ভাষা, তুমি ভাষা দাও সেই সব জিভে,
ইদানিং জং যার কলমের নিব-এ,
এক এক করে যায় আলো সব নিভে,
তবু আঁধারের হয়ে দেয় হাততালি,
ভাষা, তুমি ভাষা হও জলে ভাসা চোখে,
নিশিদিন জ্বলে যারা ধর্ষ-নরকে,
তবু চুপ ছিলো ভেবে কী বলবে লোকে,
সশব্দ হোক আরো সন্দেশখালি।
শুধু যদি চাটুকার-কথা বলে গলা,
ক্ষমতার পায়ে হয় ভক্তি অচলা,
তবে তো সে প্রতীকের স্রেফ হরবোলা,
ভাষা , তুমি দেখো যেন সে পুতুল জাগে,
যে জিভে আগল দেওয়া প্রবলের ভয়ে,
মঞ্চ-মাইক-এ কেউ নেই যার হয়ে,
হীন হয়ে যার বাঁচা ক্ষীণ পরিচয়ে,
ভাষা, হও লাভা তার ফেটে পড়া রাগে।
ভাষা, তুমি আছো কিনা গান কবিতাতে,
সত্যি বলতে কি বা আসে যায় তাতে,
লব্জরা নানা ভাবে থাকে বদলাতে,
চাটগাঁ ও বাঁকুড়ার বাংলা পৃথক,
থাকো রাগে, থাকো শোকে, থাকো বিক্ষোভে,
ভাষা তুমি দূত হও পাবন পরবে,
স্বদেশের বুকে যা যা মিছিল বেরোবে,
তাদের শ্লোগানে চেয়ো মানুষের হক।
এখন রাজারা পোষে দাঁড়ে বাঁধা তোতা,
বাঁধাবুলি ছাড়া যার বাকি কথা ভোঁতা,
খামোখা বলবে কেন উল্টো অযথা,
নিয়মিত আসে ঘরে রাজকীয় দানা,
ভাষা তুমি দেখা দিয়ে ওদের নিভৃতে,
বলে দিও চলে ওরা আলো-বিপরীতে,
বোলো এই বোবা ধরা কাল-রাত্রিতে,
ছেড়ে গেছো বহুকাল ওদের ঠিকানা।
ভাষা তুমি কথা হও জনতার ঠোঁটে,
গড্ডলিকায় চলা ‘ ব্যা’ নয় মোটে,
জিভে তালা দেওয়া ভয় সবটুকু হটে,
দাবী না মানুক কোনো ধমকের মানা।
ভাষা, হও মানুষের মুক্তির ডানা।