Skip to content
Facebook Twitter Google-plus Youtube Microphone
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Menu
  • Home
  • About Us
  • Contact Us
Swasthyer Britte Archive
Search
Generic filters
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Menu
  • আরোগ্যের সন্ধানে
  • ডক্টর অন কল
  • ছবিতে চিকিৎসা
  • মা ও শিশু
  • মন নিয়ে
  • ডক্টরস’ ডায়ালগ
  • ঘরোয়া চিকিৎসা
  • শরীর যখন সম্পদ
  • ডক্টর’স ডায়েরি
  • স্বাস্থ্য আন্দোলন
  • সরকারি কড়চা
  • বাংলার মুখ
  • বহির্বিশ্ব
  • তাহাদের কথা
  • অন্ধকারের উৎস হতে
  • সম্পাদকীয়
  • ইতিহাসের সরণি
Search
Generic filters

রাণী

IMG_20220924_203828
Dr. Parthapratim Gupta

Dr. Parthapratim Gupta

General physician. Clinical associate in a corporate hospital.
My Other Posts
  • September 26, 2022
  • 7:40 am
  • No Comments

বিষাক্ত রাসায়নিক হিসাবে পটাশিয়াম সায়ানাইডের কুখ্যাতি আজকের নয়। তাছাড়া বিষ বলেই হয়তো তার প্রতি রয়েছে মানুষের অমোঘ আকর্ষণ। কিন্তু এখনো অবধি তার স্বাদ নিয়ে রয়ে গিয়েছে রহস্য। সে বিষ এতটাই তীব্র যে তার বর্ণনা এখনো পর্যন্ত কোন আত্মঘাতী করে যেতে পারেন নি।এটাই ছিল প্রচলিত ধারণা। কিন্তু ২০২১ সালে বুকার প্রাইজে মনোনীত চিলির লেখক বেঞ্জামিন লেবাতু  ‘When We Cease to Understand the World’ নামক বইটিতে পরিস্কারভাবে সায়ানাইডের স্বাদের বিবরণ দিয়ে গিয়েছেন কেরালার এক আত্মঘাতী যুবক এম পি প্রসাদ। জিহবা পুড়িয়ে দেওয়া সে রাসায়নিকের স্বাদ নাকি অসহ্য রকমের তিক্ত।

কিন্তু এই লেখা বিষ নিয়ে নয়।

কারণ টাইম মেশিনে চেপে এই মুহূর্তে আমরা পিছিয়ে গিয়েছি ঠিক নব্বইটা বছর। পরাধীন ভারতবর্ষের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, চট্টগ্রাম শহর। কোতোয়ালি সি সাইড ধরে রাস্তা চলে গিয়েছে পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাবের দিকে।

সময় আনুমানিক মাঝরাত। রাতের আকাশে মিটিমিটি তারাদের সাথে জেগে রয়েছে চাঁদ। ক্লাবহাউসের আলো চুঁইয়ে এসে পড়েছে বাইরের ঘাসের লনে। কানে আসছে অধুনা দেশের শাসক ব্রিটিশ সাহেব, মেমসাহেবদের কথাবার্তা আর হাসির হুল্লোড়। কাঁচের প্লেটে কাঁটা চামচের টুং টাং শব্দের সাথে ভেসে আসছে দামি পারফিউম আর খাবারের সুগন্ধ।

ক্লাবের প্রাচীরের বাইরে দৃশ্যপট কিন্তু একেবারেই অন্যরকম। পথের ধারেতে লাগানো বাতি স্তম্ভের আলোর বৃত্তের বাইরে ফাঁকা জমি অথবা ঝোপঝাড়গুলি অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। শাসক আর পরাধীন দেশের শাসিত মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থানকে যেন প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে আলো আঁধারের রূপকে। একদিকে ব্রিটিশ এবং তাদের চাটুকার ভারতীয়দের আলো যেন অন্ধকূপে ঠেলে দিয়েছে দেশের মানুষকে। একই সাথে প্রাচুর্যের বন্যা আর দুর্ভিক্ষের সহাবস্থান।

