স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের ঠিক আগেই এ কী অমৃতবাণী শুনি!
আপনি এ দেশের নাগরিক? এ দেশের সংবিধানে বিশ্বাস করেন? তবে শুনুন, সংবিধান পরিবর্তনের পরিকল্পনা জোর কদমে এগোচ্ছে। তাতে কী? পরিবর্তন তো সময়ের ধর্ম!
আপনি মুসলিম বা খ্রিস্টান? আপনার ভোটাধিকার থাকবে না। সংখ্যায় লঘুই তো আছেন, গুরুত্ব আর অধিকারেও না হয় লঘুতর হলেন!
আপনি হিন্দু! অহিন্দুদের নিয়ে কিছু যায় আসে না আপনার? “Parliament of religions” তৈরি হবে বর্ণপ্রথা মেনে। সেই বর্ণভিত্তিক ব্যবস্হায় আপনি থাকছেন তো স্যার? (ম্যাডামদের জিজ্ঞেস করে অযথা আর বিব্রত করলাম না।)
আপনি মহিলা? শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বিচারব্যবস্থার এতকিছু রদবদলের পরিকল্পনায় আপনারা নেই, সেটা হতেই পারে না। লুকনো তাস বেরোল বলে; সেই দ্বাপর বা ত্রেতা যুগের নারীদের অপার মহিমান্বিত অবস্থান ফিরে পেলেন বলে!
আপনি যুক্তিবাদী? আপনি প্রশ্ন করতে, উত্তর খুঁজতে ভালোবাসেন। “ব্যাদে সব আছে।” এর বাইরে প্রশ্নই হয় না, প্রশ্ন করার অধিকারের প্রশ্ন আসছে কোত্থেকে মশাই? সলমন রুশদির অবস্থা দেখছেন না। আপনারা চিরকালই চূড়ান্ত সংখ্যালঘু। নতুন করে আর সংখ্যালঘু হবেন কী করে? হ্যাঁ, আপনাদের ওপর অত্যাচারের বহরটা একটু বাড়বে আর কি?
আপনি নাস্তিক? কী সর্বনাশ! আপনার সম্পর্কে কথা বলে সময় নষ্ট করার মানেই হয় না। আপনাকে নিয়ে একটা কথাও লেখা নেই। অতএব, অখণ্ড হিন্দুরাষ্ট্রে আপনার জায়গাও নেই।
আপাততঃ, ঘর ঘর তিরঙ্গা। আপাততঃ ঘরে ঘরে জাতীয়সঙ্গীত। কিন্ত “ইতিহাসবিকৃতিকারীদের প্রস্তাবিত ও পরিকল্পিত পতাকা”, আর “হিন্দুবিরোধী এক কবির তৈরি গান”। কে জানে কখন কী হয়!