়ম নেই যে ট্রমার কতদিন পরে PTSD সিম্পটোম শুরু হবে, কারো ক্ষেত্রে একদিন পর থেকেই শুরু হতে পারে, কারও বা এক সপ্তাহ কারও ক্ষেত্রে এক মাস লেগে যেতে পারে! সাধারণত ঘটনার একমাসের মধ্যেই PTSD এর সমস্যা গুলো শুরু হয়ে যেতে পারে। ৩ মাসের মধ্যে একদম সম্পূর্ণ রুপে হাজির হতে পারে, সবচেয়ে বেশি ৬ মাস হতে পারে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে ৬ মাস পরে গিয়ে সিম্পটোম শুরু হয় যাকে Delayed Onset/expression বিলম্বিত প্রকাশ বলা যেতে হয়। যদি কেউ চিকিতসার মধ্যে না থাকে তবে ৩০% রোগী ঠিক হয়ে যান, ৪০% খুব অল্প সিম্পটোম নিয়ে থাকেন, ২০% রোগীর বেশ কিছু সমস্যা থাকে, ১০ % কোন উন্নতি হয় না বা আরও খারাপ হয়! সাধারণত সমস্যা গুলো শুর হওয়ার এক বছরের মধ্যেই কমতে শুরু করে অনেকের আবার ৫০ বছর অবধি চলে! তাড়াতাড়ি চিকিতসা শুরু করলে এই সময় আরও কম হতে পারে। যদি খুব চট জলদি সমস্যা গুলো ব্যপক বিস্তার পায় মানে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সমস্ত সিম্পটোম চলে আসে(Acute Onset), অল্প সময় ধরে থাকে(৬ মাসের কম Short Duration) পরিবার যদি সহযোগিতা করে, ঘটনার আগে যদি খুব সুস্থ থাকেন, কোনও নেশা যদি না থাকে তাহলে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন তিনি।
চিকিৎসার মাধ্যম কি কি হতে পারে????
প্রাথমিক ভাবে PTSD এর তীব্রতা বোঝার জন্যে রেটিং স্কেল CAPS(Clinician-Administrated PTSD Scale) ব্যবহার করা হয়। মোটামুটি ৩০ টা আইটেমের এই রেটিং স্কেল নিয়ে ইন্টারভিউ করলে এর তীব্রতা বা Severity বুঝতে পারা যায়!
প্রধানত PTSD এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারও PTSD ডায়াগনোসিস হলে বিভিন্ন রকমের কাউন্সেলিংবা থেরাপির মধ্যে দিয়ে যাওয়া দরকারি।কয়েজন মিলে Group Therapy করা, সাইকোলজিকাল Debriefing এগুলো রোগীকে সাময়িক স্বস্তি দেওয়া! খুব প্রয়োজনীয় হল-
Trauma-Focused Cognitive Behavioural Therapy (TF-CBT) যা খুব ফলপ্রসূ হয় বিশেষ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। Cohen এই নিয়ে বিস্তারিত কাজ করেন এবং
“PRACTICE” এই নামে ধাপে ধাপে প্রয়োগ করার কথা বলেন।
(১)Psychoeducation- রোগী এবং তার বাড়ির লোক কে প্রাথমিক ভাবে ধারনা দেওয়া
(২)Parenting Skills- বাবা-মা কে ট্রেনিং দেওয়া কি কি করবে আর কি কি করবে না!
(৩)Relaxation- ডিপ ব্রিথিং সহ বিভিন্ন রিলাক্সেশন থেরাপি শেখানো।
(৪)Affective(ইমোশান) Regulation and Modulation- নিজের অনুভুতি চিনতে ও নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করা।
(৫)Cognitive Coping and Processing- চিন্তাভাবনার স্বচ্ছতা ও সঠিক ব্যবহারের এর দিকে এগোনো।
(৬)Trauma Narrative- খুব সংবেদনশীল ভাবে ঘটনার বিবরণ সময়ের সাথে সাথে বলানো।
(৭)In vivo(দেহ ও মনের ভিতরে) Exposure and Mastery of Trauma Reminders- ওইরকম ঘটনার অবস্থা তৈরি করে ট তা নিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষন দেওয়া।
(৮)Conjoint Child Parent Sessions- বাবা-মা এবং ছেলে বা মেয়ে একসাথে বসে আলোচনা করা।
(৯)Enhancing Future Safety- ভবিষ্যতে বাচ্চার নিরাপত্তার জন্যে ব্যবস্থা নেওয়া।
এছাড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও বিখ্যাত হল- EMDR(Eye Movement Desensitization and Reprocessing) ১৯৮৯ সালে আমেরিকান মহিলা সাইকোলোজিস্ট Francine Shapiro এতি শুরু করেন। আটটি ধাপের মাধ্যমে এটি ১২ টি সেশানে এটি সম্পূর্ণ করা হয়।যেখানে চোখের এক বিশেষ নড়াচড়ার (Saccadic Eye Movement) সাথে স্মৃতি(Working Memory) এর সম্পর্ককে কাজে লাগানো হয়। তাছাড়া নিয়মিত নিয়ম-মাফিক জীবন কাটানো, খানিকটা এক্সারসাইজ করা! Mindfulness থেরাপির মাধ্যমেও উপকার পাওয়া যায়!