রাস্তায় লোকজন বিশেষ নেই। ১৯৩০ সালের ১৮ই এপ্রিল ‘মাস্টার দা’ সূর্য সেনের নেতৃত্বে সংঘটিত চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন এবং তারপর জালালাবাদ পাহাড়ের সেই অবিস্মরণীয় যুদ্ধ চমকে দিয়েছে প্রবল প্রতাপশালী ইংরেজ শাসককে।

টেলিফোন আর টেলিগ্রাফের পোস্ট উড়িয়ে, রেলের ফিসপ্লেট সরিয়ে চট্টগ্রাম শহরে টানা চারদিন ব্রিটিশ শাসনের কোন অস্তিত্ব রাখতে দেয়নি আগুনখোর বাঙালি বিপ্লবীর দল। লুণ্ঠিত অস্ত্রাগার থেকে রাইফেল আর বুলেট পাওয়া গেলেও, খুঁজে পাওয়া যায়নি মেশিনগানের কার্তুজ। তাতে কি, পরাধীনতার ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে সেখানে ওড়ানো হয়েছে জাতীয় পতাকা আর সামরিক কুচকাওয়াজে অভিবাদন জানানো হয়েছে সুপ্রিম কমান্ডার সূর্য সেনকে।

ক্ষীণকায় তরুণ বাঙালিদের সাহসিকতায় তাই সাহেবরা স্তম্ভিত। সে অর্থে বাঙালি কোন কালেই যুদ্ধবাজ জাত নয়।ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতেও তাঁদের সংখ্যা প্রায় হাতে গোণার মতো।

কিন্তু কোন যাদুমন্ত্রে তাদের হাতে উঠে এসেছে পিস্তল, রাইফেল আর তার সাথে ব্রিটিশ মিলিটারিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মানসিক ক্ষমতা?

এই প্রশ্ন উঠেছে কারণ পূর্ববর্তী সশস্ত্র আন্দোলনগুলি কোনভাবেই এত সংগঠিত ছিল না।

জালালাবাদ পাহাড়ের সেই অসম যুদ্ধে ১২ জন বিপ্লবীর বদলে প্রাণ যায় প্রায় ৮০ জন ব্রিটিশ সেনার। তারপর সূর্য সেন সহ বিপ্লবীরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গা ঢাকা দেন পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে। সেখান থেকে মাঝেমাঝেই চলতে থাকে গেরিলা কায়দায় আক্রমণ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সে লড়াইয়ে সফল হয়েছেন বিপ্লবীরা অথবা কপাল খারাপ থাকলে জিতেছে ব্রিটিশ পুলিশ। কিন্তু মাস্টারদার নেতৃত্বে আইরিশ বিপ্লবীদের আদলে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি’র লড়াই জারি থেকেছে। আর ইংরেজরাও জানে সে কথা। তাই ব্রিটিশ অফিসারদের পরিবার কিম্বা তাদের চাটুকার ভারতীয় কর্মচারীদের সুরক্ষা নিয়ে অনবরত চিন্তিত থাকতে হচ্ছে শাসককে। প্রতিশোধের কথা মাথায় রেখে বাড়ানো হচ্ছে সাধারণ ভারতীয়দের উপর দমনপীড়ন। মাঝে মধ্যেই সন্দেহভাজন পরিবারের মেয়েদের উপর নেমে আসছে অকথ্য পুলিশের নির্যাতন।

এরকমই একদিন অত্যাচারী পুলিশ সুপার ক্রেগের উপর আক্রমণ করতে গিয়ে, ইন্সপেক্টর তারিণী মুখার্জিকে হত্যা করে বসেন রামকৃষ্ণ বিশ্বাস নামক এক তরুণ বিপ্লবী। অ্যারেস্ট হয়ে স্থানান্তরিত হন সুদূর চট্টগ্রাম থেকে কলকাতার আলিপুর জেলে। যুবকের পরিবারের ক্ষমতা ছিল না কলকাতা শহরে এসে মামলা চালানো বা তাঁর সঙ্গে দেখা করার। কিন্তু সে সময়ে রামকৃষ্ণের প্রায় সমবয়সী এক তরুণী, পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে,তাঁর দিদি সেজে, প্রায়শই দেখা করে যেতেন বিপ্লবীর সাথে। আর তরুণীটির সাথে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত সেই বিপ্লবীর সাক্ষাৎকার গভীর প্রভাব ফেলেছিল পরবর্তী কালে। রামকৃষ্ণ যেন দেশপ্রেমের আগুন হস্তান্তরিত করে দিয়ে যেতে পেরেছিলেন প্রীতিলতাকে।

ধলঘাট, চট্টগ্রাম। সেখানকার স্কুল থেকে ঢাকার ইডেন হয়ে কলকাতার বেথুন কলেজে পড়তে এসেছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী প্রীতিলতা দাশগুপ্ত। পৌরসভার সামান্য ক্লার্কের অসামান্যা মেয়ে। ওয়াদ্দেদার ছিল তাদের পারিবারিক উপাধি। সঙ্গী ছিলেন আরেক অগ্নিকন্যা, স্কুলের ক্লাসমেট কল্পনা দত্ত। দুজনের অন্তরে স্কুলে থাকতেই প্রজ্জ্বলিত হয়েছিল দেশভক্তির আগুন।

ক্লাসে উষাদি যখন সিপাহী বিদ্রোহ আর মহারাণী লক্ষী বাঈ-এর কাহিনি শোনাতেন গল্পের মতো করে, উদাস হয়ে যেতেন প্রীতিলতারা। স্বপ্ন দেখতেন কবে পুরুষ বিপ্লবীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামিল হবেন স্বাধীনতার লড়াইয়ে।

বেথুন কলেজে থাকাকালীন দুজনেই যুক্ত হয়েছেন বিপ্লবী “দীপালি সংঘে”র সাথে। মেয়েদের এই গুপ্ত সমিতির কাজ ছিল মূলত পুরুষ বিপ্লবীদের সাহায্য করা।কিন্তু তাতে কি আর নেভে প্রীতিলতার অন্তরে জ্বলতে থাকা দেশপ্রেম!

ইতিমধ্যেই ঘটে গিয়েছে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন আর জালালাবাদ পাহাড়ের সেই হার না মানা বিপ্লবীদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। সূর্য সেন সহ বহু বিপ্লবী গোপন আস্তানায় থেকে প্রায়ই গেরিলা আক্রমণে চমকে দিচ্ছেন ব্রিটিশ শাসকদের। রক্তের বদলে রক্ত আর চোখের বদলে চোখ কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে অত্যাচারী সরকারকে।

বেথুন কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে চট্টগ্রামে ফিরে এসেছেন প্রীতিলতা, যোগ দিয়েছেন এক স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে। সূর্য সেনের সঙ্গে দেখা করে অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

১৩ ই জুন, ১৯৩২। ধলঘাটে সাবিত্রী চক্রবর্তীর বাড়ির সেই মিটিংয়ের খবর চলে যায় পুলিশের কাছে। ব্রিটিশ সৈন্য ঘিরে ফেলে বাড়ি আর চলে গুলির লড়াই। মাস্টারদা, প্রীতিলতা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালিয়ে যেতে পারলেও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বিপ্লবী নির্মল সেন। অন্যদিকে লড়াইতে মৃত্যু হয় শত্রুসেনার ক্যাপ্টেন ক্যামেরণের।

দীক্ষা নেওয়ার দিনেই সশস্ত্র বিপ্লবের অগ্নি যেন ছুঁয়ে যায় প্রীতিলতাকে। একদিনেই কেমন ভাবে যেন পালটে যায় স্বভাব কোমল নারীর ভাবাবেগ। পরিবার বা অন্য কোন সম্পর্কের টান আর থাকে না।থাকে শুধু দেশপ্রেমিক মন আর কমরেডদের মৃত্যুকে ব্যর্থ হতে না দেওয়ার অভীপ্সা।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ১৯৩২। ঠিক নব্বই বছর পেরিয়ে তাই আমরা আজ এসে দাঁড়িয়ে আছি ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে। সামনে চট্টগ্রাম শহরের সেই কুখ্যাত পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাব। যেখানে সাইন বোর্ডে লেখা রয়েছে DOGS & INDIANS ARE NOT ALLOWED।