মেডিসিন অর্থাৎ Pharmacotherapy এর ক্ষেত্রে-
অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট( মুলত SSRI- Selective Serotonin Reuptake Inhibitor )ব্যবহার করা হয়! FDA থেকে এবং অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রোগীর সামগ্রিক অবস্থা দেখে অন্য SSRI ও ব্যবহার করা যেতে পারে।ঘুমের সমস্যা বেশি থাকলে Trazodone ব্যবহার হয়। কারও ক্ষেত্রে আচমকা চমকে ওঠা, সজাগ থাকার প্রবণতা দুঃস্বপ্ন এগুলো বেশি থাকলে Prazosin এবং Clonidine অনেক সাহায্য করে। এছাড়া Propranolol ব্যবহার করা হয় যাদের পুরনো স্মৃতি অনেক বেশি তাড়া করে! অনেকের ক্ষেত্রে সেকেন্ড জেনারেশান অ্যান্টিসাইকোটিক মুড স্টেবিলাইসার- Valproate ব্যবহার করা যেতে পারে। মেডিসিন এর ব্যবহার তাই রোগী ভিত্তিক এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়!
এছাড়া Prevention (প্রতিরোধ) ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে সমস্ত মানুষের সাথে যারা কিনা ট্রমাটিক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন, কথা বলে জানার চেষ্টা করা স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম চালানো অনেক বেশি কমিউনিটি স্তরে পৌছনোর চেষ্টা করা!
নাসিফা বা দিবাকরের কি হয়েছে আমরা তারপর আর জানি না! হয়ত আন্দাজ করতে পারি খানিকটা ঠিক বা ভুল! নাসিফাকে তার বাবা মা নিয়ে যেতে পারেন না বড় কোন হাসপাতালে! এক ভয়াবহ শৈশবের করুণ স্মৃতি ওকে বয়ে নিয়ে যেতে হবে জীবনভর।অন্যদিকে আনিমা দিবাকর কে কলকাতায় নিয়ে এসে চিকিৎসা শুরু করায়! ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে ও। চাকরি তে জয়েন করে। কিন্তু ওই গ্রামে গিয়ে নাসিফার খবরটা একবার জেনে আসুক এই ইচ্ছে হলেও সাহস আর হয় না!
আজকের এই ব্যস্ত রোজকার ভিড়ে ঠাসা কাজের চাপে স্ট্রেস আসবে না এটা ভাবা ভুল। তাই আমাদের প্রস্তুতি টাই আসল চাবিকাঠি! স্ট্রেসকে ঠেকানোর জন্য আমাদের সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। তেমনি ট্রমাও আমাদের জীবনে যখন খুশি তখন এসে হাজির হতে পারে । রিস্ক ফ্যাক্টর গুলোকে কমানো বিভিন্ন রিল্যাক্সেশান থেরাপি, কোপিং স্কিল নিজের আচরণের মধ্যে নিয়ে আসা- যা দিয়ে আমরা স্ট্রেস বা ট্রমা সামলাতে পারি! কোনও দুর্ঘটনার পরে খুব ইয়ার্কি করতে গিয়ে রসিকতা করে আক্রান্ত আরও বিপদের মুখে ঠেলে দেবেন না।তার পাশে থাকুন, তার হাতটা শক্ত করে ধরে জীবনের এই কঠিন সময়টা পার হতে তাকে সাহায্য করুন। দরকারে সাইকলোজিস্ট বা সাইকিয়াট্রিস্ট এর সাহায্য নিন। আপনি যতটা আপনার প্রিয়জনের সাথে থাকবেন উনি তত তাড়াতাড়ি ওনার হারানো জগৎ ফিরে পাবেন।