এর আগে অস্ত্রাগার লুন্ঠনের সেই পুণ্য দিনেও বিপ্লবীরা আগুনে পোড়াতে এসেছিলেন কলোনিয়ালিজমের চূড়ান্ত অসভ্যতার প্রতিভূ এই ক্লাবটিকে। কিন্তু কপাল ফেরে সেইদিন ছিল গুড ফ্রাইডে। সাহেবরা ফূর্তি করে ঘরে ফিরে গিয়েছিল আগেই। ফাঁকা ক্লাবঘর সাহেবদের ছাড়া ধ্বংস করতে বিপ্লবীদের প্রাণ চায়নি।

কিন্তু সূর্য সেন চেয়েছিলেন ইউরোপীয় স্বেচ্ছাচারিতার নিদর্শনকে বিপ্লবের আগুনে ঝলসে দিতে। জালালাবাদ পাহাড়ে শহীদদের কাছে রয়ে গিয়েছিল এই রক্ত ঋণ।

ঠিক করা হয় নেতৃত্ব দেবেন কল্পনা দত্ত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আক্রমণের আগে ‘রেইকি’ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান কল্পনা। তাই দায়িত্ব বর্তায় প্রীতিলতা ওরফে “রাণী”র উপর। হ্যাঁ, এ নামেই ডাকতেন যে তার মা,বাবা, আর কল্পনার মতো কাছের বন্ধুরা।

ক্লাবের প্রাচীরের বাইরের অন্ধকারে গোপনে বসে থাকা বিপ্লবীদের দল এই মুহূর্তে তিনভাগে বিভক্ত। ধুতি শার্ট পড়ে থাকা কিছু যুবকের পাশাপাশি রয়েছেন লুঙ্গি জামা গায়ে আরও কিছু তরুণ, যাতে সাধারণ মানুষের ভিড়ে খুব সহজেই মিশে থাকা যায়। সবার সামনে এগিয়ে রয়েছেন এক শীর্ণকায় পাঞ্জাবি পুরুষ। গোঁফের সঙ্গে তাঁর মানানসই গালপাট্টা। কোন বাক্য বিনিময় নেই নিজেদের মধ্যে। শুধু যেন সংকেতের অপেক্ষা।

লিডারের ইঙ্গিত পেয়ে প্রাচীর টপকে ঢুকে পড়লেন বিপ্লবীরা। পিছনের অরক্ষিত গেট দিয়ে ঢুকলেন এক দল। সামনে দিয়ে ঢোকার মুখে সিপাইদের বাধাপ্রাপ্ত হল অন্য দলদুটি। শুরু হল গুলি বিনিময়। পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে পড়া দলটি ততক্ষণে ক্লাবের ভিতরে হুলুস্থূল বাঁধিয়ে দিয়েছে। একটু ধাতস্থ হওয়া ইংরেজ অফিসারেদের পিস্তল থেকেও বেরুচ্ছে বুলেট। মুহুর্মুহু বোমা পড়ছে ক্লাবের গায়ে। শান্ত সমাহিত চট্টগ্রাম শহরের এক প্রান্ত এক লহমায় যেন চমকে চমকে উঠছে আগ্নেয়াস্ত্রের আওয়াজে। রাতের অন্ধকারে লকলক করে আকাশপানে উঠছে আগুনের লেলিহান শিখা।সামনে দাঁড়িয়ে শান্ত মুখে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শিখ যুবকের পোশাকে প্রীতিলতা। আগুন লাগিয়ে দেওয়া চলছে গোটা ক্লাবে। দেশপ্রেমে জ্বলছে ব্রিটিশ অহঙ্কার।

কাজের প্রায় শেষের দিকে আচমকাই একটা বুলেট এসে লাগে প্রীতিলতার পায়ে। তিনি তৎক্ষণাৎ নির্দেশ দেন বিপ্লবীদের ফিরে যাওয়ার।

বাইরে ততক্ষণে এলাকা ঘিরে ফেলেছে ব্রিটিশ সৈন্য। লড়াই চলতে থাকে বারুদের। রক্তাক্ত প্রীতি বুঝতে পারেন তাঁর পক্ষে এই আঘাতপ্রাপ্ত পা নিয়ে চলা আর সম্ভব নয়। তিন রাস্তার এক মোড়ে, পজিশন নিয়ে লড়াই চালাতে থাকেন এমন ভাবে যাতে তাঁকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে সাথী বিপ্লবীরা পালিয়ে যেতে পারেন অন্যত্র। আরও যে অনেক কাজ বাকি!

ইংরেজ সেনা ধীরে ধীরে কাছে আসতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে।
প্রীতি ঠিক করেছিলেন ধরা দেবেন না। “রাণী”-দের ধরা পড়তে নেই!

অনেক বিতর্কের পর মাস্টার দার কাছ থেকে নিয়ে এসেছিলেন সায়ানাইডের বড়ি। তাঁর যুক্তি শুনে সূর্য সেন নাকি বাধ্য হয়েছিলেন সেই বড়ি হাতে তুলে দিতে।

এখন আমরা তাই দাঁড়িয়ে রয়েছি, কোতয়ালি সি সাইড থেকে যে রাস্তা পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাবের দিকে চলে গিয়েছে তার তিন মাথার মোড়ে।

তারা ভরা রাতের আকাশের তলায় জ্বলছে ক্লাবঘর, আহত ইংরেজ শাসকদের চিৎকার আর বারুদের গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে রয়েছে।

“রাণী”র জামার পকেট থেকে হাতে চলে এসেছে সায়ানাইডের বড়ি। এক মুহুর্তের জন্য থেমে যাওয়া আর তারপরেই গলাধঃকরণ।

জ্বলে যাওয়ার কথা জিভের । কিন্তু সত্যিই যাচ্ছে না। মা আর অসুস্থ বাবাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে যে। মাস্টারদা আর সাথী বিপ্লবীদের মুখ কোলাজের মতো ভেসে উঠছে মনের পর্দায় । তিক্ত বিষ দ্রুত ছড়াচ্ছে দেহের চারপাশে। কমে যাচ্ছে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা। গুলির আওয়াজ আর পৌঁছাতে পারছে না মস্তিষ্কে, শুধু ঊষাদি যেন কানে কানে বলে যাচ্ছেন মহারাণী লক্ষী বাঈ-এর কথা।

আমরা দূর থেকে দেখছি প্রীতিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে। ব্রিটিশ সৈন্য রাইফেল স্তব্ধ রেখে লক্ষ্য রাখছে অগ্নিকন্যার উপর। একদম বিশ্বাস করা যায় না এই অকুতোভয় দেশপ্রেমিকদের।

শেষবারের মতো মাতৃভূমি কে চুম্বন করার আগে একবার মাথা তুললেন প্রীতি। DOGS & INDIANS ARE NOT ALLOWED লেখা সাইনবোর্ডটি আগুনে জ্বলতে জ্বলতে সশব্দে আছড়ে পড়লো ক্লাবের লনে।

হালকা একটা হাসির রেখা যেন খেলে গেল প্রীতির মুখে। এবার চিরতরে বিলীন হওয়ার আগে দেশের মাটিকে আলিঙ্গন করার পালা।

আমাদের চোখের সামনে পরপর ঘটে গেল সবকিছু। মনে হলো চট্টগ্রামের কোন এক অজানা রাস্তার তিন মাথার মোড়ে শায়িত, স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম বাঙালি মহিলা শহীদের শরীরে দেশমাতৃকা যেন জড়িয়ে দিয়ে গেলেন তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা।
‘রাণী”-রা যে কখনও ধরা দেয় না!

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২

PrevPreviousপ্রশ্নোত্তরে ডেঙ্গুরোগ: প্রথম পর্ব
Nextতর্পণNext
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত পোস্ট

দীপ জ্বেলে যাও ২

March 22, 2023 No Comments

আত্মারাম ও তার সঙ্গীরা রওনা দিল দানীটোলার উদ্দেশ্যে। দল্লিরাজহরা থেকে দানীটোলা বাইশ কিলোমিটার হবে। বিশ না বাইশ, ওরা অত গ্রাহ্য করে না। ওরা জানে এই

ভাইরাস সংক্রমণ শুধুই বায়োলজিকাল? – উত্তর ভাসে বাতাসে

March 21, 2023 1 Comment

পশ্চিমবাংলা এই মুহূর্তে অ্যাডেনভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে বিপর্যস্ত। আইসিএমআর-নাইসেড-এর সম্প্রতি প্রকাশিত যৌথ সমীক্ষা  জানাচ্ছে, ভারতের ৩৮% অ্যাডেনোভাইরাস রোগী পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে। এমনকি সুপরিচিত ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান-এ একটি

দল্লী রাজহরার ডায়েরী পর্ব-১৬

March 20, 2023 No Comments

৪/৩/১৯৯০ শৈবাল–আমাকে প্রথমে নির্বাচনের খবর। আমরা একটাও জিততে পারিনি। জনকও হেরেছে। ভেড়িয়া ৭০০০ ভোটে জিতেছে। আমরা গ্রামে ১২ হাজার ভোট পেয়েছি। বি. জে. পি. ২১

গ্রামের বাড়ি

March 19, 2023 No Comments

১৪ দিন দশেক পরে দেবাঙ্কন এসে হাজির। বলল, “তোদের কফি ধ্বংস করতে এলাম। বাপরে বাপ, যা গেল! যাক, চার্জশিট হয়ে গেছে। সাংঘাতিক কনস্পিরেসি। সোমেশ্বর নাথ

মহিলাদের জন্য মহিলা টেকনিশিয়ান!

March 18, 2023 No Comments

খবরের কাগজে কত খবরই তো আসে। বড় একটা অবাক হই না। কিন্তু একখানা খবর পড়ে একেবারে চমকে গেলাম। কলকাতার একটি নামকরা কর্পোরেট হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে

সাম্প্রতিক পোস্ট

দীপ জ্বেলে যাও ২

Rumjhum Bhattacharya March 22, 2023

ভাইরাস সংক্রমণ শুধুই বায়োলজিকাল? – উত্তর ভাসে বাতাসে

Dr. Jayanta Bhattacharya March 21, 2023

দল্লী রাজহরার ডায়েরী পর্ব-১৬

Dr. Asish Kumar Kundu March 20, 2023

গ্রামের বাড়ি

Dr. Aniruddha Deb March 19, 2023

মহিলাদের জন্য মহিলা টেকনিশিয়ান!

Dr. Bishan Basu March 18, 2023

An Initiative of Swasthyer Britto society

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

Contact Us

Editorial Committee:
Dr. Punyabrata Gun
Dr. Jayanta Das
Dr. Chinmay Nath
Dr. Indranil Saha
Dr. Aindril Bhowmik
Executive Editor: Piyali Dey Biswas

Address: 

Shramajibi Swasthya Udyog
HA 44, Salt Lake, Sector-3, Kolkata-700097

Leave an audio message

নীচে Justori র মাধ্যমে আমাদের সদস্য হন  – নিজে বলুন আপনার প্রশ্ন, মতামত – সরাসরি উত্তর পান ডাক্তারের কাছ থেকে

Total Visitor

428544
Share on facebook
Share on google
Share on twitter
Share on linkedin

Copyright © 2019 by Doctors’ Dialogue

wpDiscuz

আমাদের লক্ষ্য সবার জন্য স্বাস্থ্য আর সবার জন্য চিকিৎসা পরিষেবা। আমাদের আশা, এই লক্ষ্যে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও আপামর মানুষ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের আলোচনা ও কর্মকাণ্ডের একটি মঞ্চ হয়ে উঠবে ডক্টরস ডায়ালগ।

[wppb-register]